অভিযোগ মিথ্যে। আমার চোখ দুটি কখনোই একসঙ্গে দেখে নি আকাশ। হাত দূটি কখনোই ধরে নি মেঘ থেকে বৃষ্টির পতন। এই ঘোরলাগা সন্ধ্যায় এ কোন অভিযোগে ছিন্ন করা হলো তার ফুটন্ত করতল? জানি সময় ঈশ্বরের শৈশব, বুড়ো হয়ে গেছে, অসুন্দর। আমি তার ছেঁড়া, ভাঙা দীর্ঘশ্বাসে খুঁজি তরুণ-পুরনো মুখ। এই অন্বষনে লেগে আছে বালক চিৎকার, যেন ফুটপাতে শুয়ে আছে মুমূর্ষু কুকুর। হতে পারে সেটা মৃত্যু-দেয়ালে আড়াল কোনও গোপন সত্য, তারপরও শুন্যতার পরিবাহক সময়ের নিটোল এই ভবিতব্য। কিন্তু বিশ্বাসী আলো স্ফুরিত হচ্ছেনা কোনওভাবেই, কিংবা পাতালমুখো জীবন পারছেনা ছুঁতে সূর্যের অন্তিম বিকিরন। এই সত্যমিথ্যের ঘ্রাণে দাঁড়িয়ে যেতে পারি বলে কোনও ফাঁক না রেখেই আমি আবারো যৌবন প্রত্যাশী। কেননা আকাঙ্খা মাত্রই বিলাপ। আর বিলাপের ধ্বনি যখন মাথায় তোলে ঘুর্ণি- কৃপনও পারেনা ছুঁতে দূর থেকে ভেসে আসা করুণ সুর। অথচ আমার হাতে যে সময় তার পূর্ণ মূল্যে গোপনতা ঢাকতে গেলেই নতুন করে ভিজতে হবে সূর্যালোক, মেঘকে পুরতে হবে কামনার খাঁচায়। তারপর মুখের আড়ালে লুকোনো যে চিৎকার তার প্রকৃত রেখা ধরে পৌঁছে যেতে হবে পরিত্যাক্ত সময়ে। যেহেতু পকেট থেকে খসে পড়েছিল কয়েন, আর গড়িয়ে গড়িয়ে পৌঁছে গেছিল সময়ের বুড়ো বালকের কাছে। তখন কান্নাই একমাত্র শিখে ফেলা ভাষা, সকলে ভাবে অশ্রুজলে আমি রোদ মাপতে জানি। জানোইতো, চোখের কোণে লুকিয়ে রাখা ইশারা দিনে দিনে বেশ পোক্ত হয়ে উঠেছে দেখে দৃষ্টিভঙ্গিদের মনে জেগেছে সন্দেহ। অথচ অনেকেই জানে না চিত্রল হরিণের স্বেদকনার ওপর দিয়ে আমি অনেক আগেই পৌঁছে গেছি সন্ধিময় এক গানের দুপুরে।
আমদের যৌথজীবনে আজ সন্ধিস্বপনের দিন।
আমাদের যৌথজীবনে আজ ঢেউ জাগানো খেলা ।
আমরা ভালোবাসার গায়ে পরিয়ে দিই বাতাস
পায়ে পায়ে ভেঙে দিই নুপুর
শরীরে শরীরে পুঁতে রাখি বেদনার চিহ্ন
তারপর রাত আর সময়ের পার্থক্য জেনে চোখের জলে রোদ আর
রোদের মাপে গুণতে চলি ঢেউ।
ঢেউয়ের ভিতর চিরকাল ডানা মেলে এক অচিনপাখি
ঢেউয়ের ভিতর চিরকাল সুর খুঁজে এক জলবৃক্ষ।
এই অচিন জলবৃক্ষ ঘিরে আমার নিজস্ব কোনও সৌন্দর্য নেই। বেঁচে থাকা না থাকা এখন স্রেফ বয়সের ভাঁড়ামো। অস্বীকৃত আয়ুকে তো আর বেঁচে থাকার...। বড়োজোর দু’কদম এগিয়ে নিজের ছায়াটাকে আরেকবার পরখ করে নেয়া, কিংবা গাছ থেকে যে-ছায়া ছুটে গেছে দুপুরের দিকে সে এখন কোন আনন্দের অন্ধকার, বড়োজোর সেটা জানা যায়। বরং এই ভালো গতকাল যে মেয়েটি কথা ছুঁয়ে দেখবে বলে পথে ফেলে দিয়েছিলো আলো, তার হাত ধরে তোলো একটা গান। তারপর দূর থেকে পরখ করো গান থেকে ভেসে আসা যৌথ ছায়া। যদি তাই হয় তবে মৃত ছায়ার ভরে তোমরা থাকো, আমি চললাম। পেছন থেকে চোর চোর করে চিৎকার, অভিযোগ মিথ্যে। এই অহিংসার বন্ধ করো খেলা । প্রমাণিত সত্য? সেতো ভালো বুঝে পদতলে পিষ্ট হওয়া গাঁয়ের মেঠোপথ। আমি তো ভুল মনুষ্যজন্মে অন্তআদি পাপ। ইশারা করো মৃত গাছ। ক্ষমা করো পাতা, ক্ষমা করো ঈশ্বরের পুত্র, ক্ষমা করো স্তনাগ্র চূড়ার সুন্দরীরা। আমাকে ঘিরে তোমাদের যতো অভিযোগ সব মিথ্যে। ওরা যা ইচ্ছে বলুক- সব সুন্দর নয়। পারলে গোপন মুখে উদ্ঘাটিত হোক সত্য। পারলে মুখ থেকে টেনে ছেঁড়া হোক জিহ্বা। আঙুল থেকে খোঁড়া হোক রক্তে-মাংসে লেগে থাকা যাবতীয় সম্পর্ক। এখন চুলের গোড়া থেকে কুড়োতে দাও সকালের শিশির। মুখ ধুয়ে পা খুলে হাত প্রসারিত করে দেখি, যা কিছু দৃষ্টিসীমায় সব বোধমগ্ন কিনা। নইলে তুলে নাও অভিযোগ। কান ধরে তুলে আনো অপরাধের প্রকৃত ছায়া। যার চিৎকারে তোমরা জড়ো করেছো আমার ছিন্নভিন্ন মুখ, বিচুর্ণ চিৎকার। না পারলে আমার ছায়াকে করো অঙ্গুলি নির্দেশ। মুহুর্তেই সে চলে যাবে, মেঘ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০০৮ দুপুর ২:২১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




