ব্লগে সারাদিন ঘুরি আর এটা ওটা পড়ি। ফেইসবুকেও একই কাজ করেই বেড়াই। লিখাটা হয়ে উঠে না। কিন্তু মাঝে মাঝে কিছু কিছু লিখা দেখে মন বিদ্রোহী হয়ে উঠে। আমাদের ইমোশন কি এতই সস্তাযে আজকাল যাচ্ছেতাই ভাবে একে ব্যাবহার করা হচ্ছে??
প্রতিনিয়ত আমাদের আবেগ, ভালোবাসা এই দুইটাকে পুঁজি করে চলছে কিছু সংখ্যক মানুষ। অসত্য আর মিথ্যা তথ্য দিয়ে সবাইকে একরকমের ধোঁয়ায় ফেলে রাখা হচ্ছে। সরকার যেমন আমাদেরকে সুস্পষ্ট কোন কথা বলেনা। তেমনি নানান আর্টিকেল এবং নানান পোস্ট দিয়ে খেলা হচ্ছে আমাদের বিশ্বাস, চেতনা আর বিবেক নিয়ে। অবশ্য যারা বুঝেন তারাতো বুঝতেই পারেন প্রকৃত ব্যাপার, কিন্তু যারা অতিসাধারণ, নেটে যা পড়েন তাই সত্য বলে মনে করেন তাদের অবস্থা কি? বিশেষ করে ফেইসবুকের কল্যাণে আজকাল অনেক স্কুল, কলেজের ছাত্ররা নেটে এইসব তথ্য দেখে এবং ক্রমাগত বিভ্রান্ত হচ্ছে।
আমাদের দেশে আবেগের দিক খেকে প্রধান যে ব্যাপারটি রয়েছে তা হল ধর্মীয় আবেগ। আর এই আবেগকে পুঁজি করে ব্যবসা করছে একদল স্বার্থান্বেষী মানুষ। রাজনৈতিক নেতারা যেমন নির্বাচনের জন্য এটিকে ব্যাবহার করছেন, তেমনিভাবে ফেইসবুকে অনেকে আছেন নিজের পেইজের জন্য এটিকে ব্যাবহার করছেন।
নাস্তিক আর আস্তিকতার নামে শুরু হয়েছে ব্লগ এবং ফেইসবুকে আর একটি খেলা। একদল নিজেদেরকে নাস্তিক বলে গর্ব বোধ করছে একইভাবে একদল ধর্ম ঠিকভাবে না বুঝেই তর্কের জন্য তর্ক করছে ধর্ম নিয়ে। আর এই দুইদলের মাঝে পড়ে বিভ্রান্ত হচ্ছে অনেক সাধারণ মানুষ।
আমাদের দেশে আর একটি সমস্যা হল গৌণ ব্যাপারগুলো বেশি প্রাধান্য পায় আমাদের কাছে। কিছু একটা ঘটলে নানান রকমের কথা উঠে আসে নানা জ্ঞানী মানুষদের মাধ্যমে। আমরাও সোচ্চার হয়ে উঠি। কিন্তু সময়ের সাথে থেমে যায় সব। আমরা নতুন উত্তেজনা খুঁজি। ভুলে যাই সব। আর তাই আমরা অনেকে ভুলে গেছি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের কথা। ভুলে যাই শেয়ার বাজারের কথা, ভুলে যাই পুলিশের নানান আগ্রাসন, ভুলে যাই শিক্ষকদের আন্দোলনের উপরে অত্যাচার, দেশের নানান দুর্নীতি আমাদের অগোচরে গোচরে চলতে থাকে আমাদের কোন হদিস থাকেনা। হঠাৎ করে আবার কিছু একটা আমাদের ইমোশনে আঘাত করে, আমরা তখন হয়ে যায় চরম বিপ্লবী।
সবচেয়ে কষ্ট পাই ফেইসবুকের পেইজগুলো দেখলে। আমি লিংক দিলাম না। আপনারা কয়েকটা পেইজ দেখলেই বুঝবেন। একই পেইজে কখনও স্বাধীনতা নিয়ে পোস্ট, কখনও ধর্মীয় পোস্ট, কখনও বা বিনোদন, কখনও ১৮+, কখনও আবার ব্যঙ্গাত্মক। অনেক সময় দেখা যায় যে কোন একটা কিছুর সত্যতা না যাচাই করেই নানান পেইজে দেয়া হয়। এরপর শুরু হয় আরেক বিভ্রান্তি। বোঝার কোন উপায় নেই আসলে এডমিন কি?? কি লক্ষ্য তার। কি চায় সে?? পেইজের জন্য এত কিছু?? কি পাবে পেইজ থেকে?
সবার প্রতি অনুরোধ এই ব্যাপারগুলিতে আমরা সচেতন হই। ব্লগ মত প্রকার করার একটা মাধ্যম। কিন্তু আজ এটি হয়ে উঠেছে নানান সিন্ডিকেটের আড্ডা। উদ্দেশ্য প্রণোদিত-ভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। তাই নানান উল্টা-পাল্টা লিখার মাঝে আমি হন্য হয়ে খুঁজি ভালো লিখা। আর আজ আমি সব লিখা দেখলেই বিশ্বাস করতে পারিনা। আবার আমাকে নেটে খুঁজে দেখতে হয় তথ্য সঠিক কিনা। সবার প্রতি অনুরোধ এই ব্যাপারটি ঠিক করুন। স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরা এখনই বিভ্রান্ত হয়ে পড়া নিশ্চয় শুভকর নয়।
আর নিজের আবেগকে নিজেই বোঝার চেষ্টা করি চলুন। ভেবে দেখুন আমাদের আবেগ নিয়ে কেউ খেলছে না তো? সস্তা খেলার পাত্র যাতে না হয়ে যায় আমাদের ইমোশন।
কষ্ট করে আমার লিখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। যদি কোন ভুল-ভ্রান্তি থাকে ক্ষমা করে দিবেন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




