somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

- *এই সব পোকা, এই সব মাকড়*

১২ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমাদের বাসা, স্পেশালি আমার রুমটা, যাকে বলে এক্কেবারে, পোকামাকড় আর কীটপতঙ্গের অভয়ারণ্য । টিকটিক টিকিটিকি থেকে শুরু করে, ছোট মাইক্রো-সাইজের লাল পিঁপড়া, তাদের স্বজাতি বড় কালো আম-পিঁপড়া, আমাজনের আটপাওয়ালা মাকড়শা, টিউব্লাইটের আলো-খেকো ছোট ছোট পোকা, আফ্রিকান বড় বড় তেল চুকচুকে তেলাপোকা... কী নাই আমার রুমে! মাঝে মাঝে যখন নিজের রুমে ঢুকি,অরা সবাই এমনভাবে আমার দিকে তাকায়, নিজেকে যেন কোন ভিনগ্রহের প্রানী বলে বোধ হয়। বড় লজ্জা লাগতে থাকে, মনে হয় আমি যেন ওদের ঘরে না বলে ঢুইকা গেছি। ইদানিং তাই রুমে ঢুকার আগে নক করি, টিকটিকি টা টিক-টিক সিগ্ন্যাল দিলে পরে ঢুকি।

আর আমার রুমের পাশে যে বাথরুম, সেটার কথা আর কী বলব! সেখানে বিকেলের দিকে একটু রোদ এসে পরে, আর তাই অরা অইটাকে তাদের রমনা পার্ক বানায় ফালাইসে। বিকেলের দিকে গেলে তাই দেখা যায়, কী মনোহর দৃশ্য! বাবারে, জোড়ায় জোড়ায় লাল পিঁপড়া, কালো পিপড়া, ছোট-বড় টিকটিকি ঘুরতেছে। কেউ কেউ আবার উনাদের পুরা পরিবার- মা টিকটিকি, বাবু টিকটিকি, দাদি পিঁপড়া, নানু পিঁপড়া, ননদ-জা চৌদ্দ-গোষ্ঠী নিয়া চইলা আসছে!

আমার বাথরুম যদি হয় ওদের রমনা পার্ক, তাইলে গেস করেন তো ওদের বাথরুম কোনটা? আমার রিডিং টেবিল টা হইল ওদের সাধের বাথরুম। এমন সুচিন্তিত বাথরুম নিরবাচন দেখে অবশ্য আমি ওদের প্রসংশা না করে পারলাম না! কিন্তু প্রতিদিন চারবেলা উনাদের বাথ্রুম, আই মিন আমার রিডিং টেবিল পরিষ্কার করতে করতে আমার জান কয়লা। যখন চেয়ার-টেবিলে পড়তে বসি, ভয়ে ভয়ে থাকি, কোন্সময় না তেনারা আবার ছাদ থেকে আমার মাথাটা কে এইম করেন। তাই পড়তে বসলে এখন মাথা দুলায়ে দুলায়ে পড়তে থাকি। এট লিস্ট আমার মাথারে এইম করলেও, এইম টা যেন মিস হয়।

তয় যতই দিন যাইতেসে, টিকটিকি গুলান ততই অসভ্য হইতেসে। দেয়ালে কোন জায়গায় দুইটা একসাথে হইলেই কাম সারছে। একটা আরেকটার উপর উইঠা যায়! ছিঃ, কি অশ্লীল!! আরে বাপ, মিনিমাম প্রাইভেসিটা অন্তত মেনটেইন করে।

তবে এতদিন একসাথে থাকতে থাকতে ওদের প্রতি আমার একটা মায়া পড়ে গেছে! মাঝে মাঝে আমি তাই মাটিতে কোনায়-কানায় এক্টু-আধতু মধু ওদের জন্য রেখে দেই। ওমা! একদিন দেখি সেই মধু খেয়ে এক পিঁপড়া মহারাণী পুরা টাল হয়ে, চোখ-মুখ উলটে পড়ে আছে। দেখে খারাপ লাগলো, আহা বেচারি বুঝি লোভে পড়ে বেশি খেয়ে ফেলসে। দুঃখ লাগলো। কি করা যায়, কি করা যায় ভাবতে ভাবতে তাকায় দেখি পাশে আরেকটা পিঁপড়া ঘুরতেসে (বয়ফ্রেন্ড হবে মনে অয়)। ভাবলাম বেচারা বোধহয় আমার ভয়ে কাছে আস্তেসেনা। একটু দুরে সরে গেলাম। ওমা, দেখি অই বিশ্বাসঘাতক আরো দুরে চলে যাচ্ছে। অবাক হয়ে গেলাম, কী ঘোর কলিকাল রে বাবা! ইচ্ছা হইতেসিল বদমাশটার কান-পাশটায় জোরে ধরে একটা চটকনা লাগায়ে দেই। যাই হোক অইটা তো আর করতে পারলাম না, তার বদলে অই পালিয়ে যাওয়া পিঁপড়াটাকে ধরে এনে অই অজ্ঞান পিপরার পাশে রেখে দিলাম। দেখি বাছাধন এখন তোমার বান্ধবিরে না নিয়া যাও ক্যামনে? কিন্তু ভাল করে তাকায় দেখি আমার আঙ্গুলের চাপে বয়ফ্রেন্ড পিপরাঁড় দফা-রফা অবস্থা, এমনকি অই টাল বান্ধবির থেকেও খারাপ। এখন তো আমি বিপদে পইড়া গেলাম! কি করা যায়? ভেবে দেখলাম এখন আমার শেষ ভরসা মধু-খেয়ে টাল হয়ে পড়ে থাকা গার্ল-ফ্রেন্ড পিঁপড়া। একটু পানি এনে তাই অটার উপর ছিটায় দিলাম, যদি জ্ঞান-ট্যান আসে! বাট, মড়ার উপরে খড়ার ঘা। পানির ফোটার ভার সইতে না পেরে পিপড়াটার অবস্থা দেখি আর খারাপ হয়ে গেল। যাই হোক সেদিনের মত ক্ষান্ত দিলাম।
আর কান ধরে উঠ-বস করলাম, জীবনেও আর কোন দিন অন্যের উপকার করতে যামুনা।
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×