আগুনে পোড়া শোক এখনও মুছে যায় নাই, শুরু হয়ে গেছে সুযোগসন্ধানীদের নগ্ন, নির্লজ্জ পদচারনা। জামাত দিয়ে শুরু, প্রধানমন্ত্রী দিয়ে শেষ। টিভির সংবাদগুলোতে অর্ধেক সময় জুড়ে দেখি এইসব মানুষের হাসি মুখে দুঃখের মাতম। দুই বোন এর অসহায়ত্ব এখন এইসব পশুদের ব্যবসার কাচামাল। এত কম খরচে এমন বিশাল প্রচার এযুগে সৌভাগ্যবানের কপালেই জোটে। প্রাথমিকভাবে জামাতের উচিৎ ছিল তাদের আইডিয়া চুরির জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিরূদ্ধে মামলা করা। প্রধানমন্ত্রী মোটামুটি আইডিয়াটা ছিনতাই করেছেন বললে ভুল হবে না।
পশ্চিমা আধুনিকতার যুগে আজ সবকিছুই পন্য। মানুষের দুঃখ, মানুষের মৃত্যু, মানুষের অসহায়ত্ব - সব। ভগ্নিরা আমার, পরিবার হারানোর ৫দিনের মাথায় এই গায়ে হলুদের মহোৎসব তোমাদের কেমন লাগছে জানিনা - বিধাতা তোমাদের সহায় হোন। আমি লজ্জাবোধ করছি যে আমাকে এসব দেখতে হচ্ছে, এগুলা কি আর কয়দিন পরে করলে হত না? বিপুল উৎসাহে বিয়ের কেনা কাটা চলছে, ১৬ ভরি সোনা দেয়া হবে দুই বোনকে। এসব কিছু ঘটা করে টিভিতে প্রচার হচ্ছে। গনভবনের কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর গুন গাইতে গাইতে মুখে ফেনা তুলে ফেলছেন। সেকি প্রচার! প্রকৃত দানশীলরা জানি গোপনেই দান করেন, এখানে দেখি প্রচারের মহোৎসব। আমার চোখ খালি লজ্জাবনত ভগ্নিদ্বয়ের মুখের দিকে আটকে যায়।
বিয়ের পর্ব শেষে শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রান ভান্ডারে ব্যবসায়ীদের সাহায্যের নাটক। হাসতে হাসতে একেকজনের তেলতেলে গাল টোমেটোর মতো লাল হয়ে যাচ্ছে একেবারে। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার হাসে, প্রধানমন্ত্রী হাসে, চ্যালা চামুন্ডা হাসে। এটা কি হাসির উপলক্ষ? ওদের মুখে আগুনে পোড়া কষ্ট তো দেখি না। সাহায্য দেয়ার জন্য টিভি ক্যামেরা একটা অত্যাবশ্যক নিয়ামক, এটা ছাড়া কেউ সাহায্য দিতে অথবা নিতে নারাজ। দুই পক্ষই প্রচার চায়।
১১৮ টা লাশ আজকে কত লোকের উপকার করল। বেচে থাকলে নিশ্চই এত মানুষকে খুশী করতে পারত না। সাংবাদিক খুশী, প্রধানমন্ত্রী খুশী, ব্যবসায়ী খুশী। কাঁদে খালি ১১৮ টা লাশ, ওরা এই আনন্দে ভাগ বসাতে পারল না।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১০ সকাল ৯:০৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




