somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আব্বাজান ! আব্বাজান !!

১৪ ই নভেম্বর, ২০১০ রাত ১১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(সামুতে আসিয়া প্রথম লেখাটা আমার শ্রদ্ধেয় আব্বাজানের উদ্দেশ্য উৎসর্গ করিলাম!)

আব্বাজানের উপর আমি আজকাল খুব নাখোশ থাকি। তাহার কর্মকান্ড আজকাল খুব শিশুসুলভ হইয়া যাইতেছে। আজ আব্বাজানকে বলিলাম ‘তুমি এখনো পুলাপান, তুমার এখনও বিবাহের বয়স হয় নাইক্কা’! তাহার সহিত আমার কথোপকথন এইরূপই হইয়া থাকে! তারপরও কথাখানি শুনিয়া তার খোমা হইয়াছিল এই রকম :|। কিছুক্ষন পর মুখ ফিরাইয়া আবার বাক্সবিনুদুনে মনোযোগী হইল।

এইরূপে সেও একদা আমাকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিল ‘বৎস, তুমি তুমার শয়নকক্ষের দরজা খিল্লি মারিয়া ভিতরে কি কর? খিল্লি মারিবার দরকার টা কি?’

উত্তরে আমি পাল্টা প্রশ্ন করিলাম ‘তুমাকে ত ছুটবেলা থেকেই দেখতেছি শয়নকক্ষের দরজা আটকাইয়া রাখ। ইহার কারন কি? তুমি দরজার আড়ালে বসিয়া কি কর?’ ওমা একথা শুনিয়া সে দেখি লইজ্জা পায়।;)

লইজ্জা অবশ্য আমিও পাইতাম, ছাত্রাবস্থায় মাস না শেষ হইতে যখন ভিক্ষার ঝুলি নিয়া হাজির হইতাম। লজ্জা নিবারনের জন্যই কিনা জানি না (নাকি লজ্জা দিবার জন্য?) সে এই বিশেষ ভিক্ষাকে একখানা বিশেষ উপাধিতে ডাকিত। আমাকে জিজ্ঞাসা করিত, ‘ এই মাসের ভাতা কত লাগিবে?’:((

ভাতা লইয়াই যেহেতু কথা উঠিল তখন বলিয়া ফেলি একদা বাজারে গিয়া কি হইয়াছিল। একখানা ভাল পাদুকা কিনার নিমিত্তে হাজির হইলাম খ্যতনামা এক দোকানে। যেই টাই পছন্দ হয় দেখি বহুত দাম। কেমনে কিনি? পিতা শুধাইলা ‘বৎস তুমার কি কোনটাই পছন্দ হয় নাই?’ আমি সত্য কথাই কহিলাম। আমি সবসময় সত্যই বলে থাকি। বলিলাম ‘পছন্দ ত হইয়াছে কিন্তু এত টাকা কোথা হইতে আসিবে?’ আমার একথায় যারপর নাই বিরক্ত হইয়া সে কহিল, ‘ওহে গর্দভ, টাকা কোথা হইতে আসে এইটা নিয়া চিন্তার কি আছে? টাকা ত মেশিনে ছাপা হয় ।’ (তাহার মালকড়ি বোঝহয় খুব চুলকাইতেছিল!):D

সর্বসময়ে তাহার রূপ যে এমন উদার থাকে তাহা নহে। একবার কি হইল বলি। সে কিশোর বেলার কথা। ভয়াবহ ইতরামী করিতে যাইয়া হাতে নাতে ধরা খাইলাম। সে মুটামুটি গর্জন করিয়া বলিল, ‘ওহে সারমেয় সন্তান।’ আমি গম্ভীর মুখে শুধাইলাম ‘ওহে সারমেয়’। সে যেন আকাশ হইতে পরিল, ‘কি বলিলি, কি বলিলি তুই?’ “আমি যদি সারমেয় সন্তান হইয়া থাকি তাহা হইলে তুমি সারমেয় হইবে না কেন?” আমি উত্তর করিলাম। এই ঘটনার পর হইতে তার মুখের বাণী সমূহ বেশ সতর্ক হইয়া উঠিয়াছিল।:)

আজকের গল্প শেষ করিতে চাই তাহার আরেক খানা বাণী শুনাইয়া। একদা ভাষার মাস ফেব্রুয়ারীতে সে অভিযোগ করিল ‘আমি কেন একুশে ফেব্রুয়ারীর প্রভাত ফেরীতে নগ্ন পদে যাইনা এবং কেন আর দশজন তরুন যুবকের ন্যয় ফুল ছিটাইনা। আমার বয়সে সে নাকি রমনীদিগকে সাথে করিয়া ফুল তুলিয়া সেই ফুল ছিটাইয়া আসিত’। আমি কহিলাম ‘অন্যায় হইয়াছে। ক্ষমা দাও। চল বইমেলা প্রাঙ্গন হইতে ঘুরিয়া আসি। এই বৎসর অনেক বহি কিনিতে ইচ্ছুক’। সে কি বলিল জানেন? বলে কিনা ‘ আমি মুখ্খু শুক্কু মানুষ। বই মেলায় যাতায়াতে তেমন ফল হইবে না। তুমি একাই ঘুরিয়া আস। বই কিনিতেই হইবে এমন ত কোন কথা নাই। অংশগ্রহনটাই বড় কথা।‘ (এক্ষনে মালকড়িতে টান পড়িয়াছে!) /:)

আমি গল্প লিখিতে পারি না। এই গল্পগুলি আপনাদের কেমন লাগিল জানাইবেন। কেননা গল্প আরও আছে।

যদি চান ত রেলগাড়ী চলিবে। নচেৎ নহে।:-/

(ওহ..আইচ্ছা..সামু ব্লগে রেজি করলাম নতুন..প্রথম লেখা তাই ভাল হয় নাই। আপনাদের ভাল না লাগলে বলবেন ! )
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:৪৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×