ঢাকা থেকে প্রায় ৩১৫ কিলোমিটার দূরে আমার বাড়ী। বাড়িতে বাবা-মা’ই শুধু থাকেন আর জীবনের তাগিদে আমি থাকি ঢাকায়।
কয়েক বছর আগে বাড়ি ছেড়ে যখন বাড়ির বাইরে পড়াশোনার জন্য চলে আসি, আমাকে ষ্টেশনে রেখে আব্বা যখন চলে যাচ্ছে; তখন পার্বতীপুর রেলওয়ে ষ্টেশনে হতবিহ্বল এক বালক আমি।
ইঞ্জিন হুইসেল দিচ্ছে, গার্ড সবুজ পতাকা ওড়াচ্ছে, সীমান্ত আন্তঃনগর ট্রেনটি চলতে শুরু করল— নিজের আবেগ সামলে রেখে জানালা দিয়ে মুখ বের করে আমি হাসছি। খানিকক্ষণ আগেই বাবা বলছিল- ‘চিন্তা নেই, একা থাকতে পারবি।’
এদিকে সদ্য কলেজ পার করা আমার বুকে চেপে বসল একাকিত্ব। সেই একাকিত্বের বেদনা এখন কুরে কুরে খাচ্ছে বাবা-মা সহ আমি।
‘অনেক দিন বাড়ি আসিস না, কবে আসবি?’
‘আব্বা, কাজের অনেক চাপ।’
বাড়ি যাওয়া হয় না মাসের পর মাস। তাই বলে কি বাবার প্রতি ছেলে হিসেবে আমার কোন টান নেই! অবশ্যই আছে। ঢাকায় এখনো কোনো রেললাইন দেখলেই মনে হয়; আহারে, এই রেললাইনই তো আমাকে বাড়ি নিয়ে যেতে পারে। ঢাকা টু পার্বতীপুর বাস দেখলেই মনে হয় এই বাসের চাকায় মিশে আছে আমার বাড়ির ধুলো-মাটি-কাদা।
অনুভূতি, অনুভব সবই আছে কিন্তু যাওয়াটা হয় না সব সময়। প্রকাশটাও হয়তো ওতটা প্রাণবন্ত নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:২১