রাডারের খোঁজে
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
সময়টা সম্ভাবত ১৯৯৯ বা ২০০০ সাল হবে , তখন হাইস্কুলের ছাত্র ছিলাম , লেখা পড়া ভালই চলছিল , কিন্তু সেই সময়ে একটা কথাই চারিদিকে শুনা যাচ্ছিল রাডার বা পিলার , চায়ের দোকান হতে শুরু করে হাটবাজারে একই আলোচনার ঝড় তাই মনে মাঝে একটা কৌতূহল তৈরি হলো , তাই রাডার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করলাম । যখনই কেউ রাডার নিয়ে আলোচনা করতো তখনই তাদের পাশে দাঁড়াইয়া কথা শুনতাম এবং এক সময়ে জানতে পারলাম একটি রাডারের দাম প্রায় ৫০০/৬০০ কোটি টাকা মনে ভাবতাম রাডারে সন্ধানে নামতে হয় , বুঝতেই তো পারছেন ছাত্রদের টাকার সমস্যা সব সময়ই থাকে , আর এতো টাকার ব্যাপার স্যাপার , তাই তো এই বিষয়টা নিয়ে ভাবতেই হয় তখন ভাবতাম একটা রাডার পাইয়া গেলে বিক্রি করে এই টাকা দিয়া খামু আর ঘুরমু পড়া লেখা কইরা কি হইবো বেশি হলেই ৩০-৪০ হাজার টাকা বেতনে একটা চাকরী পামু , এর চেয়ে তো বেশি কিছু পামুনা তাই ক্লাসে বন্ধুদের নিয়ে এই আলোচনা করতাম , তারাও আগ্রহ নিয়ে আলোচনা করতো । তাই সবার অজান্তে ৪ জন বন্ধু মিলে বুদ্ধি করলাম রাডার খুজার অভিযানে নামুম । তাই সাড়া দিন ঘুরে বেড়াতাম কোথায় পিলার আছে রাস্তার পাশে খেতের আইলে সীমানা নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন স্থানে খুটি ছিল , সেই গুলা দিনের বেলায় চিনহিত করে আসতাম , আর রাতের বেলায় চার জন্য মিলে এলাকার যেতো পিলার ছিল , মানে সীমানা নির্ধারণের জন্য যেই সব খুটি ছিল সব খুইদ্ধা মুইদ্ধা তছনছ কইরা ফালাইছি , কিন্তু সোনার হরিনের দেখা নাই । তাই গ্রামের সব পিলার খোদা শেষ এখন অন্য গ্রামের দিকে দৃষ্টি পাশের একটি গ্রামের অভিযান চালাতে হবে সেই জন্য দিনের বেলায় গিয়ে পিলার পরিদর্শন করে এলাম , রাতে খাটের নিচ থেকে হাত সাবালটা নিলাম , এটা কিছু দিন আগের ২০০ টাকা দিয়ে কামাড় বাড়ি থেকে ওয়াডার দিয়ে বানিয়েছিলাম মাটি খোদার জন্য সেইটা নিয়ে রাত ১০ টার দিকে বেড় হচ্ছিলাম , হঠায় করেই বড় ভাই বুঝে গেলো আমি কোথায় যাচ্ছি তখন আমাকে বলে কৈ যাচ্ছ , আমি বললাম একটু বাইরে যাচ্ছি , তায় হাতে সাবল কেন ? তার এই প্রশ্নের উওর দিতে গিয়ে ধরা খাইলাম , কারণ সম্পূর্ণ রেডি হয়েই ঘর থেকে বেড় হচ্ছিলাম , সাথে একটা বড় স্কুপড্রাইবার ছিল এবং পেন্টের সাথে বাধা দুইটা চাক্কু ছিল এবং টচ লাইটও ছিল , যে কোন পরিস্থিতিতে পড়লে যেন নিজেদের রক্ষা করে পালিয়ে যেতে পারি এই জন্যই এইসব রাখা । তাই দেখে সে কিছুটা আন্তাজ করতে পারলো এবং আমাকে জেরা শুরু করে দিলো । তাই আর উপায় না দেখে বলেই ফেললাম রাডারের খুজে বেড় হচ্ছি সে আমার কথা শুনে বলে তোর সাথে আর কে কে আছে ? তখন ভয়ে বলে দিলাম বন্ধুদের নাম তখন আমাকে বলে তাহলে গ্রামের বাড়ি ঘর জমি জমা নির্ধারণের জন্য যেই খুটা গুলা ছিল এই সব তরাই তুলেছস মাথা নিচু করে জবাব দিলাম হ্যা তখন জোড় গলায় বললাম ভাই আপনার বিদেশে যেতে হবেনা, খালি একটূ দোয়া করেন একটা রাডার পাইলেই হইবো আর কুনু দিন কাজ কইরা খাইতে হবেনা । এই কথা বলার সাথে সাথে কানের কাছে একটা শব্দ হইলো আর আমি গিয়ে পড়লাম পড়ার টেবিলের নিচে তখন মনে হইলো কানের মধ্যে কে যেন আগুন ধরাইয়া দিছে কানডা ফাঁৎ ফাঁৎ করে জ্বলতে ছিল, তখন বুঝলাম বড় ভাই থাপ্পড় দিছে :'( কিন্তু আমি তো বাম কানে কিছুই শুনতাছিনা মনে হচ্ছে কানের কাছে ভ্রুমর ভোন ভোন করছে । কিছু বলার আগেই বড় ভাই বলে দিলো রাডার মাডার এখন আর দেশের নাই , সেই গুলা যুদ্ধের পরই সব চুরি হইয়া গেছে , সেনা বাহিনীর কিছু মেজর এবং রাজনীতি দলের কিছু নেতারা সেই গুলা খুজে খুজে বেড় করে সব বিদেশে বিক্রি করে দিয়েছে । তার এই কথা শুনে মনে হইলো সেই অনেক কিছুই জানে রাডার সম্পর্কে এবং ভাই আমাকে সাবধান করে দিলো ,এইভাবে আজাইরা সময় যাতে নষ্ট করিছ না , এবং পড়া লেখা ঠিক মতন করি , এই রাতে যদি এই অবস্থায় কেউ দেখে তাইলে চোর মনে করে মাইরা ভর্তা বানাইয়া দিবে । তার কথা মতন চুপ হয়ে গেলাম , মনে মনে ভাবলাম আর কয় দিন তুমি দেশে আছোই, তুমি বিদেশে চলে গেচলে তখন তো আমার রাজত্য চলবে , তাই বন্ধুদের বললাম কয় দিনের জন্য আমাদের কায্যকর্ম বন্ধ রাখতে হবে , বড় ভাই কুরিয়া যাচ্ছে এই মাসের ১৪ তারিখে , আর মাত্র ১২ দিন বাকি , তাই এই ১২ দিন কিছুই করা যাবেনা । আর তখন আমি একা থাকবো , আর আমাদের ঐ ঘরে রাত ৩ টা বাজে বাড়ি ফিরলেও সমস্যা হবেনা , এবং তরাও মাঝে মাঝে এসে ঘরে থাকতে পারবি । যেমন কথা তেমন কাজ ১৪ তারিখে বড় ভাই দক্ষিন কুরিয়া চলে গেলো । আর আমরা আবারো আগের কাজে ফিরে এলাম , এভাবে কয় দিন চললো কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিলনা । তার কয় দিন পরই লোক মুখে জানতে পেলায় আমাদের গ্রাম থেকে প্রায় ৭-৮ মাইল দূরে এক গ্রাম থেকে কাড়া জানি রাডার উঠাইয়া নিয়া গেছে , আধুনিক উপায়ে এক রাতেই এতো বড় বিসাল গর্ত করে সবার অজান্তে রাডার নিয়া গেলো কেমতে এই নিয়েই সবাই আলোচনা করছে , তাই আমরা নিজেদের আরো শক্তিশালী করতে এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সেই স্থনে পরিদর্শনে গেলাম , তারা কিভাবে রাডার তুলেছে দেখে , এতে আমাদের অভিজ্ঞতা বাড়বে তাই গিয়ে ঐ স্থান পরিদর্শন করে এলাম , আর প্ল্যান্ট নিলাম আরো আধুনিক হতে হবে আমাদের তাই গ্রামের একটা মেপ দরকার আর ম্যাপ হলে পিলার নির্ধারণ করা সহজ হবে , তাই ম্যাপ কিভাবে পাওয়া যায় বুদ্ধি আটলাম , আমাদের গ্রামে একজন আমীন আছে জিনি বাড়ি মাপ জোপ করে থাকেন , তার কাছে আমাদের এলাকার সব গ্রামের ম্যাপ আছে , তার তার ছেলেকে সাথে আনতে হবে , আমাদের এই দলে তাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে , প্ল্যান্ট মতন তার ছেলে বিল্লালকে পানি পড়া খাওয়াইলাম সে আমাদের কথা শুনে বেশ অবাক হলো এবং আমাদের সাথে কাজ করতে রাজি হলো , কিন্তু রাতের বেলায় আমাদের সাথে কোন অপারেশনে যাইতে পারবেনা তার আব্বা জানতে পারলে নাকি মাইরা হালাইবোআমরা বললাম ঠিক আছে তোকে কোথায় যেতে হবেনা , যা করার আমরাই করবো এবং সমান ভাগ তুইও পাবি । তখন তাকে বললাম তোর আব্বা তো আমীন আমাদের আশেপাশে সব গ্রামের ম্যাপ তার কাছে আছে , তাই ঐ গুলা আমাদের দিতে হবে আর ঐ ম্যাপ থাকলে আমাদের রাডার খুজতে সুবিধা হবে । কিন্তু বিল্লাল বলে এইগুলা দেওয়া সভবনা এই গুলা দামি কাগজপত্র তাই দেওয়া যাবেনা এবং তার আব্বা জানতে পারলে খবর আছে , আমরা বললাম এইগুলা আমরা নিবোও না , তুই দুই ঘন্টার জন্য শুধু এনে দে , বাজার থেকে সব গুলা ফটো কপি করে নিবো । তাই সে রাজি হলো আর সব গুলা ম্যাপের ফটো কপি করে নিলাম । এবং প্রতিদিন রাতে আমাদের সার্চ অভিযান চলছে , কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছেনা , তাই ম্যাপ দেখে পুরাণ রাডার গুলা নির্ধারণ করছিলাম । ম্যাপ এর মধ্যে যেখানে পিলারের চিনহ ছিলো সেখানে লাল কলম দিয়ে গোল চিনহ করে রাখতাম । এবং দিনের বেলায় পরিদর্শন করে রাতে অপারেশনে যাইতাম , দিন যেতই যাচ্ছে আমাদের প্রযক্তি ততোই উন্নত হচ্ছে , ভাই নাই আর আমি এক ঘরে একা থাকি , এখন আমার ঘরটা একটা গবেষণা গারে পরিণত হয়েছে প্রতিদিন ক্লাসে স্যারের হাতে মাইর খাইতাম কারণ পড়ালেখার সময়ই পাইতামনা এই ব্যস্ততার কারনে , তো হঠাত এক দিন আমার মামা এসে উপস্থিত । মামার সাথে দেখা হলো কথা হলো সবাই ভালো আছে নাকি জিজ্ঞাসা করলাম, সবই ভালো , বিকাল দিকে আমিও বেড় হয়ে গেলাম আমার কাজে , কিন্তু রাত ৯ টার দিকে দেখি মামা আমার ঘরে বইসা রইছে আমার সব কাগজ পত্র দেখতাছে এবং দেখে সে সিউর হইয়া গেছে আমি সোনার হরিণের খোজে আছি । আমি যখন ঘরে ঢুকলাম মামা আমাকে দেখে অবাক দুনিয়ার সব ম্যাপ স্কেল ইঞ্চিটেব স্কুপড্রাইবার সবই আমার ঘরে , এবং স্পেশিয়াল সব যন্ত্রপাতি দেখে মামা আমাকে বলে কিরে তুই কি রাডারের খুজে বেড়াচ্ছ নাকি তখন বড় ভাইয়ের থাপ্পরের কথা মনে পড়ে গেলো তাই মামার কাছ থেকে লুকানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু না মামা নিজেই স্বীকার করলো সে এই পথেই আছে । সেও রাডার খুজে বেড়াচ্ছে এবং তাদের বাহিনি অনেক বড় , তাই মামা আমাকে বললো কালকে আমার সাথে আমাদের বাড়িতে চল তোকে এই বিষয়ে আরেকটুকু জ্ঞান বুদ্ধি দিয়া দিমুনে । তখন বললাম আমি এই পথে একা নয় আমার আরো তিন বন্ধু আছে , তাদেরকে সাথে নিয়ে কাল বিকালে আপনাদের বাড়িতে আসবো । কথা মতন তার পর দিন বিকালে গিয়ে হাজির হলাম মামা বাড়ি মামী আমাদের দেখেই কিছুটা সন্দেহ করে ফেললো আদর যন্ত করার আগেই সে ক্ষেইপ্পা গেলো ঝাড়ু দিয়া পিডানোর অবস্থা হইয়া গেলো , যায় খুশি তাই বলেই আমাদের গালাগালি শুরু কইরা দিলো কয় তোর মামার ভুতে তরেও পাইছে , এই রাডার রাডার করে তো আজকা ১ বছর ধরে কাম কাজ বন্ধ কইরা দিয়ে আজকা ওখানে যায় , কালকা আরেক জাগায়, সংসার নিয়ে তো কোন চিন্তাভাবনাই নাই আমরা কি খেয়ে আছি না নাখেয়ে আছি সেই দিকে লক্ষ নাই , তিনি তো প্রতি দিনই কোটি টাকার মালিক হইয়া যায় , এই রাডার রাডার করতে করতে ১০ ঘন্টা একটা জমিও বিক্রি করলো ১৩ লাখ টাকা , কিন্তু একটা টাকা চোখেও দেখলামনা এতো টাকা কী করলো কে জানে , এখন আবার আরেকটা জমি বিক্রি করার জন্য পার্টি খোজতেছে মামীর এই কথা শুনে বুঝলাম মামা তো তাহলে এর পেছনে অনেক টাকা বিনোয়গ করেছে কিছুটা আশাহত হলাম মামীর কথা শুনে তার পর মামী ঘরে নিয়া টেং এর শরবত বানাইয়া দিলো, বিস্কুট মিস্কূট দিয়া অনেক ক্ষন বুঝাইলো বাবা তোরা বাচ্চা মানুষ এই দিকে নজর না দিয়ে লেখা পড়া কর , এই গোলা কইরা জীবন ধ্বংস হওয়া ছাড়া আর কিছুই হবেনা একটু পরই মামা আইলও কৈ থেকে জানি , আমাদের দেখে ডেকে নিয়ে গেলো তার এক বন্ধুর বাড়িতে ওখানে গিয়া তো অবাক হইলাম :O রাডার কিভাবে উঠাতে হয় সব বিস্তারিত ছবি সহ বই প্রস্তকের অভাব নাই আর যন্ত্র পাতির তো অভাবই নাই । রাডার সম্পর্কে মামু আমাদের বিভিন্ন টিপস দিতে লাগলো এবং রাস্তাঘাটে যেই সব খুটি মুটি আছে এই গুলা খোদাখুদি করতে না করে দিলো এবং একটি বিশাল আকৃতির ম্যাপ দিলো, যেখানে যেখানে রাডার থাকার সম্ভাবনা আছে এবং কিভাবে উদ্ধার করতে হবে তায় ঠিক করে দিলো , আমরাও তাদের কথা শুনে নতুন অনেক কিছুই জানতে পারলাম । তাদের দেওয়া সুত্র ধরেই এখন এগুতে থাকলাম , আগের মতন আর বাড়ি ঘরের সীমানা নির্ধারণয় খুটি মুটি আর খোদাখুদি করিনাহ ।তার কিছু দিন পর আমাদের গ্রাম থেকে প্রায় ২ মাইল দূরে একটা গ্রামে একটা স্থান নির্ধারণ করলাম । আমরা প্রায় ৮০% সিউর হলাম এই খানে রাডার আছে , কিন্তু একটু সমস্যা হলো সেই স্থানে পিলারটা ছিল সেটা একটি গোড়স্থানে । এই গোরস্থানটি একনামেই এলাকার মানুষ চিনে , এলাকার মানুষ মারা গেলে ঐ গোড়স্থানেই মাটি দেওয়া হয় প্রায় ৮০ ভাগ মানুষকে । কিন্তু এমন একটি স্থানে মানুষ দিনের বেলায় যেতে ভয় পায় , অনেক জঙ্গল , তাই কি করা যায় ভাবলে লাগলাম এখানে তো আর রাতের বেলায় এসে গর্ত করে পিলার উঠানো যাবেনা তাই তার পরেই গোড়স্থানে গিয়ে জঙ্গল কেটে ছিরে স্থান নির্বাচন করলাম , দেখলাম পিলারের মাথা একটু দেখা যায় সম্ভাবত ৪-৫ হাত আরো গর্ত করতে হবে , সাথে চুম্বুক ছিল ট্রাই করে দেখলাম চুম্বুক লাগে কিনা না কোন কিছু বুঝা গেলোনা তার পরেও হাল ছারলাম না , বুদ্ধি করলাম দিনের বেলায় এসেই গর্ত করে পিলার উঠাবো । তাই কবর স্থান যেই লোক পাহারা দেয় - তাকে বললাম একজন লোক মারা গেছে তাই মাটি দিতে হবে তাই আমরা কবর খোদতে এসেছি তখন তিনি বলে কে মারাগেছে আর কোন গ্রামের ? আর তোমরা এতো ছোট ছোট পোলাপাইন আইছো কেন , তোমরা কবর খোদতে জানো নাকি ?, কুনু ময়মুরব্বি নিয়া আইয়ো এবং কবর রক্ষনাবেক্ষনের জন্য প্রত্যেকটা লাশের স্বজনদের কাছ থেকে আমরা ৫০০ টাকা করে রাখী সেই টাকাও নিয়ে এসো , মনে মনে কৈ মুরব্বি কৈ পামু , যারে এইকথা কমু হেইতেই কানের নিচে চটকনা দিবে জিন ভুতে যাতে না ধরে সেই জন্য গেলাম ফকির বাড়ি , ৫০ টাকা করে ৪টা তাবিজ নিলাম তার পরের দিন রাতে পরিকল্পনা মতন অস্ত্র সস্ত্রে সুস্বরজিত হয়ে গেলাম গোড়স্থানে , তখন রাত প্রায় ১,৩০ মিনিট হবে , যখনই পিলারের চার পাশে মাটি খোদতে ছিলাম তখনই ঐ গ্রামে চিল্লাচাল্লি শুরু হইয়া গেলো মসজিদের মাইক দিয়ে ঘোষণা করা হলো চেয়ারম্যান বাড়িতে ডাকাত এসেছে আপনারা সবাই লাঠি সোটা নিয়ে এগিয়ে আসুন । এমনেতেই শীতের দিন আরো গোড়স্থানে আর সাথে সাবোল চাক্কু স্কোপড্রাইবার আরো কত কি : , কেউ আমাদের দেখলেই ডাকাত মনে করে মাইরা হালাইবো চুপ করে জঙ্গলের ভিতরে ঢুকে পড়লাম চার জন , আর মুখে আল্লাহর নাম নিয়েত আছি , আল্লাহ এই মুহুত্বে বাচাও আর কুনু দিন এই রাডারের খোজে বেড় হবোনা গ্রামের সব মানুষ হইহোল্লার করে লাঠি, বল্প , যুইত্তা , ধাও , বডি নিয়া ডাকাতের খুজে পুরা গ্রাম তছনচ করে ফেলছে কেউ বলে এই দিকে কেউ বলে ঐ দিকে, টচ লাইটের আলোতে ফক ফক করছে আকাশ মনে হলো কয়েক হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে ডাকাত ধরতে । কিছুক্ষণ পর মনে হলো কয়েক জন ডাকাত ধরা পড়েছে আর তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চেয়ারম্যান বাড়িতে । সব মানুষ দলে দলে চেয়ারম্যান বাড়ির দিকে যাচ্ছে , তখন প্রাণ ফিরে পেলাম চারি দিকে তাকিয়ে দেখি সব কিছু স্বাভাবিক , তখন চলে আসবো ভাবতেছি , কিন্তু রবিন বললো এসেছি যখন রাডার নিয়েই যাবো তাই আবার মাটি খোদা শুরু করলাম । একটু গর্ত করার পরই দেখি পিলাদ লড়ে , দুইজনে ধরে টান দিলাম উঠে এলো পিলার ধৈত সালার এইটা তো সাধারন পিলাদ , সীমানা নির্ধারণের জন্যই এই পিলার বসানো হয়েছে সিমেন্টের তৈরি এই পিলার । মর্মাহত হয়ে ফিরে এলাম সকালে ঘুম থেকে উঠলাম ৯ টার দিকে । উঠেই শুনতে পেলাম পাশের গ্রামে ডাকাত এসছিল গোড়স্থানের পিলার চুরি করতে এবং তিন জন ধরা খাইছে মনে মনে একটু হাসলাম গ্রামের চায়ের দোকানে গিয়ে শুনলাম আরেক কাহিনী এই কাহিনী শুনে তো অবাক হইলাম । কারণ আমাদের ধারণা ছিল ১০০ % সত্যি । আজ থেকে ১০-১২ বছর আগে নাকি কবর স্থানের ঐ জাগা থেকে কে বা কাড়া নাকি বিরাট গর্ত করে একটি পিলার নিয়ে গিয়েছিল কিন্তু তখন কেউ ঠিক মতন বলতে পারেনাই কে বা কাড়া কেন এই পিলারটি নিয়ে গেছিল আর সীমানা ঠিক রাখতেই একটি পিলার তখন ওখানে গেঁথে রাখে গোড়স্থানের করতৃপক্ষ । আর সেই পিলারকে রাডার মনে করেই ডাকতারা এতেছিল ওটা নিতে । কিন্তু এটা সিমেন্টের বানানো পিলার ছিল , তাই তারা পিলার এই পিলার না নিয়ে চেয়াম্যনা বাড়িতে ডাকাতি করতে গিয়েছিল । আর সেইখানেই তিন ডাকাত ধরা পড়েছে মনে মনে কইলাম হায়রে ডাকাত ধরাতো পরলি সাথে পিলার চুরির মামলাও খালি তার পর আর অনেক দিন এই রাডারের খুজে বেড় হই নাই । তার ২-৩ মাস পর আরেকটি পিলার ১০০% নিশ্চিত করলাম এখানে আছেই , পড়ে সেটা উদ্ধারের অভিযানে নামলাম ...........
লেখা অনেক বড় হয়ে গেছে তাই বাকি অংশ অন্য কোন দিন তবে এই সোনার হরিনের পিছনে না ঘুরাই ভালো । রাডারের ছবিটি গুগল মামার কাছ থেকে নিয়েছি
৫১টি মন্তব্য ৪৮টি উত্তর
পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন
আলোচিত ব্লগ
অবশেষে গ্রেপ্তার সিতাংশু কুমার (এসকে) সুর, সাবেক ডিপুটি গভর্ণর!
সিতাংশু কুমার (এসকে) সুর যিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপুটি গভর্ণর ছিলেন। তখন ছিল আম্লিগ শাসন সুতরাং বোঝায় যাচ্ছে এই দাদার ক্ষমতার দাপট কতটা ছিল? তিনি ধরা কে সরা মনে করতেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন
=একদিন কার্জল হল ভ্রমণ করেছিলাম=
০১।
কার্জন হলে একদিন আমি আর আমার ছোট পুত্র ঘুরতে গিয়েছিলাম। ছেলে আগে প্রায়ই বায়না ধরতো, এখানে সেখানে ঘুরে বেড়ানোর জন্য। শুক্রবারে বিকেলে বিভিন্ন জায়গায় যেতাম আমি আর... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভালো থাকুক সব নিধুয়ারা
মনটা ক'দিন ধরেই ভীষন বিষন্ন। নিধুয়ার এ স্বেচ্ছামৃত্যু কোনভাবেই নিতে পারছি না আমি। মেয়েটা আমার কেউই না, আট দশজন সাধারন কানাডিয়ান বাঙ্গালীর মাঝে সেও একজন। তারপরও মাত্র ১৯ বছরের... ...বাকিটুকু পড়ুন
এই সম্পদ জয় পেলো কোথাথেকে?
২০২৩ সালে সোসাল মাধ্যমে একটি সংবাদ চাউর হয়েছিল যে, বৌ এবং সম্পদ দুটোই হারালো হাসিনা পুত্র। হাসিনার পুত্রের সাথে তার মার্কিন স্ত্রী ক্রিস্টিনার ডিভোর্স সম্পন্ন হয়েছে। বোন পুতুলের পথেই... ...বাকিটুকু পড়ুন
বেগম জিয়া কি আজ অবধি জিয়া এতিমখানা করেছেন কোথায়ও?
আজকে, আমাদের জনপ্রিয় ও মুক্তিযোদ্ধা ব্লগার, জুল ভার্ণ জিয়া এতিমখানার বিচারের নামে ষড়যন্ত্র করে বেগম জিয়াকে যারা জেলে দিয়েছিলো, তাদের সবার বিচার চেয়ে ১ খানা পোষ্ট দিয়েছেন!... ...বাকিটুকু পড়ুন