somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাড়ীওয়ালার মেয়ে- ৯ (নাতনীর বিয়ে)

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৯:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পর্বে যেতে
নাতনীর সুদর্শন প্রেমিক সুদর্শনকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল গাছের সাথে ৩য় পর্বে। যা হউক সুদর্শনের বন্ধুদের হস্তক্ষেপে সুদর্শনকে সেই রাত্রেই বাসা ত্যাগ করে যেতে হয়। সাথে সেই রুমের সকলকে শতর্ক করা হয় এই মর্মে যে যেদি কারো বিরুদ্ধে কোনরূপ মেয়েলি অভিযোগ ওঠে তা হলে তাকেও সুদর্শনের মত গাছে ঝুলতে হবে। আর সাথে নাতনীর চলা ফেরার অনেক নিয়মানুবর্তিতা এসে গেল। সেই আগের মত আর হুট হাট করে বাইরে যাওয়া বন্ধ হল। বন্ধ হয়ে গেলে বাড়ীর ছাদে ওঠা।

মাস্টার মহাশয়ও বেশ প্রিয় পাত্র হয়ে গেল বাড়ীওয়ালার কাছে। কিন্তু অপ্রিয় পাত্র হয়ে পড়ল নাতনীর কাছে। তাতে কি? সবুরে নাকি মেওয়া ফলে সেই সবুর করেই রইলেন মাস্টার মশায়। এদিকে নাতনিও পড়াশুনায় মনোনিবেশ করিবেন মর্মে যাতায়াত অত্যন্ত কম দেখা গেল। কিন্তু কথায় আছে, প্রেমের অপরূপ সৌন্দর্য্যে যে একবার অভিভূত হয়েছে তাকে আর ফেরানো যায় না। তারপর অতিমাত্রায় প্রেমের আগুন নাকি ধিকি ধিকি জ্বলে দ্বিগুন সেই আগুনেই আবারও নতুন প্রেমে মশগুল হয়ে পরলেন, সাথে পড়া লেখা যেটি ছিল সেটিও চুলায় উঠল পরবর্তী পাকের জন্য।

এবারের প্রেম তার ঘরের কাছেরই পাত্র। বয়সে সামান্য বড় হলেও স্থানীয়দের পড়ালেখা করতে নেই বলে পড়া লেখা আর করেন নাই কষ্ট করে। বাবার টাকায় কেনা মটর সাইকেলই ভরসা। নৃত্য নতুন পোশাকে সর্বদায় নতনীর রূপে
বশবর্তী হয়ে ঘোরাফেরা করে তাদের বাড়ীর কাছেই। ইশারা করে নাতনীকে মটর সাইকেলে ভ্রমনের জন্য। নাতনীও যৌবনের যৌলাসে রাজি হয়ে যায় কিন্তু সম্ভব হয় না বাড়ীর আশে পাশে। নিরাপদ হিসেবে ঘুরতে যায় সুযোগ হলেই স্কুল পালিয়ে বালু নদীর পারে।

এভাবেই একদিন চলে এল পরীক্ষার সময়। পরীক্ষায় নিয়মিত হলেও খাতা দেখে হয়তো মাস্টার সাহেবেরা খুশি না হওয়াতে ফেল করলেন একধিক বিষয়ে। নাতনীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তত দিনে নানাজান তাদের ৬তলা একটা নতুন বাড়ী তৈরী করেছেন তাদের ৬মেয়ে যাতে করে পাশে পাশে থাকতে পারে বলে। তাতে নাতনীদেরও যেমন দেখভাল করতে পারবে তেমনি ঘর জামাই ২জামায়ের ইজ্জতও একটু উপরে উঠবে। নাতনীর ফেলের ফলে কন্যা আর দেরী না করে স্বপরিবারে ৩সন্তান সহ জামাইকে নিয়ে ওঠে গেলেন বাবার দেয়া ফ্লাটে। তাতে হতাশায় পতিত মাস্টার মহাশয় নতুন করে প্রাণ ফিরে পেলেন। আর স্থানীয় প্রেমিক ছিটকে পড়লেন। যাতায়াত শুরু করলেন বড় আপা বা নাতনীর বাসায় বিভিন্ন অজুহাতে।

মাস্টার মহাশয়ের স্কুল বাড়ীর পাশেই আর নাতনীর ছোট ভাই সেই স্কুলেরই ছাত্র সুবাদে মাস্টার মহাশয়কে নিয়োগ দেয়া হল নাতনীর ছোট ভাই অভির মাস্টার হিসেবে। অন্যান্য মাস্টারেরা যেখানে সপ্তাহে ৩দিন বা মাসে ১৫দিন পড়ান সেখানে ছাত্রের ভবিষ্যদের কথা বলে একই টাকায় মাসে ৩০দিনই পড়াতে শুরু করলেন। তাতে করে বাড়ী অন্যান্যরা খুশি হতে পারলেও খুশি হতে পারলেন না বাড়ী কন্যা অর্থাৎ বাড়ীওয়ালা নাতনী। যখন তার সাথে দেখা হয় আস্তে হলেও ২টি গাল মন্দ শুনতে হয় সুদর্শনের প্রেমে হারানোর কারনে।

অনুরোধে কঠিন পাথরও ঘামতে থাকে। কিন্তু নাতনীর মন যেন আর ফিরে আসার নয় যা হারিয়েছে সুদর্শনের প্রেমে। দীর্ঘদিন অতিক্রম হয়েছে, একে একে বিয়ে হয়েছে কলিংবেল ও পানি মন্ত্রীরও। মাস্টার মশায় আছেন ধর্য্যের বর্শি ফেলে যদি আসে মাছ তার আধারে। পানি মন্ত্রীর বিয়ের সময় মাস্টার সাহেবের কঠোর পরিশ্রম আর আপ্যায়নের ফলে মুগ্ধ হলেন সবাই। আরো বেশী মুগ্ধ হলেন তার ছাত্র অভির ভাল ফলাফলে। সেই সুবাদে বাড়ীর কর্তী নাতনীকেও মাস্টারের কাছে পড়তে দিলেন।

নাতনির অনিচ্ছা থাকলেও অভিভাবকদের কথায় পড়তেই হল মাস্টারের কাছে। কিন্তু রূপ'বানদের রূপের গুনে মেধাত্বের গুনের স্বল্পতার কারনে কিছুতেই যখন পড়া মথায় ঢোকে না তখন প্রায়শই মাস্টর সাহেব অভিভাবকের কাছে ছাত্রীর অবস্থার রিপোর্ট করতে লাগলেন। আর রাগি অভিভাক প্রতিনিয়তই যখন বখা ঝকা করতে লাগলেন তখন নাতনী আবেগী হয়ে মাস্টার সাহেব কে বললেন- আপনি নাকি আমায় ভালবাসেন তবে কেন আমাকে বকা খাওচ্ছেন রোজ রোজে। সুচতুর মাস্টার আর দেরী না করে উত্তর দিলেন- তুমি যদি আমায় ভালবাসতে তা হলে তো আমায় নিয়েই থাকতে আর আমিও এত অভিযোগ দিতাম না।

মাস্টার আর ছাত্রীর মাঝে সমোঝতার ভিত্তিতে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপিত হল। কথায় আছে আগুনের পরশে অতি শক্ত মোমও গলে যেতে থাকে। নাতনীর মনও গলে গিয়ে প্রেমে মজিলেন। এবারের প্রেমে রইলো না কোন বাঁধা, রইলো না কোন সীমানা, ছাড়িয়ে গেল সবকিছুই বাড়ীর গৃহকর্তীর অনুপস্থিতিতে। মাস ৬য়ের মধ্যে বাড়ীর গৃহকর্তা লক্ষ্য করলেন, মেয়ের শারিরীক পরিবর্তন, লক্ষ্য করলেন মাস্টারের আচরণও। চড়াও হলেন মাস্টারের উপরে। কিন্তু ততদিনে পানি গড়িয়ে গেছে অনেকদুরে। এখন কোন কিছু করতে গেলে মেয়ের বড়ধরনের শারিরীক সমস্যা দেখা দেবে তাই মাস্টারের অভিভাবক ডেকে কলেমা পরিয়ে দায় সাড়লেন।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×