বাংলাদেশের আর্থিক খাত বর্তমানে দুর্নীতির একটি গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ব্যাংক, বীমা এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে মালিকপক্ষের দ্বারা বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করা, ঋণের অপব্যবহার এবং অন্যান্য অনিয়মের ঘটনা প্রায়শই শিরোনাম হচ্ছে। এই দুর্নীতির ফলে দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বিপন্ন হচ্ছে এবং জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
দুর্নীতির বিস্তার ও এর প্রভাব
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান: বেসিক ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, এসআলম গ্রুপের মালিকানাধীন ব্যাংকসহ বহু আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মালিকপক্ষের দ্বারা বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
সরকারি লাইফ সাপোর্ট: এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সরকারকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে, যা দেশের অন্যান্য উন্নয়ন কাজে ব্যবহৃত হতে পারতো।
জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ন: দুর্নীতির কারণে জনগণ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাদের জমানো টাকা নিয়ে আতঙ্কিত হচ্ছে।
অর্থনীতির উপর প্রভাব: কোনো ব্যাংককে দেউলিয়া ঘোষণা করা হলে দেশের অর্থনীতিতে তরঙ্গ সৃষ্টি হতে পারে এবং বিনিয়োগের পরিমাণ কমে যেতে পারে।
ভারতের আইসিআইসিআই ব্যাংকের উদাহরণ
ভারতের আইসিআইসিআই ব্যাংকের গ্রাহকদের মধ্যে একসময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। এই ঘটনা থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি যে, একটি বড় ব্যাংকের সমস্যা সারা দেশের ব্যাংকিং খাতকে প্রভাবিত করতে পারে।
গুড গভর্ন্যান্সের প্রয়োজনীয়তা
দুর্নীতি থেকে বাঁচার জন্য গুড গভর্ন্যান্স অত্যন্ত জরুরি। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:
পারদর্শিতা: আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকলাপ সবার সামনে স্বচ্ছভাবে তুলে ধরা।
জবাবদিহিতা: দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের তাদের কাজের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
নিয়ন্ত্রণ: আর্থিক খাতের কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগ করা।
দুর্নীতি দমন: দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
বাংলাদেশের আর্থিক খাতে দুর্নীতির বোঝা খুবই ভারী। এই সমস্যার সমাধানের জন্য সরকার, ব্যাংকিং খাত এবং জনগণ সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। গুড গভর্ন্যান্স প্রতিষ্ঠা করে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে আমরা এই সংকট থেকে উত্তরণ করতে পারব।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



