ইলন মাস্ক, টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা এবং বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের একজন, মার্কিন রাজনীতিতে তার প্রভাব ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্প্রতি, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে "সরকারি দক্ষতা বিভাগ" (Department of Government Efficiency বা DOGE) এর প্রধান হিসেবে তার নিয়োগ এই প্রভাবের একটি সুস্পষ্ট উদাহরণ। এই পদে থেকে মাস্ক সরকারি ব্যয় হ্রাস, আমলাতন্ত্র কমানো এবং নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাজ করছেন।
তবে, মাস্কের এই রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিয়ে বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তার মতো বেসরকারি সংস্থার মালিকদের রাজনীতিতে এমন প্রভাব গণতন্ত্রের জন্য হুমকি স্বরূপ হতে পারে। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির সাইবার পলিসি সেন্টারের ফেলো মারিয়েটজে শ্যাক উল্লেখ করেছেন, মাস্কের মালিকানাধীন সংস্থাগুলো তথ্য ও ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
মাস্কের রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধির পেছনে তার আর্থিক সহায়তাও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্পকে সমর্থনকারী সুপার পিএসিতে প্রায় ১১ কোটি ডলার অনুদান দিয়ে তিনি তার সমর্থন প্রদর্শন করেছেন। এছাড়া, তার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্স (সাবেক টুইটার) এর মাধ্যমে রিপাবলিকান পার্টির বার্তা প্রচারে সহায়তা করেছেন।
তবে, মাস্কের এই প্রভাব নিয়ে বিতর্কও রয়েছে। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্যরা তার কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা এবং সম্ভাব্য স্বার্থের সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা মাস্কের কর্মকাণ্ডের ওপর আরও নজরদারি এবং স্বচ্ছতার দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মাস্কের প্রতি তার আস্থার কথা জানিয়ে বলেছেন যে, মাস্ক কোনো স্বার্থের সংঘাতে জড়াবেন না এবং প্রশাসনও তা নিশ্চিত করবে।
মাস্কের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক প্রভাব সম্পর্কে বলা যায়, তার বর্তমান ভূমিকা এবং কর্মকাণ্ড মার্কিন রাজনীতিতে বেসরকারি খাতের প্রভাবের একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তবে, এই প্রভাব কতটা ইতিবাচক বা নেতিবাচক হবে, তা সময়ই বলে দেবে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও ভারসাম্য রক্ষার জন্য এই ধরনের প্রভাবের ওপর নজরদারি এবং সমালোচনা অব্যাহত রাখা জরুরি।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৭:০৩