একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করি ।।
গত ৩-১৫ তারিখ পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান আন্দোলন এর দাবিগুলো ছিলঃ
১। ২৭/৪ এই সংসদ অধিবেশনে বাতিল করে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা বাস্তবায়ন করা।
২।৫০০০টাকা অবৈধ উন্নয়ন ফি প্রত্যাহার করতে হবে
৩।ক্যাফেটেরিয়ায় খাওয়ার দাম ক্রয় ক্ষমতার মাঝে রাখা
৪।হল উদ্ধার এবং নতুন হল নির্মান করে ছাত্রছাত্রীদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা
এই যৌক্তিক আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহন করার জন্য আটজনকে শোকজ করেছিল জবি প্রসাশন।তার মধ্যে আমিও অন্যতম। আন্দোলনের একজন সংঘঠক এবং সক্রিয় কর্মী ছিলাম আমি।
যেদিন আমদের ৮ জনকে শো-কজ করা হয় , সেদিন আমরা আসলে অপেক্ষা করছিলাম বহিষ্কার আদেশ শুনার জন্য। এবং আমরা সব পরিকল্পনাও ঠিক করে ফেলি বহিষ্কার হলে কি করতে হবে।।। আমদের সংবাদ সম্মেলনের পরই জানতে পারি কর্তৃপক্ষের সভা বসেছে আমাদের বহিষ্কার আদেশ চূড়ান্ত করার জন্য। ঠিক সে সময় কর্তৃপক্ষের একজন লোক আসে আমাদের সাথে মধ্যস্ততা করার জন্য । আমদেরকে প্রস্তাব দেয়া হয় আপোস করার জন্য। কিন্তু আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দেই , দাবি পূরণ ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই। বহিষ্কার হওয়া আমাদের জন্য সৈভাগ্যের বিষয়। এর মধ্যে আমাদের কয়েকজন তাদের নাম বহিষ্কৃতদের তালিকায় না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে । জাহিদুল ইসলাম নামের এক সহযোদ্ধা তো ঐ লোক কে বলছে,
"আপনে যেমনে পারেন আমার নাম ঐ লিষ্টে ঢুকান। কারোটা বাদ দিয়া হইলেও ..."
এমন পরিস্থিতিতেই মনে হয় প্রশাসন পিছূ হটে। পরে শুনতে পাই তারা ঐ বহিষ্কার আদেশের নোটিশ চূড়ান্ত করেও তা আবার ছিড়ে ফেলে। এবং রাত ৮ টার দিকে ৮ জনকে শো-কজ করে। বৃহ:স্পতিবার শো-কজ করায় আমরা রবিবার এর আগে এই বিষয়ে প্রশাসনের আর কোন দৃষ্টিভঙ্গিই জানতে পারি নাই।পরে রবিবার আমরা এজতেমার জন্য কোন প্রোগ্রাম না রাখলেও সংবাদ সম্মেলনে আরো ২ দিন ধর্মঘট সহ ৩ দিনের টানা কর্মসূচি ঘোষনা করি । আর তখনই আমদের কাছে প্রশাসনের ঢাক আসে....আলোচনার।
চরম প্রতিকূলতার মাঝেও কেউই সাহস হারাই নাই। এবং শো-কজ পাবার পর সবার মুখে যে তৃপ্তির ছাপ দেখেছি তা দেখে সাহস আরো বেড়ে যায়। সহযোদ্ধাদের অবিচল মনোভাবই পরবর্তি সংগ্রাম এর উদ্দীপনা জোগায়। সবার মুখে এক কথা
"এতদিনের সংগ্রামের স্বীকৃতি পেলাম" ।
আমরা জীবনটাকে চ্যালেঞ্জ করে বাঁচি । কারো কছে দয়া ভীক্ষা করে নয়।।
কয়েকজনের মন খারাপ হতে দেখলাম.... "শো-কজ" পায় নি বলে ।।।।।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:১৭