বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু। বর্তমান যুগে আস্তিক-নাস্তিক বিতর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং অনস্বীকার্য্য বিষয়। তবে নাস্তিকদের বিরুদ্ধে আস্তিক বিশেষত মুসলমানদের অবশ্যম্ভাবী বিজয়টিও অনেক সময় আসছে না। এর কারন ইসলামের ভুল নয় বরং মুসলমানদের অসেচতনতা।আস্তিক-নাস্তিক বিতর্কে কিছু নামকেওয়াস্তে মুসলমান আছে যারা সজ্ঞানে বা নিজেদের অজান্তে নাস্তিকদের কাজ সহজ করে দিচ্ছে গালিগালাজ করার মাধ্যমে। তবে মুসলমান ভাইদের এ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোন কারন নাই। কেননা, আল কুরান আমাদের এর সমাধান দিয়ে দিচ্ছে।
আর রহমানের বান্দা তারাই যাহারা যমিনের উপর বিনয়ের সহিত বিচরন করে আর মূর্খ লোকেরা যখন তাহাদের সহিত (মূর্খচিত) কথা বলে তখন তাহারা শান্তি স্থাপক কথা বলে।
সূরা ফোরকান, আয়াত ৬৩
আমরা প্রায়ই লক্ষ করি যে আস্তিক-নাস্তিক প্রশ্নে অনেক মুসলমান কারনে-অকারনে রেগে যায় এবং তারা অশালীন, সভ্য সমাজে ঘৃণিত এরকম শব্দ ব্যবহার করে। তাদের এহেন ব্যবহারের অসদ্ব্যবহার করে নাস্তিকগন। তারা তাদের এই ঘৃণিত ব্যবহারের দোহাই দিয়ে বলতে চায় যে মুসলমানদের চরিত্র খারাপ। আসলে যারা এমনটি করে তারা তখন মুরতাদ হয়ে পড়ে, ইসলামের স্বপক্ষে আর থাকে না তারা। মুসলিম কেবল তারাই হতে পারে যারা বিনয়ী এবং শান্তিকামী। এছাড়া যারা যেকোন প্রকার গালি, নাম বিকৃতি ইত্যাদি কাজ করে থাকে তারা মুসলিম না। অতএব, কোন নাস্তিক বলতে পারবে না যে কোন মুসলমানের স্বভাব, ভাষা বা ব্যবহার খারাপ এবং আশা করব যদি কোন নাস্তিক কোন ইসলামকে সমর্থনকারীর বাজে ব্যবহারকে নিজ স্বার্থে ব্যবহার করতে চায় তবে ঐ নাস্তিককে আপনারা (মুসলমান ভাইয়েরা) বলে দিবেন যে ঐ ব্যক্তি আর মুসলমান নাই। কোন মুসলমানের অভদ্র ভাষা ব্যবহারের এখতিয়ার নাই।
মুসলমান ভাইয়েরা, আরো একটি বিষয় আমি অনেকদিন যাবত লক্ষ করে আসছি যে, আধুনিক যুগের সচেতন মানষ যাদের বলা হয় সেই ব্লগার বা নেট ইউজারগন নাম বিকৃতিতে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছেন এবং অনেক ইসলামমনষ্ক ভাই-বোনও নাম বিকৃত করছেন। কারো আদর্শ ভুল হতেই পারে, কেউ ভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থক হতেই পারেন, কেউ দেশ-জাতির বিরোধী হতেই পারেন। তবে এই সকল মানুষকে পশুর নামে নাম দেয়া সমীচীন নয়। কেননা, কোন পশু কখনো অন্যায় করে না। আর তাদের নাম বিকৃতিও করা উচিত নয়। শুধু শুধু এক খারাপ লোকের জন্য নিজের মুখকে কেন নাপাক করবেন আপনারা? যদি পারেন তবে কুরান অনুযায়ী শান্তি স্থাপক কথার মাধ্যমে তাকে বুঝান নয়তোবা তার সম্পর্কে মানুষকে সভ্য ভাষায় সতর্ক করুন। অভদ্র ভাষা কখনো মানুষের নিকট গ্রহনযোগ্য নয়। কিন্তু আফসোস! এই যুগের সচেতন নাগরিক যাদের বলা হয় সেই ব্লগার ভাইয়েরা এই অসভ্য ভাষায় গা ভাষিয়ে দিয়েছেন।
যাই হউক, একটি ছোট্ট ঘটনা বর্ণনার মাধ্যমে আজকের মতো ইতি টানব। ঘটনাটি এরুপঃ পৃথিবীতে এক সময় অত্যন্ত ভয়ঙ্কর এক ডাকাতের ত্রাস ছিল। সবাই বলত এই ব্যক্তির জাহান্নাম অবধারিত।কিন্তু আখিরাতে দেখা গেল সেই ব্যক্তি বিনা হিসেবে জান্নাত পেয়ে গেল। পরে মানুষ জানতে পারল যে ঐ ডাকাতের এতো গীবত এবং তার অন্যায়কে ফুলিয়ে ফাপিয়ে অপবাদ বানিয়ে এতো মিথ্যে কাহিনী প্রচার করা হয়েছে যে তার কোন গুনাহ তো থাকেই নাই বরং তার সাওয়াবের পরিমানও অসীম হয়ে গিয়েছিল।
উপরের এই ঘটনার মাধ্যমে আমি এটিই বলতে চাচ্ছি যে কারো দোষ বর্ননার সময় আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যে আমরা ভুলে কোন অপবাদ না দিয়ে ফেলি। আবার এটিও খেয়াল রাখতে হবে যে, আমরা তার দোষ যেন কেবল জনস্বার্থেই তুলি ধরি এবং আমাদের বর্ননা যেন গীবতের শর্তগুলো পূরন না করে। এক লোক মহানবী (সা) এর সামনে সূরা লাহাব বারংবার উচ্চারন করত। মহানবী (সা) তাকে বলেন, তুমি তো কুরান তিলওয়াত করছ না বরং গীবতের গুনাহ কামাই করছ।
মহান আল্লাহ আমাদের হিফাযত করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বোত্তম জ্ঞানী এবং একমাত্র হিফাযতকারী।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:৩০