বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭% শুল্ক আরোপ ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতির স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অংশ। ট্রাম্প মূলত এসব শুল্কনীতির প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষমতায় এসেছেন। সেই অনুযায়ী, দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিনি বিভিন্ন দেশের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করা শুরু করেন। এই প্রক্রিয়া মূলত "রিভার্স শুল্ক" নীতির ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে। যে দেশে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর যত শতাংশ শুল্ক রয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন প্রতিক্রিয়াস্বরূপ সেই দেশের পণ্যের ওপর অনুরূপ শুল্ক আরোপ করছে।
বাংলাদেশে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্কের হার ৭৪%। এর ফলশ্রুতিতে ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিকৃত পণ্যের ওপর ৩৭% (৭৪% এর অর্ধেক) শুল্ক আরোপ করেছে। এই নীতি মোটামুটি সকল দেশের ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে, এই শুল্ক মূলত বন্দর বা আমদানি পর্যায়ে কার্যকর হবে, সরাসরি খুচরা বিক্রির ওপর নয়। এর ফলে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়লেও সেটি মারাত্মক হওয়ার কথা নয়। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্য মূলত তৈরি পোশাক। এসব পণ্যের দাম তুলনামূলক কম (২০ থেকে ৬০ ডলার)। সুতরাং, কমদামি এসব পণ্য খুব বড় ধরনের সংকটে পড়বে না বলে আশা করা যায়।
তবে, এই শুল্কনীতি শুধু বাংলাদেশ নয়, অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। শুল্ক বৃদ্ধির ফলে সামগ্রিকভাবে পণ্যের দাম বাড়বে, যা যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমিয়ে দেবে। ফলে আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের অর্ডার স্বাভাবিকভাবেই কমে যাবে।
বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপের এই প্রক্রিয়া একটি কাঠামোবদ্ধ প্রশাসনিক নীতির ভিত্তিতে হয়েছে। এটি কোনো নির্দিষ্ট দেশের সরকার বা নেতৃত্বের ওপর নির্ভর করে হয়নি। যেমন, ড. ইউনূসের সময় বাংলাদেশের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, ঠিক তেমনই ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের ওপরও শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
মূল বিষয় হলো, এই শুল্কের ফলে বাংলাদেশ অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে, এই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নিয়ে কারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে। তাদের চিহ্নিত করতে হবে, কারণ এরা বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী এবং আমাদের জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




