‘এবং ফান. . .!’
মাহামুদুল হাসান
‘সরি. . .। আমি আপনার সাথে এতোদিন ফান করেছি।’
‘ফান করেছো . . .!’
‘হ্যাঁ।’
‘তুমি ফান করতে পারো; আমি করিনি। আমি সত্যি সত্যিই তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। তাই তোমার ফানের জন্য আমি কষ্ট পেতে চাই না। কষ্ট পেতে পারি না।’
‘সরি, সরি, সরি. . .। আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। রাখি রাখি . . ., আম্মু আসছে।’
ফোন কেটে দিয়ে রাজ্য জয়ের সুখে বিছানায় গড়াগড়ি খেতে লাগল সাথী। আর সায়েম কষ্টের তীব্রতায় কাতরাতে থাকে বিছানায় মুখ গুঁজে দিয়ে। তার একটাই ভাবনা, এতোটুকুন একটা মেয়ে তার সাথে এভাবে ফান করতে পারল; সে একবারের জন্যও বুঝতে পারল না!
নানা ভাবনায় বেশ কিছুটা সময় কেটে গেল। কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিতে আবার ফোন দেয় সাথী। চোখ মুছে ফোনটা রিসিভ করে সায়েম।
‘কেমন আছেন?’
‘ভালো থাকি কি করে? এভাবে ফাঁকি দিতে পারলে? কি দোষ ছিল আমার?’
‘আপনি এতোটা সিরিয়াস হবেন, আমি তা ভাবতেই পারিনি। ভালো থাইকেন।’
সায়েমকে কথা বলার বিন্দুমাত্র সুযোগ না দিয়ে লাইন কেটে দিয়ে মুর্হূতমাত্র কালক্ষেপণ না করে মোবাইল ফোনটা বন্ধ করে দেয় সাথী। সায়েম বেশ কবার চেষ্টা করে; কিন্তু কোনবারই খোলা পায় না।
পরের দিন খুব সকালে গ্রামের উদ্দেশ্যে পা বাড়ায় সায়েম। সোজা হাজির হয় সাথীদের বাড়িতে। সাথী বাবার সাথে পরিচিত হয় সায়েম। পরিচয় পর্ব শেষ করে সাথীকাণ্ড সবিস্তারে বর্ণনা করে সে। সাথীর বাবা কিছুতেই ব্যাপারটা বিশ্বাস করতে চায় না। সাথীকে ডাকা হয়। সাথী এসে একেবারে হতভম্ব হয়ে যায়। কিছুক্ষণ বাবা আর সায়েমের সামনে মাথা নত করে দাঁড়িয়ে থেকে বলল, ‘আব্বা, কেনো ডেকেছেন?’
‘এই ছেলেটা...?’
সাথী এবার সায়েমের দিকে মুখ তুলে বলল, ‘কে আপনি?’
‘মানে! তুমি আমাকে চেনো না!’
‘না, চিনি না।’ বলে সাথী দ্রুত ভিতরের রুমে চলে যায়। সায়েম এবার লজ্জায় কাঁপতে থাকে।
‘এবার হলো-তো। তাড়াতাড়ি ভাগো। নাইলে লোক ডাকবো কিন্তু...।’
হঠাৎ করে সায়েমের মাথায় একটা অভিনব ভাবোদয় হল। সে মোবাইলে রেকর্ডিং চালু করে সাথীর মোবাইল ফোন নাম্বারটা বলে, বলল, ‘এটা আপনার মেয়ের নাম্বার না?’
‘হ্যাঁ। তাতে কি হয়েছে? তুমি ভালোয় ভালোয় চলে যাও। না হলে...।’
‘না হলে অনেক কিছুই করতে পারবেন মানছি। তার আগে নিজের কথা একবার ভাবেন। কি বোকা আপনি! আপনার ধারণা সাথী এমন কাজ করতেই পারে না! মানছি, ওতোটুকুন মেয়ে এমন কাজ করতেই পারে না। তাই বলে আপনি একবারও নিজের মেয়েকে কিছু জিজ্ঞাসা পর্যন্ত তো করলেন না? এই দেখুন আপনার মেয়ের পাঠানো মেসেজগুলো।’
সাথীর বাবা হাত বাড়িয়ে মোবাইলটা নিয়ে একে একে সবগুলো মেসেজ পড়ে রাগে-ক্ষোভে ফুঁসতে থাকে। মনে হয় মেয়েকে নিজ হাতে খুন করে অপমান যন্ত্রণা কষ্ট এ যাত্রায় সব শেষ করে দিবে সে। কিভাবে তার মেয়ে হয়ে কোনো ছেলেকে এতো বাজে মেসেজ লিখতে পারে!
‘এবার বিশ্বাস করেছেন তো আপনার মেয়ে কতোটা বড় হয়েছে। কেমন মেয়ে জন্ম দিয়েছেন আপনি? এমন মেয়ে নিয়ে গর্ব করার আগে শতবার ভাবা উচিত। আসি।’
সায়েমের কথা শুনে সাথীর বাবা মাটিতে উদাস মনে ধপাস করে বসে পড়ে। সাথী আড়াল থেকে সব শুনে আবেগে বিবেক বিসর্জন দিয়ে আতœ-সমস্যার আপত সমাধান করে ফেলে।
মাহামুদুল হাসান।
মুঠোফোন ঃ ০১৬৭১৮৩৫৭২০।
e-mail : [email protected]

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




