somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শেখ মুজিব বাংলাদেশের প্রথম ‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’: তারেক রহমান

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারপার্সন তারেক রহমান । তিনি শেখ মুজিবকে বাংলাদেশের প্রথম ‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।তারেক দাবি করেছেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি, তিনি চেয়েছিলেন স্বায়ত্বশাসন।

মঙ্গলবার ওয়েস্ট মিন্সটারের সেন্ট্রাল হলে আয়োজিত সুধী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক বলেন, “বাংলাদেশের প্রথম অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। কারণ তিনি ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গৃহীত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র উপেক্ষা করে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।”

তারেক রহমান ঘোষণাপত্রের একটি বক্তব্য তুলে ধরেন। সেখানে লেখা রয়েছে, “এতদ্বারা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি থাকিবেন এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রজাতন্ত্রের উপ-রাষ্ট্রপতি থাকিবেন”। তারেক বলেন, “কিন্তু ৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে শেখ মুজিব ১২ জানুয়ারী কিভাবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন? তখনও তো সংবিধান প্রণীত হয়নি। ”

তিনি বলেন, “অপ্রিয় হলেও সঠিক ইতিহাসের স্বার্থেই ইতিহাসের কঠিন সত্যগুলো বলা প্রয়োজন।”

তারেক রহমান বলেন, “শেখ মুজিব যেভাবে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন, একইভাবে তার মেয়েও বর্তমানে অবৈধভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে আছেন।”

তারেক রহমান ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে ‘সাপ্তাহিক’ পত্রিকায় প্রকাশিত ডক্টর কামাল হোসেনের একটি সাক্ষাৎকারের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, “শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরেছিলেন পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে। পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে দেশে ফিরে হয়ে গেলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে তিনি জাতিসংঘের ট্রাভেল ডকুমেন্ট নিয়ে ফিরতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেটিও করেননি। ”

বৃটেন বিএনপি আয়োজিত এই সুধী সামবেশে সভাপাতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস। সভায় আরো বক্তৃতা করেন বর্তমানে যুক্তরাজ্য প্রবাসী, কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ডক্টর এম এ মালিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ডক্টর হাসনাত করিম, ড. ফিরোজ মাহমুদ ইকবাল, টাওয়ার হ্যামলেটসের ডেপুটি মেয়র অহিদ আহমদ, বিশিষ্ট সাংবাদিক এ কে এম আবু তাহের চৌধুরী, শিক্ষক ও গবেষক আতিয়ার রহমান, যুক্তরাজ্য স্থানীয় সরকারের সাবেক কর্মকর্তা লুৎফুর রহমান আলী, মাওলানা শামসুল হক চৌধুরী, আগামী জাতীয় নির্বাচনে হাউজ অব কমন্সে লেবার পার্টি মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল মিয়া, বৃটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মুকিম আহমেদ, যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের নেতা শাহগীর বখত ফারুক, চার্টার্ড একাউন্টেট মুসাব্বির হোসাইন, কাউন্সিলার আয়েশা চৌধুরী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ।


বাংলাদেশের ৪৪তম স্বাধীনতা দিবস সামনে রেখে ২৫ মার্চ আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেয়া নিজের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তারেক রহমান বলেন, “ওই অনুষ্ঠানে ইতিহাসের আলোকে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বলা হয়েছিল জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং স্বাধীনতার ঘোষক। কিন্তু এ বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগের কোনো নেতাই কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা না দিয়ে অশ্লীল কথা বলেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে ছোট করতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, ৪০০ টাকার মেজর। এ ধরণের মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বরং মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধকেই অপমান করেছেন। কারণ এই ৪০০ টাকার মেজর, ২০০ টাকার ক্যাপ্টেন, ১০০ টাকার সিপাহী, ৫০ টাকার কৃষক কিংবা লুঙ্গি পরা গামছা পরা স্বাধীনতাকামী মানুষগুলোই কখনো একবেলা অথবা আধাবেলা খেয়ে না খেয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের মতো নিরাপদে কলকাতা পাড়ি জমালে মুক্তিযুদ্ধ হতো না।”

তারেক রহমান বলেন, “ইতিহাস হলো, ৪০০ টাকার মেজররাই মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু যাদের কাছে মানুষ আশা করেছিল তারা মুক্তিকামী মানুষকে নেতৃত্ব দিতে ব্যার্থ হয়েছিলেন।”

তিনি বলেন, “শেখ মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি, তিনি চেয়েছিলেন স্বায়ত্বশাসন।” তারেক রহমান অনুষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে বিদেশী একটি সংবাদ সংস্থায় প্রচারিত শেখ মুজিবুর রহমানের একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও ক্লিপিংস দেখান। ওই সাক্ষাতকারে শেখ মুজিব বিদেশী এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘স্বাধীনতা? নো নো আই ডোন্ট মিন দ্যাট, আই ওয়ান্ট অটোনমি’।”

তারেক রহমান বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবুল মুহিত কয়েকদিন আগে বলেছেন, কারো ঘোষণায় স্বাধীনতা আসেনি। অথচ এই আবুল মাল তার ‘বাংলাদেশ: ইমার্জেন্স অব এ নেশন’ বইয়ে লিখেছেন, জিয়াউর রহমানই প্রথম স্বাধীনতার ঘোষনা দেন।”

অনুষ্ঠানে তারেক রহমান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার কে এম সফিউল্লাহ, বাংলা নামের দেশ পুস্তকের রেকর্ড, ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের রেকর্ড, ভারত রক্ষক সাইটের রেকর্ড দেখান যেখানে জিয়াউর রহমানকেই স্বাধীনতার ঘোষক ও রাষ্ট্রপ্রধান বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

‘মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর’ নামে একটি বই থেকে তাজউদ্দিন আহমদের বক্তব্য উদ্বৃত করে তারেক বলেন, “২৫ মার্চ রাতে তাজউদ্দিন আহমদ শেখ মুজিবকে স্বাধীনতা ঘোষণার অনুরোধ জানালে শেখ স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে অস্বীকৃতি জানান। শেখ মুজিব তাজউদ্দিনকে সাফ জানিয়ে দেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হতে পারে।”

তারেক রহমান বলেন, “আওয়ামী লীগের ওয়েবসাইটে উল্লেখ রয়েছে, ৭১ এর ১০ এপ্রিল থেকে শেখ মুজিব বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। তাহলে, ২৬ মার্চ থেকে এই পর্যন্ত বাংলাদেশ এবং মুক্তিযুদ্ধ কি নেতৃত্বশূন্য ছিল। ”

তারেক বলেন, “আওয়ামী লীগ কথায় কথায় রাজাকারদের মন্ত্রী বানানোর জন্য বিএনপির উপর দোষ চাপায়। অথচ বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশে তালিকাভুক্ত রাজাকারদের প্রথম মন্ত্রী বানায় শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা তার পিতার আমলের তালিকাভুক্ত রাজাকার মাওলানা নুরুল ইসলামকে মন্ত্রী বানিয়ে তার পতাকায় প্রথম জাতীয় পতাকা তোলার সুযোগ করে দেন।”

অনুষ্ঠানে কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এ মালিক বলেন, “৭১ সালের ২৫ মার্চ যেদিন শেখ মুজিব আত্মসমর্পন করলেন সেদিনই মুজিবের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে। মুজিব সেদিন আত্মসমর্পন না করে যুদ্বের নেতৃত্ব গ্রহণ করলে অমর হয়ে থাকতে পারতেন।”

ড. হাসনাত বলেন, “আওয়ামী লীগ কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে। অথচ মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা হলো গণতন্ত্র ও মানুষের স্বাধীনতা। অথচ এর কোনোটিই এখন বাংলাদেশে নেই।” তিনি বলেন, “শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়ার আদর্শেই সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে। ”
১১টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×