somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সময় এসেছে রুখে দাঁড়ানোর, তাই আসুন রুখে দাঁড়াই (পর্ব-১)

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৪:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ থেকে প্রায় ৩৭ বছর পূর্বে আমরা ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করি। ঐ সংগ্রামকে স্বাধীনতা যুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ বিভিন্ন নামে অলংকৃত করা হয়েছে। কিন্তু আদৌ আমরা কি মুক্তির স্বাদ পেয়েছি? এটা ঠিক আমরা একটা স্বাধীন ভূখন্ড পেয়েছি। কই শোষণের হাত থেকে তো আমাদের এখনো মুক্তি ঘটেনি। ৭১ এর পূর্বেও আমাদের কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী জনতা শোষনের করাল গ্রাসে নিস্পেষিত হত আজও তেমনি তারা নির্মমভাবে নিস্পেষিত হচ্ছে। শুধু পরিবর্তন হয়েছে এটাই- আগে শোষকের ভূমিকায় ছিলো পাকিস্তানীরা আর এখন আমাদেরই কিছু স্বজাতি সেই একই ভূমিকায় অবতীর্ন আছে। আসলে আমাদের মুক্তি কখনোই ঘটেনি। স্বাধীন একটি ভূখন্ড পাওয়া মানেই স্বাধীনতা নয়। স্বাধীনতা মানে হলো দেশের গণমানুষের মুক্তি সাধন করা।

ডিসেম্বর মাস এলেই আমাদের ৭১ এর কথা মনে পড়ে যায়। প্রতি বছরের ১৬ই ডিসেম্বর স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পন করাটাকেই আমাদের একমাত্র দায়িত্ব মনে করে তা পালন করে প্রীত হই। কিন্তু আমাদের লজ্জ্বা হওয়া উচিত গত ৩৭ বছরেও আমরা স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পারিনি। উপরন্তু ৭১ এর ঘৃনিত রাজাকার-আলবদর নিজামী-মুজাহিদ-মাওলানা মান্নান গংরা বিভিন্ন সরকারের সময়ে পুরস্কৃত হয়ে মন্ত্রীত্ব পেয়ে বাংলাদেশের পতাকাবাহী গাড়ীতে চেপে স্মৃতিসৌধে শহীদদের বেদীতে ফুল দিয়ে আমাদের স্বাধীনতাকে কলুষিত করেছে। হায় রে বাঙ্গালী! এসব দেখে নিজেকে বাঙ্গালী ভাবতে খুব লজ্জ্বিত হই।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মেয়াদে বিভিন্ন সরকার দেশ শাসন করেছে। এক নজরে একটু চোখ বুলিয়ে দেখি এদের শাসনামল।

ক) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এর শাসনামল (১৯৭২-১৯৭৫)
এই বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই বংগবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান নেতা হিসেবে ছিলেন অতুলনীয়। তার মেধা, বিচক্ষনতা আর সাহসের জন্যই আমাদের স্বাধীনতা ত্বরান্বিত হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি একজন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দেশ পরিচালনায় তিনি ছিলেন পুরোপুরি ব্যর্থ। তার ব্যর্থতা আর বেশ কিছু ভুল সিদ্ধান্তের কারনে দেশের পরিস্থিতি প্রকট আকার ধারন করে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও সর্বহারাদের নিস্ক্রিয়া করতে দেশে ব্যাপকভাবে হত্যা-জেল-জুলুম দেশে অরাজক পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটে। হাজার হাজার জাসদ কর্মীকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়। হত্যা করা হয় সিরাজ শিকদারের মত শোষিতের অধিকার আদায়ে আন্দোলনকারী নেতাকে। পরবর্তী সময়ে বাকশাল গঠনের মাধ্যমে দেশের গনতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করে একনায়ক হয়ে ক্ষমতায় থাকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করেন। তার সময়কালে অবিবেচকের মত কল-কারখানাগুলো ঢালাওভাবে রাষ্ট্রীয়করন করেন এমনকি ৪/৫ টি সংবাদপত্র ছাড়া বাকি সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়ে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাও ধ্বংস করে দেন। তার এসব কর্মকান্ডের খেসারতও তাকে অত্যন্ত নির্মমভাবে দিতে হয়।

খ) স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান এর শাসনামল (১৯৭৭-১৯৮১)
১৯৭৫ সালের ৭ই নবেম্বর সিপাহি জনতা বিপ্লবের পর জিয়াউর রহমান রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। ১৯ শে নভেম্বর ১৯৭৬ সালে তিনি প্রধান সামরিক প্রশাসকের দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবু সায়েমকে কৌশলে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে ফেলার পর ২১ এপ্রিল ১৯৭৭ সালে জিয়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির পদ দখল করেন। ক্ষমতায় এসেই তিনি বিরোধীদের ব্যাপকভাবে ধর-পাকড় করেন। বিনা বিচারে হত্যা করা হয় হাজার হাজার সেনা সদস্যকে। তার শাসনামলেই ৭১’ এর যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে আসার সুযোগ করে দিয়ে আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনকে কলুষিত করা হয় যার খেসারত এখনো আমরা দিচ্ছি। তার শাসনামলেই ধর্ম ব্যবসায়ীদের প্রত্যক্ষ সহযোগীতার নামে দেশে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ উসকে দেয়া হয়। ১৯৭৬ সালের আগস্টে জিয়াউর রহমান সরকার সকল ধরণের রাজনৈতিক দলের রাজনীতি উন্মুক্ত করে রাজনৈতিক দল অধ্যাদেশ ঘোষণা করেন। এ সময় ‘ইসলামিক ডেমোক্রাটিক পার্টি’ নামক একটি দলের সাথে জামায়াতে ইসলামী যুক্ত ছিল। পরে গোলাম আযম বাংলাদেশে ফিরে এলে ১৯৭৯ সালের মে মাসে ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ’ গঠিত হয়। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তিনি ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল’ (বিএনপি) নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ক্ষমতায় স্থায়ীভাবে থেকে যাবার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু ১৯৮১ সালে চট্টগ্রামে এক সামরিক অভ্যুথানে জিয়া নিহত হন।

গ) স্বৈরশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এর শাসনামল (১৯৮৩-১৯৯০)
১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হবার পর, এরশাদের রাজনৈতিক অভিলাশ প্রকাশ হয়ে পড়ে। ২৪ মার্চ ১৯৮২ সালে জেনারেল এরশাদ রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তারের নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন। ১১ ডিসেম্বর ১৯৮৩ সাল নাগাদ তিনি প্রধান সামরিক প্রশাসক হিসেবে দেশ শাসন করেন। ঐ দিন তিনি দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা রাষ্ট্রপতি বিচারপতি এ.এফ.এম আহসানুদ্দিন চৌধুরীর কাছ থেকে নিজের অধিকারে নেন। তার সময়কালেই দেশের সংবিধান থেকে সমাজতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতা বাদ দিয়ে দেশে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষনা করে দেশের গৌরবোজ্জ্বল অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে গলাটিপে হত্যা করেন। তিনি তার পূর্বসূরী জিয়ার মতো দেশে মৌলবাদী ও ধর্ম ব্যবসায়ীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শেল্টার দিয়ে দেশকে মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিনত করেন। তিনি ক্ষমতার মসনদে স্থায়ীভাবে থেকে যাবার জন্য ‘বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি’ নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। এরশাদের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দেশের জনগনকে সাথে নিয়ে সকল বিরোধী দল আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করে।

ঘ) বেগম খালেদা জিয়া এর শাসনামল (১৯৯১-১৯৯৬)
পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ১৯৯১ সালের ১৯ মার্চ বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। তার সময়েও জামায়াত ইসলামীসহ কিছু মৌলবাদী সংগঠনকে সুবিধা প্রদান করা হয়। এই সরকারের সময়কালে দেশের প্রেসিডেন্ট পদ একজন রাজাকারকে দিয়ে অলংকৃত করা হয়। তার শাসনামলে দেশে স্বজনপ্রীতি, দূর্নীতিতে নিমজ্জ্বিত থাকে দেশ।

ঙ) শেখ হাসিনা এর শাসনামল (১৯৯৬-২০০১)
১৯৯৬ সালে তার দল আওয়ামী লীগ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য বামপন্থী দলগুলোর সাথে যুক্ত হয়ে হরতাল, ধর্মঘট, ও অবরোধ কর্মসূচীর মাধ্যমে খালেদা জিয়ার বিএনপি সরকারকে তত্বাবধায়ক সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে বাধ্য করে। সে'বছর অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মোট ১৪৭ আসন লাভ করে, তারা জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে। আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। শহীদ জননী জাহানারা ঈমাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গন আন্দোলনের মাধ্যমে গণ আদালতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে জনগনকে একাট্টা করেন। কিন্তু মুখে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান দাবিদার হিসাবে বড় বড় কথা বললেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাবার জন্য স্বাধীনতা বিরোধী ঞ্জামায়াতে ইসলামীর সাথে আতাঁত করতে দ্বিধা করেন না। এমনকি তিনি সেই সময়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে তার বলেন, “রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নাই”। বঙ্গবন্ধু কন্যা এবং বাংলাদেশের প্রাচীন ও সুবৃহৎ দলের নেত্রী হিসাবে সাধারন মানুষের ন্যুনতম চাহিদাও তিনি মেটাতে পারেননি।

চ) বেগম খালেদা জিয়া এর দ্বিতীয় মেয়াদের শাসনামল (২০০১-২০০৬)
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি জামাতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোট ও জাতীয় পার্টির সাথে চারদলীয় ঐক্যজোট গঠন করে। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর সংসদ নির্বাচনে চারদলীয় ঐক্যজোট বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। খালেদা জিয়া এই সংসদেও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এই সরকারের মন্ত্রীসভায় ৭১’ এর দুজন কুখ্যাত ঘৃনিত জামায়াতের নেতাকে মন্ত্রীত্ব পদ দেয়া হয়। এই সরকারের শাসনামলে দেশ দূর্নীতিতে আকন্ঠ নিমজ্জ্বিত হয়।

ছ) বর্তমান প্রেক্ষাপট
এই বছরের গোড়াতে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নাজুক হলে রাষ্ট্রপতি দেশে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেন । বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. ফখরুদ্দীন আহমদকে নতুন প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ড. ফখরুদ্দীন আহমদ দশজন নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ দিয়ে নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাজ শুরু করেন এবং সেই সাথে রাষ্ট্রপতি ২২ জানুয়ারির নির্বাচন বাতিন ঘোষণা করেন। ২৬ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে দেশে সকল রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন।

এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার দূর্ণীতি বিরোধী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তারা ২০০৭ এর অগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রায় ১৭০ জন শীর্ষ নেতাকে দূর্ণীতির অভিযোগে আটক করে। প্রধান দুইটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রধান শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়াকেও দূর্নীতির দায়ে গ্রেফতার করে। নেত্রীদ্বয়ের পরিবারের বিভিন্ন সদস্যকেও দূর্নীতির দায়ে আটক করা হয়।

গত ওয়ান-ইলেভেন এর পর থেকে দেশে জরুরী অবস্থা জারী করা হয়েছিল। কথা ছিল দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করে এবং নির্বাচনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নতুন নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা ন্যস্ত করে দিবে। কিন্তু বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ড দেখে আমাদের মনে ভয় ঢুকে গেছে। আদৌও আমরা কি কোন গনতান্ত্রিক নির্বাচন দেখতে পাবো নাকি তথাকথিত নির্বাচনের ব্যবস্থা করে আমাদের বর্তমান সেনা শাসক মঈন ইউ আহমদ ও আইন উপদেষ্টা ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন গংদের ক্ষমতার মসনদে থেকে যাবার স্থায়ী বন্দোবস্ত করতে দেখবো? ড. ফখরুদ্দিন আহমদ এর নের্তৃত্বাধীন বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এসেই দুর্নীতিবাজদের ব্যাপকভাবে যে ধড়পাকড় শুরু করলেন আমরা এতে খুবই আশান্বিত ছিলাম। কিন্তু পরবর্তী সময়ে যখন দেখলাম এটা শুধুমাত্র বড় দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে দূর্বল করার কৌশল হিসেবে করা হচ্ছে তখন খুব আশাহত হই। আবার গত বিএনপি সরকারের অংশীদার জামায়াত ইসলামী এর কোনো নেতাকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার না করায় আমাদের মনে নানা রকম সন্দেহের বীজ দেখা দিয়েছে। জানিনা কি কারনে যেনো আমাদের মহামান্য আইন উপদেষ্টা ৭১’ এর স্বাধীনতা বিরোধী তথা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা শুনলেই তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেন। সাবেক দুই প্রধান মন্ত্রী হাসিনা-খালেদা সহ মন্ত্রী-এমপিদের দূর্নীতির বিচার করতে পারেন কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে তার এত অনীহা কেন!

বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই বিভিন্ন মেয়াদে বিভিন্ন নির্বাচিত সরকার, স্বৈরশাসক দেশ পরিচালনা করেছে। কিন্তু কোন সরকারের সময়েই আমাদের দেশের উন্নয়ন তথা সাধারন মানুষের জন্য কোন কাজ করা হয়নি। উপরের অতি সংক্ষিপ্ত বিভিন্ন শাসনামল থেকেই আমরা তা সহজে বুঝতে পেরেছি। কোন সরকারই দেশের জন্য কাজ করেনি বরং প্রতিটি সরকারই শুধুমাত্র নিজেদের উদরপূর্তি করেছে।

কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী জনতা স্বাধীনতার পূর্বে যে জায়গায় ছিলো এখনো সেই একই অবস্থানে আছে। তাহলে স্বাধীনতা পেয়ে দেশের সেই সাধারন মানুষের লাভটা হলো কোথায়? ৭১’ এর ঘৃনিত রাজাকার-আলবদর-আলশামসের নেতারা মন্ত্রীত্ব পেয়ে পতাকাশোভিত গাড়ীতে চেপে স্মৃতিসৌধে গিয়ে শহীদদের বেদীতে পুস্পস্তবক দিয়ে আমাদের শহীদদের অসম্মান করছে। তাইতো ৭১’ এর মুক্তিযোদ্ধাদের অবহেলিত হয়ে বলতে শোনা যায়-“মুক্তিযুইদ্ধো কইর্যা দেশটারে স্বাধীন করাডা বড় ভুল আছিলো মনে হয়।”

যে মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে পাকিস্তানীদের হাত থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন করা হয়েছিল তার ন্যুনতম চাহিদাও পূরন হয়নি স্বাধীনতার ৩৭ বছরেও! আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গন কলুষিত হতে হতে একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আর আমারা কাউকেই বিশ্বাস করতে পারছিনা। আমাদের পিঠ আসলে দেয়ালে ঠেকে গেছে। এখন হয় আমাদের পরাজয় মেনে তিলে তিলে মরে যেতে হবে না হয় সাহসী হয়ে রুখে দাড়াতে হবে। তাই আসুন আমরা ১৪ কোটি মানুষ একাট্টা হয়ে গুটিকয়েক ক্ষমতালোভী দূর্নীতিবাজ, যুদ্ধাপরাধী আর মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াঁই। নুরুলদীনের মত বলতে ইচ্ছা করছে- “জাগো বাহে কুনঠে সবাই?”
----------------------------------

[আগামী পর্বে সমাপ্য]
আগামী পর্বে উপায়সমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১০:২০
১৮টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×