somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বব্যাংক ও ইউজিসির উচ্চশিক্ষার কৌশলপত্র বাতিল করতে হবে

১২ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গত দুই দশক থেকেই বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষায় লক্ষণীয়ভাবে ঘটছে ভাবাদর্শগত পরিবর্তন। উচ্চশিক্ষায় সামাজিক ও মানবিক জ্ঞানের (ঝড়পরবঃধষ নধংবফ কহড়ষিবফমব) পরিবর্তে বাজার-অর্থনীতিকেন্দ্রিক জ্ঞান (গধৎশবঃ-নধংবফ কহড়ষিবফমব) চর্চাই মুখ্য হয়ে উঠেছে। উচ্চশিক্ষার বাজারকেন্দ্রিকতা ছাত্রদের জীবন চেতনাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করছে এবং পুঁজিবাদী মতাদর্শ বিনির্মাণের অন্যতম সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে। সঙ্গে সঙ্গে ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে টিউশন ফি এবং অন্যান্য ফি বাবদ শিক্ষার যাবতীয় খরচ যা ক্রমেই গরিব এবং মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়ায় বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র অসন্তোষ ও আন্দোলন দানা বেঁধে উঠেছে। অভিযোগ ওঠেছে শিক্ষাক্ষেত্রে বেসরকারিকরণ এবং বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষায় সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের।

বাংলাদেশের সচেতন ছাত্রসমাজ বিভিন্নভাবে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এসব নেতিবাচক পরিবর্তনের বিপক্ষে আন্দোলনও করছে। উচ্চশিক্ষায় এই পরিবর্তনকে দেখতে হবে আশির দশক থেকে এ দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে নিও-লিবারেল পলিসির বাস্তবায়ন শুরু হয় তার নিরিখেই। কৃষি-শিল্প, সেবা, ব্যবসা-বাণিজ্যের মতোই শিক্ষা খাতেও নিও-লিবারেল পলিসির বাস্তবায়ন বর্তমান বিশ্বায়িত পুঁজিবাদী কাঠামোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এই লিও-লিবারেল পলিসির শিক্ষা দর্শন অনুযায়ী শিক্ষা হচ্ছে বৈশ্বিক পুঁজির অবাধ প্রবাহ এবং নিরঙ্কুশ পুঞ্জীভবনের জন্য বুদ্ধিবৃত্তিক হাতিয়ার এবং উচ্চশিক্ষার লক্ষ্যই হবে দেশীয় এবং বহুজাতিক করপোরেশনের জন্য পর্যাপ্ত দক্ষ প্রশিক্ষিত জনবল সরবরাহ করা। এই শিক্ষা দর্শনে মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ কিংবা সামাজিক উন্নয়ন নয়, পুঁজি বিনিয়োগ এবং মুনাফার বিষয়টিই আগে বিবেচিত হয়। পুঁজির ক্রমাগত বিকাশের জন্য উচ্চশিক্ষাকে এমনভাবে ঢেলে সাজানো হচ্ছে যেন তা পুঁজির অবাধ প্রবাহের অনুকূল হয়। ফলে উচ্চশিক্ষা হয়ে ওঠে বৈশ্বিক পুঁজিবাদের মতাদর্শিক হাতিয়ার এবং উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে বাণিজ্যিকীকরণ ও বেসরকারিকরণই হয় এই ধনতান্ত্রিক মতাদর্শ বিকাশের সহযোগী। পশ্চিমা দেশগুলোর মতো বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষায়ও দিন দিন বৈশ্বিক পুঁজিবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাব বেড়েই চলেছে। আমাদের উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে নিও-লিবারেল পলিসি আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এবং দেশীয় ক্ষমতাশালী অভিজাতদের সমন্বিত প্রয়াসের ফল। এক শ্রেণীর আমলা, ব্যবসায়ী, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবেক কর্মকর্তা, শিক্ষক, সুশীল সমাজসহ ক্ষমতাশালী অভিজাতবর্গের সহায়তায় আশির দশকের শেষের দিকে উচ্চশিক্ষায় আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা শুরু হয়। উচ্চশিক্ষা খাতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং গবেষণা প্রকল্পে আর্থিক সহায়তার বিনিময়ে এসব প্রতিষ্ঠান শিক্ষাখাতে ঢালাও বেসরকারিকরণ এবং বাণিজ্যিকীকরণের লক্ষ্যে অনেকগুলো নিও-লিবারেল পলিসি গ্রহণে উৎসাহিত করে।

২০০৬ সালে বিশ্বব্যাংকের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক প্রণীত 'বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার জন্য কৌশলপত্র (২০০৬-২০২৬)' এমনই একটি বিস্তারিত লিখিত দলিল যেখানে উচ্চশিক্ষা খাতে নিও-লিবারেল পলিসির দর্শন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং তা এ দেশের উচ্চশিক্ষার মতাদর্শ নিয়ন্ত্রণের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে। শিক্ষা খাতে সরকারি অর্থ ব্যয়/ভর্তুকি হরাস এবং ক্রমবর্ধমান হারে পাবলিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে বেসরকারিকরণের লক্ষ্যে এ কৌশলপত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয়বৃদ্ধির ওপর জোর দেয় এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার প্রস্তাব দেয়। কৌশলপত্রে বলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে 'নিজস্ব সম্পদ/সম্পত্তি নিজেরাই তৈরি করতে হবে।' পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষায় রাষ্ট্রীয় ভর্তুকি ৫০ শতাংশ হরাস করা হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে বাকি ৫০ শতাংশ খরচ বহন করতে হবে। টিউশন ফি এবং অন্যান্য ফি বাবদ আয় এবং বিল্ডিং, ভূমি, ক্যাফেটেরিয়া, দোকান ইজারা দান/ভাড়া প্রদান এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কনসালটেন্সি, গ্র্যাজুয়েট ট্যাক্স, ছাত্র-বীমা, সান্ধ্যকালীন কোর্স এবং এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন থেকেই এই অভ্যন্তরীণ ফান্ড তৈরি হবে। অর্থাৎ টিউশন ফি এবং অন্যান্য ফি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি করতে বাধ্য হবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উচ্চশিক্ষার বর্ধিত বেতন বহনে অক্ষম ছাত্রদের জন্য এই কৌশলপত্রে এবং শিক্ষানীতি ২০০৯ এ স্বল্প সুদে শিক্ষাঋণ গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে ওঠে আসা শিক্ষার্থীকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সময়ই ব্যাংকের মোটা ঋণের বোঝা নিয়ে প্রবেশ করতে হবে এবং বের হতে হবে ওই ঋণের সুদ-আসলের আরও বৃহৎ বোঝা নিয়ে। কৌশলপত্রে অনেকগুলো নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে যেখানে সরকার অবকাঠামো তৈরি করবে কিন্তু অভ্যন্তরীণ আয় দিয়েই এসব প্রতিষ্ঠান চলবে। যেমন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে বলা হয় প্রতিষ্ঠানটি ৫ বছরের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে এবং এরপর সরকার ভর্তুকি/ অনুদান বন্ধ করে দিবে। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেতন ও ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ হাজার ২০০ টাকা এবং সেমিস্টার ফি হচ্ছে ৫ হাজার টাকা। অন্যভাবে বলা যায়, প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাহ্যিকভাবে পাবলিক হলেও কার্যত তারা প্রাইভেট হবে। কৌশলপত্রের প্রস্তাব অনুসরণ করে ইতোমধ্যেই দেশের সবগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রমবর্ধমান হারে বেতন ফি বৃদ্ধি করা হচ্ছে। বিভিন্ন বিষয়ে সান্ধ্যকালীন বাণিজ্যিক কোর্স চালু করা হয়েছে। ধীরে ধীরে উচ্চশিক্ষাকে পণ্যে পরিণত করা হচ্ছে এবং এই পণ্যের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি নিম্ন এবং মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীদের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।

ইউজিসির কৌশলপত্র বাস্তবায়নের ফলে উচ্চশিক্ষার ব্যয় বৃদ্ধি পাবে ব্যাপক হারে। এ কৌশলপত্র একই সঙ্গে গণবিরোধী এবং ধনীবান্ধব। এর বাস্তবায়ন হলে উচ্চশিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ছাড়া আর কিছুই হবে না। ফলে গরিব এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর অনেক ছাত্রই উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। ইউজিসি কৌশলপত্রে পাঠ্যক্রম, গবেষণাসহ একাডেমিক খাতে করপোরেট প্রভাব/নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়েছে। কৌশলপত্রে করপোরেট পুঁজির চাহিদা পূরণকেই উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্য হিসেবে তুলে ধরে বলা হয়েছে, 'যদি উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে দেশীয় এবং বিদেশি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানার চাহিদা অনুযায়ী গ্র্যাজুয়েট তৈরি করা না যায় তাহলে উচ্চশিক্ষার মূল লক্ষ্যই পূরণ হবে না।' সাম্রাজ্যবাদী বাজার অর্থনীতির ধারণা শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে মৌলিক বিজ্ঞান এবং মানবিক বিষয়গুলোর ভবিষ্যৎ নেই বলে সুপারিশ করে কৌশলপত্রে বলা হয়েছে, 'সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবিক ও বিজ্ঞান শাখা থেকে বের হওয়া স্নাতকের বর্তমান চাকরির বাজারে ও বাস্তব জীবনে তেমন কোন মূল্য নেই; তথ্য ও প্রযুক্তিবিদ্যা, ব্যবসা ও শিল্প বিষয়ে উচ্চশিক্ষার দ্বার খুলে গেছে। কিন্তু এই নতুন শিক্ষা খাতের তুলনায় মানবিক শাখার কোন ভবিষ্যতই নেই।' প্রস্তাবনায় মৌলিক বিজ্ঞান, কৃষি, সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শনের মতো আবশ্যক বিষয়গুলোকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে এবং বাজার কেন্দ্রিক বিষয়গুলোকে উচ্চশিক্ষায় নিরঙ্কুশ গুরুত্বদান করা হয়েছে। মানবিক বিষয়ের সঙ্গে বাস্তব জীবনের সংযোগ নেই (ঃযবু যধাব ষরঃঃষব ষরহশধমব রিঃয ঃযব ধাধরষধনষব লড়ন সধৎশবঃ ড়ৎ ৎবধষ ষরভব ংরঃঁধঃরড়হ) বলে কৌশলপত্রে উচ্চশিক্ষায় সমাজতত্ত্ব, রাষ্ট্রতত্ত্ব, ধর্মতত্ত্ব ও সংস্কৃতি তত্ত্ব এসবের গুরুত্বকে অস্বীকার করা হয়েছে। এ ধরনের বাজারকেন্দ্রিক শিক্ষা নিজ দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে অসচেতন শিক্ষিত শ্রেণী তৈরি করবে যারা জাতীয় সক্ষমতা সৃষ্টিতে অবদান রাখতে অক্ষম হয়ে পড়বে। অর্থাৎ কৌশলপত্রে প্রস্তাবিত উচ্চশিক্ষার পুরাটাই হবে বাজার অর্থনীতি কেন্দ্রিক একটি লাভজনক বাণিজ্যিক বিষয়। কৌশলপত্রের সুপারিশ অনুযায়ী উচ্চশিক্ষা কেন্দ্রে মৌলিক বিজ্ঞান এবং মানবিক বিষয়গুলো উপেক্ষিত হবে।

কিন্তু সুকুমার বৃত্তির চর্চার মধ্য দিয়ে একটা দেশের জনগণের মাঝে মানবিক ও সামাজিক মূল্যবোধ সৃষ্টি ছাড়া জাতীয় চেতনার বিকাশ সম্ভব নয়, আর জাতীয় বিকাশ ছাড়া জাতীয় অগ্রগতি অসম্ভব। এই জাতীয় বিকাশের জন্য প্রয়োজন ইতিহাস, দর্শন, সাহিত্য, শিল্পকলা এবং মৌলিক বিজ্ঞান। বাজারমুখী উচ্চশিক্ষার বিষয়গুলোর ওপর জোর দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় হবে সাম্রাজ্যবাদী লগি্ন পুঁজি ও পণ্যের পাহারাদার, কর্মচারী ও সেবাদাস তৈরির কারখানা। দেশের গণমানুষের সামগ্রিক মুক্তির জন্য সচেতন নাগরিক গঠন না করে আমাদের উচ্চশিক্ষা আজ তাই পরিণত হয়েছে বৈশ্বিক এবং দেশীয় পুঁজির বিকাশে অনুগত মানবসম্পদ তৈরির কেন্দ্রে। বাজার অর্থনীতি কেন্দ্রিক জ্ঞানের আধিপত্যের কারণে মৌলিক জ্ঞান চর্চা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সামাজিক এবং মানবিক জ্ঞান চর্চাও। ফলে দেশের সমাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি এবং অর্থনীতি কেমন হওয়া উচিত, কী করে এসব ক্ষেত্রে সাম্রাজ্যবাদীদের প্রভাবকে নাকচ করে গণমুখী নীতি প্রণয়ন করা যায় তা নিয়ে উচ্চশিক্ষা কেন্দ্রগুলোতে গবেষণা হচ্ছে না বললেই চলে। এই পটভূমিতে সমাজ, রাষ্ট্র ও ব্যক্তিসত্তার মুক্তির পথ নিয়ে ছাত্রদের গভীরভাবে চিন্তা বিশ্লেষণের ক্ষমতার বিকাশ রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে একটি পরনির্ভরশীল ও জনগণের স্বার্থবিরোধী উচ্চশিক্ষার কাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে।

এই কৌশলপত্র অনুযায়ী ক্রমান্বয়েই এ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাহিত্য, দর্শন ও বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলোকে গৌণ করে রাখা হচ্ছে অন্যদিকে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, আইসিটি, শান্তি ও সংঘর্ষ, পপুলেশন সায়েন্সেস, টেলিভিশন অ্যান্ড ফিল্ম স্টাডিজ, ট্যুরিজম অ্যান্ড হোটেল ম্যানেজমেন্ট, এমবিএসহ বাণিজ্য সফল বিষয়গুলোকে অত্যধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে এ দেশের উচ্চশিক্ষা বাজার কেন্দ্রিক জ্ঞানের পাঠশালায় পরিণত হওয়ায় মননশীল জ্ঞানের চর্চা মারাত্মকভাবে বিঘি্নত হচ্ছে। বাংলাদেশের বর্তমান উচ্চশিক্ষা কেন্দ্রে তাই মৌলিক জ্ঞান উৎপাদন অথবা প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন প্রায়োরিটি পাচ্ছে না। এ কারণেই দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান, পদার্থ, রসায়ন, গণিতসহ অন্যান্য মৌলিক বিষয় এবং এসব বিষয়ে মৌলিক গবেষণা গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ক্রিটিক্যাল বা চিন্তাশীল/মননশীল কোর্স চালু করার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের আগ্রহ খুব একটা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বরং বাজার-কেন্দ্রিক কোর্সগুলো বিভিন্ন বিভাগে প্রায়োরিটি পাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে অনেক দিন ধরেই এমআইটির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গাণিতিক অর্থনীতির উপর গুরুত্বারোপ করলেও পলিটিক্যাল ইকোনমির উপর তেমন কোন গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। ইউজিসি কৌশলপত্রে পাঠক্রম, গবেষণার বিষয় ইত্যাদি ঠিক করার ক্ষেত্রে আমলা, ব্যবসায়ী, এনজিওদের অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে, যার অর্থ হলো সাম্রাজ্যবাদ ও আমলাতান্ত্রিক পুঁজিবাদের চাহিদামাফিক জ্ঞান চর্চা হবে বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষার বিষয়বস্তু নির্ধারণ করবে এই আমলা-ব্যবসায়ীরা। ইউজিসি কৌশলপত্রের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ২০০৯ সালে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতিতেও শিক্ষা কার্যক্রমে করপোরেট প্রভাবকে স্বাগত জানিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি প্রণয়ন কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক এবং ব্যবস্থাপক প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত হতে পারে।' বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি প্রণয়নে শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকের অন্তর্ভুক্তিই উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে বাজার কেন্দ্রিক বিষয়গুলোর অন্তর্ভুক্তি এবং বিস্তারকে ত্বরান্বিত করবে।

ইউজিসি কৌশলপত্রে একাডেমিক গবেষণায় শিল্প কারখানা এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে উচ্চশিক্ষার কেন্দ্রের সংযোগ সাধনকে প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০১০-১১ বর্ষে সরকার পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারিত্ব বা পিপিপির অনুমোদন দেন এবং এর মাধ্যমেও ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেক্টরের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংযোগকে উৎসাহিত করা হয়। পিপিপির মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে করপোরেট হাউজের প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা হয়েছে এবং ইতোমধ্যেই অনেক মার্কেট কেন্দ্রিক বিভাগগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং গবেষণা খাতে বরাদ্দ দিচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেক শর্ত এবং বাধ্যবাধকতা থাকে যা কারিকুলাম এবং একাডেমিক গবেষণাকে বাধাগ্রস্ত করে। করপোরেট স্বার্থ এবং শিক্ষার উদ্দেশ্য বিপরীতমুখী এবং সাংঘর্ষিক। যেহেতু করপোরেশনগুলো মুনাফা দ্বারাই তাড়িত, তারা শুধু ওইসব বিষয়ে এবং বিভাগে গবেষণা খাতে বরাদ্দ দিবে যেসব বিষয়ের মার্কেট ভ্যালু থাকবে। যেসব বিষয়ে গবেষণা জনকল্যাণকামী কিন্তু করপোরেট মুনাফা লাভ নেই সেসব প্রকল্পে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থায়ন করে না। উদাহরণ স্বরূপ 'পলিটিক্যাল ইকোনমি' কিংবা 'বিশ্বায়ন ও সাংস্কৃতিক উপনিবেশবাদ' ইত্যাদি বিষয়ে কোন কোর্স চালু করলে কোন বাণিজ্যিক করপোরেশনের অনুদান পাওয়া যাবে না কিন্তু বাজারকেন্দ্রিক কোর্স ট্যুরিজম অ্যান্ড হোটেল ম্যানেজমেন্ট, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, টেলিভিশন অ্যান্ড ফিল্ম স্টাডিজের মত কোর্স/ বিভাগে করপোরেট অনুদানের অভাব হবে না। এই অর্থনৈতিক অনুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আপাত দৃষ্টিতে উপকারী মনে হলেও এর মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে শিক্ষা ক্ষেত্রে করপোরেট কালচারের বিস্তার লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং উচ্চশিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ত্বরান্বিত হচ্ছে। করপোরেট হাউজের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃসম্পর্ক এভাবেই ক্রিটিক্যাল শিক্ষার প্রসারের সম্ভাবনা কমিয়ে দিচ্ছে।

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আগে গণ্য করা হতো সমাজে সৃৃষ্টিশীল এবং মননশীল জ্ঞান চর্চার প্রধান কেন্দ্র, কিন্তু উচ্চশিক্ষা কেন্দ্রের এই ভূমিকা উত্তরাধুনিক পুঁজিবাদী উৎপাদন প্রক্রিয়ার প্রভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ইউজিসির পরামর্শ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দক্ষ, প্রশিক্ষিত জনবল তৈরির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে দেশের ভবিষ্যৎ চাহিদা পূরণের জন্য কিন্তু এ চাহিদা নির্ভর করছে বৈশ্বিক পুঁজিবাজারের চাহিদার ওপর। বৈশ্বিক পুঁজিবাদের প্রধান লক্ষ্য মুনাফা সর্বোচ্চকরণ করা যা অর্জিত হবে কেবল মাত্র অব্যাহত দক্ষ জনবল সৃষ্টি ও সরবরাহের ওপর। যদি প্রফেশনালরা অধিক দক্ষ হন তারা পুঁজিবাদীদের জন্য অধিক পণ্য উৎপাদনে সক্ষম হবেন। তাই নিও-লিবারেল পলিসিতে উচ্চশিক্ষা জ্ঞানচর্চার বিষয় নয় বরং দক্ষতা অর্জনের মাধ্যম। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এখন উত্তরোত্তর একাডেমিক উদ্যোক্তা হিসেবে ভূমিকা পালনের জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে কেননা অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বাজারের চাহিদা পূরণেই নিয়োজিত। এদেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শুধু বাজারকেন্দ্রিক বিষয়েই ডিগ্রি দিচ্ছে এবং তার মাধ্যমে বহুজাতিক করপোরেশনের জন্য দক্ষ কর্মকর্তার যোগান দিচ্ছে; পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ও ক্রমান্বয়ে একই পথে হাঁটছে। নিও-লিবারেল হেজিমনিক ডিসকোর্সের ভিত্তিতে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা বৈশ্বিক পুঁজির সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।। এ শিক্ষার মধ্য দিয়ে জাতীয় কল্যাণের জন্য উপযোগী মানবসম্পদ নয় বরং বহুজাতিক কোম্পানি এবং উন্নত বিশ্বের জন্যই গ্র্যাজুয়েট তৈরি করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে আমরা আমাদের উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বের জন্যই দক্ষ জনশক্তি তৈরি করছি। তাই আমরা আমাদের উচ্চশিক্ষা খাতে বিনিয়োগ করে যে গ্র্যাজুয়েট তৈরি করি তারা পশ্চিমা দেশে মাইগ্র্যান্ট হিসেবে কাজ করছে, ফলে পুঁজিবাদী দেশগুলো তেমন কোন বিনিয়োগ ছাড়াই তাদের বাজার অর্থনীতির বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল পাচ্ছে। ইউজিসি কৌশলপত্র বাস্তবায়িত হলে দেশের উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে করপোরেট প্রভাব বৃদ্ধি পাবে। পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে করপোরেট কালচারের বিস্তার ইতোমধ্যেই সুস্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সামাজিক জ্ঞান, ভাবাদর্শ এবং মূল্যবোধগুলো বাজার অর্থনীতিকেন্দ্রিক শিক্ষা দ্বারা পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। করপোরেট মূল্যবোধ সমাজের মানুষের সামাজিক পরিচয়ের চেয়ে ব্যক্তিগত পরিচয়কে মুখ্য করে তোলে, ফলে ব্যক্তি তার সামাজিক দায়বদ্ধতা ভুলে গিয়ে স্বার্থপর, আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। সামষ্টিক কল্যাণ-চেতনার বিপরীতে ব্যক্তির মাঝে জন্ম নেয় শুধুই ব্যক্তিগত আশা-আকাঙ্ক্ষা, লোভ-লালসা চরিতার্থ করার বাসনা; সামাজিক চেতনা বর্জিত এই মানুষ তাই সমাজের নিপীড়িত গণমানুষের অধিকার আদায়ে উচ্চকিত হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। উন্নয়ন বলতে মানুষ ভাবতে শিখে শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন, এই বয়ান বা ভাবনা থেকেই মানুষের মাঝে সৃষ্টি হয় পণ্যপূজার ধারণা ও মাত্রাতিরিক্ত পণ্য ভোগের ধারণা (ঝঁঢ়বৎ পড়হংঁসবৎরংস)। এখানে পুরো সমাজকেই বিবেচনা করা হয় একটা বাজার হিসেবে এবং মানুষকে মূল্যায়ন করা হয় ভোক্তা হিসেবে। সমাজে তৈরি হয় এক ভোগের সংস্কৃতির যা সমাজের প্রতিটি মানুষকে চরম ভোগবাদী করে গড়ে তুলে তার মানবিক এবং সামাজিক দায়িত্ব সম্পর্কে তাকে অসচেতন করে রাখে। মানুষের আত্মিক শক্তির বিকাশের কোন সুযোগ না রেখে শুধু তার বস্তুগত চিন্তা-চেতনার বিকাশকেই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাধান্য দেয়া হয়েছে এবং তার ভিত্তিতেই পাঠক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে। ফলে আমাদের উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠছে বুর্জোয়া মতাদর্শ প্রচারের তীর্থকেন্দ্রে যেখানে পশ্চিমা উদারনৈতিকতাবাদ এবং পুঁজিবাদী মূল্যবোধকেই উন্নয়ন ও জ্ঞানের প্রভাবশালী মডেল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, যেখানে করপোরেট সংস্কৃতিকেই ব্যক্তিগত সফলতা এবং সার্থক জীবনের মডেল রূপে গণ্য করা হয়। আজ তাই ভোক্তা সংস্কৃতি ছাত্রদের বিবেকবোধকে পুঁজিবাদী মানসিকতার অধীনস্ত করে রাখছে। সামাজিক প্রথা ও মূল্যবোধের জায়গা দখল করে নিচ্ছে করপোরেট মূল্যবোধ। কে বাজারের কত পণ্য ভোগ করতে পারল, কে কোন করপোরেট ব্র্যান্ডের পণ্য ক্রয় করতে পারল এর উপরই নির্ভর করে তাদের উন্নত জীবনযাপনের স্ট্যাটাস। উচ্চশিক্ষার মধ্য দিয়ে ছাত্ররা গড়ে উঠছে সমাজ ও দেশের প্রতি কোন দায়বদ্ধতা ছাড়াই। ছাত্ররা সমাজ ও দেশের উন্নতির কথা চিন্তা না করে কেবল নিজের ভোগ এবং সুখের সন্ধান করে।

করপোরেট মূল্যবোধ এবং বাজার অর্থনীতির ভাবাদর্শে মোহাচ্ছন্ন থাকে বলে ছাত্ররা সূক্ষ্ম চিন্তা এবং বিচার-বিশ্লেষণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এই ভোগবাদী শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষিত মানুষের অধিকাংশই স্বাধীন চিন্তা-ভাবনায় অক্ষম, স্বার্থ-চিন্তায় মগ্ন এবং জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। এই ভোগবাদী মানুষের পক্ষে তাই সাম্রাজ্যবাদীদের এবং পুঁজিবাদীদের একান্ত দাস হয়ে কাজ করা ছাড়া আর কিছুই সম্ভবপর হয় না। মেধাও আজ তাই সাম্রাজ্যবাদী পুঁজির অধীনস্ত হয়ে পড়েছে। দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি এবং রাষ্ট্রনীতিতে সাম্রাজ্যবাদী এবং আঞ্চলিক আধিপত্যবাদী শক্তিগুলোর নয়া-উপনিবেশবাদী শোষণ-নিপীড়ন, বৈশ্বিক পুঁজির করপোরেট আগ্রাসন এবং দেশের তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদে বহুজাতিক কোম্পানির অবাধ লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে শিক্ষিত শ্রেণীর যে নিষ্ক্রিয়তা ও প্রতিবাদহীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে তার জন্য মূলত দায়ী হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী ভোগবাদী শিক্ষা কেননা এই শিক্ষা মানুষকে স্বাধীন ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন এবং সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ নাগরিক হিসেবে প্রস্তুত না করে তাকে আত্মকেন্দ্রিক হিসেবে গড়ে তোলে। উচ্চশিক্ষায় সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন প্রতিহত না করে জাতীয় মুক্তির স্বপ্ন দেখা তাই অর্থহীন। দেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হলে এবং সাম্রাজ্যবাদী ও পুঁজিবাদী বিশ্বশক্তির আগ্রাসন থেকে দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতিকে মুক্ত করতে হলে প্রথমেই দরকার বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন। এজন্য বর্তমান পাঠক্রমে বহাল সমস্ত ঔপনিবেশিক ধ্যানধারণা এবং আশির দশক থেকে দেশের উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে যে নিও-লিবারেল হেজিমনিক মতাদর্শ প্রথিত হয়েছিল তার অপসারণ প্রয়োজন। বিশ্বব্যাংকের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে উচ্চশিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ও মতাদর্শ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক প্রণীত 'বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ বছর মেয়াদি কৌশলপত্র' অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। নিও-লিবারেল ডিসকোর্সের বিপরীতে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় আধিপত্যবাদ বিরোধী গণমুখী কাউন্টার-ডিসকোর্সের প্রবর্তন করতে হবে যা আমাদের জাতীয় চেতনার বিকাশ এবং সত্যিকারের জাতীয় উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। এজন্য দেশের দেশপ্রেমিক ও প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক এবং শিক্ষাবিদদের একটা গণমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নের লক্ষ্যে এগিয়ে আসতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:০৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×