somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পে গল্পে আত্মপরিচয় !! :-* 8-|

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রেজাল্ট প্রকাশিত হয়েছে । আপনার প্রিয় চরিত্রের সাথে মিলিয়ে দেখে নিন আপনি কোন শ্রেণীর কনজ্যুমার বা ভোক্তা ।

গল্পটি খুবই সিম্পল । গল্পে বর্ণিত প্রত্যেকটি চরিত্র মনযোগ দিয়ে খেয়াল করবেন ।

বাবা তার সিদ্ধান্তে অটল । মেয়ের ভবিষ্যতের প্রশ্নে প্রয়োজনে আরো কঠোর হবার হুমকি দিলেন । তার মতে এইরকম পাত্র ফিরিয়ে দেয়া বোকামি । আর যে দিনকাল পড়েছে, উপযুক্ত পাত্র খুঁজে পাওয়া চাট্টিখানি কথা নয় ।

মেয়ে লামিয়া কিছুতেই এই বিয়ে মেনে নেবে না । জিসান ছাড়া আর কাউকে সে বিয়ে করবে না । কিন্তু লামিয়া বুঝে গেছে বাবাকে তার সিদ্ধান্ত থেকে সরিয়ে আনা সম্ভব নয় । তাই লামিয়া কাউকে কিছু না বলে এক কাপড়ে বাসা থেকে বের হয়ে আসে ।

বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমেই প্রেমিক জিসানকে ফোন দেয় । জিসান জানায় সে জিম করছে । লামিয়া একটা রিক্সা নিয়ে জিমনেসিয়ামে চলে আসে । সব শুনে জিসান খুব অবাক হয়! তারপর জানিয়ে দেয় বিয়ে করার জন্য এই মূহুর্তে সে প্রস্তত নয়, লামিয়া যেন বাসায় ফিরে যায় ।

জিসানের ব্যবহারে লামিয়া খুব কষ্ট পায় । কিন্তু এই অবস্থায় কি করা যায় তা ভেবে পায় না । ভাবতে ভাবতে লামিয়ার মনে হলো বেঁচে থেকে কি হবে? তাই সে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয় । উঁচু পাহাড় থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহ্যার করে সে জিসানের উপর রাগ মেটাতে চায় ।

লামিয়া পাহাড়ের দিকে যেতে থাকে । শহর ছাড়িয়ে একটা ঘন জঙ্গল আছে । সেই জঙ্গল শেষ হয়েছে একটা নদীর কাছে । নদীটি পেরিয়ে তবেই পাহাড়ে উঠতে হয় ।

গা ছমছম করা বিস্তৃত জঙ্গলের ভিতর দিয়ে লামিয়া একা হেটে চলেছে । যেতে যেতে পথে হঠাৎ তার সামনে একটা বাঘ এসে দাঁড়ায় এবং তাকে খেতে উদ্ধত হয় । লামিয়া তখন বাঘের কাছে কাকুতি মিনতি করে, তার দুঃখের কথা শুনে বাঘ মামা যেন তাকে খায় ।

লামিয়া তার বাবার জোড় করে বিয়ে দেয়া, তার প্রেমিকের ফিরিয়ে দেয়া এবং আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে পাহাড়ে যাওয়ার ঘটনা বাঘমামা কে জানায় । মানব তরুনীর দুঃখের কথা শুনে বাঘমামা'র মন গলে যায় এবং না খেয়ে তাকে ছেড়ে দেয় ।

লামিয়া দ্রুত হেটে জঙ্গল পার হয়ে নদীর কাছে পৌছায় । সেখানে অপেক্ষমান খেয়া নৌকার মাঝি কে সে সব খুলে বলে এবং তাকে নদী পার করে দিতে অনুরোধ জানায় । সব শুনে মাঝি তার জন্য সমবেদনা প্রকাশ করে । তবে মাঝি এটাও জানায় টাকা ছাড়া সে নদী পার করে দিতে পারবে না । কিন্তু লামিয়ার সাথে কোন টাকাপয়সা ছিল না । অগত্যা লামিয়া প্রিয় দুটো দুল খুলে মাঝিকে দেয় এবং মাঝি তাকে নদীর ওপারে নিয়ে যায় ।

নদী পার হয়ে লামিয়া দ্রুত পাহাড়ে উঠতে থাকে এবং সবচেয়ে উঁচু জায়গাটিকে আত্মহত্যার জন্য নির্বাচন করে । সেখানে দাঁড়িয়ে সে হাত দুটো বুকের উপর আনে এবং চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ স্থির হয়ে থাকে । তারপর দুহাত প্রসারিত করে নিচে ঝাঁপ দিতে যায় । কিন্তু শেষ মূহুর্তে হঠাৎ পেছন থেকে একজন এসে তার হাত ধরে ফেলে, লামিয়া আত্মহত্যা করতে ব্যর্থ হয় ।

বাঁচিয়ে দেয়া মানুষটিকে দেখে লামিয়া অবাক হয়! সে যে তার ছোট বেলার প্রিয় বন্ধু ইনান! ইনান কে লামিয়া তার দুঃখের কথা খুলে বলে । সব শুনে ইনানও খুব দুঃখ পায় এবং জানায়, লামিয়ার সম্মতি থাকলে সে সারাজীবন লামিয়ার পাশে থাকতে চায় ।
..........................................................................

গল্প এখানেই শেষ । এই গল্পে অনেকগুলো চরিত্রের সাথে আপনাদের পরিচয় হয়েছে । এদের মাঝে কোন চরিত্রটি আপনার বেশি ভালো লেগেছে তা মন্তব্যের ঘরে জানাবেন । উল্লেখ্য, প্রতিটা চরিত্রের আচরণের পেছনে কিছু লজিক ছিল, তাই আপনার প্রিয় চরিত্রেটির সাথে আপনার আত্মপরিচয় লুকিয়ে থাকতে পারে ।

আপনার প্রিয় চরিত্রের সাথে মিলিয়ে দেখে নিন আপনি কোন শ্রেণীর কনজ্যুমার বা ভোক্তা,

বাবাঃ রেশনাল বা বিচারবুদ্ধি সম্পন্ন ভোক্তা ।
প্রেমিকা বা লামিয়াঃ ইমোশনাল বা আবেগী ভোক্তা ।
প্রেমিক বা জিসানঃ প্র‌্যাকটিকেল বা বাস্তববোধ সম্পন্ন ভোক্তা ।
বাঘমামাঃ হিউমেরিটিয়ান বা দয়ালু, মানবিক ভোক্তা ।
নৌকার মাঝিঃ প্রোফেশনাল/ক্যাপিটালিস্ট- পূঁজিবাদি ভোক্তা ।
বন্ধু বা ইনানঃ লজিক্যাল বা যৌক্তিক ভোক্তা ।

মন্তব্যের ঘরে আপনার প্রিয় চরিত্রের নাম লিখে দিন । একদিন পরে উপরের .......... ঘরে জানিয়ে দিব কোন চরিত্র কি পরিচয় বহন করে ।

(হিউম্যান বিহেভিয়রঃ স্ট্রেটেজিক ম্যানেজমেন্ট)


সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৯
৮৬টি মন্তব্য ১২২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×