কোনা ব্যাঙস্বভাবতই কোনা ছাড়ে না । আমার কোন স্বভাব ছাড়াই কোনা ছাড়ি না । আত্ময়ীয় স্বজন আমাকে খুব একটা পছন্দ করে না । স্বজন মসজিদ পাড় ঘেসে আসলে আমি পাগার পার দিয়ে বের হয়ে যেতাম । আরেক টা বাজে স্বাভাব আমার আছে । আমি কাউকে তেল মারতে পারতাম না । এটা আজো পারি না । পরিস্থিতিনুযায়ী কাজ, কথা এবং আমি আমার মনের ভাব প্রকাশ ভাল করে করতে পারি না । ছোট্র বেলা মা নাকি স্কুলে পাঠাতো আমি নাকি বই নিয়ে যেতাম তবে সরকারের রাস্তা দিয়ে নয় । আবাদি জমি দিয়ে অবশ্য আইল দিয়ে । আইল ছিল আমার স্কুল । সে খানে বসে যেতাম । মাটির মধ্যে । কোন কিছু দিয়ে মাটিতে ঘর বানাতাম । ঘর বলতে চার পাশে দাগ কাটতাম । ত্রিভুজ আকৃতির । তার ভিতর আবার এদিক সেদিক টেনে রাস্তা বানাতাম । নিজে ভাল না বুঝলেও ওদের খুব ভালো করে বুঝাতাম । কোন ভুল হতো না । ছাত্রের প্রতি খুব মারকুটে ছিলাম । ছাত্র পেতাম অনায়াসে । অধিকাংশ ছাত্র প্রান নিয়ে ফিরে যেতে পারতোনা । স্কুলের ক্লাশের রাস্তা ছাড়াও বিভিন্ন কৌশলের রাস্তার সু ব্যবস্থা ছিল । স্কুলের পিছনের রাস্তা সামনে দিকে এগিয়ে একটু ডানে বা বামে গিয়ে শেষ হয়েছে পিছনের রাস্তায় । নিঁখুত । বেয়াদব ছাত্রের জন্য ছিল বিশেষ রাস্তা । অবশ্য এরা কেউ আমার সহপাঠি রহমত,আজিজল,মিজান নেদু ছিল না । ও নেদু কেমন ছিল মনে নেই বুঝছো । তবে ওর বাবা মা উভয়ে ফর্সা কর্ম জীবি ছিল । সেই সুবাদে ওর স্বাস্থ্য ভাল ছিল আমার চেয়ে দেখতে ভাল ছিল । নাজমা, নারর্গিস আপা, মিন্টু, উজ্জল ভাইয়ের সঙ্গে মেজবান খেতে গিয়েছিল খালার বাড়ি । নেদু কে ওর মা মেরে ছিল ভাত খেতে চেয়েছিল বলে । তখন আমাদের, আমাদের গ্রামে অভাব ছিল ভাতের প্রচন্ড।বাবু ভাইয়ের কাছে শুনেছি আমরা নাকি বাড়ি ভাঙ্গা মানুষ । তাও আবার পর পর দু বার বাড়ি ভাংছে নদী । চিনা হতো প্রচুর,সকলে শুধু চিনা আবার কেউবা ভাতের সঙ্গে মিশিয়ে খেত। আরো অনেক অভাব । মার খেয়ে গিয়ে সঙ্গি হয়ে ছিল হযরত মাষ্টারের বাড়ি ওদের সাথে । পাশেই বয়ে চলছিল লৌহজংগ নদী - নদীটি মরে না গেলেও আগের মতো স্বাস্থ্যবান নেই । নজরুলের দোকান টি আজো আছে। বর্ষা মাস । ভাল বর্ষা । বার বছর বালিকার মতো দিক বেদিক না তাকিয়ে ছুটে চলে । এরি মাঝে আমরা গ্রামের ছেলে-মেয়েরা কত বার যে গোসল করি আর কত বার যে মায়ের পিটুনি খাই তার হিসাব রাখা ভার । নেদু আর খায়নি । নেমে ছিল নদীতে । খেলতে ছিল নল নল । আমার কাছে নল । আমি গেলাম তল । আরে নাহ; আমি তোরে ছুইছিনা। আমার কাছে নল । হু ওর কাছেই তো নল। মিছা কথা কস কে । মিশুক একটু ঝগড়া । খেলা চল ছিল । সঠিক জানিনা সাতার জানতো কিনা । ওরে নাকি স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে গিল । উদ্ধার করতে পারেনি নাজমা’পা,মিন্টু ভাইয়েরা । লাশ দেখে বুঝা গেল ও বাচতে চেয়ে ছিল মাটি আকড়ে ধরে ।মাটি সহায় হয়নি । হাত মুখ নাক সব বন্ধছিল কাদায় । এও জানিনা নেদুর কি মেজবান বাড়ি গিয়ে খাওয়া হয়েছিল নাকি মায়ের মার খাওয়া টাই শেষ . . . . . । সেদিনই আমি ওর পেন্সিল চুড়ি করে ভাগ করে নিয়ে ছিলাম । আমি আর আমার বাবার ভাইয়ের ছেলে । সেদিন ও পেন্সেল না পেয়ে কান্না করে ছিল তবু আমার মন গলেনি । কান্না করে ছিল ভাত না পেয়ে । সকল শোধ নিল নেদু ভাত আর নল খেলতে গিয়ে । নেদু আমরা চুড়ি করে বেচে আছি । আর তুই কিনা বিনা অপরাধে মার খেলি আবার আমাদের জায়গা দিয়ে চলে গেলি । নেদু তুই যে মার খেলি পেন্সেল হারিয়ে মার খেলি ভাত চেয়ে সে মার আমরা খাচিছ পদে পদে পা ফেলে।জানিস নেদু ভাল ছাত্র হতে পারিনি। তোর পেন্সিলেরঅভিশাপ বুকে নিয়ে বেড়াছ্চি।প্রতিধানে ঈদ এলে মা বাবা কে একটা ভাল মানের কাপড় কিনে দিতে পারিনা । নেদুআম,কাঠাল না কাঠাল কোন দিন চুড়ি করছি বলে মনে পড়ে না । কলা, পেঁপে আখ , মুরগি , ডাব, দোকান থেকে কেক,চুড়ি করেছি । কিন্তু ধরাও পড়িনি স্বীকারও করিনি । তোর টা স্বীকার করলাম । তুই তো আর আমাকে মারতে পারবি না। যখন বুঝলাম অন্যায় তখন তোর কবর টার চিহ্ন পর্যন্ত নাই। আর আমি দিব্যই পাঁচ ফুট সাত ইঞ্চি লম্বা হয়েছি । মানুষের বেশ নিয়েছি মানুষ হতে পারিনাই । তবে দোস্ত তোর জায়গায় যখন আমি যাবো তোর পবিত্র হাত টা মেলাস । বিমুখ করিস না বন্ধু। তাহলে ঐ কুল টাও হারাবো রে । থুককু অপরাধের কথা থাক । ছাত্র প্রসঙ্গে ফিরে আসি । ছাত্র ছিল আমার পিঁপড়া ( পিপিলিকা)। আর আমি হলাম পিঁপড়ার শিক্ষক । দাগ কাটতাম আমার স্কুলের বাহির দিয়ে যদি কোন পিপড়া যেত ধরে মেরে ফেলতাম । আবার কোন পিপড়া ক্লাশের রাস্তা দিয়ে না ঢুকে অন্য রাস্তায় মোর নিলে মতি গতি পযর্বেক্ষন করে স্কুলের বাস্তায় আনতাম । তার পরও যদি চলে যেত মেরে ফেলতাম ।আর বেয়াদব বাস্তার কথা বললাম না সে পথে কেউ পা বাড়ালে কোন সুযোগ দিতাম না । বেচে থাকার । ইতিমধ্যে আমার পায়খানা এলে ঝটপট করে নিতাম আর মাটিতে একটা ঘসা দিতাম । তার পর। নখ দিয়ে পরখ করে দেখতাম ঠিকঠাক আছে কিনা ।এভাবেই সেরে নিতাম। বসে যেতাম পড়াতে । ধরা খেলাম একদিন ভাইদের হাতে । আম গাছ ছিল । আম পাড়তে গাছে ছিল ওরা । অক্ষি পড়ে আমার পড়ে । পযর্বেক্ষন করে নিশ্চিত হয়ে গেল আমি স্কুলে না গিয়ে কি ভাবে পিপড়ার পড়াই । এক রকম পচা মরা যেমন করে টেনে হেচড়ে দাপন করে রহির কথা বলতে ছিলাম । হেরফের নেই । সকাল বেলা । কানুর বোন । বিবাহ দিয়েছিল ঢালান । স্বামী এ শুশুরালয়ে থাকতো । সবে মাত্র একটি মেয়ে হয়ে ছিল । ঝগড়া ঝাটির মধ্যে দিন চলতো । বেশ আরামে । অত্যান্ত সুখের বিষয় স্বামী তাকে ভালবাসিত । এক কথায় বলার মতো না । কোন এক ফুসরতে সকালের নাস্তা মানে পান্তা ভাত । আরাম করে এক সঙ্গে খেতে বসে ছিলেন । কোন এক পলকে পান্তার সঙ্গে স্বামী আদর করে বিষ মিশিয়ে ছে টের পেল যখন তখন মরে প্রায় সে । অনেকে অনেক চেষ্টা করে ঘু পর্যন্ত গিলিয়ে বাহু খাটিয়ে কাজ না হলে, আর উপায় না দেখে, চাঙ্গারী বেধে সদর পর্যন্ত সময় দিল না । রাস্তায় শেষ নিঃশ্বাস। থানায় নিল । আশার কথা আসামীকে অল্প সময়ের মধ্যে গেফতার করা গেল । কয়েক দিনের মধ্যে বিনা বাধায় ছাড়া পেল । রহি এবার মরা লাশ । কাটা লাশ থানায় থেকে আনতে, দারোগা বাবু কে, খুশি করিতে হয় । অবশেষে লাশ এলো একদিন পর । সে কি পচা গন্ধরে ভাই । কাছে লাশের ঘেষা জায়না । পাড়ার সকলের নাকে, সারা পড়ে গেল । মরে না যতটা পরিচিত হলো,পচে ততটা পরিচিত হলো । গ্রামের মানুষ যে, যতটা পারিল সমস্ত লাশের গায়ে, কেরোসিন ঢালিলো । মুখ বাধিয়া কোন রকমে কাজ সমাপ্ত করে, দাফন কার্যের। হারাহারি করে গ্রামের লোক জন তাকে বিদায় করে, বিদায় নেয় । রহি মরে পচে গেল, আমি বেচে পচে আছি । পাথর্ক্য বটে আছে । তার গন্ধ সবাই টের পেল, আমার পায় না
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৪:১৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




