somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উনারা রাজাকার? নাকি দেশের অখন্ডতা রক্ষাকর্তা???

২২ শে জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


যুদ্ধাপরাধ ……… এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছোট এই দেশে ।মিডিয়ার কল্যানে আজ সবাই কম বেশি ব্যপারটা জানেন ।যদিও সামনা সামনি অনেকে ব্যপারটা নিয়ে কথা বলেন না, কিন্তু অনেকেই আছেন যারা চান না যুদ্ধাপরাধের বিচার হউক। অনেকেই আছেন যুদ্ধাপরাধ কি না জেনেই মন্ত্যব্য করে বসেন।
আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল এর মতে ‘যুদ্ধাপরাধ (war crime) হচ্ছে কোন যুদ্ধ বা সামরিক সংঘাত চলাকালীন সময়ে কোন ব্যক্তি কর্তৃক বেসরকারী জনগনের বিরুদ্ধে সংগঠিত, সমর্থিত নির্দিষ্ট সংজ্ঞায়িত অপরাধ কর্মকান্ডসমূহ। আর্ন্তজাতিক মানবাধিক আইন অনুসারে যুদ্ধ কালিন সংঘাতের সময় বেসরকারী জনগনকে খুন, লুন্ঠন, ধর্ষণ, কারাগারে অন্তরীন ব্যক্তিকে হত্যা, নগর, বন্দর, হাসপাতাল কোন ধরনের সামরিক উস্কানি ছাড়াই ধ্বংস প্রভৃতি যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।‘
১৮৯৯ ও ১৯০৭ সালের হেগ কনভেনশন সর্বপ্রথম যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত আইন সমূহ লিপিবদ্ধ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সংগঠিত হওয়া নূরেমবার্গের হত্যাকান্ড ও অপরাধ বিচার সবচেয়ে আলোচিত যুদ্ধাপরাধ বিচার। আধুনিক যুদ্ধাপরাধের সংজ্ঞা প্রদানের ক্ষেত্রে ১৯৪৫ সালের লন্ডন ঘোষনাকে আদর্শ হিসেবে ধরা হয়।
১৪৭৪ সালে সর্বপ্রথম রোমান যুগে জার্মান ও আলসেইক সেনাবাহিনীর কমান্ডার ‘পিটার ভন হ্যাজে নব্যাক’ এর বিচারের জন্যে যুদ্ধাপরাধের বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠিত হয় ।আন্তর্জাতিক ভাবে প্রথম ১৯৪৫ সালের ৮ অগাষ্ট প্রকাশিত লন্ডন ঘোষনাতে নূরেমবার্গের গনহত্যার বিচার সংক্রান্ত ধারাতে যুদ্ধাপরাধ সর্ম্পকে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়। নূরেমবার্গের বিচার কয়েকটি সামরিক ট্রাইবুন্যালের সমন্বয়ে ১৯৪৫-১৯৪৬ সালে সংগঠিত হয়। এই বিচার জার্মানির বেভারিয়াতে নূরেমবার্গের বিশেষ আদালতে করা হয়। ২৪জন গ্রেফতার হওয়া নাৎসি জার্মানের নেতার বিরুদ্দে অভিযোগপত্র গঠন করা হয়। ১৯৪৫ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত কয়েকটি ধাপে নূরেমবার্গ আন্তর্জাতিক আদালতে নাৎসী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হয়। যাদেরকে আদালতে হাজির করা হয় তাদের শাস্তি দেয়া সম্ভব হলেও পলাতকদের গ্রেফতারের পর বিচারের রায় কার্যকর হয়।
যুদ্ধাপরাধ হিসেবে যা বিবেচিত হয়ঃ
আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে যুদ্ধাপরাধ এভাবে বর্নিত আছে ‘‘crime against humanity as crimes committed in armed conflict but directed against a civilian population। acts committed with intent to destroy, in whole or in part, a national, ethnical, racial or religious group’’। নিচে কিছু নমুনা দেওয়া হল ।
১) শহর বা গ্রাম ধ্বংস করা কোন প্রকার মিলিটারি বিচার আইন ব্যতিত ।
২) আক্রমন বা বোমাবর্ষন করে যেভাবেই হওক অরক্কিত শহর গ্রাম বা কোন গুরুত্তপূর্ণ জায়গা ধ্বংস করা ।
৩) ধর্মীয় স্হান, চ্যারিটি প্রতিস্টান, শিক্ষা প্রতিস্টান , ঐতিহাসিক মনুমেন্ট এবং মানবিক ও বিজ্ঞানের সাথে জড়িত এলাকা সমূহ যা যুদ্ধের সাথে কোন ভাবেই জড়িত নয় ।
৪) সাধারন পাবলিক নির্বিচারে হত্যা ।
৫) দাসত্ত বা অযতাই যুদ্ধ কবলিত দেশের মানুষ কে কাজ করানো বা ENSLAVEMENT ।
৬) নির্বাসন বা DEPORTATION ।
৭) যন্ত্রনা বা হয়রান করা অযথা বা TORTURE ।
৮) ধর্ষন বা RAPE ।
৯) অবৈধ ভাবে সাধারণ সম্পত্তি কেড়ে নেওয়া।
বিশ্ব মানুবাধিকার আইনে(Click This Link ০১৮৯৯ সালে প্রথম যুদ্ধাপরাধ নি ইয়ে আলোচিত হয় এবং এর আইন হয় ১৯০৭ সালে । জেনেভা কনভেন্সন ১৯৪৯ সালে তা আবার নতুন করে করা হয় যা আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে ডুকানো হয় ১৯৭৭ সালে।
এবার আসুন ইসলাম কি বলে।সা’দ ইবনে জাহিদ এর কাছ থেকে পাওয়া হাদিসে “যে লোক নিজের সম্পদ বাচাতে মারা যায় সে শহীদ”( তিরমিজি)। পাকিস্তানী রাজাকারদের জন্যে নিচের হাদীস গুলো প্রযোজ্য।
“ আল্লাহর কাছে একজন সাক্ষী হিসেবে সত্ত্যের জন্য দাড়াও, যদিও তা তোমার,বা তোমার বাবা মার, আথবা সন্তানের কিংবা ধনী বা গরীব বিরুদ্বে যায়, যেখানে আল্লাহ উভয়ের রক্কাকর্তা। কোনপ্রকার উত্তেজনা কে মনে ঠাই দিয় না। যদি তুমি তা করতে অস্বিকার কর ন্যায় পারানয়তায়, আল্লাহ অবশ্যই সবি জানেন তুমি কি করছ ” । (কুরান ০৪;১৩৫)
“ কেউ যদি একজন উৎপীড়কের সাথে হাটে ক্ষমতার জন্যে, উৎপীড়ক জেনে ও , সে ইসলামের বাইরে চলে গেল ”(Baihaqi)
“All things of a Muslim are sacred and to be honoured by other Muslims. His life, property and honour must be respected”. (Muslim)
"A Muslim who harms another Muslim and deceives him, is accursed." (Tirmidhi)

এবার একটি ঘটনার কথা বলব যে কারনে আমার এই পোস্ট টী লেখা। আমার নানার ভাই আমাদের বাসায় কয়দিন আগে আসেন। তখন তিনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এর জামেলা থেকে শুরু করে যুদ্ধাপরাদী দের কথায় চলে যান। আমি এই বিষয়টি নিয়ে উনার সাথে আলাপ করতে চাই নি। কারুন আমি জানতাম উনি রাজাকার দের সাথে ছিলেন এবং পারলে এখন সাপোর্ট দেন। উনার কিছু উক্তি তোলে ধরছি- “ এদের(যুদ্ধাপরাধী) যদি ফাসি হয় তবে বাংলাদেশ এ আগুন জলবে”, “ তুই কি চাস এদের এই বয়সে শাস্তি হউক? নিশ্চই তুই আওয়ামিলিগ করস !!”, “তখন (১৯৭১) যদি যুদ্ধে হেরে যেত তখন কে কার বিচার করত শুনি?”, “ তর আর বয়স কত ২০ হবে , কি বা জানস ই, আমি নিজে জানি এরা কিভাবে দেশের জনগন কে রক্কা করসে!!( আমার প্রশ্ন কার কাছ থেকে। উত্তর মুক্তিযুদ্ধা !!!) “এদের আপরাদ কি? এরা শুধু রাষ্ট্রের অখন্ডতা চেয়েছিল !”

যুদ্ধের নথিপত্র থেকে পাওয়া কিছু রাজাকারদের লিস্টঃ
(যদি ছবি গুলো ভালভাবে দেখা না যায়, সব ছবি ডাউনলোড করুন মিডিয়া ফায়ার এর এই লিঙ্ক এ) ৩৭০কেবি ।









আলবদর বাহিনীর লিস্টঃ





ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু দালালের লিস্টঃ (যাদের বেশির ভাগ কেই পরবর্তীতে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়)



টিক্কা খানের সাথে বৈঠক রাজাকারদের (শান্তি কমিঠি। কে যে শান্তিটা পেয়েছিল আল্লাহই ভাল জানেন):



আমি জানি অনেকেই বাংলাদেশ এ এখন আছেন যারা আমার নানার ভাইয়ের সাথে সম্পূর্ন ভাবে একমত হবেন। হ্যা আমি ছিলাম না তখন, হ্যা আমার বয়স মাত্র ২১, কিন্তু আমি জানি দালাল কাকে বলে, আমি জানি রাজাকারি কাকে বলে, এজন্যে আমাকে যুদ্ধ দেখা লাগবেনা । আমার বয়স কম হতে পারে কিন্তু আমি এমন মুর্খ নই যে নিমক হারামদের চিনব না যারা দেশে থেকে দেশের মানুশদের সর্বনাশ করে। না আমি আওয়ামিলিগ করি না, ইন্ডিয়ার দালাল ও না, তাই বলে দেশের খেয়ে অন্যের গোলাম হতে চায় যারা তাদের কে আমি চিনব না??? উনারা নাকি আল্লাহর একান্ত বান্দা। যখন ছোট ছিলাম ওয়াজ শুনতাম, মনে হত কত ধার্মিক, আহা। কিত্নু এখন বুঝি আল্লাহর দুয়াই দিয়ে মানুশ কে কিভাবে ভুল পথে চালানো জায় উনারা ভালই জানেন। না ভাই আমি এখন ও মুসল্মান এ আছি, কই আল্লাহ তো কোথাও বলেননি দেশ রক্কায় ধর্ষন জায়েজ? আমাদের নবী তো কতই যুদ্ধ করলেন দেশের জন্যে, কই কোথাও তো দালালির মত কিছু দেখি নি। হ্যা এরা ও বাঙ্গালী। মীর জাফর যেমন পলাশির যুদ্ধে উনার আমলনামা দেখিয়ে ছিলেন, ‘৭১ এ উনারা আবার দেখালেন না আমদের শরীর থেকে অই রক্ত এখন যায় নি। মীরজাফর যুদ্ধ নিজের পক্কে জিতে ও আজ খল নায়ক, আম্র মনে হয় না আজকের যুদ্ধাপরাধীরা ১৯৭১ এ জয়ী হলে ও ইতিহাসে উনাদের ভাল কিছু লেখা হত। কি করেনি ওরা ১৯৭১ সালে যে কারনে যুদ্ধাপরাধী বলা হবে না?? আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশ্ন এর আইনে যতো গুলো বর্নিত আছে জার একটা ও যদি করা হয় তা যুদ্ধাপরাধ । আমার মনে হয় না লিস্ট এর আমন কোন নির্মম কাজ বাকি রেখেছিল তারা।
আমার একবন্ধু আমাকে বলেছিল ’৭১ এ যার জন্মই হয় নি তাদেরকে আজ নাকি রাজাকার বলা হয়। অরে রাজাকার হতে হলে তো যুদ্ধে দলালি করা লাগে না, যারা আজও দেশের খেয়ে অন্যদেশের গান করে শব কটা রাজাকার। ইচ্ছে হয় সব গুলারে লাত্থি মেরে দেশ থেকে বের করে দেই। পারলে ওরা এখন ই আবার পাকিস্তান বানিয়ে ফেলে দেশটাকে ।
(সূত্রঃ ইন্টারনেট , বই, আর বিবেক)



সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:০৩
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×