somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীর কেন্দ্র / পৃথিবীর কোর

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা বড় হতে হতে যতটা না পৃথিবীর বাইরের জগৎ মানে মহাজাগতিক গ্রহ-গ্রহাণু, নক্ষত্র-নক্ষত্রপুঞ্জ, ব্ল্যাকহোল,উল্কা , চন্দ্র গ্রহণ , সূর্য গ্রহণ ইত্যাদি নিয়ে অনেক লেখা দেখতে পাই আর জানতে আগ্রহী হই তেমনভাবে কিন্তু আমরা আমাদের পৃথিবীর কেন্দ্র নিয়ে অতটা আগ্রহী হই না অথবা এ সম্পর্কে লেখা আমরা তেমন ভাল ভাবে বুঝি না । যখন আমরা জুলভার্ণ এর “জার্নি ট্যু দ্যা সেণ্টার অফ দ্যা আর্থ’’ পড়ি আর রোমাঞ্চকর অভিযানের কথা দেখতে পাই তখন কিন্তু সেই রোমাঞ্চকর পরিবেশে গল্পের চরিত্রগুলোর পাশে আমরাও অবস্থন করি ।
এককথায় বলতে গেলে পৃথিবীর কোর নিয়ে জুলভার্ণের উপন্যাস “জার্নি ট্যু দ্যা সেণ্টার অফ দ্যা আর্থ’’ আর দুটো সিনেমা দেখেছি এর মধ্যে একটা সিনেমা “The core” এবং একটা ডকুমেন্টারী দেখেছি । এতেও সব কিছু বুঝতে বাকি আছে । তবুও যতটুকু পারি লিখছি।

আমাদের পৃথিবীর কেন্দ্র কিন্তু কোন বিন্দু নয় এটা আকারে আমাদের উপগ্রহ চাঁদের মত আর এর ভেতর আছে গলিত পদার্থ যার মধ্যে লৌহের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি । এই নীল গ্রহের মানুষরা প্রথমেই এর কোরের কথা জানতে পারে নি ,এটাতো পর্যবেক্ষণ করাও অসম্ভব । প্রাচীন কালে নাবিকরা সমুদ্রের দিক নির্ণয়ের সময় দেখতো লোহার হালকা কাটা টা কেবল নর্থ-সাউথ হয়ে থাকে তখন তাদের মনে প্রশ্ন জাগতো কোন শক্তির কারনে এমন হয় ,পাখিরা ঠিক মত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গমন করে কোন শক্তি সেই রহস্য! আর সেই শক্তির জন্য দায়ী আর কিছুই না আমাদের পৃথিবীর কোর ।
আমাদের কোর দুটি অংশে বিভক্ত মানে একটা বলয়ের উপর আরেকটা বলয়ের স্তর ।বাইরের স্তরটা শক্ত ; এটি লোহা , নিকেল দিয়ে তৈরী এর ব্যাসার্ধ ১২২০ কিমি . । ভেতরের স্তরটি লোহা , নিকেল এবং অন্যান্য হালকা মৌল দিয়ে তৈরী এর ব্যাসার্ধ ৩৪০০ কিলোমিটার । আর আমরা এদের উত্তাপ অনুভব করি না কারন আমরা এর থেকে অনেক উপরে থাকি ; প্রায় ১৭৫৮.১ কিলোমিটার উপরে ।
পৃথিবীর ডায়নামো হল এর কোর । পৃথিবী তার নিজ অক্ষ বরাবরও একবার করে ঘুরে প্রতি ২৪ ঘন্টায় যার ফলে দিন-রাত্রি হয় । আর এই ঘুর্ননের ফলে কোরের মধ্যে গলিত মৌলসমুহ পাক খেতে থাকে ।এই পাক খাওয়ার ফলেই চোম্বকত্বের সৃষ্টি হয় । যা আমাদের রক্ষা করে চলেছে । কোর থেকে সৃষ্ট চৌম্বকত্ব আমাদের পৃথিবীর উপর বাইরে থেকে আগত কোন পাথর খন্ড , উল্কা পরতে বাধা দেয় ; এমনকি সূর্য নামে যেই তারা টি আছে যার বুকে অবিরাম নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া ঘটে চলেছে তার থেকে সৃষ্ট তেজস্ক্রিয় রশ্নি পৃথিবীতে আসতে বাধা দেয় (মহাকাশ থেকে ফেরত ৩৯ জন নভোচারীর ফেরতের তিন চার বছরের মধ্যে চোখে ছানি পরে কেবল সূর্যের তেজস্ক্রিয় রশ্নির কারনে ) , পৃথিবীর দুই মেরুর দিক পরিবর্তনে সহায়তা করে ।

পৃথিবী যদি তার নিজ অক্ষ বরাবর ঘূর্ণন থামিয়ে দেয় তাহলে এই ডায়নামো আর কাজ করবে না ,চৌম্বক ক্ষেত্র আর কাজ করবেনা । ফলে বাইরে থেকে তেজস্ক্রিয় রশ্নি , উল্কা পিন্ড , বড় পাথর খন্ড ছিটকে এসে পৃথিবীতে পরবে ।আর আমদের পৃথিবীর ঘূর্ণন প্রক্রিয়া ঠিক থাকলেও তার তাপমাত্রা কিন্তু আস্তে আস্তে কমছে । এবং একদিন সমস্ত কোর ঠান্ডা হয়ে শীতল হয়ে যাবে । আমাদের নিকটতম গ্রহ মার্স তার কোরটা শীতল হয়ে গেছে । কিন্তু বিজ্ঞানীরা বের করেন কোটি কোটি বছর আগে এই গ্রহে পানি ছিল কিন্তু এখন সেটি বিশাল মরুভুমি ছাড়া আর কিছুই নয় । এর কারন জানা যায় যে এক কোটি বছর আগে যখন মঙ্গলের উত্তপ্ত একটা কোর ছিল তখন বাইরে থেকে অনেক বড় মাপের উল্কা এসে পরে এর উপর তখন মঙ্গল এর ভেতর থেকে সমস্ত তাপ বের করে দেয়, উপরের বালি গলে যায় , এর কোর ঠান্ডা হয়ে যায় ।বাস যোগ্য উদীয়মান মঙ্গল গ্রহ পরিণত হয় মরুভুমিতে ।

মঙ্গলের চিত্রটি আমাদের ভবিষ্যৎ পৃথিবীর । পৃথিবী মরার অনেক আগেই মানুষ দূষণের কারনে মারা যাবে আর পৃথিবী পরিণত হবে একটি সাদা আইস বলে ।কিন্তু আমাদের চৌম্বকক্ষেত্র এখনই বিভিন্ন জায়গায় হালকা হয়ে যাচ্ছে । আর কোথাও কোথাও সম্পুর্ণ রুপে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে । এর ফলে সূর্যের তেজস্ক্রিয় রশ্নি সরাসরি পৃথিবীতে এসে মানুষের সাথে বিদ্যুতের সমস্ত সম্পর্ক ছেদ করে দিবে । এই কোরের ফলেই পৃথিবীর দিক পরিবর্তন হয় , এবং এ পর্যন্ত ১০০ বার পৃথিবী তার উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর দিক পাল্টেছে ।

কিন্তু আমাদের পৃথিবীর কোরটি এখনও সাবলীলভাবে কাজ করে যাচ্ছে । হয়তো পৃথিবী একদিন আইসবলে পরিণত হবে কিন্তু তাও এক কোটি বছর পর । এতদিনে হয়তো মানুষ অন্যগ্রহে নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম হয়ে উঠবে !
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অণু থ্রিলারঃ পরিচয়

লিখেছেন আমি তুমি আমরা, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৭


ছবিঃ Bing AI এর সাহায্যে প্রস্তুতকৃত

১৯৪৬ কিংবা ১৯৪৭ সাল।
দাবানলের মত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।
যে যেভাবে পারছে, নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। একটাই লক্ষ্য সবার-যদি কোনভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পেইন্টেড লেডিস অফ সান ফ্রান্সিসকো - ছবি ব্লগ

লিখেছেন শোভন শামস, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৯

"পেইন্টেড লেডিস অফ সান ফ্রান্সিসকো", কিংবা "পোস্টকার্ড রো" বা "সেভেন সিস্টারস" নামে পরিচিত, বাড়িগুলো। এটা সান ফ্রান্সিসকোর আলামো স্কোয়ার, স্টেইনার স্ট্রিটে অবস্থিত রঙিন ভিক্টোরিয়ান বাড়ির একটি সারি। বহু... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×