আজকের তারিখটা খুবই ইন্টারেস্টিং, ২৫শে ডিসেম্বর এবং ১২ই রবিউল আউয়াল। দুই ধর্মমতে দুই মহামানব হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এবং যিশু খ্রিষ্টের (আঃ) (হযরত ঈসা (আঃ)) জন্মদিন। দুই ক্যালেন্ডার মতে দুই ভিন্ন দিবস আমাদের জীবনে আর কোনদিনই এক বিন্দুতে এসে মিলবে না।
যদিও তাঁদের জন্ম তারিখ নিয়ে দুই ধর্মেই নানান মুনির নানান মত আছে, তবে সেটা আজকের লেখার ইস্যু না। আজকের এই বিশেষ দিবস উপলক্ষ্যে একটা ইন্টারেস্টিং ঘটনা বলে ফেলা যাক।
জেরুসালেমে shuk ha tsaba'im st (সঠিক হিব্রু উচ্চারণ আমার বাপের দ্বারাও সম্ভব না) নামের এক রাস্তার একপাশে আছে চার্চ অফ দ্য হোলি সেপালকার। খ্রিষ্টান ধর্ম বিশ্বাসীরা মনে করেন এই স্থানেই যিশু খ্রিস্টকে ক্রুসিফাইড করা হয়, এবং এ স্থানেই আবার তাঁর পুনরুত্থান ঘটে। এই চার্চকে বলা হয় পবিত্রতার মধ্যেও পবিত্রতম।
ইন্টারেস্টিং ঘটনাটা হচ্ছে, যেদিন খলিফা উমারের (রাঃ) হাতে জেরুসালেম আত্মসমর্পণ করে, তখন এই শহরের নেতৃত্বে থাকা খ্রিষ্টান ধর্মগুরু খলিফা উমারকে (রাঃ) তাঁদের ধর্মের মহাপবিত্রতম চার্চটি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখান।
এই সময়ে জোহরের নামাজের সময় হয়ে যায়, এবং খলিফা জানান তাঁকে নামাজ পড়তে হবে।
খ্রিষ্টান ধর্মগুরু খলিফাকে চার্চের মধ্যেই নামাজ পড়ার অনুরোধ করেন।
উমার (রাঃ) একজন বিচক্ষণ নেতা ছিলেন। তিনি তাঁর লোকেদের ভাল মতই চিনতেন। তাই তিনি বলেন, "সেটা আমার করা উচিৎ হবেনা। তাহলে ভবিষ্যতে মুসলিমরা এই স্থানেই মসজিদ বানিয়ে ফেলবে।"
খলিফা চার্চ থেকে বেরিয়ে এসে খালি ময়দানে নামাজ আদায় করেন। এবং সত্যি সত্যিই shuk ha tsaba'im স্ট্রিটের অপর পাশে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা হয়, যা আজও মসজিদ উমার(রাঃ) নামে পরিচিত।
খলিফার এমন বিচক্ষণতায় মুগ্ধ হয়ে যাজক তাঁর হাতে চার্চের চাবি তুলে দিলেন।
এবং ইন্টারেস্টিং ঘটনাটা হচ্ছে, খ্রিষ্ট ধর্মের মহাপবিত্রতম চার্চটির চাবি এত শত বছর পরেও এখনও একটি মুসলিম পরিবারের হাতেই সংরক্ষিত আছে।
ধর্মীয় সহমর্মিতা ও সহনশীলতার এমন উদাহরণ আর কোথায় আছে?