পুড়ছে দিল্লি।
মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় আগুনের লেলিহান শিখায় আর্তনাদ করছে নারী-শিশু-বৃদ্ধ সহ লাখে লাখে মানুষ। এদেশ তাঁদেরও। কয়েক পুরুষ ধরে এইসব এলাকায় সবাই মিলেমিশেই বাস করছেন তাঁরা। যেই মসজিদে রমজান মাসে ইফতারের সময়ে হিন্দু মুসলিম মিলে ইফতার করে, সেখানেই উগ্রবাদীরা হনুমান পতাকা উড়িয়েছে।
কিছু হিন্দু উগ্রবাদীদের ধারণা তাঁদের সেই দেশে থাকার অধিকার নেই। যে সেকুলার ধারণা থেকে ভারতের স্বাধীনতার সংগ্রাম, বিপ্ল্ব, অহিংস আন্দোলন, জন্ম ও বেড়ে ওঠা, সেসব বহু আগেই ধূলিস্যাৎ হয়েছে যেদিন নরেন্দ্র মোদী নামের এক নরাধম দিল্লির সিংহাসনে বসেছিল।
আজকে ওকে সবাই হিটলারের সাথে তুলনা করছে।
কথা হচ্ছে, এইসব খবর, ভিডিও, সংবাদ, আমাদের দেশে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার আগে একটু সাবধানতা অবলম্বন করবেন।
আপনি আপনার ভারতীয় মুসলিম ভাইদের কষ্টে ব্যথিত। আপনি কিছু করতে চাইছেন, কিন্তু পারছেন না। জন সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যেই হয়তো আপনি সোশ্যাল মিডিয়ায় এইসব খবর ও ভিডিও শেয়ার করছেন।
কিন্তু আপনার ওয়ালে এইসব দেখেই একদল উগ্র ধর্মান্ধ মুসলিম আপনার দেশেরই সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা করে বসতে পারে। দিল্লির ঐ উগ্রবাদীদের সাথে যাদের কোনই সম্পর্ক নেই। উল্টো হয়তো এরা তিরস্কার করে এমন নেক্কারজনক কর্মকান্ডের। চৌদ্দপুরুষ ধরে এই বাংলাদেশেই তাঁদের বাস। লাল সবুজ পতাকাটি তাঁদেরও। পার্শ্ববর্তী দেশের কিছু জানোয়ারের কর্মকান্ডে তাঁদের কেন হামলার শিকার হতে হবে? আইসিসের কোন জঙ্গি হামলায় আমেরিকায় বসবাসরত মুসলিম ভাইদের উপর কোন শ্বেতাঙ্গ জঙ্গি হামলা চালালে আপনাদের কেমন লাগবে? নিউজিল্যান্ডের মসজিদে যখন গুলি করে অর্ধশত মুসলিমকে হত্যা করা হয়, তখন আপনার ভাল লেগেছে? খুনিতো একই যুক্তি দিয়েছিল, তাই নয় কি?
তাহলে আল্লাহর দোহাই, নিজেরা এই কাজ করবেন না।
সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দু ভাইদের প্রতি বলছি। এখন সময় আপনাদের নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানান দেয়া। আপনারা যে আমাদের সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, সেটা জানান দিন। আপনারা অনেকেই বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে অবদান রাখেন, এখন সেগুলো ফলাও করে প্রচার করুন। লোকে জানুক,
"মোরা এক বৃন্তের দুইটি কুসুম, হিন্দু মুসলমান,
মুসলিম যার নয়নমনি, হিন্দু যাহার প্রাণ!"
নিশ্চই পৃথিবী একটি পরীক্ষা কেন্দ্র। কারোর কাছে এ পরীক্ষা বড্ড কঠিন, কারোর জন্য সহজ। আল্লাহ আমাদের সবার জন্যই পরীক্ষা পাশের সুযোগ করে দিন।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৪:২৩