somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তসলিমা নাসরিন - এটেনশন সিকিং সাইকোপ্যাথ

০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ ভোর ৪:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইংলিশ ক্রিকেট দল সহ পশ্চিমা সংস্কৃতির দলগুলোর বিজয় মানেই শ্যাম্পেন স্নান। দামি শ্যাম্পেনের বোতল ঝাঁকিয়ে, ছিপি খুলে একজন আরেকজনের গায়ে ছিটিয়ে আনন্দ করবে। এইটাই ওদের উদযাপন। "কালচারের অংশ" হিসেবে ধরে নিতে পারেন।
মুসলিমদের কালচারের সাথে এটি সরাসরি সাংঘর্ষিক। আমাদের নির্দেষ দেয়া হয়েছে মদ ও মাদক থেকে কয়েক কোটি মাইল দূরে অবস্থান করতে। "সংস্কৃতি" যাই বলুক না কেন।
ব্রিটিশ বা পশ্চিমা সভ্য দেশগুলোর সংস্কৃতি এইটাও যে বৈচিত্র্যময় পৃথিবীর প্রতিটা দেশের প্রতিটা মানুষের ধর্ম, সভ্যতা, সংস্কৃতির সম্মান করা। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই তাঁদের বাকি বিশ্বের চেয়ে এত এগিয়ে নিয়েছে।
কাজেই, ব্রিটিশ দুই মুসলিম ক্রিকেটার, আদিল রশিদ ও মঈন আলী বিজয় আনন্দ শেষে যখন শ্যাম্পেন উৎসব শুরু হয়, ঠিক তার আগে আগে দৌড়ে মঞ্চ থেকে নেমে সাইডে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের আনন্দ উদযাপন দেখেন। ঠিক যেমনটা হাশিম আমলা ও ইমরান তাহির করতেন সাউথ আফ্রিকার বিজয়ের সময়ে। সতীর্থরাও বেয়াক্কেলের মতন তাঁদের গায়ে এলকোহলিক বেভারেজের ছিটা ফোটা দেন না। বলেন না, "আমাদের দেশে থাকতে হলে আমাদের মতন হতে হবে, নাহলে সৌদি আরবে যা! পাকিস্তানে যা!" এই ব্যাপারে তাঁরা খুব সতর্ক।
ঘটনা এখানেই শেষ না। তাঁরা কেউই কোন মদ কোম্পানির লোগো জার্সিতে ধারণ করেন না। মদ বিক্রির অংশ হতে চান না। জাতীয় ক্রিকেট দলের জার্সির ক্ষেত্রেও না। ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটেরও না।
এতে ক্রিকেটীয় চেতনা বা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় না। বরং ক্রিকেট বোর্ড তাঁদের এক নিবেদিত সেবকের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে।
আমাদের কর্পোরেট আমেরিকাতেও, অফিসের পার্টিতে, মিটিংয়ে যদি মদ সার্ভ করা হয়, এবং ওরা দেখে যে আমি মুসলিম, যে মদ ও শুয়োর থেকে দূরে থাকি, তাঁরা কিছু মনে করেনা। অন্ততঃ সামনা সামনি কিছু বলেনা। নিজে থেকেই বলে কোন খাবারে শুয়োর মেশানো আছে, কোনটাতে নেই।
একই কাজ ভেগানদের জন্যও। হিন্দুদের অনেকেই আছেন ১০০% ভেগান, তাঁরা ডিম পর্যন্ত খান না। জেইন সম্প্রদায়ের লোকেরা মাটির নিচের সব্জি পর্যন্ত খায় না। পেঁয়াজ, আদা, রসুন ইত্যাদি কিছুই না। মাংসাশী হিন্দুদের কেউই গরু খান না। সবাই সবার সংস্কৃতি, সভ্যতা ও ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
কারোরই চেতনায় আঘাত লাগে না।
কেন জানেন?
কারন আমাদের কারোরই চুলকানি রোগটা নেই। না খ্রিস্টানদের মুসলিমদের প্রতি, না মুসলিমদের হিন্দুদের প্রতি, না হিন্দুদের কারোর প্রতি। আমরা সবাই যে যার জীবন নিয়ে ব্যস্ত, যে যার মতন কামাই, খাই, ঘুমাই।
হ্যা, রেসিজম যে একদমই ঘটেনা তা কিন্তু না। মঈন আলীর কথাই ধরা যাক। স্ট্রাগলিং পিরিয়ডে যখন তিনি মাঠে খেলতে নামতেন, দর্শকসারি থেকে কেউ কেউ চিৎকার করতো তাঁর দাড়ি নিয়ে। হাজার খানেক দর্শকের মাঝে অমন দুয়েকটা বেবুন থাকেই।
কোন কোন ক্ষেত্রে নাকি কোচিং স্টাফের লোকজনও কুমন্তব্য করেছেন। ইংল্যান্ডে থাকতে হলে দাড়ির ব্যাপারে তিনি যেন চিন্তাভাবনা করেন।
দাড়িওয়ালা পুরুষ, হিজাব পরিহিতা নারী, সবাইকেই মাঝে মাঝে এটা সেটা শুনতে হয়। কিন্তু প্রকাশ্যে এই ধরনের ছোটলোকিপনা নিষিদ্ধ। অভদ্র আচরণ। নিম্নশ্রেণীর মানসিকতা।
কিন্তু আমাদের দেশের এক মহিলার এ নিয়ে দারুন চুলকানি আছে, যার নাম তসলিমা নাসরিন। দুই দিন পরপর এটেনশন সিকিং পোস্ট না করলে যার রাতে ঘুম আসে না, পেটের খাবার বদহজম হয়ে যায়।
অতি সস্তা মন মানসিকতার এই মহিলা সম্প্রতি টুইট করেছেন মঈন আলীকে নিয়ে যে "ইনি যদি ক্রিকেট না খেলতেন, তবে নিশ্চই আইসিস জয়েন করতেন।"
ঘটনার পেছনের ঘটনা হচ্ছে, চেন্নাই সুপার কিংসে খেলতে যাওয়া মঈন দলের ম্যানেজমেন্টকে অনুরোধ করেছেন তাঁর জার্সিতে যেন কোন এলকোহলিক বেভারেজ স্পন্সরের লোগো না থাকে। হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ভারতীয় দল চেন্নাই সুপার কিংস মঈনের অনুরোধ মেনে নিয়েছে, তসলিমা সেটি মানতে পারছে না।
এটি যে কোন পর্যায়ের ফাত্রামি বর্ণবাদী পোস্ট বোধয় মহিলা নিজেও বুঝে নাই। "বাক-স্বাধীনতার" মানে এই না যে যে কাউকে তাঁর জাত ধর্ম তুলে কথা বলবেন। মহিলা ভুলে গেছেন, বিদেশে একে তীব্রভাবেই নিন্দা করা হয়। রেসিজম কোন "কুল" বিষয় না। এটা চরম ছোটলোকি স্বভাব। যে সায় জানায়, প্রশ্রয় দেয়, সে নিজেও এই ছোটলোকিতে সামিল হয়।
অতঃপর যা হবার তাই হয়েছে, জফরা আর্চার, সাকিব মাহমুদ (মাঝে দিয়ে উনি বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানকে গালাগালি করে পোস্ট দিয়ে ধরা খেয়ে আবার এডিটও করেছেন, what a loser!) বা স্যাম বিলিংসরা এই মহিলাকে ধুয়ে দিয়েছেন। স্যাম বিলিংস আহ্বান করেছেন এই মহিলার একাউন্ট রিপোর্ট করতে, আর জফরা আর্চারতো উনার সুস্থতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন।
বাটে পড়ে মহিলা পল্টি মারার চেষ্টা করেন।
"হেটার্সরা বুঝে না এইটাতো মজাক ছিল।" মহিলার ধারণা পুরা দুনিয়ার ঠ্যাকা পড়েছে উনাকে সবাই "হেট" করে বেড়ায়! "লাভ" করার মতন একটা কাজও করেছে কিনা জীবনে বুঝিনা। কিছু বেয়াক্কেল এই সাইকোকে তুলনা করার ধৃষ্টতা দেখায় বেগম রোকেয়া বা সুফিয়া কামালদের সাথে। সিরিয়াসলি? উনাদের মতন মহিয়সী নারীদের এত বড় গালি দিতে লজ্জা করেনা?
জফরা আবারও এইটা নিয়ে রিটুইট করে বলেছেন, "মস্করা? তুমি ছাড়া কেউ হাসেনি। তুমি নিজেও না।"
"লোকে জানে না আমি ইসলামের মৌলবাদ নিয়ে সমালোচনা করি।" তারপরে এক চিমটি নারীবাদ ঢুকিয়ে হালাল করার চেষ্টা করেছেন।
এখানেই সমস্যা। "নারীবাদ নারীবাদ" করতে করতে যে কেউ এখন বিষয়টাকে অতি সস্তা বানিয়ে ফেলেছে। এখন মানুষ সত্যিই কনফিউজ্ড, আসলেই নারীবাদ কোনটা। পুরুষ সমান অধিকার, পুরুষ বিদ্বেষ, পুরুষের চেয়ে এগিয়ে যাওয়া, পুরুষের সাথে কাজ ও দায়িত্ব ভাগ করে নেয়া, নিজের পায়ে নিজে দাঁড়ানো নাকি অন্য কিছু! একবার একজনকে প্রচার করতে দেখেছিলাম পুরুষ রাস্তার পাশে পেশাব করলে, আমরা কেন করতে পারবো না? বা পুরুষ সিগারেট খেলে আমরা কেন খাব না? এই বেয়াক্কেলদের কে বুঝাবে যে যা খারাপ, সেটা পুরুষ নারী দুইয়ের জন্যই খারাপ। রাস্তার ধারে পেশাব পায়খানা নিম্নশ্রেণীর প্রাণীর স্বভাব, মানুষের না। আর সিগারেট খেলে তুমিও মরবা। কাজেই, নারী পুরুষ যেই হও ধূমপান ত্যাগ করো!
আরেক ছাগল একবার টিভিতে এসে মন্তব্য করেছিল "আসসালামু আলাইকুম বলা মানে জঙ্গিবাদী আচরণ!"
এখানেও তেমন, মঈন আলীর দাড়ি রাখা, মদের লোগো পরিধান না করার সাথে এই মহিলা জঙ্গিবাদের মতন ভয়াবহ ইস্যুকে মিশিয়ে খিচুড়ি বানাতে গিয়েছিল।
যাই হোক। মহিলার এই চুলকানি নতুন না। একের পর এক দেশে যান, বিতাড়িত হন। আর নিজের এই মানসিকতাকে হালাল করার চেষ্টা করেন নারী আন্দোলন আর ইত্যাদি ইত্যাদি নাম দিয়ে। ভদ্রমহিলার "সহমত" ভাইয়েরা ও বোনেরা, মুরিদ হবার আগে "পীর" যাচাই বাছাই করে বুঝে নিন। নাহলে নিজেও ডুববেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ ভোর ৪:৫৫
২০টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×