জন্ম থেকে বাবার পায়ের জুতায় পা গলাতে গলাতে টেরই পেলাম না, কোন ফাঁকে আমরা বড় হয়ে গেলাম। শৈশব থেকে কৈশোর পেরিয়ে যৌবন চলে এলো, শিশুকালে যার হাতের আঙ্গুল ধরে হাঁটতে শিখলাম, একটু ব্যালেন্স পেয়েছি বুঝলেই ছেড়ে দিতেন, টলমল পায়ে আছড়ে পড়তে গেলেই তিনি সামলে নিতেন। একদিন নিজের দুপায়ে ভর করে দীর্ঘক্ষণ হাঁটতে শিখলাম। কিন্তু পড়তে গেলেই আবারও সেই সত্তা বারবার, প্রতিবার এসে সামলে নিতেন। বলতেন, "বাপ থাকতে চিন্তা কিসের ব্যাটা?"
বাপ থাকতে কিছু নিয়েই চিন্তা করতে হয়নি। একা হাঁটার ক্ষমতা ছিল, কিন্তু তারপরেও সেই আঙ্গুল ধরেই হাঁটতাম। ভরসা পেতাম। সাহস পেতাম। তাহলে আমি বড় হলাম কবে? সন্তান কি কখনও বাবা মায়ের কাছে বড় হতে পারে?
মাথার উপরে সূর্য ছিল ভীষণ কড়া। প্রচন্ড দাবদাহ তার। রোদের বললম ছুঁড়ে মারতো। লাগলেই ঘায়েল হবার কথা। কখনই টের পাইনি।
বৃষ্টির তীব্রতা প্রখর। শিল, বাজসহ আরও বহু কিছু ছুটে আসতো।
বুঝতে পারিনি।
আমার মাথার উপরের ছাদটা ছিল ভীষণ মজবুত। টেকসই।
একদিন হঠাৎ দেখি সেই ছাদ আর নেই। সেই হাত আর নেই যা ভূপাতিত হওয়া থেকে আমাকে সামলে নিত।
বাবার পায়ের জুতা আজও আছে। সেখানে এখনও পা গলাই। আমার পাও বড় হয়েছে খুব, আমার নিজেরই জুতা আছে বেশ ক' জোড়া। কিন্তু আজও সেই জুতা আমার তুলনায় বড় রয়ে গেছে। বুঝি, সেই জুতা পায়ে ফিট হতে এখনও বহু সময় বাকি।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুন, ২০২১ রাত ১১:২৬