somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকা মেডিকেলে নিয়মিতই নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটে।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ৩:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকা মেডিকেলে নিয়মিতই নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটে। এই আজকেই এমন ঘটনা ঘটেছে।
বাচ্চাদের চুরি করে নিয়ে ভিক্ষা করানোর কাজ করায় কিছু চক্র। কিছুদিন পরপর সংবাদে দেখি পুলিশের হাতে এরকম চক্র ধরাও পড়ে। ওদের ধরে ধরে ফাঁ সি তে ঝু লা নো র শাস্তি দেয়া উচিত। বাংলাদেশের আইনে ওদের শাস্তি কি আমার জানা নেই। কিন্তু ওদেরও হাত পা কে টে আজীবনের জন্য পঙ্গু করে রাস্তায় ফেলে রাখতে পারলে উচিত শিক্ষা হতো।
যাই হোক, আমাদের সরকারি মেডিকেল কর্তৃপক্ষের টনক কেন নড়ছে না সেটাই মাথায় ঢুকছে না। সিকিউরিটি হিসেবে উনারা সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছেন এবং আনসার পাহারা দিচ্ছেন। ভাল, কিন্তু তারপরেও যেহেতু বাচ্চা চুরির ঘটনা ঘটেছে, তারমানে সিস্টেমটা খুবই পুরানো এবং তারচেয়েও বড় কথা, অকার্যকর। সিসিটিভিতো সুপারশপেও থাকে, চুরি কি আটকানো যায়? চোর চুরি করে নিয়ে যাওয়ার পরে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজে চোরের চেহারা দেখার চেষ্টা করে। চোর যদি নকল দাড়ি রেখে বা বোরখা পরে আসে, চিনতে পারবেন? ক্লিনড সেভ মানুষ যদি গাল ভর্তি দাড়ি রেখে ফেলে, তাকেতো চেনা কঠিন হয়ে পড়ে। সিসিটিভির ফুটেজ তখন কতটা সাহায্য করে?
উনারা বলতেই পারেন "আমাদের লোকবল নাই। ভিড় বেশি। আমাদের সিস্টেমে গন্ডগোল। ইত্যাদি ইত্যাদি।" কিন্তু এসবই অজুহাত। ডান হাত আর বাম হাতের চাইতেও বাঙালির প্রিয় হাত হচ্ছে এই অজুহাত, যার ব্যবহার আমরা সবচেয়ে বেশি করি।
আমি যদি জানি আমার মেডিকেলে বাচ্চা চুরির ঘটনা ঘটছে, এবং আমাকে সেটা থামাতে হবে, তবে আমি অজুহাত না খুঁজে যথাযত পদক্ষেপ নিব। আমি কি চাইবো কেউ আমার নিজের বাচ্চা চুরি করে নিয়ে যাক? তাহলে? অন্যের বাচ্চা চুরি হলে অন্যের বাবা মায়ের কলিজাতেও সেভাবেই আঘাত লাগে।
এখন বলি আমেরিকায় ওরা কি পদক্ষেপ নেয়।
প্রথমত, যে কেউ মন চাইলো আর ইচ্ছা মতন হাসপাতালে ঢুকে গেল এমন ঘটনা এখানে ঘটে না। এটা হাসপাতাল, রমনা পার্ক না। নানান রোগের রুগী ভর্তি হন। কারোর ছোঁয়াচে রোগ থাকে, তো কারোর অবস্থা এতই সেন্সিটিভ থাকে যে অন্যের বয়ে আনা জীবাণুই তাঁদের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে। কাজেই, হাসপাতালে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষেধ।
দ্বিতীয়ত, রোগী দেখার নির্দিষ্ট সময় থাকে। আমি রোগীর বিশ্রামের সময়ে গিয়ে হাজির হলাম, এমনটা এখানে হতে দেয়া হয়না। নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে আপনাকে প্রবেশ করতে দেয়া হবেনা।
তৃতীয়ত, আইডি চেকিং। কে আসছে, কার কাছে আসছে, কেন আসছে ইত্যাদি সব আইডি চেকিং করে ভ্যারিফাই করা হয়। আপনি রহিমা খাতুনের সাথে দেখা করতে চান। ভ্যারি গুড। আগে দেখবে আসলেই রহিমা খাতুন নামের কোন রোগী ভর্তি আছে কিনা। এই লোকের তাঁর সাথে দেখা করার অনুমতি আছে কিনা। তারপরেই সে ঢুকতে পারবে।
চতুর্থত, এইটা অতি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। বাচ্চা জন্ম নিলেই ওর হাতে একটি ব্রেসলেট পরিয়ে দেয়া হয় যেখানে নির্দিষ্ট একটি আইডেন্টিটি নাম্বার থাকে। একই ব্রেসলেট বাচ্চার বাবা মায়ের হাতেও থাকে। বাচ্চা যতবার বাবা মায়ের কাছে আনা হবে, নম্বর মিলিয়ে দেখা হবে ম্যাচ করে কিনা। এতে একের বাচ্চা অন্যের হাতে দেয়ার রিস্ক যেমন থাকেনা, তেমনই যে কেউ বাচ্চার এক্সেস পায় না। সবশেষে বাচ্চা এবং মাকে যখন রিলিজ করে দেয়া হয়, তখন হসপিটাল থেকে বেরুনোর গেটে আবারও চেক করা হয় আসল বাবা মাই বাচ্চাকে নিয়ে যাচ্ছে কিনা।
এককালে আমেরিকাতেও হসপিটালে বাচ্চা অদল বদল হতো। বিষয়টাকে ওরা সিরিয়াসলি নিয়েছে বলেই এইসব নিয়ম বের করেছে। প্রতিদিনই চেষ্টা করে আরও কড়া সিকিউরিটির ব্যবস্থা করতে।
আমাদের দেশে শিশু চুরি হওয়া যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা, সেটা অনুধাবন করে তো? করলেতো বহু আগেই ব্যবস্থা নিয়ে নেয়ার কথা। যদি বলে বাজেট নাই, টাকা নাই, লোকবল নাই, আবারও বলবো, এগুলো সব অজুহাত। অনেক অগুরুত্বপূর্ণ খাতে শত শত কোটি টাকা উড়িয়ে দেয়া হয়, এই সামান্য কিছু পদক্ষেপ নিতে নিশ্চই এত বিপুল পরিমান টাকার প্রয়োজন নেই?
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ৩:৫১
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×