সমুদ্রে জীবন - ১৬
[জীবনে এর চেয়ে অনেক বড় বড় ও অনেক সুন্দর সুন্দর জাহাজে sail করে থাকলেও, এই জাহাজটার প্রতি আমার একটা বিশেষ দুর্বলতা ছিল/আছে - কারণ, এই জাহাজটা যখন বানানো হয়, তখন আমি দক্ষিণ কোরিয়ার Kojeতে Samsung-এর শিপইয়ার্ডে ৫৫দিন অবস্থান করে এর নির্মান কাজের শেষ অংশটা তদারক করি এবং তারপর, এর Sea Trial-এ অংশগ্রহণ শেষে জাহাজটা Takeover করি। আমাদের কোম্পানী পরে তাদের Bulk Carrier Fleet গুটিয়ে ফেলতে চাইলে, অন্যান্য Bulk Carrier-এর সাথে এই জাহাজখানাও বিক্রী করে দেয়। ছবিতে জাহাজখানাকে বসফরাস প্রণালীতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের পাশ দিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে।]
আজকের পর্বটার নাম "সমুদ্রে জীবন" না হয়ে বরং "সমুদ্রগামীদের জীবন" হলেই ভালো হতো! আজ আমরা বরং "মেরিনারদের" বা "সমুদ্রগামীদের" নিযে আলাপ করবো ইনশা'আল্লাহ্। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে মেরিন একাডেমীতে তুলনামূলকভাবে, স্বাধীনতার আগের সময়গুলোর চেয়ে অনেক বেশী মেধাবী প্রশিক্ষণার্থীদের সমাগম ঘটেছে। এই কথাগুলো বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমীর বেলায়ও প্রযোজ্য। এর মূল কারণটা আর্থ সামাজিক। স্বাধীনতার পর পর আমাদের দেশের অর্থনীতি বেশ নাজুক ছিল - শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর অনেকেই একধরনের অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেন বুঝি বা! মেধাবী সমাবেশের আরো একটা কারণ ছিল সত্যি সত্যি যোগ্য প্রার্থীদের বাছাইকরণ। স্বাধীনতার পর পর মেরিন একাডেমীর কমান্ড্যান্ট ছিলেন (তৎকালীন নৌ-বাহিনীর ক্যাপ্টেন) মাহবুব আলী খান - যিনি পরবর্তীতে নৌ-বাহিনীর প্রধান হয়েছিলেন। সততা ও কঠোর শৃঙ্খলার জন্য তার বেশ সুনাম ছিল। তিনি ও তাঁর পরে পর পর কয়য়েকজন বৃটিশ কমান্ড্যান্টের উপস্থিতিতে, অন্যান্য বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর মত, মেরিন একাডেমীর দুর্বৃত্তায়ন তখন ঘটতে পারে নি। ফলে মধ্যবিত্ত বা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের মেধাবী ছেলে-পেলেরা তাদের মেধার অধিকার বলে অনায়াসে মেরিন একাডেমীতে স্থান করে নেয়।
স্বাধীনতার পরের অনেক ক'টা ব্যাচ পর্যন্ত মেরিন একাডেমীতে অধ্যয়নের বেশ কিছু বাড়তি সুবিধা ছিল, যার কিছু কিছু এখনো বিদ্যমান বা বর্তমান। প্রাথমিকভাবে ভর্তির সময় এককালীন কিছু খরচ থাকলেও, পরবর্তী সময়ে উন্নত মানের খাওয়া-থাকা ও পড়াশোনার জন্য কোন খরচ লাগতো না। ভর্তি পরীক্ষায় যারা ভালো করতো, তারা স্কলারশীপ পেতো, যাদের সংখ্যা মোট ক্যাডেটদের ১/৪ মত হতো! ঐ পয়সা দিয়ে পকেট খরচ চলে যেতো সুন্দরভাবে। এছাড়া ২ বৎসর প্রশিক্ষণ শেষে, জাতীয় "ফ্ল্যাগ ক্যারিয়ার" - বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনে নিশ্চিত চাকুরী থাকতো! "নিশ্চিত চাকুরী থাকতো" - কথাটা বোধহয় সঠিক হলো না, বরং চাকুরী করার বাধ্যবাধকতা (বন্ড) থাকতো। বয়স ভালো করে ২০ বছর হতে না হতেই, নিজের উপার্জনের পয়সা পকেটে আসা একটা বিরাট আত্মবিশ্বাসের জন্ম দিতো/দেয়। ২ বৎসর একাডেমীতে প্রশিক্ষণ শেষে জাহাজে যোগ দেয়ার পর আরও বছর দুই তিনেক জাহাজে uncertified officer হিসেবে কাজ করে on board ট্রেনিং-এর পর যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, হংকং, অস্ট্রেলিয়া বা ঐ ধরনের স্বীকৃত কোন স্থানে গিয়ে, স্বল্পকালীন কোর্স শেষে পেশাদার দক্ষতার সার্টিফকেট নিতে পারলেই উপার্জনে একটা বড় ধরনের বৃদ্ধি ঘটতো। প্রথম সার্টিফিকেটটা পাবার পর পরই অনেকে "বন্ড" ভেঙ্গেই বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ছেড়ে চলে যেতো। নিছক টাকা পয়সার লোভ ছাড়াও, এর কিছু সংগত কারণও ছিল। স্বাধীনতার পরের অন্তত ১৫ বছর পর্যন্তও, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের শীর্ষ পদগুলোতে অথবা সাধারণ সার্টিফাইড অফিসারদের পদেও অনেক বিদেশী ছিল। বৃটিশ, ফিনিশ, নরওয়েজিয়ান ও পাকিস্তানী সহ বহু জাতি-সত্তার মানুষজন ছিটে-ফোঁটা থাকলেও, সিংহভাগ জুড়ে ছিল ভারতীয় অফিসাররা। এসব বিদেশী অফিসাররা কোন দিক দিয়েই বাংলাদেশীদের চেয়ে বিশেষ আলাদা কিছু না হওয়া সত্ত্বেও, তাদের বেতন ছিল আমাদের চেয়ে কয়েকগুন বেশী - এটা তখন ছিল একটা সরকারী পলিসি। সাধারণভাবে ভারতীয়দের সাথে বা অধীনে কাজ করার অনীহা, আর বিশেষভাবে বেতনের এই বৈষম্য, অনেক বাংলাদেশী তরুণকে দেশ ছেড়ে বা দেশী কোম্পানী ছেড়ে বাইরে পাড়ি জমাতে অনুপ্রাণিত করতো। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যেতো যে, প্রথম পরীক্ষাটা দিতে বাইরে গিয়েই অনেকে জাতীয় কোম্পানীর "বন্ড" বা আইন কানুনের অন্যান্য "চোখ রাঙানী" তোয়াক্কা না করেই "পালিয়ে" যাচ্ছে!
প্রফেশনাল সার্টিফকেটের কয়েকটি ধাপ আছে - যেগুলোর শেষটি উৎরালে, যে কেউ ক্যারিয়ারের শেষে পৌছাতো। যারা একটু সিরিয়াস তারা জীবনের ৩০ বছরে পৌছানোর আগেই "সাধারণ" কোম্পানীগুলোতে ক্যাপ্টেন বা চীফ ইঞ্জিনিয়ার হয়ে যেতো - বেতন (ধরুন দশ বছর আগের বিনিময় রেট আর বেতন স্কেলেই) ২ থেকে ৪ লক্ষ টাকা। আর বেশী ভালো কোম্পানীগুলোতে শীর্ষ পদগুলোতে যাবার আগে হয়তো আরো ২/৪ বছরের বাড়তি অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হতো - কিন্তু, শীর্ষ পদগুলোতে অধিষ্ঠিত হতে দেরী লাগলেও, ভালো কোম্পানীগুলোতে একটু নীচের পদে থাকলেও বেতন মোটামুটি একই রকম হতো। এত কথা আপনাদের জানানোর পেছনে আসল কারণটায় এবার আসি।
খুব কম বয়সে, বেশ বড় ধরনের ঐশ্বর্যের অধিকারী হবার বদৌলতে, বিয়ের বাজারে তরুণ মেরিনারদের রাতারাতি যে সমাদর বৃদ্ধি পেতো/পায়, তা সাধারণের কাছে রীতিমত ঈর্ষণীয়! ফলে একটা মধ্যবিত্ত বা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পারিবারিক পটভূমি থেকে আসা "আব্বার ছেলে" মার্কা একজন মেরিনার, হঠাৎই, উচ্চবিত্ত বা (আমাদের দেশের, শ্রেফ পয়সার মাপকাঠিতে নির্ধারিত) অভিজাত পরিবারের কোন সুন্দরী কন্যার যোগ্য পাত্র হিসাবে সমাদৃত হতে শুরু করেন এবং এক সময় হয়তো তেমনই কোন "রাজকন্যা"কে বিয়েও করে বসেন। ভালো - এ পর্যন্ত খুব বেশী কিছু বলার নেই। এরপরের যে বর্ণনাগুলো আসবে সেগুলো সাধারণভাবে হয়তো সকল "সোনার ছেলেদের" বেলায়ই প্রযোজ্য, কিন্তু বিশেষভাবে মেরিনারদের একটা large crosssection-এর বেলায় প্রযোজ্য বলে আমার মনে হয়েছে! বিয়ের পর খুব স্বাভাবিকভাবেই কয়েকটা দিন ঘোরের মাঝে কাটে - এক কালের উচ্চ-বিত্তদের ব্যামো "হানিমুন" ইত্যাদি এখন যখন সাধারণের ঘরেও প্রবেশ করেছে - সেক্ষেত্রে হঠাৎ অভিজাত ঘরের জামাই হয়ে, অর্থের সাথে আভিজাত্যের অনুভব লাভ করা কোন জাহাজী অফিসারের জীবনে এসব যে থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। প্রাথমিক ঘোরটা কেটে যেতে থাকলে, এই ধরনের বিবাহিতদের জীবনের পরিবর্তিত যৌগ পরিবেশ ও প্রতিবেশ থেকে পারিবারিক জীবনে প্রায় অবশ্যম্ভাবী যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়, সেটাকে "শ্রেণী-দ্বন্দ্ব" বললে বোধহয় বেশী বলা হবে না। বাবা-মা ভাইবোনদের সাথে মিলেমিশে "সৌভাগ্য" ভাগ করা মেরিনারের পৈতৃক পরিবারটা হঠাৎই যেন "haves" এবং "have nots" এই দুইভাগে ভাগ হয়ে যায়! পৃথিবীর প্রায় সকল "রাজকন্যা"দের মতই, আমাদের গল্পের্ নাম না জানা "রাজকন্যা"ও নিজের জীবনটাকে সাধারণের জীবন বলে কল্পনায়ও ভাবতে পারেন না - অথচ, স্বামীর পরিবারের সকলের জীবনযাত্রার মানকে রাজকন্যার জীবনযাত্রার মানে উন্নীত করার কাজটা তার কাছে কেবল যে দুরূহই মনে হয় তাই নয়, বরং এক ধরনের অপচয়ই মনে হয়। স্বামীর হেডমাস্টার, অফিস সহকারী অথবা সেনাবাহীনির জে.সি.ও. বাবার ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জীবনযাত্রা সব দিক দিয়ে তারই মত হবে - এটা তিনি দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেন না। শুধু তাই নয়, কল্পনায় স্বামীর (ক্ষয়িষ্ণু??) ঐশ্বর্য, অনেকের সাথে শেয়ার করতে গিয়ে ফুরিয়ে যেতে পারে - এই ভয়েও তিনি ত্রস্ত হতে শুরু করেন। এর একটা সহজ সমাধান হচ্ছে যুক্তিযুক্ত কোন কারণ দেখিয়ে আলাদা থাকা। কিন্তু বাস্তবে যখন দেশের একই শহরে বা ভিন্ন কোন শহরেও আলাদা থাকতে শুরু করেন - তখন আমাদের গল্পের "রাজকন্যা" এমন কিছু সূক্ষ্ম সমস্যার সম্মুখীন হন, যা অন্য কারো সাথে শেয়ার করা কষ্টকর - আর স্বামীর সাথে শেয়ার করা তো অসম্ভব! তিনি খেয়াল করতে শুরু করেন যে, যে বাসায় তারা আলাদা বসবাস করতে শুরু করেছেন, সে বাসায় বড় একটা মাছ রান্না করলে তার স্বামী হঠাৎই হয়তো অন্য-মনস্ক হয়ে বলে ওঠেন যে, তার বাবা এই মাছটা খুব পছন্দ করতেন, কিন্তু অনেক ভাই-বোনের সংসার সামাল দিতে গিয়ে সত্যি সত্যি কখনো বাজার থেকে এজাতের মাছ কিনে আনতে পারতেন না; আজকের খাবার টেবিলে তিনি থাকলে কত তৃপ্তিভরে খেতেন। অথবা, আরেকদিন হয়তো ট্রাফিক জ্যামে আটকে গাড়ীতে বসে থাকতে থাকতে, গাড়ীর তীব্র শীতাতপে হাত পা জমে যাবার উপক্রম হলে স্বামী একটা দীর্ঘ নিঃম্বাস ফেলে বলে ওঠেন যে, সেদিন তার মায়ের ডায়াবেটিক হাসপাতালে আসার কথা - এই গরমে সুদূর টঙ্গী থেকে কি করে যে আসবেন তিনি - গাড়ীটা তাঁর কাছে থাকলে কত সুবিধাই না হতো!
একদিন অলস দুপুরে "রাজকন্যা", শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শোবার ঘরের "কিং সাইজ" বিছানায় শুয়ে পাশে ঘুমন্ত স্বামীর দিকে তাকিয়ে ভাবতে চেষ্টা করেন যে, মানুষটা কি আসলে সম্পূর্ণই তার? একটা অস্বস্তি নিয়ে পাশের মানুষটির "খন্ডিত অস্তিত্ব" অনুমান করেন তিনি। তখন ভাবেন: এর চেয়ে বরং তার স্বামীর সমুদ্রে চলে যাওয়াটাই ভালো। কিন্তু পরক্ষণেই ভাবেন: সেটা তো আর স্থায়ী কোন সমাধান নয় - বরং, প্রতিবার স্বামী জাহাজ থেকে দেশে ফিরে এলে দেখা যাবে "ভাগ-বাটোয়ারার" একই "টেনশনের" উদ্ভব ঘটবে। "রাজকন্যা" তখন স্থায়ী সমাধান খোঁজেন। স্বামীকে তিনি তাদের অদূর ও সুদূর ভবিষ্যতের সম্ভাব্য জীবনের কথা মনে করিয়ে দেন - বোঝাতে চেষ্টা করেন যে, পেশাগত দিক থেকে আজ যে তিনি (স্বামী) অস্ট্রেলিয়া, কানাডা বা সিঙ্গাপুরে অভিবাসনের জন্য অগ্রাধিকার পাচ্ছেন - সেই সুবিধাটা তো আর চিরদিন বসে থাকবে না! একটা পরিকল্পিত জীবন কত গুরুত্বপূর্ণ সেটাও মনে করিয়ে দেন তাকে। তাছাড়া তাদের অনাগত (বা সদ্য আগত) সন্তানের ভবিষ্যৎটা, এই অগণিত অকর্মন্য মানুষে কিলবিল করা কাদা, মশা আর নোংরা আবর্জনা ভরা দেশে যে মোটেই নিরাপদ নয় - সেটাও তিনি বুঝিয়ে দেন। কথাগুলো খুব গভীরভাবে ভেবে না দেখলেও একধরনের মনে ধরে আমাদের গল্পের নায়ক "টিপিক্যাল মেরিনারের" - কিন্তু, বরাবরের মতই এই উজ্জ্বল সম্ভাবনার কথা তিনি প্রথমেই শেয়ার করতে চান তার বাবা-মার সাথে - তার জীবনের প্রতিটি সাফল্যে ও সম্ভাবনায় যারা সব সময় সবচেয়ে বেশী খুশী হয়েছেন। এবারও তার সাত সমুদ্রের ওপারে যাবার খবর শুনে এবং তা থেকে, তার সন্তানের "মানুষের মত মানুষ" হওয়া থেকে শুরু করে, সম্ভাব্য প্রাপ্তিসমূহের ফিরিসতি শুনে বাবা-মা আনন্দিত না হয়ে পারেন না! মেরিনারের মায়ের বুক থেকে হয়তো একটা চাপা দীর্ঘ-নিঃম্বাস বেরিয়ে আসতে চায় - কিন্তু, "আমার বাছা থাক দুধে ভাতে" - সনাতন বাংলাদেশী মায়েদের এই কামনা তাঁরও কাম্য। তিনি তাই তাঁর ভারী বুক আড়াল করতে, মুখে প্রয়োজনের চেয়ে আরো এক মাত্রার বেশী হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেন। ব্যাপারটায় সবচেয়ে তৃপ্ত হন আমাদের গল্পের "রাজকন্যা" - তিনি বোঝেন আপাতদৃষ্টিতে ব্যাপারটা সকলের জন্য একটা win-win situation মনে হলেও, তিনি কোন যুদ্ধ বা সংঘাত ছাড়াই আসলে জয় লাভ করেছেন - productive "haves"দের কাছ থেকে তিনি unproductive "have nots"-দের আলাদা করেছেন কোন বচসা ছাড়াই! এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসে "বিগ-ম্যাক" খেতে খেতে আর কেউ ভাববেন না যে, বাবা জিনিসটা খেতে কত ভালোবাসতেন! অথবা, ৩০০০ সিসির গাড়ী চালিয়ে সিডনী থেকে ব্রিসবেন যেতে যেতে মা যে "বলাকা সার্ভিস"-এ গাজীপুর থেকে ঢাকায় আসেন, তাতেও কারো অস্বস্তি লাগবে না! মহসমুদ্রের ওপার থেকে কারো সাথে এসব শেয়ার করার ভাবনা যে অবাস্তব কল্পনাবিলাস তা সবারই জানা - তাই এসব কারণে বিষন্নতার অবতারণা ঘটবে না বরং "যেখানে যা স্বাভাবিক" সেটা মেনে নেয়াই rational মনে হবে। মা-বাবাও কিছুদিন পর পর পাঠানো ছবির মাঝে যখন ছেলের একতালা বাংলো টাইপের বাড়ীর লনে কুকুরকে জড়িয়ে ধরে তোলা নাতির ছবি দেখবেন অথবা আটোসাটো জিন্সে আর গেঞ্জিতে তাদের পুত্রবধূ "রাজকন্যা"র হাস্যজ্জ্বোল ছবি দেখবেন - তখন ভাববেন যে এসব ওখানেই মানায়, আমরা এখানেই বেশ আছি। কিছুদিন পর পর ছেলে ২/৪ শ ডলার পাঠালেই মনে হয় কত্ত টাকা! তাছাড়া ২/৩ বছর পর পর আমাদের মেরিনার একবার দেশে ফিরে মাকে একটা চুমু দিলেই মা ধন্য হয়ে যাবেন - ভাববেন তাঁর ছেলে একদম বদলায় নি - ঠিক আগের মতই আছে। "রাজকন্যা" বোঝেন যে, এক সমুদ্র ব্যবধানে, এখানে এই ভিন দেশে: রাজা ও রাজ্য দু'টোই কেবলই তার - কিছু উচ্ছিষ্ট যদি রাজার বাবা-মায়ের কাছে যায়ও তাতে কিছু আসে যায় না!
[এটা কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির গল্প নয়, বরং একটা trend-এর গল্প। আজকালকার বুদ্ধিমতি তরুণী গৃহবধূরা নির্বিঘ্নে এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে স্বামীকে তার আদি পরিবারের বলয় থেকে বের করে নিয়ে আসতে প্রায়ই এই "বিদেশ গমন" অস্ত্রটি ব্যবহার করে থাকেন। পৃথিবীতে সুখ-দুঃখের হিসাব ও সমীকরণ বড়ই জটিল - সুতরাং আমরা সেই হিসাবে যাবো না। তারা কতটুকু লাভ করেন অথবা হারান, তা আল্লাহই ভালো জানেন্]
মসজিদ না কী মার্কেট!
চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷
আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন
সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?
,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন
আকুতি
দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন
ক- এর নুডুলস
অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।
ক
একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু
২-১ : আলিফ-লাম-মীম
আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন