১৯৪৭ সালের ২৯ নভেম্বরের একটি সাদাকালো ছবিতে নিজেদের রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় একদল মানুষকে উল্লাস করতে দেখা যাচ্ছে। এর ঠিক ৬৫ বছর পরে একই তারিখে আর একটি রঙিন ছবিতে নিজেদের ভূখণ্ডের রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতিতে আর একদল মানুষকে উল্লাস করতে দেখা যাচ্ছে।
এই দুটি ছবি একই এলাকার পরস্পরবিরোধী দু’টি রাষ্ট্র প্রত্যাশী মানুষের রাজনৈতিক জয়ের ছবি। এলাকাটি মধ্যপ্রাচ্যের শতাব্দীব্যাপী অশান্ত এলাকা জেরুজালেম, আর পক্ষ দুটি হলো ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন।
১৯৪৭ সালে জাতিসংঘে ব্রিটিশ শাসিত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে দুইভাগ করে এর একভাগে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ওপর ভোট গ্রহণ করা হয়েছিল। ২৯ নভেম্বরের ওই ভোটে ইসরায়েলের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পড়েছিল। এই ভোটে জয়ের পর উল্লসিত ইসরায়েলিদের ওই সাদাকালো ছবিটি তোলা হয়েছিল।
ফিলিস্তিনিরা জাতিসংঘের ওই ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছিল। ক্ষুব্ধ প্রতিবেশি আরবরাষ্ট্রগুলো নব্য ইসরায়েলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। কিন্তু তারা হেরে যায়। এরপর আরো কয়েকটি যুদ্ধে হেরে ইসরায়েলের কাছে প্রচুর ভূমি হারায় আরব রাষ্ট্রগুলো।
কিন্তু ৬৫ বছর পরে ইতিহাসের অপর রূপ। ঠিক ১৯৪৭ সালের মতোই ২০১২ সালের ২৯ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে “পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের” মর্যাদা দিতে ভোটাভুটি হয়। এতে বিপুল ভোট পড়ে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে।
বেশকিছু রাষ্ট্র ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে আর যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া হাতে গোণা কয়েকটি রাষ্ট্রই শুধু এর বিরোধিতা করে।
ফলাফল ফিলিস্তিনিদের জয়। কিন্তু এবার এ ফল প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের অনেক বাসিন্দাই এখন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অস্থিত্ব¡ স্বীকার নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। কারণ নিজেদের সংগ্রামের ইতিহাসই তাদের ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামের স্বীকৃতি দিতে উদ্বুদ্ধ করছে।
“ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীনতা সংগ্রামের সেরা শিক্ষক আমরাই,” বলেন ইসরায়েলি কলামিস্ট ইটান হেবার। তিনি আরো বলেন, “জায়নবাদী আন্দোলন থেকে তাদের পাঠ নেওয়া উচিত।”
বৃহস্পতিবার, ২৯ নভেম্বর একদল শান্তিবাদী ইসরায়েলি তেল আবিব জাদুঘরের কাছে জাতিসংঘের ভোটাভুটিতে ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নিয়ে মিছিল করেছে। ১৯৪৮ সালে এই জাদুঘরের সামনে থেকেই ইসরায়েল রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে অভিজ্ঞ অধিকার আন্দোলনকারী সাবেক ইসরায়েলি আইনপ্রণেতা মোজি রাজ বলেন, “তারিখের এই মিলটি কাকতালীয় নয়। একটি ঐতিহাসিক ভুলকে শুদ্ধ করার লক্ষ্য নিয়েই তারিখটি নির্ধারণ করা হয়েছে। ৬৫ বছর আগে জাতিসংঘ একটি ইহুদি রাষ্ট্র ও একটি আরব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, কিন্তু তা হয়নি। আজ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র্রের স্বীকৃতির মাধ্যমে আমরা ইতিহাসের সেই দাবী পূরণ করতে যাচ্ছি।”
সূত্র: এনডিটিভি
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এবি/সিআর/১৪৩৭ ঘ.
দৈনিক আমাদের সময় ও দৈনিক আমাদের অর্থনীতি.

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


