রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বাবরি মসজিদ ভাঙাকে বেআইনি বলেছিল ভারতের আদালত, কিন্তু বজরঙ্গী দলের কারো বিচার হয়নি। প্রতিটি এক্সট্রিমিস্টের ছবি ও ভিডিও থাকার পরও তারা বহাল তবিয়তে ছিল ও আছে, যদিও আদালত বলেছিল তারা অপরাধী।
এই মসজিদ যেমন ভারতের কোন ওলী-আউলিয়ার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়নি, তেমনি যে রাম মন্দির দাবি করা হয়েছিল তার মধ্যেও কোন হিন্দু সাধুসন্তের নাম আসেনি। যদিও মসজিদের ভেতরে মূর্তি পাওয়ার ঘটনা চমকপ্রদ এবং একথা বিশ্বাস করতেই কষ্ট হয়। উল্লেখ্য, মসজিদ প্রতিষ্ঠা করার আগে সেই জমিকে কিনে ওয়াকফ করতে হয়, এরমধ্যে চার্চের মতো পরবর্তীতে বিক্রির নিয়ম থাকে না। মানে মসজিদ চিরদিন মসজিদই থাকে, পরিবর্তন করা যায় না। হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) কে এক পাদ্রী চার্চে নামাজ পড়তে অনুমতি দিয়েছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে দখল হয়ে যাবার আশংকায় তিনি চার্চের অদূরে খোলা জায়গায় গিয়ে নামাজ পড়েন।
যাইহোক, বাবরি মসজিদ ভাঙা ও রামমন্দির প্রতিষ্ঠার পুরো ঘটনাটি মুসলিমদের বিপক্ষে হিন্দুদের বিজয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওরা মনে করছে মসজিদ ভাঙনের মাধ্যমে মুসলিমদেরকে হারিয়ে দিয়েছে, বেইজ্জতি করেছে। আর তাই নিতান্ত ছোট একটি ঘটনাকে পুরো পৃথিবীর হিন্দু সমাজের বড় একটি অংশ বিজয় হিসেবে, প্রতিহিংসা হিসেবে গ্রহণ করেছে। এতে বাংলাদেশের বহু হিন্দুও শামিল। আমি মনে করি অন্যায়ভাবে একটি মন্দির ভাঙার জন্য ব্যথিত হলে, মসজিদের জন্যও বেদনা থাকা চাই।
এই ভাঙন ও প্রতিষ্ঠার ফলে হিন্দু ধর্মের বিশেষ লাভ হয়েছে বলে মনে করি না। বরং ভারতের হিন্দু-মুসলিমের সৌহার্দপূর্ণ অবস্থান ও হারমনি নষ্ট হয়েছে। এই হারমনি ঠিক করতে হয়তো শত বছর কেটে যাবে৷ এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে বিজেপি দল বিশেষ ফায়দা লুটেছে, তারা প্রমাণ করতে চেয়েছে তারাই একমাত্র হিন্দুধর্মকে রক্ষা করতে পারে৷
দাঙ্গা ও ভাঙন বাদেও যে চাওয়া-পাওয়ার সুরাহা করা যায়, তার প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে ভারত। এই ঘটনাকে গ্লোরিফাই করা মূর্খতার শামিল।
বাংলাদেশে কোন হিন্দু মন্দির এক্সট্রিমিস্টদের দ্বারা ভাঙনের আগে আমি বাধা হয়ে দাঁড়াতে চাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৭