somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মের বিবর্তন, বর্তমানের ধর্মের মডারেশান এবং আগামি দিনের ধর্ম

১০ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মোহাম্মাদ, জেসাস এবং বুদ্ধ আমাদের সমসাময়িক ধর্ম নেতা। তবে মাত্র ৩৫০০ বছর আগে যদি আমরা নজর দেই- তাহলে দেখতে পাই ব্রোঞ্জ যুগে পারস্যে ( আজকের ইরানে ) সাম্রাজ্য কায়েম করেছিলেন- জরোস্টার ( Zarathustra ) নামক এক ধর্ম প্রণেতা।

একজন সুপ্রিম গড এর ধারনা নিয়ে শুরু করা ধর্ম ও তার ব্যাপ্তি ১০০০ বছর পরে পুরা পারস্য ছাড়িয়ে আরব পেনিনসুলা দখল করে নিলো। আর মাত্র আরো কয়েক হাজার পর সেই বিশাল ব্যাবিলনের ধর্মীয় সাম্রাজ্য পতন হল- আর বিচারে যারা দোষী সাব্যাস্ত হল তারা পেল ডেথ সেন্টেন্স আর বাকিরা কনভার্ট হলো ইসলামে শেষে চলে গেল কেউ কেউ আহমাদিয়া আর বাহাই সম্প্রদায়ে।

আর আজকের এই দুনিয়ায়- Zoroastrianism টিকে আছে নিভূ নিভূ করে মাত্র কয়েকজন পূজারী নিয়ে।

আমরা এটা ভেবে নেই- ধর্ম নাজিল হয় এবং টিকে থাকে। তবে আমাদের এক্সিস্টিং ধর্ম গুলোর দিকে তাকালে দেখতে পাই- আব্রাহামিক ধর্ম গুলার স্পেশালিটি হচ্ছে ফিউচার কোন ধর্মে এডাপ্টেড হওয়া। বিবর্তনের ধারায় ধর্মের ও ইভুলিউশান ঘটে এবং আবির্ভাব ঘটে নতুন ধর্মের।

আমাদের চিন্তার সীমাবদ্ধতা ও সাইকোলজিকাল কারনে আমরা নতুন ধর্ম কে বেছে নেই না। যখন কেউ নতুন কোন ধর্ম শুরু করে- আমরা তাকে কাল্ট বা পাগল হিসেবে আখ্যায়িত করি। অন্যদিকে যখন কোন ধর্ম বিলীন হয়ে যায়- তখন সেই ধর্মের নিয়ম কানুন আর গ্রন্থ ও পবিত্র রুলস গুলো আমাদের কাছে হয়ে যায়- জাস্ট মিথ। আজকের দুনিয়ায় মিশরীয় ( ব্যবিলনীয় জরোস্টার ), গ্রীক অথবা নর্স - একসময়ের প্রবল প্রতাপশালী ধর্ম গুলো আমাদের কাছে লিজেন্ড ও মিথ মাত্র।

এবং আজকের দুনিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী ধর্মের দিকে তাকালেও দেখতে পাই- খিস্টান ধর্ম বিবর্তিত হয়েছে বিভিন্ন ধারায়, শত শত শাখা উপশাখা তবে মেইন দুইটা দিক- ইস্টার্ন অর্থোডক্স ও ক্যাথলিক চার্চ গ্রুপে।

ইসলাম এর দিকে তাকাই- ক্লিয়ারলি দেখতে পাই- চারটি মূল ধারায় বিভক্ত- সুন্নী, শিয়া, সুফি ও আহমাদিয়া গোস্টি। তবে- মূল ধারা দুইটি- সুন্নী ( প্রায় ৮১% মোট মুসলিম এর ) এবং শিয়া ( ১৫% )

আরো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অল্প কিছু আলাদা আলাদা গোস্টী।

যদি আপনি বিলিভ করেন- আপনার ধর্ম চূড়ান্ত সত্যের পথ এবং এর বাইরে আর কিছু নেই তবে আপনার সাথে তর্ক চলে না। যদি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে চান এবং ধর্মের ক্রমধারার দিকে নজর দেন তাহলে দেখতে পাবেন- যত স্ট্রং হোক না কেন আমাদের বিলিভ, আমাদের পরের জেনারেশনে যেতে যেতে এটা ফেড হয়ে যাবেই এবং আস্তে আস্তে বিবর্তিত হবেই।

এটাই নিয়ম! এটাই হয়ে আছে ন্যাচারালি এবং এটাই ফিউচারে হবে।

সো যদি আগেও চেঞ্জ হয় তাহলে বর্তমান এর পর কেমন হতে পারে ফিউচার ধর্মের ধরন বা আমাদের পূজার ধরন কি রকম হবে?

কিংবা কোন আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্ট যদি নিজের মধ্যে সৌল খুজে পায় কি হতে পারে?

যাই হোক, এ আলোচনায় যাওয়ার আগে আমাদের যাওয়া দরকার শুরুতে কেন এলো ধর্ম। ফ্রেঞ্চ পলিমার ভল্টায়ার এর একটা কথা ধার্মিক দের খুব পছন্দ। সেটা হল, যদি খোদা বলে কেউ নাও থাকত, তবুও বিবর্তনের ধারায় তাকে আবিস্কার করতেই হত।

ব্রড সেন্সে বলা যায়- একটা শেয়ার্ড কমন বিশ্বাস এর দরকার ছিল আমাদের সভ্যতা বিনির্মানে।
সামাজিক, রাজনৈতিক ও অতিপাকৃতিক ব্যাখায় ধর্মের প্রভাব প্রচুর। একটা বিশাল পিরামিড তৈরি করতে যেখানে জীবন হারানো টা অনেক টা নিশ্চিত সেখানে কাজ করতে ধর্ম ছাড়া একটা বিশাল মিশরীয় জনগুষ্টিকে একত্র করা যেত না।

এই সব বিশ্বাস একটা লং টাইম কমপ্লেক্স কালচারাল, মিলিটারি প্রসেস, সিলেকশন এবং ইভুলিউশান এর মধ্যে দিয়ে আজকের এই ধর্ম। আমরা হয়ত বুঝতে পারি না, বাট প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কোন না কোন ধর্ম আবিস্কার হচ্ছে এবং ৯৯.৯৯% হারিয়ে যাচ্ছে মাস পিপল জানার আগেই।

যে কোন ধর্ম টিকে থাকতে হলে মাস পিপলের কাছে, তাহলে কিছু টেঞ্জিবল বেনিফিট দিতেই হবে। না হলে বাপ দাদার ধর্ম ছেড়ে কেন আসব নতুন ধর্মে? যেটা হতে পারে অর্থ , সেটা হতে পারে দাসত্ব থেকে মুক্তি সেটা হতে পারে স্বাধীনতা পুরা জাতির।

রোমান এম্পায়ার এর সময় ক্রিশ্চিনিয়াটির উদ্ভব এর কারন ছিলঃ দুস্থ ও অসহায় দের সেবা করার চিন্তা ।


ইসলাম- শুরুর দিকে তলোয়ার এর ডগায় না বরং সম্মান, মুক্তি ও হিউমিলিটি দিয়ে এর ফলোয়ার দের এট্রাক্ট করেছিল।


ইভেন এই বংগ ভূমে, ইস্লাম প্রসার এর কারন- সাধারন প্রজারা বাংলা হিন্দু জমিদার দের অত্যাচারে তারা ইসলামের তলে এসে কিছুটা শান্তি পেয়েছিল।

সো, মোদ্দা কথা, আপনাকে বেটার কিছু একটা দিতেই হবে। যার কারনে, ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম প্রসারিত হয় কারন এক এক যায়গায় এক এক ধরনের চাহিদা ছিল এবং ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম নিপীড়িত জনগনের চাহিদা ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে মিটিয়ে ছিল।

প্রি এগ্রিকালচারাল এইজে আমাদের হান্টার গেদারার রা ভাবত ন্যাচার এর যে কোন কিছুতেই সুপ্রিম গড কে পাওয়া যাবে । অন্যদিকে, আমাদের সভ্যতা বিকাশের সাথে সাথে আমরা আস্তে আস্তে এক গড এ বিলিভ করা শুরু করলাম- যেমন ইয়াইয়া, জেসাস, আল্লাহ প্রভৃতি।

আজকের সভ্যতায়, দেখতে পাই- একই সমাজে ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের লোক সহ অবস্থান করছে উন্নত ও সভ্য সমাজে এবং সেখানে কেউ কাউকে জোর করছে না বা কোন ধর্মে বিশ্বাস করেনা এমন লোকেরাও বাস করছে নিরাপদে। এই সেকুলারিজম এর বিকাশ উঠতির দিকে এবং বিজ্ঞান ও জ্ঞানের বিকাশের সাথে সাথে আমরা আমাদের কে বুঝতে ও চিনতে শিখছি আর জানছি এক্সপ্লেনেশন এবং আস্তে আস্তে সরে যাচ্ছি ধর্ম নামক বাড়ি থেকে।

সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে, বলা যায়ঃ ধর্মের ফিউচার নীচের দিকে এবং এটা আরো খারাপের দিকেই যাচ্ছে।

এটাই আমাদের নরমাল ধারনা ছিল। বাট আসল সত্য কিছুটা ইউনিক ও ভিন্ন ।

সভ্য দেশ ও সভ্যতা গুলো অনুন্নত দেশ গুলোর চেয়ে ধর্মে বিশ্বাস কম করলেও, অনুন্নত দেশ ও সভ্যতার মানুষ দের এখনো একমাত্র আশা ধর্ম। ফলে, এই ২১ শতকে এসেও আমরা দেখতে পাই বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো ধর্ম ঝাকিয়ে বসেছে এবং বিস্তার লাভ করছে । এবং এই বিস্তার লাভ আরো চলবে সাম্নের দিনেও। ২০১৫ সালে এক রিসার্সে দেখা যায়, ২০১৫ সালে যেখানে ৮৪% লোক ধর্মে বিশ্বাসী সেটা ২০৫০ এ চূড়ান্ত পিক এ আসবে প্রায়- ৮৭% এ।

এই যায়গায় সব চেয়ে বেশী নাম্বার বাড়বে ইসলাম ধর্মের

কারন মুসলিম অনুন্নত দেশ গুলোর বার্থ রেট অনেক হাই এবং ২০৫০ সাল নাগাদ এটা একদম পিক লেভেলে উঠবে এবং সব চেয়ে বড় ধর্ম গোষ্ঠীর এক্টাতে পরিণত হবে।
এটা ঘটবে এশিয়া, সাব সাহারান আফ্রিকা এবং ল্যাতিন আমেরিকায়। এটা আসলে আমাদের ডিপ নিউরোলজিকাল ও সাইকোলজিকাল গেম।

যেখানে কস্ট ও স্ট্রেস বেশি, যেখানে জ্ঞানের আলো প্রবেশ এর যায়গা কম ও অজ্ঞতা বেশি সেখানে ধর্ম প্রবেশ করবে বেশি।

অন্যদিকে, অমুস্লিম রা কিছুতা উন্নত সভ্যতায় থাকার ফলে, তারা জ্ঞানের আলোয় অনেক বেশি আলোকিত হবে এবং বাচ্চা জন্ম দান কে তাদের একমাত্র লাইফ গোল বানাবে না, ফলে বার্থ রেট কমতেই থাকবে। ফলত, ইসলাম বাদে অন্য ধর্ম গুলো বিস্তার কমবে।

কিন্তু, আসল খেলা হবে এর পর। এর পর আস্তে আস্তে সভ্যতা এমন এক পিক লেভেলে পৌছে যাবে মানুষের কাছে ইনফরমেশান একদম হাতের নাগালে চলে আসবে। ফলে মানুষ বুঝতে পারবে ধর্ম আসলে কি এবং আস্তে আস্তে এই রিলিজিওন গ্রোথ নীচের দিকে নামতে থাকবে। ফলে, নাস্তিক এবং কোন ধর্মে বিলিভ করেনা এমন লোকের সংখ্যা বাড়বে। বাট এই গ্রোথ অনেক স্লো হবে।

২০০৫ সালে, Paul Heelas এবং Linda Woodhead যারা Lancaster University, UK এর Department of Religious Studies এর প্রফেসর, তারা প্রকাশ করেন- দা স্পিরিচুয়াল রেভুলেশান নামক এক বিখ্যত বই, যেখানে দেখিয়েছেন কিভাবে মানুষ নতুন ধর্ম বিশ্বাস ও ফর্মে আস্তে আস্তে কনভার্ট হচ্ছে।

এই বইতে তারা দেখিয়েছেন, কিছু ফিউচার প্রেডিকশান দু'ভাবে- সেকুরালিজম ও সেক্রালাইজেশান এর দিক থেকে।

তাদের মতে- রিলিজিওন তখন ই কাজ করবে যখন তুমি অপ্রেসড বা যখন মনে হবে কিছুই যখন কাজ করেনা তখন না হয় ধর্ম কাজ করবে।

গরীব রাস্ট্রে, একটা ভাল চাকুরি পেতে বা ভাল বিজনেসে শাইন করতে হয়ত দোয়া বা প্রার্থনা দরকার হয়, বাট কোন সভ্য বা উন্নত রাস্ট্রে এটার দরকার হয় না। হয়, যোগ্যতা এবং সময়মত মেথড এপ্লাই করা।

এখন মানুষ ধর্ম কে নিজের মত করে ইউজ করছে এবং নিজেই বাছাই করছে কোনটা রাখবে আর কোনটা ছুড়ে ফেলে দিবে এবং এখানেই উদ্ভব ঘটছে একটা মডারেট ধার্মিক নামক নতুন টার্ম এর যেটা আগে ছিল না।

বিজ্ঞানীরা এই টার্ম এর নাম দিয়েছেন self-directed religions। পিক এন্ড মিক্স মেথডে বিশ্বাসী এই ধর্মের মানুষ জন।

যেমন- চায়না তে বুদ্ধিজম, তাওয়িজম এবং কনফুসিয়াজম মিক্স করে এক নতুন ধরনের ধারা তৈরি হচ্ছে এবং এটা ইয়াং দের মাঝে দেখা যাচ্ছে

যেমন- ইস্টার এবং ক্রিস্টমাস এক হয়ে ক্রিশ্চিয়ানিটি তে মিশে গেছে।


মুসলিম রা অনেক পুরাতন ধারা বাদ দিচ্ছে- যেমন বহু বিবাহ, দাসী ও গনিমতের মাল সিস্টেম।

এছাড়া একদম নতুন করে অনেক ধারা বের হচ্ছে, যেমন নতুন করে বাইবেল লিখা হচ্ছে যেখানে কোন সুপান্যাচারাল এলিমেন্টস নাই, তারা এথিস্ট টেম্পল তৈরি করছে, নাস্তিক দের জন্য চার্চ। খিস্টান দের সানডে প্রেয়ার এখন আস্তে আস্তে গেদারিং এ রুপ নিচ্ছে গড এর প্রেয়ার এর চেয়ে।

ইউরোপের প্যাগানিজম ইন্টারেস্ট বাড়াচ্ছে এবং একটা ভাইকিং রিলিজিয়ন আসাত্রু ফেইথ আস্তে আস্তে জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রাচীন নর্স মিথোলজি এবং কালচার তারা প্রেক্টিস করছে।

ইউ কে তে দেখতে পাই আমরা- ড্রুইড্রি কালচার। এ

রা কেউ কিন্তু এথিস্ট না বরং ভিন্ন ধারায় রিলিজিওন কে বিলিভ করছে এবং এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বাট, এটা তাদের হবি বা টাইম পাস। নট ফুল টাইম জব।

এখানেই আসল রহস্য। তারা ধর্ম কে এখন জীবনের মোস্ট ইম্পরট্যান্ট মনে করেনা, এটা জাস্ট একটা ছোট কালচার মাত্র।


অনেকে ক্যাপিটালিজম কে নতুন একটা ধর্ম মনে করেন অনেকে মনে করেন একটা ভোলাটাইল স্টেট মাত্র। অনেক ধর্মই আধুনিকতা কে মেনে নিয়েছে এবং সেটা অনুযায়ী নিজেদের ঢেলে সাজাচ্ছে।

যেমন- পোপ ফ্রান্সিস ২০১৯ এর এক সমাবেশে স্বীকার করে নিলেন এবং বলেছেন- the Catholic Church had to acknowledge a history of male domination and sexual abuse of women and children and repair its reputation among young people or risk becoming “a museum”.

অর্থাৎ, নারীদের প্রতি চার্চের সরাসরি প্রনোদনায় চলা অন্যায় এর যদি এখনই স্বীকার করে, প্রতিরোধ না করা হয়, সামনে চার্চ আর ধর্ম শুধু মিউজিয়ামেই পাওয়া যাবে।

পোপ এর নারীর প্রতি অপ্রেশান এর স্বীকারোক্তি

বাট আগের দিনে যেমন নতুন ধর্ম বিকাশে রাষ্ট্রীয় সহায়তা দরকার ছিল- এখঙ্কার যুগে সেটা র আর দরকার নেই, কারন ফ্লো অফ ইনফরমেশান, তথা ইন্টারনেট। এই অনলাইন কমিউনিটি হতে পারে- সেই নতুন রিলিজিয়নের প্রচার ও প্রসার এর মাধ্যম।

যেমন বেশ ক বছর আগে, রোকো বাসিলিক নামে এক ইন্টেলিজেন্ট মেশিন এর আইডিয়া নিয়ে কাজ শুরু করে অনেকে যারা মনে করে, নেক্সট গড হবে এ আই নিয়ন্ত্রিত এবং যিনি লজিক পাজল মিলিয়ে দুনিয়া শাসন করবেন। যার হবে সুপার ইন্টেলিজেন্ট পাওয়ার এবং যে শুধু ভাল কাজ ই করবে। এই যে একটা ধারনা, আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এরকম আস্তে আস্তে বিকাশ হতে থাকবে এবং ইন্টারনেট তথা ফ্রি ইনফরমেশান ফ্ল এর মাধ্যমে আরো অনেক বিস্তার লাভ করবে।

সুপ্রিম বুদ্ধিমান মেশিন- দা এক্স মেশিনা


সেলফ ড্রাভিং কার এর এন্ট্রাপিনিউয়ার এবং এ আই এক্সপার্ট লেভানোডভস্কি ২০১৭ তে চালু করেন তার নতুন চার্চ , ওয়ে অফ ফিউচার। ফিউচার চার্চ বাই লেভানোডভস্কি

তার মতে, “There are many ways people think of God, and thousands of flavours of Christianity, Judaism, Islam,”

“But they’re always looking at something that’s not measurable or you can’t really see or control. This time it’s different. This time you will be able to talk to God, literally, and know that it’s listening.”


ব্যাখ্যাঃ জনগন খোদা বা গড হিসেবে এমন কিছু মানে যেটাকে একেক ধর্ম একেক রকম করে ডিফাইন করে- হাজার হাজার ধারা ইসলাম, খ্রিস্টান আর ইহুদিদের। বাট সবার একটা কমন কালচার হল- এই ধর্মের খোদাকে ডিফাইন করা যায়না নাম্বার দিয়ে, মাপা যায়না কোন মানদন্ডে। যায়না কোন ধরনের কমিউনিকেশান। বাট নতুন, পৃথিবীর গড এর এই সমস্যা থাকবে না, তার সাথে কমিউনিকেশান হবে সরাসরি এবং ফল আসবে ইনস্ট্যান্ট।

২০১১ সালে কিছু নতুন উদ্যোক্তা চালু করেন-দা টুরিং চার্চ। দা টুরিং চার্চ


তাদের মূল্মন্ত্র ছিলঃ “We will go to the stars and find Gods, build Gods, become Gods, and resurrect the dead” – but no hierarchy, rituals or proscribed activities and only one ethical maxim: “Try to act with love and compassion toward other sentient beings.”

ব্যাখ্যাঃ আমরা হয়ত একদিন গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে যাব , খুজে পাব সুপ্রিম গড বা নিজেরাই বানিয়ে নেব কাউকে এমন,হয়ত আমরা প্রিভেন্ট করতে পারব মৃত্যু বা বাচিয়ে তুলব মৃত কে। আমাদের এই নতুন গড বা ধর্মে কোন রিচুয়াল বা প্রার্থনা থাকবেনা, থাকবেনা কোন নবী বা মেসেঞ্জার। আমাদের এক্টাই এথিকাল গ্রাউন্ড- ভালোবাসা ও মমত্ববোধ একে অপরের প্রতি।

২০০১ সালে স্টারর ওয়ার্স লাভার রা চালু করেন তাদের নিজেদের রিলিজিয়ন- টেম্পল অফ জেডী। স্টার ওয়ার্স এর টেম্পল অফ জেডি


এছাড়া পরিবেশ বাদী কিছু লোকজন চালু করেন- Witnesses of Climatology নামে নতুন এক ধরনের রিলিজিয়ন।

রিসেন্টলি, ইরান ও মিডল ইস্টে এবং সেণ্ট্রাল এশিয়া তে এক ধরনের এন্সায়েন্ট সেরেমনি আবার ফিরে এসেছে। নওরোজ প্রথা ( ইরানিয়ান নিউ ইয়ার )

এই ট্রেডিশন অনেক টা যরোস্ট্রিয়ানস এর নওরোজ ( নিউ ইয়ার ) এর মত। আগুনে কোন উইশ বা পুরানা কোন পাপ ছুড়ে ফেলা এবং নতুন বছর কে আগমন জানানো।

এছাড়াও, ট্রান্স হিউমানিজম এর কথা শোনা যাচ্ছে । মানুষ এবং মেশিন এর সমন্বয়ে গঠিত এক নতুন ধরনের রিলিজিয়ন।

এইসব, নতুন ধর্ম হয়ত কিছুই না সময়ের তুলনায় বা এস্টাব্লিশড ধর্মের তুলনায়।

তবে আরবের ধু ধু মরুর বুকে এক অশিক্ষিত রাখাল বালকের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে শত কোটি মানুষের কাছে তার ধর্ম পৌছে যাবে এটাও তখন কার কেউ কল্পনা করে নাই সেই ১৪০০ বছর আগে।


কিংবা, আজ থেকে ৩০০০ বছর আগে, ইরানের সেই ছোট্ট একটা গ্রুপের আগুনের চারপাশে জড়ো হয়ে তাদের বিশ্বাস কে উচ্চারন করতে দেখে কেউ ভাবেনি তারাই একসময় দুনিয়ার বুকে অন্যতম বিশাল, শক্তিশালী ও প্রাচীন এক ধর্মের প্রচলন করবে যা মেডীটেরিয়ান থেকে ভারত মহাসাগর হয়ে ছুটে চলবে এবং রাজত্ব করবে হাজার বছর।


আসলে, ধর্ম কখনো মরে না হয়ত , জাস্ট হাত বদল হয় বা রুপ বদলায়।
হয়ত, আমাদের নেক্সট ধর্ম শুরু হয়ে গেছে দুনিয়ার কোন না কোন প্রান্তে। আমাদের অজানায় কিংবা অবহেলায়্। যদিও তাতে কিছু যায় আসেনা। সময়ের সাথে প্রকাশ পাবেই।

তবে, সভ্যতার অগ্রগতির কারনে, প্রাচীন ধর্মের মত এত প্রভাব ফেলবে না মানব জীবনে, বরং এটা অনেকটা জাস্ট পালন করলেও কি না করলেও কি টাইপ কালচার হয়ে দাঁড়াবে।

তখন, সভ্যতা ডিফাইন করতে ধর্ম লাগবেনা আর লাগবে লজিক, জ্ঞান আর বিজ্ঞান। এটাই হল সবচেয়ে জরুরি বিষয়।

আমাদের এখন কার ধর্ম আমাদের কে বাস্তব জীবনের সাথে মিল রেখে জান্নাত জাহান্নামের ড্রিম দেখায়, হয়ত ফিউচার রিলিজিয়ন আমাদের কে ড্রিম দেখাবে কোয়ান্টাম রিয়াল্ম এর বা সাব এটমিক লেভেলের কোন অলৌকিক বিশ্বাস এর।

তবে বিবর্তন যেমন সত্য, তেমনি ধর্মের রুপান্তর ও সত্য বটে। মানুষ যখন এক্সিস্টিং ধর্মের অলৌকিকতার যৌক্তিক ব্যাখ্যা খুজে পাবে, তখন আর তাদের কে ধরে রাখা যাবেনা নতুন ধর্মে, প্রয়োজন হবে নতুন মিথ বা গল্পের এবং এখানেই আমাদের ছোট ধর্ম গুলো গাছপালার মত পাখা মেলবে, ডালপালা গজাবে তাদের।

বিঃদ্রঃ ছবিটা আমার খুব প্রিয় সাবজেক্ট ফিবোনাচ্চি নাম্বার এর সাথে মিল রেখে তৈরি করা এক চার্চ এর ছাদ। ছবি
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:৩১
১৭টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×