এ উপন্যাসটা এমন একজন মানুষকে নিয়ে যিনি পোষ্টম্যান। তাও মাত্র একজন মানুষের চিঠি তাকে বহন করতে হয়। প্রথম যখন উনি চাকরিটা পান, মনে মনে ভাবেন কী এমন কাজ মাত্র একজন মানুষের ডাক সদর থেকে সামান্য দূরে এই পাহাড়ী টিলাটায় নিয়ে আসা। কিন্তু কাজে নেমে বুঝতে পারেন তিনি এমন একজন মানুষের কাজ করেন যিনি নিজেই আস্ত এক জগত। নাম তার পাবলো নেরুদা। এই সেই কবি যার লেখা কবিতা চিলির মানুষদের মুখে মুখে। যে কোন অজুহাতে মানুষ তার কবিতা সুর করে পড়তে পারে চিলিতে। আমাদের যেমন রবীন্দ্রনাথ। সুখে দুখে অভিমানে বিদ্রোহে সব অবস্থাকে যিনি ধরে রাখেন নিজের কবিতায়।
কাছেই একটা সরাইখানার এক ওয়েটার মহিলার প্রেমে পড়ে পোষ্টম্যান। কিন্তু তিনি যে অযোগ্য। কীভাবে পৌছাবেন এই সুন্দরীর কাছে। একদিন নেরুদাকে ভয়ে ভয়ে বলেন এ কথা। নেরুদা সহ একদিন খেতে আসেন এই সরাইখানায়। নেরুদাকে কেন্দ্র করেই মুলত গড়ে উঠে এই প্রেম কাহিনী। মেয়েটার মা মেয়ের তোরঙ্গে একদিন আবিস্কার করেন পোষ্টম্যানের দেয়া নেরুদার কিছু কবিতা। মহিলা আর্তনাদ করে উঠল কেননা তারও সর্বনাশ করেছিল এক মিনশে নেরুদার কবিতা উপহার দিয়ে। কি যেন আছে এই কবিতা গুলোতে, নেশা ধরায়। তার একই অসুখে তার মেয়ে কুপোকাত । মেয়েকে ডেকে তিনি উপদেশ দেন। নেরুদার কবিতা যেন না পড়ে কেননা এই হতচ্ছাড়া কবিতা গুলোইতো তারও সর্বনাশ করেছিল একদা। কিন্তু ততক্ষনে মেয়ের মুখে মুখে গাওয়া হচ্ছে নেরুদা কবিতা। এবং যা একটি সফল প্রেমে এসে শেষ হয়। অদ্ভুদ ভালালাগা এ উপন্যাসটিতে এর পাশাপাশি উঠে এসেছে নেরুদার নির্বাসনকাল থেকে শুরু করে চিলির এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সমকাল । এ উপন্যাসটি একটি চমৎকার চলচ্চিত্র হয়েছে তার নাম দি পোষ্টম্যান। পড়ার সাথে সাথেই প্রিয় বইয়ের তালিকায় স্থান করে নেবার চমৎকার ক্ষমতা আছে স্কারমেতার লেখায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সকাল ১০:২৪