somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার দেখা আমেরিকা (২)

০১ লা জুলাই, ২০১১ দুপুর ১২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সপ্তাখানেকেরর মাথায় গ্রীন কার্ড পেয়ে গেলাম, social security card এর জন্য ওয়েট করতে লাগলাম. সবাই বললো ২ সপ্তাহের মাথায় পেয়ে যাবো, কিন্ত ২ সপ্তাহ চলে গিয়ে মাস পার হয়ে গেলো তাও social security card পাই না.

এখন আসি কাজের প্রসঙ্গে আমার বাবা গ্যাস স্টেশন এ কাজ করে তো এর মধ্যে বাবার সাথে বিভিন্ন গ্যাস স্টেশন এ গেলাম কাজের জন্য apply করতে কিন্তু social security card ছাড়া কেও কাজে নিতে চায় না. বুঝে গেলাম retail ছারা কোনো কাজ পাবো না. এর মধ্যে manasas social security এর অফিসে গিয়ে কার্ড এর জন্য apply করলাম আর ওদের কাছ থেকে আমার social security
নাম্বার টা নিয়ে নিলাম যেনো কাজের জন্য apply করতে পারি.

অবশেষে সেভেন ইলেভেন এ কাজ পেলাম, এর মধ্যে গ্যাস স্টেশনের কাজের অভিজ্ঞতার জন্য বাবা কি ভাবে কাজ করে সেটা দেখতে গেলাম, রেজিস্টার কি ভাবে চালাতে হয়, ID card চেক করা ইত্যাদি বিষয় বুঝে নিলাম. কোনো কঠিন কিছু মনে হলো না কিন্তু যখন দেখলাম বাবা কে sweep mop, বাইরের trash clean, toilet clean করতে আমার বুকের ভিতর টা মুচরে উঠলো.

যাই হোক আমি 7-11 এ কাজ শুরু করলাম রাতের শিফট এ, প্রথম রাতের অভিজ্ঞতা খুবই খারাপ. আমার সাথে এক ইন্ডিয়ান মেয়ে ছিলো ও আমাকে দিয়ে সব কাজ করিয়ে নিলো আর বলতে লাগলো সব কুচ ক্লিন হনা চাহিয়ে...ক্লিন করতে করতে আমার হাত ছিলে গেলো ১ মিনিট ও রেস্ট পেলাম না. আমেরিকা আসার আগে জানতাম এই সব কাজ করতে হবে এবং তার জন্য মানসিক প্রস্তুতি ও ছিলো কিন্তু বাস্তবতা খুবই কঠিন. যাই হোক কাজ তো শুরু করলাম এখন wait করতে লাগলাম পেমেন্ট এর জন্য সব চেয়ে কষ্ট পেলাম যখন দেখলাম আমাকে ঘন্টা প্রতি pay করা হলো ৭.৫$ করে. এখানে বলে রাখা দরকার আমি বাংলাদেশে system admin হিসাবে করতাম...মাসে আমার income খারাপ ছিলো না. চাকরি এবং ব্যবসা করে মাসে ৭০-৮০ হাজার টাকা আসতো. বুঝতেই পারছেন আমার মানসিক অবস্তা কি হতে পারে.

হিসাব করে দেখলাম একটি কাজ করে বাচতে পারবো না, আরেকটা কাজ খুজতে লাগলাম, এবার কাজ পেলাম exxon এ, ভিশন বিজি স্টোর, এখানে আরেক বাঙালি কে পেলাম buet থেকে পাশ করা, আমার মতো মাত্র কিসু দিন হয় এসেছে. উনি আবার divisional enginner হিসাবে কাজ করতেন. উনার সাতে মাঝে মাঝে নিজেদের সুখ দুখ নিয়ে আলাপ করতাম. উনি আমাকে সাহস দেয় আর আমি উনাকে. একটাই কথা বলি একে অপরকে এই করার জন্য কি আমেরিকা তে এসেছি.

এর মধ্যে আমার বেবির ঠান্ডা লেগে গেলো ডক্টর যে দেখাবো সে উপায় নাই. যে হেতু ইন্সুরেন্স নাই তাই বুঝতে পারছি না কোথায় নিয়ে যাবো, আমার মা বাবা কমুনিটি ক্লিনিক এ যান তাদের কোনো সমসসা হলে, বাবার সাথে গেলাম ক্লিনিক এ ওরা বললো শুধু মাত্র যারা ওখানে রেজিস্টার তাদের কে ওরা দেখে. আর আমি যদি আজ কে রেজিস্টার করি তা হলে আমার সিরিয়াল পাবো ২ মাস পর. মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো একটু রাগ দেখালাম, পরে ওরা আমার বেবি কে দেখলো কিন্তু কোনো মেডিসিন দিলো না, বললো যদি এক সপ্তাহের মধ্যে না ঠিক হয় তবে যেনো আবার আসি. যাই হোক আল্লাহর রহমতে আমার বেবি এক সপ্তাহের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়.

এর মধ্যে শুরু হলো স্নো পরা যারা norther verginia তে যারা থাকেন তারা জানেন ২০০৯ এ কি ভিশন স্নো পরেছিলো. আমার 7-11 পাকিস্তানি franchise owner আমাকে দিয়ে ১৬ টা পাম্পের স্নো পরিস্কার করিয়ে নিলো. একটা ঘটনা আমি সারা জীবন ভুলবো না আমার কাজের শিফট তখন প্রায় শেষ তো আমি এক দিকে স্নো ক্লিন করছি আর অন্য দিকে স্নো পরছে, এর মধ্যে আমার বাবা আসলো আমাকে পিক করার জন্য তাকিয়ে দেখি গারি তে আমার স্ত্রী ও বসা. ও আমাকে এ ভাবে দেখবে সেটা ও যেমন চিন্তা করে নি আমি ও না. দু জনে নার্ভাস হয়ে গেলাম. সে দিন ও আমাকে জরিয়ে ধরে অনেক কান্না কাটি করে বললো চলো চলে যাই. কিন্তু আমার যাবার পথ বন্ধ কারণ ওখানে গেলোও আমাকে আবার সব কিছু নতুন করে শুরু করতে হবে.

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুলাই, ২০১১ দুপুর ১২:০৩
১৪টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×