somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার দেখা আমেরিকা (৩)

০২ রা জুলাই, ২০১১ রাত ৩:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এভাবে ৩/৪ মাস সময় চলে যাচ্ছে, এক সময় বুঝতে পারলাম এ ভাবে জীবন যাবে না, driving licence নিতে হবে. 7/11 এর কাজ ছেরে দিলাম. exxon এর কাজটা ধরে রাখলাম. একদিনের ঘটনা বলি, exxon এর কাজের schedule আমার সকাল ৬ টা থেকে ২ টা. তখন ৯ টা কি ১০ টা বাজে আমি কাজের ফাকে ফাকে নাস্তা করে নিচ্ছিলাম আমার store এর franchise owner আমাকে দেখে ডাক দিয়ে বললো আমার মুখের খাবার ফেলে দিতে আমি তারা তারি করে গিলে ফেলার চেষ্টা করলাম কিন্তু ও আমাকে ধমক দিয়ে বললো through out. জীবনে কখনো এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হবো সপ্নে ও ভাবিনি. অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম চোখ প্রায় ভিজে গিয়েছিলো. অনেক কষ্টে কন্ট্রোল করেছি.

যাই হোক এর মধ্যে driving licence এর learners permit পরীক্ষায় পাশ করলাম আর ওই exxon কাজ ছেরে কোম্পানির exxon এ জয়েন করলাম.
এখানকার ম্যানাজার টা অনেক ভালো. এখানে কাজ করে অন্য রকম লাগলো বুঝতে পারলাম কোম্পানি আর ফ্রান্চিজ এর মধ্যে পার্থক্য.

শুধু exxon এ কাজ করি আর বাকি সময় টা অনলাইন এ জব এর জন্য Apply করতে থাকলাম. এর মধ্যে একদিন আমার বাবা তার কাজের জায়গায় সেন্স হারিয়ে ফেলে. উনি ডাইবেটিস এর রোগী. সকালে কাজে জায়গায় সুগার ফল করার কারণে সেন্স হারিয়ে ফেলে doctor বললো Hypoglycemia. আমি তখন বাসায় ছিলাম কি করবো বুঝতে পারছি না. হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছিলো. যত বাঙালি ফ্যামিলি ছিলো সবাই কে ফোন দিলাম কিন্তু সবাই কাজে. learners permit নিয়ে গারি চালানো যায় না পাশে এক জন licence holder থাকতে হয়. তাছারা গারি মাত্র একটা বাবা সেটা কাজের জায়গায় নিয়ে গেছে. অবশেষে একজন কে পেলাম উনি সাথে সাতে বাবার কাজের যায়গায় গিয়ে পরিস্থিতি দেখে আমাদের ফোন দিয়ে জানালো এম্বুলেন্স এসে বাবাকে নিয়ে হসপিটাল এ চলে গেছে. উনি আমাদের চিন্তা করতে মানা করলেন. বললেন উনি এসে আমাদের নিয়ে হসপিটাল এ নিয়ে যাবেন. আল্লাহর রহমতে বাবা ওই দিন ই বাসায় চলে আসে. কিন্তু আমি বুজতে পারলাম আমার অতি শিঘ্রই driving licence নিতে হবে. পরের সপ্তাহে dmv তে গিয়ে রোড টেস্ট দিলাম কিন্তু ফেল করলাম. মনটা খারাপ হয়ে গেলো. আরো ভালো প্রেপারেসন নিয়ে মাস খানেক পর আবার গেলাম. মনে মনে দোয়া করতে লাগলাম যেনো পেয়ে যাই. আল্লাহর রহমতে পেয়ে ও গেলাম. পর পর তিন বার যদি ফেল করতাম তাহলে আমাকে আবার ৩০০-৪০০$ খরচ করে আবার ক্লাস করতে হত.

exxon এ কাজ করি আর অনলাইন এ apply করি. বিভিন্ন জায়গা থকে কল ও পাই. কিন্তু হয় না. এর মাঝে একদিন আবার ইন্টারভিউ দিয়ে আসলাম কিন্তু ওরা বললো ক্রেডিট চেক করবে কিন্তু তখন আমার কোনো ক্রেডিট কার্ড ছিলো না ওরা বললো সরি. মন খারাপ করে বাসায় চলে আসলাম তার পরে ও apply করতে থাকলাম. washington post er sunday job section এ
apply করতে থাকলাম. কিন্তু ওখান সব কোম্পানি security clearence চায়.

মাসে ইনকাম মাত্র হাজার বারোসো ডলার এ দিয়ে আমেরিকাতে টিকে থাকা খুব কষ্ট. বাবা ছিলো বলে ভরসা. বাবা কে তেমন করে হেল্প করতে পারছি না বলে আরও খারাপ লাগতে লাগলো. ডিসিসন নিলাম ক্যাব চালাবো ওখানে নাকি ইনকাম ভালো. সব খরচ বাদ দিয়ে মাসে নাকি ৩ হাজার ডলার কমানো যায়. খোজ খবর নিয়ে জানতে পারলাম ক্যাব চালাতে হলে নাকি driving licence এর মেয়াদ ১ বছর হতে হয়. কি আর করা অন্য কি করা জায়গায় সে চেষ্টা করতে থাকলাম অনেকে বললো security guard এর জন্য apply করতে. manasas এ একটি security traning company তে security guard licence এর জন্য ক্লাস করবো ঠিক এই সময় একটা কল পেলাম বললো system admin পোস্ট এর জন্য আমাকে interview তে attend করার জন্য.

যথা সময়ে interview তে গেলাম মনে মনে দোয়া দরুদ পড়তে থাকলাম. এই কাজ টা আমার ভিশন দরকার. interview ভালই হলো. আমাকে বললো তারা আমার আরেকটা interview নিবে. আগেই বলেছি আমার exxon এর ম্যানাজার অনেক ভালো ও আমাকে বললো কোনো টেনশন না করার জন্য. interviewর জন্য যদি আমার ছুটি লাগে তবে যেনো ওকে জানাই. ১ সপতাহ পর আবার কল পেলাম 2nd interview তে attend করতে হবে. বুঝতে পারলাম না আবার কি জিজ্ঞাস করবে. interview তে গিয়ে দেখি আরো ৪ জন candidate মনে মনে হতাশ হলাম কিন্তু আল্লাহ কে ডাকা ছারলাম না. interview তে তেমন কিছু জিজ্ঞাস করলো না. টুক টাক কথা বার্তা. আমি ও ওদের কিছু পাল্টা question করলাম এই টিপস টা আমি গুগল থেকে পেয়েছি. ওরা বললো আমাকে ফোন করে জানাবে. আবার অপেক্ষার পালা সপ্তাহ খানেক পর আবার কল এলো ৩য় interview দিতে হবে, ওরা ও খানিক টা লজ্জিত হয়ে বললো এটাই লাস্ট. যথারীতি আবার interview তে গেলাম , ওরা এবার পোস্টমর্টেম করা শুরু করলো যাই হোক লাস্ট এ ওরা বললো কবে জয়েন করতে পারবো আমি বললাম ২ সপ্তাহ সময় লাগবে. পরের দিন recruiter আমাকে ফোন দিয়ে congratulation দিয়ে বললো জয়েন করার জন্য আর by this time ওরা back ground check করবে.

যাই হোক অবশেষে জয়েন করলাম, এখন পর্যন্ত ভালই লাগছে....অনেক stress...কিন্তু সব কষ্ট দূর হয়ে যায় যখন বাসায় ফিরে আমার মার হাসি মুখ দেখি, শুনি আমার মেয়ের মুখে বাবা ডাক, স্ত্রীর কমল পরশ আর আমার বাবার মুখে খানিক তৃপ্তির হাসি....আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন.

(শেষ)
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১১ ভোর ৪:২৩
১১টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×