somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভ্রমন : ছবির দেশ কবিতার দেশ -১ (ভিসার হ্যাপা)

৩১ শে অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৯:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সুনীলের 'ছবির দেশে কবিতার দেশে 'বইটি পড়ার পর থেকেই প্যারিস অন্তরের অন্তপুরে গেঁথে ছিল সুপার গ্লুর আঁটা- লাগানো ছবির মতই।লুভ মিউজিয়াম..রঁদা,গঁগা,ভ্যান গগ,পিকাশো আর ভিঞ্চির শিল্পকর্মগুলো সরাসরি দেখার এক দূর্নিবার ইচ্ছা ছিল আমার মাঝে।আর আইফেল টাওয়ার তো আছেই।অবশেষে সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন গত সামার ভ্যাকেশনে।এর আগে সুইজারল্যান্ড যাবার সময় প্যারিস ঘুরে আসতে চেয়েছিলাম কিন্তু সময় কম ছিল বিধায় ভিসা নিতে পারিনি। তাছাড়া এই ভ্রমনের আরো একটা কারণ হল ফরাসী বান্ধবী বারশা'কে দেখতে যাওয়া।একা ভ্রমন কখনো আনন্দদায়ক নয় অন্তত আমার কাছে...সো রুমমেট সবাইকে বললাম কে কে যাবে? সান্তনু টায়ার্ড কাতলা মাছের মত সিগারেটের ধোঁয়া বাতাসে মিলিয়ে দিয়ে বলল-'গুরু বহুথ ঝামেলা..ভিসা নেয়ার হ্যাপা,টাকা খরচ..ইত্যাকার ব্লা ব্লা ব্লা।থাকা খাওয়ার কোন খরচ নাই শুনে অবশেষে কিপটুস হাসান রাজী হল সে যাবে...তার রাজী হওয়ার আর একটি প্রধান কারণ হল..ভিসার সব খরচ আর ঝামেলা আমি বহন করব ।(প্যারিসে আমার বেশ কয়েকজন দেশীয় বন্ধু আছে যার কারণে খাও্য়া আর বাসস্হানের কোন খরচ নাই)

এরপর ফরাসী এমবেসী তে কল করে আমাদের দুজনের নামধাম আর পাসপোর্ট নাম্বার দিলাম এপয়েন্টমেন্ট ডেটের জন্য।তারা জানতে চাইল আমাদের হোটেল, ট্রাভেল রিলেটেড বুকিং আর অন্যান্য কাগজপত্র আছে কিনা..আমি সব করা আছে জবাব দিয়ে বুকিং ডেট চাইলাম ।তারা আমাকে নির্দ্ধারিত ভ্রমন ডেট এর এক সপ্তাহ পূর্বে এপয়েণ্টমেণ্ট ডেট দিল।আগেই আমি আর হাসান ঠিক করে রেখেছিলাম যে এয়ার এ নয় আমরা যাব দ্রতগতির ইউরোস্টার ট্রেনে...কারন হল সাইট-সিয়িং আর ইংলিশ টানেলের ভেতর দিয়ে ভ্রমন।
এপয়েন্টমেন্ট এর নির্দ্ধারিত দিনে ভোরে আমরা এমবেসীতে হাজির হলাম।গিয়েই আমাদের চক্ষু চড়কগাছ!! বিশাল লাইন!!! যাক লাইনে দাড়ানোর আধ ঘন্টা পরে সবাইকে ব্যাগেজ আর শরীর তল্লাশী শেষে ভেতরে যেতে দিল সাথে একটা করে সিরিয়াল টিকেট।পনের মিনিট পর আমাদের ডাক পড়ল এক মহিলার কাউণ্টারে।কাগজপত্র চাইল।দিলাম।পাসপোর্ট দেখে উনি বললেন,সরি,আপনাদের ভিজিট ডেট মাত্র এক সপ্তাহ বাকী,এতো অল্প সময়ে ভিসা আবেদন বিবেচনা করা সম্ভব নয়।আমি কেন নয় প্রশ্ন করলে জবাবে উনি যা বললেন তার সারমর্ম হল :

এক সপ্তাহ যাবৎ বাংলাদেশকে পনেরটি(পাকিস্তান,সোমালিয়া,নাইজেরিয়া এসব দেশ ঐ তালিকায় পূর্ব থেকেই ছিল) বিশেষ দেশের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।এসব দেশের নাগরিকদের ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে কোন দেশ ভিজিট করতে হলে ভিজিটিং ডেট এর মিনিমাম চার সপ্তাহ পূর্বে আবেদন করতে হবে যাতে করে সংশ্লিষ্ট এমবেসী আবেদনকারী সম্পর্কে যাচাই-বাচাইয়ের পর্যাপ্ত সময় পায়।অথচ আমাদের টিকেট আর হোটেল বুকিং(ভিসা আবেদনের সাথে হোটেল বুকিং দিতে হয় যা পরে ভিসা হওয়ার পর ক্যানসেল করা যায় শুধু ক্রেডিট কার্ড থেকে কিছু টাকা কেটে রাখে) দেয়া আছে এক সপ্তাহ পর...আর টিকেট করা আছে নন-রিফাণ্ডেবল ক্লাসে।আমি মহিলাকে বললাম : দেখুন আমি যখন এপয়েণ্টমেন্ট ডেট বুকিং দেই তখন এ রুলস্ পরিবর্তন সম্পর্কে আমাকে জানানো হয়নি।উনি বললেন : এ সংক্রান্ত এমেন্ডমেন্ড ওয়েব সাইটে দেয়া আছে (পরবর্তীতে বাসায় এসে তার সত্যতা পাই ওয়েব সাইটে)
এখানে উল্লেখ্য যে ইন্ডিয়ানদের কে এক দিনের মধ্যে ভিসা রেজাল্ট দিয়ে দেয় ।
যাক উনি আমাদের উপর ছেড়ে দিলেন আমরা আবেদন জমা দেব কিনা.কারণ তখনও আমাদের ভিসা ফি জমা দেই নি।যদি জমা দেই তাহলে নির্ঘাৎ ট্রাভেল কস্ট গচ্চা যাবে...।গেলে যাক আমি বললাম ওকে আমরা এপ্লাই করব।টাকা টুকা দিলাম মহিলাকে।সব রেখে আমদেরকে আর একটা বিশাল হলরুমে বসতে বলল সাথে দিল আর একটা সিরিয়াল নাম্বার।
আরও পনের মিনিট পর ডাক পড়ল । এবার এ কাউন্টারে কাগজ-পত্র রেখে পাসপোর্ট ফেরত দিল।বলল এক মাসের মধ্যে কনট্যাক্ট নাম্বারে ওরা কল করবে..পরে অবশ্য সতের দিনের মাথায় কল করেছিল আর ভিসা দিয়েছিল তিন মাসের (চেয়েছিলাম পাঁচ দিনের)

চলবে.....।


সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৯:১৯
২৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×