somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজকের সমকাল (কালের খেয়া) -এ প্রকাশিত একটি গল্প

০৪ ঠা আগস্ট, ২০০৬ ভোর ৪:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নাজুক পরী


মুখপোড়া ফহমের মা শূন্য-নীল আকাশের পানে তাকিয়ে কালো দু'টি বিন্দু দেখতে পায়। বিন্দু দু'টি ঠিক কি, চিল নাকি শকুন তা ঠাহর করা সম্ভব হয় না তার পৰে, দৃষ্টিশক্তির এই ব্যর্থতাকে মনে মনে গালি দিয়ে দ্রম্নত পা চালায় মুখপোড়া ফহমের মা। বহুদিন আগে থেকেই যদিও লোকে তাকে ডাকে মুখপোড়া ফহমের মা বুড়ি, নিজের বয়সের হিসেব কষার মতো বিদ্যেবুদ্ধি তার নেই কিন্তু আশেপাশের দশ গাঁয়ে তার খ্যাতিটুকু শুধুই তার কর্মকাণ্ডের জন্য নয়, বয়সের জন্যও খানিকটা থেকে থাকবে। নইলে এই বয়সেও এতো দাপটের সঙ্গে করে খাওয়াটা চাট্টিখানি কথা নয়, তার বয়সের অন্য অনেককেই তো সেই রেশনের সের চারেক পঁচা গম আর বার বার বর্ষায় ৰয়ে যাওয়া রাসত্দার ৰত বন্ধ করার বিনিময়ে আরও কয়েক কেজি_ এর ওপরেই নির্ভর করে থাকতে হয়। দিনকালের অবস্থা এমন হয়েছে যে, কেউ আর একমুঠ ভিৰেও দিতে চায় না।

আকাশের ওই কালো বিন্দু দু'টির দিকে তাকিয়ে মুখপোড়া ফহমের মা আরও দ্রুত পা চালায়, তার পরনের থানটা পুরনো হলেও এখনও শক্তপোক্ত আছে, ফত্ ফত্ শব্দ হয়, শাড়ীর বেড়ের চেয়ে দু'পায়ে ফেলা কদমের বেড় বেড়ে যাওয়ায় এই শব্দ ফাল্গুনের শব্দহীন বিকেলকে যেনো সামান্য হলেও চকিত করে তোলে। বুড়ি মনে মনে ভাবে, আকাশের ওই বিন্দু দু'টি যেনো চিলই হয়, শকুন যেনো না হয়, ফাল্গুনেই আকাশে শকুন দেখা গেলে তো চৈত্রে এবার কলেরা লাগবে, গাঁয়ের পর গাঁ উজাড় হয়ে যাবে। মানুষের শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে পানি আর সেই সঙ্গে সমসত্দ পুকুল-ক্থয়োও যাবে শুকিয়ে, পানির সেই হাহাকার দু'চোখে দেখার মতো নয়। তার জীবনে অর্জিত অভিজ্ঞতা থেকেই অবস্থাটা ভেবে বেশ একটু কেঁপে ওঠে। এই চৈত্র কাটানো যাবে তো, তার একলার জীবনে এখনও কোনও কিছুর অভাব নেই, জীবনকে সে ভালোই বাসে, তাই মনে মনে এই চৈত্র পার করে দেওয়ার জন্য আলস্নাহ্ তায়ালার কাছে ফহমের মা মনে মনে আর্জি জানায়, মানত করে শিনি্ন শেয়ালশাহ্ পীরের দরগায়। আর মনে মনে আকাশের ওই বিন্দু দু'টিকে, তা চিল হোক কিবা শকুন, খানকির ছাওয়াল বলে গালি দিতে দিতে দৰিণ পাড়ার বড় দীঘিটার পার দিয়ে হাঁটতে থাকে ফহমের মা।

এখানে বেশ একটু ছায়া, রোদের তেজ এখানে নেই কিন্তু তারপরও দীঘির পারের গাছগাছালির পাতার ভেতর দিয়ে কোথাও কোথাও রোদ ঢুকে বেশ একটা নকশাদার পথ হয়ে আছে। দীঘির পারে এই বিকেলে অনেকেই বসে আছে, কেউ বা বাঁধানো সিঁড়িতে বসে জলে পা ডুবিয়ে বসে আছে, কোনও বউ-ঝি দিনের কাজ শেষ করে জলে নেমেছে, পারে দাঁড়ালে তাদেরকে বড় কোনও মাছের মতো মনে হয়। এদের সবাইকেই ফহমের মা কমবেশি চেনে, কিন্তু এরা সবাই ফহমের মাকে বেশ ভালো করেই চেনে।

" ও বুড়ি আইজ কুহানে যাবা? কাগো বাড়ি?" _ জল থেকে নাকি ডাঙা থেকে প্রশ্নটি আসে ফহমের মা বুড়ি বুঝতে পারে না।
ফহমের মাও যেনো নিজেকেই উত্তরটি দেওয়ার মতো করে বলে, "এইতো বেশি দুরি না, গোলপাড়ায় হাকি শিকদারের বাড়ি যাই"।
ঃ ওরে হাকি শিকদারের মেয়ার কাম ঠিক ওইছে বুঝি?
ঃ নাহ্ বুড়ি ওই বাড়ি যাবার লাগছে ছুয়াং দেহানোর জন্যি _ একজনের প্রশ্নের উত্তরে অন্যজনই এরকম ঠেশমারা উত্তর দেয়।
ঃ হ, হাকি শিকদারের ছোড মেয়াডার কাম আইছে, আইজ 'নাজুক পরী' ওইয়া গেলি তবেই পাকা কথা হবেনে_ বুড়ি দীঘির পারে কিছুৰণ দাঁড়াবে কি না ঠিক বুঝে উঠতে পারে না। সময় এখনও যথেষ্ট আছে, এখনও দুপুরই বলা যায়, আর নাজুক পরী'র সমসত্দ আচার তো সেই সাঁঝ বেলা, সূর্য ডুবে যাওয়ার কিছুৰণ পরেই। এতো আগে গিয়ে কি হবে? ফহমের মা পায়ে পায়ে এগিয়ে যায় দীঘির সিঁড়ির দিকে। এই সিঁড়িতে মেয়েরা আর ওই পারের সিঁড়িতে পুরম্নষ, সেই সাবেক কাল থেকেই এই নিয়ম। যারা দীঘিটি কেটেছিল, তারা নেই, কিন্তু নিয়মটি ঠিক আছে। এপারে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কোনও ঝি-বউ কাপড় বদলালেও ওপার থেকে কোনও পুরম্নষের বাপের সাধ্যি নেই দেখে। তাই এই সিঁড়িতে বসে বউ ঝিরা বেশ খোলামেলা হয়েই গল্প করতে পারে, সারা দিনের কাজ-ব্যসত্দতার মধ্যে এই সিঁড়িটি যেনো দু'পা বিছিয়ে সামান্য বসে জিড়িয়ে নেওয়ার জায়গা। স্নানে নামার আগে একজন আরেকজনের মাথা থেকে উকুন বাছতে বাছতে অত্যনত্দ গোপন দু'একটি কথাও বিনিময় করে নেওয়ার জায়গা এই সিঁড়িই।
ঃ ও বুড়ি, হাকি শিকদারের মেয়ার জন্যি কাম আইছে কুহান থিকা?
ঃ তা কি আর আমি জানিলো মাগি? আমার তা জানার কি কাম? আমার কাম আমি করবার পারলিই অয়।
ঃ হ, তাও ঠিক কইছো, তোমার কাম ছেলে পৰরে নাজুক পরী দেহানো, তাই দেহাইয়া চাইল-ডাইল, কাপড়-চোপড় যা পাওয়া যায় তাই নিয়া ফিরা আসা, তাই নাগো বুড়ি? তা আইজ কিসি কিসি রফা ওইছে নাজুক পরী দেহানোর জন্যি?
ঃ এ ছেমড়ি, বুড়ি বুড়ি কি লো? আর আমি কি পাই না পাই তাতে তোগো কি? তোগো মতো নি, হাড়-হাভাইত্যা, হাকি শিকদার কইছে যদি পাত্রপৰ খুশি অয় তইলি আমারে জোড়া থান দিবি, যাই দেহি কি অয়, আইজকালকার মেয়া, কওয়া যায়নি, কুহানে কি করছে, কার কাছে শিল ভাইঙ্গা বইসা আছে কিডা কবার পারে? _ ফহমের মা তার হাতে ধরা কাপড়ের পুঁটলিটি সিঁড়ির পাকা মেঝেতে নামিয়ে নিজেও বসার চেষ্টা করে। বেশ অনেক খানি হেঁটে এসে কোমরে খিঁচ ধরেছে। তাই বসতে তার কষ্ট হয়, তারপরও কষ্টে-সিষ্টে সে নিজেকে বসায় মেঝেতে।

সিঁড়ির নিকটজলে বেশ ক'জন বউ_ঝি, কেউ ধুঁধুলের খোঁসায় গা ঘষছে, কেউ বা কাঁকড়ার মাটি চুলে লাগিয়ে পা বিছিয়ে বসে বুক থেকে অাঁচল সরিয়ে নিয়ে তা দিয়ে গলা কিংবা বাহুমূল ঘষে ময়লা তুলছে। যে মেয়েটি এতোৰণ ফহমের মাকে প্রশ্ন করছিলো সে-ই আবার ফহমের মার দিকে তাকিয়ে বলে, "দেইখো বুড়ি, হামিদার মতো যেনো হাকি শিকদারের মেয়াডারেও মাইরা ফালাইও না। হাকি শিকদার কিন্তু তুমারে তাইলে জেলের ভাত খাওয়াবেনে। হামিদার তো তিনকুলে কেউ ছিল না, তাই মইরা গেছে বালাই গেছে, কিন্তু হাকি শিকদারের তো তা না, যা করার সাবধানে কইরো।"

ঃ আরে আমি মারছিনি, হামিদা তো নিজি নিজিই গলায় দড়ি দিয়া মরলো। আরে এই রীতি কি আইজকের নি, কতো পুসত্দানের পুরাইন্না রীতি, মানুষ মাছটাও কিনে কানশা তুইলা দেইখা-শুইনা, পঁচা মাছ যেমুন কেউ কিনবার চায় না তেমুন নাজুক পরী ছাড়া কেউ বিয়া করবি কি জন্যি, কও আমারে? শিল-ভাঙ্গা বারো-ভাতারি মাগি আর বেশ্যায় কি কোনও ফারাখ আছে নি? জাইন্না-শুইনা কি কিউ শিল-ভাঙা কাউরে বিয়া করতে চায় নি, তুমরাই কও। আমার ওইছে যতো জ্বালা, কতো শিল-ভাঙা মেয়ারেও নাজুক পরী কইয়া চালাইতে অয়, আরে হামিদা মরছে তার নিজের পাপে, আমার তাতে কুনও আত আছিলো না। ফলনার ছাওয়ালের লগে অাঁশনাই ছিল, আগেই শিল ভাইঙ্গা বইসা ছিল, কতো চেষ্টাই করলাম, নাজুক রক্ত আর দেহাইতে পারলাম না পাত্রপৰরে। শ্যাষে আমার শ্যাষ চিষ্টা করলাম, কাম ওইলো, কিন্তু মাঝখান থিক্যা বেডি গিয়া গলায় দড়ি দিলো, এ্যাতে আমার দোষটা কুহানে?

ঃ না গো বুড়ি, দোষ তুমার অবে ক্যা, দোষ আমাগো কপালের। নইলে হামিদার যার লগে বিয়া ঠিক ওইছিলো তারে তো এমুন কোনও পরীৰা দিতে অয় নাই। হামিদা মেয়া বইলস্নাই তারে নাজুক পরীর পরীৰা দিতে অয়। আমাগো কপালই আমাগো খাইয়া থুইছে, তুমার আর দোষ কি? তয় বুড়ি এট্টু সাবধানে তোমার শ্যাষ চিষ্টা কইরো, দেইহো, আবার জানি আমার মতো না অয়, পুঁজ-পাইক্কা যেন ঢোল না অয়।

ঃ ক্যালো মাগি তোরে আমার ধন্বনত্দরী পাতার রস দেই নাই? ওই রস লাগাইলি দুই দিনির মইদ্যে ঘাও শ্যাষ।
ঃ তুমি তো খালি রস দিয়াই শ্যাষ, ভুগতে অয় তো আমাগো, তুমি দেও এক রস আর বিয়ের দিন জামাই, দুই রস মিলা ছয় মাস দইরা হাঁটা-চলাই দায়।

এরপর সিঁড়ির বেশ কয়েকজনই তাদের নিজেদের কষ্টের কথা বলতে শুরম্ন করে। ফহমের মা বুড়ির শুধু শুনে যাওয়া ছাড়া কোনও গতি থাকে না। এখানে বেশি কথা বললে কে জানে পুরোনো কোনও রাগ যদি কারো চাগিয়ে ওঠে? তখন ফহমের মা বুড়ির কি অবস্থা হবে কে জানে? মনে মনে বুড়ি ভাবে, কোন্ কুৰণে এই দীঘির পারে বসে জিরোবার সাধ হয়েছিল! সবার অভিজ্ঞতাই কমবেশি এক, সবাই বুড়িকে যেনো এই প্রথম একসঙ্গে পেয়েছে। ঝাল মিটিয়ে নিচ্ছে কথা শুনিয়ে। যারা ভিন্ গাঁ থেকে এই গাঁয়ে বউ হয়ে এসেছে তারা হয়তো ফহমের মা বুড়ির মতোই অন্য কারো হাতে নাজুক পরীর পরীৰা দিয়েছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে তারাও ফহমের মার ওপরেই নিজেদের সমসত্দ কষ্টের ঝাল ঝাড়ে। বয়স্ক বউ-ঝিরাও এমন ভাবে কথা বলে যেনো গতকালই তারা নাজুক পরীর পরীৰা দিয়েছে, এখনও তাদের দু'পায়ের মাঝে প্রচণ্ড কষ্ট। একজন তো বলেই বসে, " ও বুড়ি তুমার ওই ডান্ডাটা আরও এট্টু ছোড করতে পারো না? ব্যাথায় তো জীবনডা বাইর ওইয়া যাবার চায়। তুমার কি মায়াদয়াও অয় না?"

এবার বুড়ি যেন তার কাঙ্খিত মওকা পেয়ে যায়। গলায় জোর এনে শিরা ফুলিয়ে বলতে থাকে, "আলো মাগিরা আমারে কইয়া কি অবে? জন্মাইছো ধন-ছাড়া ওইয়া, নাজুক পরী তো তোমাগো কপালের লিখন, ইসলামেও কইয়া দিছে কুমারী ছাড়া বিয়া করার যায়েজ না। তুমাগো ভালোর লাইগ্গাই এট্টু জোরে ঘাই দেই যাতে এই ঘাইতেই রক্ত বার ওইয়া যায়, আরে মাগিরা এক ফুটা রক্তই তুমাগো বাঁচাইয়া দেয়, এই ফহমের মা না ওইলি কারো আর সুখে-শানত্দিতে ঘর করা লাগতো না। বন্দরে গিয়া ঘর নিয়া লাগতো, আমি আর কয়দিন, এরপরে দেখবা যখন স্বামী নিজি নিজিই নাজুক পরীর পরীৰা নিবো, তহন বুঝবা ঘাই কারে কয়। আমি নাজুক পরী বানাই দেই দেইহাই তেনারা আর পরীৰা লওনের চেষ্টা করেন না, বুঝলা মাগিরা।

দীঘির পারে নিসত্দব্ধতায় শুধু জল নাড়ার শব্দ শোনা যায়। ফহমের মার সত্যি কথাটি সবার মুখ বন্ধ করে দেয়। শুধু একটি মেয়ে, যে মেয়েটি হামিদার মৃতু্য কথা উলেস্নখ করে ফহমের মাকে সাবধান করে দিয়েছিল, সেই-ই আবার বলে ওঠে, " ফহমের মা বুড়ি, তোমারে কই, তোমার এই নাজুক পরীর পরীৰা আর বেশি দিন নাই, আমাগো পারছো, আমাগো মাইয়াগো পারবা না। তহন তুমি থাকবানা সেইটা ঠিক, কিন্তু তহনকার পুরম্নষরাও পারবো না শিল ভাঙানির পরীৰা নিতে বুঝলানি। এই পরীৰা যারা নিবো তাগোর ডান্ডাই তখন ভাইঙ্গা দিবো বুঝলা? এইবার যাও, হাকি শিকদারের নয় বছরের মাইয়াডারে গুতাইয়া রক্ত বাইর কইরা বিডাগো সামনে নাজুক পরী বানাইয়া দিয়া চাইল-ডাইল, কাপড়-চোপড় নিয়া বাড়ি গিয়া ঘুমাও, ওই যে দ্যাহো আকাশে শকুন উড়ে, তুমারে শকুনও ভালো চিনে বুঝলা বুড়ি? যাও, ওঠো কইলাম, নইলি দিলাম পানি ছিডাইয়া. . . মেয়েটি হাতের আজলা ভরে পানি নিয়ে ফহমের মার দিকে তাক করে, ফহমের মা তড়িঘড়ি উঠে পড়ার চেষ্টা করে, সবাই সে চেষ্টা দেখে হেসে দেয়, দীঘির এ পারের সিঁড়িতে একটা কলরোল ওঠে, হাসির। আর কেউ কেউ দীঘির ওপর ঝুঁকে পড়া আকাশের দিকে তাকিয়ে শকুন কিংবা চিল দু'টি দেখার চেষ্টা করে। তারা আরও নীচে নেমে এসেছে, এই নবীন দৃষ্টিতে তারা শকুনের অবয়বেই ধরা পড়ে।

"মাগীরা আমার দোষ দিয়া কি অবে? আলস্নারে গাইল পাড়বার পারিস না? আমি তো ইলস্না, আলস্নাইতো তোগো ফুটা দিয়া দুনিয়ায় পাডাইছে। আর তোরা কি একলাই কি কষ্ট পাইছস? কষ্ট আমি পাই নাই? আমারেও নাজুক পরীর পরীৰা দিতি অয় নাই? ওইছে। আলো মাগিরা, তোগো ভাতারগো কবার পারিস না, যারা এই পরীৰা করায়, তাগো, আমারে কইয়া লাভ কি? " _ ফহমের মা বেশ জোরেই গালি দিতে দিতে দীঘির পার দিয়ে গোলপাড়ার দিকে হাঁটতে থাকে।

এখন পথটা বেশ নির্জন আর গাছগাছালিতে ছাওয়া। এটা হিন্দু পাড়া, দেখলেই বোঝা যায়, প্রচুর গাছপালা চারদিকে। ফহমের মার মনে হয় হিন্দু মেয়েরা বেশ আছে, তাদের এই পরীৰা দিতে হয় না, নাকি তাদেরও দিতে হয়? কে জানে? মেয়ে-জন্ম বলে কথা, কুকুরজন্মের চেয়েও খারাপ। নিজের অদৃষ্টকেও ফহমের মা গাল দেয় কুৎসিৎ ভাষায়। ফহমের মা'র যখন বিয়ে হয় তখন তার বয়স সাত বছর। তখনও রক্ত দেখেনি সে। ওই অবস্থাতেই এক বৃদ্ধ তার নাজুক পরীর পরীৰা করিয়েছিল। আহারে ভ্থবন-বিদারী চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল সে। কিন্তু কেউই তার প্রতি মমতা কিংবা করম্নণা কিছুই দেখায়নি। সবকিছু খুব স্বাভাবিক বলে ধরে নিয়েছিল। যেনো একটা শিশুর শরীরে কাঠের ওই শক্ত কাঠামোটা প্রবেশ করিয়ে রক্ত ঝরিয়ে সেই রক্ত পাত্র পৰকে দেখিয়ে মেয়েটিকে অনাক্রানত্দা প্রমাণ করায় কোনও পাপ নেই, কোনও বেদনা নেই, বা বেদনা থাকলেও ওটুকু মেনে নিতেই হবে, যেমন ছেলেরা মেনে নেয় খৎনার কষ্টটা।

কিন্তু ফহমের মা শুনেছে মেয়েদের এই নাজুক পরীর পরীৰাটা অনেক জায়গায় হয় না। তাদের এলাকায় এই পরীৰাটার চল করেছিল বিহার থেকে আসা কোন এক পীর সাহেব। এই এলাকায় সেই পীরের বংশধরদের এখন রমরমা অবস্থা, তারা শুধু বংশে বাড়েনি, ধনেজনেও বেড়েছে। ফহমের মা মনে করার চেষ্টা করে, পীর সাহেবের কারণে এখানে আরও কতো শরা-শরীয়তী কাণ্ড চালু হয়েছে, যার কিছুই নাকি আগে ছিল না।

ফহমের মারা যখন ছোট ছিল তখন এই পরীৰা করতো একজন বুড়োমতো লোক। নাম ছিল হারিছ আলী, লোকটা ছিল মহা শয়তান। কতো মেয়েরে যে এই পরীৰার নামে ওই বুড়ো ভাম কতো কষ্ট দিতো তা বলার নয়। ফহমের মাকেও তো সেই কষ্ট সইতে হয়েছে। সন্ধ্যের মুখে মুখে হারিছ আলী আসতো বাড়িতে। সঙ্গে আসতো পাত্রপৰের কোনও মান্যবর ব্যক্তি। উঠোনের এক কোণা আলো-মাটি দিয়ে লেপে-পুছে রাখতে হতো আগে থেকে। তারপর সন্ধ্যে হয়ে গেলে সেখানে নিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে বসানো হতো। তারপর হারিছ আলী তাকে একটা ছোট্ট কালো গোলমতো কি যেনো খেতে দিতো, আগে বুঝতো না কিন্তু এখন ফহমের মা জানে কী বস্তুু ওটা। সে নিজেও তো এখন মেয়েদের ওই কালো 'গুলিস্ন'টি খেতে দেয় আগে। তারপর মেয়েটা নেতিয়ে পড়ে এবং বুড়ো হারিছ আলী যা যা জিজ্ঞেস করতো তাতেই সে সায় দিতো, তার উত্তরেই সে হঁ্যা বলতো। কোথাও দামে না পটলে কিংবা শত্রম্নতা করে হারিছ আলী মেয়েটিকে প্রমাণ করে দিতো সে নাজুক পরী নয়, আগেই কোথাও শিল ভেঙেছে বলে সেই মেয়ের আর বিয়ে হতো না। সারা জীবন ধরে মানুষের সামনে মূর্তিমান বেশ্যা হয়ে সে ঘুরে বেড়াতো। এরকম মেয়ের সংখ্যা আশেপাশের গাঁয়ে কম নয়।

"আলো মাগিরা আমারে গাইলাস তোরা, বুঝলিনা কতো বড় উপকারটা আমি তোগো করি। আমি তো হারিছ বুইড়ার মতোন তোগো শিলভাঙ্গা বেশ্যা বানাইয়া ছাইড়া দেই না। আইজ পর্যনত্দ কোনও মাগিরে আমি এই বদনামের ভাগীদার করি নাই। কতো জনে আমারে কতো কুমন্ত্র দিছে, কতো লোভ দেখাইছে আমি রাজি ওই নাই। একটা মেয়েরে সারাডা জীবনের জন্যি বেশ্যা বানাইয়া শেষে দোযখে যামুনি? আমি কতো কায়দা কইরা কতো জনের রক্ত বাইর কইরা নাজুক পরী প্রমাণ কইরা দেই। তোরা সুখে-শানত্দিতে ঘর করস_ মাগিরা আমারে গাইলাস, ওই মুখে পোক পড়বে, কুড়িকুষ্টি অবে" _ ফহমের মা যেনো ভাষা খুঁজে পায় আর গালির। সে ধীরে ধীরে একটি গাছ তলায় বসে পড়ে। অনেকৰণ ধরে মুখে কিছু দেওয়া হয়নি।

ফহমের মা পান খায় না, সাদা পাতায় চুন মাখিয়ে ছোট একটু পুটলি করে সে মুখের দু'পাশে চেপে-ঠেসে রাখে, একটা ঝিম ঝিম আমেজ হয় তাতে। এখনও গাছতলায় বসে তার কাপড়ের পুঁটলি থেকে একটা ছোট্ট কৌটো খুঁজে বের করার চেষ্টা করে ফহমের মা। কিন্তু রাগের মাথায় সেই আসল কৌটোটা আর খুঁজে পায় না সে। তার হাতে প্রথমে বাঁধে বিঘত খানেক লম্বা একটা কাঠের টুকরো, বেশ মসৃণ করে চেছে তৈরি করা। দেখতে পুরম্নষ-শিশ্নের মতো। ফহমের মা জিনিসটি বের করে এনে চোখের সামনে ধরে, কতো মেয়েরে এইটা দিয়ে নাজুক পরী বানিয়েছে সে এখন আর হিসেব করতে পারে না। নিজের স্বামী মারা যাওয়ার পরেই তো এই কাজ সে শুরম্ন করেছিল, তাও আজ কতো বছর হলো। ততোদিনে হারিছ আলী মারা গেছে, আর গ্রামের মেয়েরাও পুরম্নষের হাতে এই পরীৰা দিতে লজ্জা পেতো। ফহমের মা নিজেই এই পরীৰা নিতে এগিয়ে এসে মেয়েদের পুরম্নষের হাতে পরীৰা দেওয়ার যন্ত্রণা থেকে উদ্ধার করে, তা কেউ কি একবারও সে কথাটি স্বীকার করে? যতো দোষ ওই ফহমের মার।

ফহমের মার বুকের ভেতর থেকে কান্না উথলে উঠতে চায়। আরে ফহম বেঁচে থাকলে কি আর তাকে এই কাজ করে খেতে হয়? এক কলেরায় স্বামী পুত্র দুই-ই শেষ। তার আগে অবশ্য কুপির আগুনে ফহমের মুখ পুড়ে গিয়েছিল বলে গ্রামের সবাই তাকে ডাকতো মুখপোড়া ফহমের মা। তাতে কি, মেয়েমানুষতো আর নয়, পুরম্নষ মানুষ, পুরম্নষের মুখ পুড়লে কি, চার ইঞ্চি ঠিক থাকলেই হয়। "ওরে ফহমরে বাপ আমার তুই কুহানে গেলিরে আমারে থুইয়া। আইজ আমার এই কষ্ট তুই থাকলি ওইতো না রে বাপ, ওইতো না"_ হাতে ওই শিশ্নের মতো কাঠামোটি ধরে ফহমের মার মনের ভেতর থেকে কান্না বেরিয়ে আসে।

ভাগ্যিস জায়গাটা নির্জন বেশ নইলে এতোৰণে কেউ হয়তো এসে ফহমের মার কান্নার শব্দে জুটে যেতো। নয়তো তাকে নিয়ে ফের তামাশা করতো। রাসত্দা দিয়ে হাঁটুরে পুরম্নষ ছেলেরা ফহমের মাকে দেখলেই বলে, "ও বুড়ি ধনটা একটু দেহাওদিনি। আহারে তোমার ওই কাঠের ধন হইয়া জন্মাইলেও জীবনডা স্বার্থক ওইতো, কতো মাইয়াগো ভিতর যাইতে-আইতে পারতাম" _ ফহমের মা তখন মা-বাপ তুলে গাল পাড়ে তাদের উদ্দেশ্যে কিন্তু তারা দাঁত বের করে খ্যাঁক খ্যাঁক করে হাসে।

ফহমের মা কাঠের টুকরোটি রেখে আবার তার সাদা-পাতার কৌটোটি খোঁজার চেষ্টা করে। কিন্তু ছাতার মাথা সেই কৌটোটাই হাতে আসে না, হাতে আসে কালো 'গুলিস্ন'র কৌটোটা। ফহমের মা হাতে নিয়ে খুলে ফেলে কৌটোটা, ছোটো ছোটো কালো কালো গুলি সেখানে সাজানো আছে, দেখতে মনে হবে বড়ই-চুনো কিংবা খুব পেকে যাওয়া জাম। আহা এগুলো বানাতেই কি ফহমের মাকে কম কষ্ট করতে হয়? বনে-বাঁদাড়ে ঘুরে ঘুরে জোগাড় করতে হয় এসবের মশলা। ধূতরোর বিচি বেঁটে বেঁটে হাতে তার স্থায়ী ঘা হয়ে গেছে, তারপরও 'মাগিরা' তাকে গালি দেয়। কে একজন আবার বলে, "পানি ছিডাইয়া কি অবে, বুড়িরে ধইরা চুবাইয়া দে" _ ফহমের মার এবার রাগ হতে থাকে। আবার তার হাতে কাঠের টুকরোটা উঠে আসে, যার মাথায় ছোট্ট একটা ধারালো বেস্নডের টুকরো লাগানো, ইচ্ছে করে এই বেস্নডে সে পৃথিবীটাকে কেটে ফেলে। কিন্তু ফহমের মা জানে, এই বেস্নড সে ব্যবহার ছোট্ট এক খোঁচায় সামান্য রক্ত বের করে আনার জন্য। মেয়েটিকে নাজুক পরী প্রমাণের জন্য ওই এক ফোঁটা রক্ত যেনো কতো দামী!

মেয়েটি যাতে কষ্ট না পায় সে জন্য ফহমের মা কতো ব্যবস্থা নেয়, তার কি শেষ আছে? উঠোনের যে কোণে লেপা-পোছা জায়গায় বসার জায়গা করা হয় সেখানে মাটিতে সামান্য গর্ত করে একটি বড় মাটির ডেগ বসানো হয়, সেই ডেগের মুখে একটা কাঁসার থালা লাগিয়ে তাতে ঢাকের কাঠি দিয়ে ফহমের মা বেশ জোরে জোরে বাড়ি দিয়ে শব্দ করে মেয়েটিকে একটা ঘোরের মধ্যে নিয়ে যায়। তারপর পাত্রপৰের লোকটি আর মেয়েটির মাঝে কাপড় টাঙিয়ে দু'জনকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। মেয়েটিকে 'গুলিস্ন' খাইয়ে আগে থেকেই নরোম করে রাখা হয়, ঝিম ধরে বসে থাকে তখন সে। অন্য একজন মহিলা মেয়েটিকে ধরে বসে থাকে, মেয়েটিকে হাঁটু মুড়ে বসানো হয়। তারপর ফহমের মা তার কাঠের টুকরোটি বের করে খুব সনত্দপর্ণে মেয়েটির কাপড়ের তলা দিয়ে ঢুকিয়ে দু'পায়ের মাঝে এক ধাক্কায় ঢুকিয়ে দেয়, চোখের পলকেই সেটি বের করিয়ে আনার সময় সামান্য মোচড় দিলেই ধারালো বেস্নডের খোঁচায় রক্ত পড়ে। আলো-মাটিতে নিকোনো উঠোনের ওপর কয়েক-ফোঁটা রক্ত তখন লোকটিকে দেখানো হয়। মেয়েটিকে তখন সেই জায়গা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় দূরে, কয়েকদিন হাঁটতে-চলতে কষ্ট হয় বটে কিন্তু তাতে যে সারা জীবন কথা শোনার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া যায়।

দুর্ঘটনা যে ঘটে না দু'একটা তা নয়, কোনও কোনও মেয়ে হাত-পা ছোঁড়াছুঁড়ি করে রক্তকাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে। কেউ কেউ আবার দুঃখে-কষ্টে আত্মহত্যাও করে, হামিদা যেমন করেছিল। আবার কোনও কোনও মেয়ের নাজুক পরীর পরীৰা দেওয়ার এক দু'দিনের মধ্যেই বিয়ে হয়ে যাওয়ায় স্বামী ওই ৰতস্থানে আবার ব্যাথা দেয়, তখন তার নতুন করে রক্তৰরণও হয়। তখন আবার ফহমের মার ডাক পড়ে মলম বানিয়ে দেওয়ার জন্য। সবকিছুতেই ফহমের মা, আবার গালি শোনার বেলাতেও ফহমের মা।

বেলা পড়ে এলো এবার উঠতে হয়, ফহমের মা তার পুরো পুঁটলি হাতড়ে বের করে আনেন সাদা-পাতার কৌটো, কৌটের ঢাকনাটিতে অনেকখানি চুন, সেখান থেকে আঙুলে চুন লাগিয়ে এক টুকরো সাদা পাতায় মাখিয়ে দু'টো গোল গোল পুর বানিয়ে নীচের ঠোঁটটাকে একটু টেনে দু'পাশে চেপে ভরে মুখের ভেতর বসিয়ে দেয় সে। তারপর পুঁটলিটাকে কোলে নিয়ে ফহমের মা আবার হাঁটতে থাকে হাকি শিকদারের বাড়ির দিকে। বেলা তখন আরও অনেকখানি ঢলেছে। বিকেলের সোনা রোদ চারদিকে, হিন্দু বাড়িগুলোর চারপাশে ফুলের বাগানে কতো রকমের ফুল ফুটেছে এই বিকেলে। ফহমের মার দেখতে বেশ ভালো লাগে। বিকেলের রোদ আর ফুলের রঙ মিলেমিশে গেছে যেনো।

ফহমের মা হাঁটতে হাঁটতে প্রায় হাকি শিকদারের বাড়ির কাছেই পেঁৗছে যায়। পথে দেখা হয় আলেকজানের সঙ্গে। "ও বুড়ি কুহানে যাও?"
ঃ হাকি শিকদারের মেয়াডার আইজ নাজুক পরী, তুই কবি আইলি?
ঃ আমি তো কবেই আইছি, আর যাবো নানে। যাবো কি জনি?
ঃ ক্যানলো মাগি, যাবি না ক্যান?
ঃ তুমি জানো না, যার জন্যি আমারে নাজুক পরী বানাইছো সেই-ই তো কিছু পারো না।
ঃ ও কি কথা?
ঃ হগ্গুলি জানে, তুমি জানো না বুড়ি?
ঃ হ, আমিও হুনছি, তয়. .
ঃ তয় আবার কি? আমি আর যাবো না।
বছর পাঁচেক আগের কথা। এরকমই এক সন্ধ্যায় আলেকজানকে নাজুক পরী করেছিল ফহমের মা। গরীব ঘরের মেয়ে, বাপটা মরে গেছে। পাশের গ্রামেরই এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে। নাজুক পরী হয়ে মেয়েটির বিয়ে হলো, অনেক রক্তও পড়েছিল মেয়েটির, খোঁচাটা মনে হয় একটু জোরেই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কি দুর্ভাগ্য মেয়েটির, যার জন্য এই পরীৰা সেই-ই ঢোঁড়া সাপ, তার ন্যাতানো শিশ্নের খবর পাড়ার সবাই জানে, গ্রামে কারো কোনও কিছু গোপন থাকে নাকি? সবাই জানে সে খবর। আলেকজানকে তো পাড়া-প্রতিবেশী সকলেই জিজ্ঞেস করতো তার স্বামীর খবর। মেয়েটি আর কি করবে, প্রশ্নের উত্তরে নিশ্চুপই থাকতো। কিছুদিন পরে অবশ্য তাকে পাড়ার ছেলেপেলেরা কোথাও একা পেলেই ইঙ্গিত করতো, লুঙ্গি তুলে কেউ কেউ দেখিয়েও দিতো। গরীবের মেয়ে বলে মুখ বুজে সহ্য করেছে কিন্তু শেষ পর্যনত্দ আর পারেনি। চলে এসেছে।

আলেকজানের কথা শুনে বুড়ির মনে হয় মেয়েটির মাথায় কোনও দোষটোষ হলো নাকি? যেভাবে কথা বলছে। সে দ্রম্নত পা চালিয়ে সেখান থেকে সরে যেতে চায়, দীঘির পারে আজ যা শুনতে হয়েছে তাকে। নতুন করে আর কোনও কাণ্ড ঘটাতে চায় না সে। কিন্তু আলেকজান ফহমের মার খুব কাছে এসে দাঁড়ায়, তারপর গলাটাকে বেশ ভারি করে বলে, "ও বুড়ি, এইবার তুমি এমুন একটা কিছু বানাও যা দিয়া বিটাগোও পরীৰা করন যায়, খালি মাইয়াগো নাজুক পরী বানাইয়া কি অবে, যার জন্য নাজুক পরীর কষ্ট সওয়া তাই-ই যদি ঠিক না থাকে, তয় খালি খালি কষ্ট পাইয়া কি লাভ কও? ও বুড়ি কও আমারে বানাইবা নি? বিটাগোও নাজুক পরীর পরীৰা নিবা নি? কও বুড়ি, ও বুড়ি কইয়া যাও"।

ফহমের মা দ্রম্নত পায়ে হাকি শিকদারের বাড়ির দিকে হেঁটে যায়, পেছনে আলেকজানের গলার স্বর শোনা যায়, সেই স্বর মোটেও নাজুক নয়, বেশ শক্তপোক্ত, তেজস্বী।


সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×