রাষ্ট্রের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কায় জেলহত্যা মামলার পুনর্বিচার থেকে সরে এসেছে সরকার।
জেলহত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের আপিল আবেদনের ওপর রোববার শুনানি শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
তার কার্যালয়ের সভাকক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, "এ মামলায় খালাস পাওয়া দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ পুনর্বহাল করতে আমরা আদালতে কথা বলেছি। কারণ, এ হত্যাকাণ্ড মোসলেহ উদ্দিনের সংগঠিত করার বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য নয়। বঙ্গভবন ও জেলখানার সাক্ষীদের সাক্ষ্যে এ বিষয়টি উঠে এসেছে।"
"এ মামলার আসামিদের অনেকে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায়ও আসামি ছিলো," জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, "ওই মামলায় তাদের দণ্ড কার্যকর হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা থেকে বাঁচাতে আমরা এ মামলার পুনর্বিচারের দাবি থেকে সরে এসেছি।"
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর তার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয়।
জেলহত্যার মামলা দায়েরের ২৩ বছর পর আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় গেলে ১৯৯৮ সালের ১৫ অক্টোবর ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. মতিউর রহমান রায় দেন।
রায়ে রিসালদার মোসলেম উদ্দিন (পলাতক), দফাদার মারফত আলী শাহ (পলাতক) ও এল.ডি. (দফাদার) আবুল হাসেম মৃধাকে (পলাতক) মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ফাঁসির আসামি সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদাসহ ১৫ জনকে। খালাস পান বিএনপি নেতা কেএম ওবায়দুর রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, নুরুল ইসলাম মঞ্জুর ও তাহেরউদ্দিন ঠাকুর।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হলে হাইকোর্ট ২০০৮ সালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি মারফত আলী ও হাশেম মৃধাকে অব্যাহতি দেয়। রায়ে মোসলেমের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফারুক, শাহরিয়ার রশিদ, বজলুল হুদা ও একেএম মহিউদ্দিন আহমেদকেও খালাস দেয় হাইকোর্ট।
হাইকোর্ট বহাল রাখে আট সেনা কমকর্তার সাজা। তারা হলেন- খন্দকার আবদুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এম এইচ এম বি নূর চৌধুরী, এ এম রাশেদ চৌধুরী, আহমদ শরিফুল হোসেন, আবদুল মাজেদ, মো. কিসমত হোসেন ও নাজমুল হোসেন আনসর।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি শেষে বহু প্রতীক্ষিত জেল হত্যামামলারও চূড়ান্ত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হলে গত বছরের ৭ নভেম্বর আপিল আবেদনের শুনানি শুরু হয়।
জাতীয় চার নেতা হত্যামামলার অধিকাংশ আসামি হাইকোর্টের রায়ে খালাস পাওয়ায় এর পুনর্বিচারের বিষয়টি উঠে এসেছে। চার নেতার সন্তান আওয়ামী লীগ নেতারা সে দাবি করে আসছেন। আপিল আবেদনের শুনানির শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষ এ হত্যাকাণ্ডের পুনর্বিচার দাবি করে।
২০০৪ সালে রায়ের পর তৎকালীন সরকারের আপিল করা উচিত ছিলো বলে রোববার মন্তব্য করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর আপিলের আবেদন (লিভ টু আপিল) করে সরকার।
জেলহত্যার পুনর্বিচার থেকে সরেছে সরকার-নিজের কাজ শেষে তারা সব সময় এমন।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।
আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন
"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?


৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন
এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন
টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।