'হেফাজতে ইসলাম'র মিছিলকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে এক জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে পাঁচ পুলিশ সদস্য ও দুই সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন।
রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শহরের জেলা স্কুল মোড়ে মিছিলকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘাত বাঁধে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
সোমবারের হরতালের সমর্থনে হেফাজতে ইসলাম'র যশোর শাখা এ মিছিল বের করে। দুদিন আগে শুক্রবারও হেফাজতকর্মীদের সঙ্গে চট্টগ্রামে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে।
নিহত হোসাইন আহমেদ (১৯) মনিরামপুর উপজেলার মাদানীনগর কওমি মাদ্রাসার ছাত্র। তার বাড়ি ওই উপজেলারই চাকলা কাঁঠালতলা গ্রামে।
আহত পাঁচ পুলিশ কনস্টেবল হলেন- কামরুল (২৩), হেলাল উদ্দিন (২৮), শামসুজ্জোহা (৩৬), এমাজউদ্দিন (৩২) ও মিকাইল (৩২)।
আহতদের মধ্যে দুজন সাংবাদিকও রয়েছেন। তারা হলেন- লোকসমাজের আলোকচিত্রী শামীম ডাকুয়া ও গ্রামের কাগজের প্রতিবেদক মানিক। আহতদের যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১১টার দিকে শহরের রেল স্টেশন কওমি মাদ্রাসা থেকে হরতালের সমর্থনে একটি মিছিল বের হয়।
মিছিলটি মুজিব সড়ক হয়ে জেলা স্কুল মোড়ের কাছাকাছি এলে পুলিশ মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। একটু পরই হেফাজতকর্মীরা আবার মিছিল বের করলে পুলিশ ও মিছিলকারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
মিছিলকারীরা পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছুড়লে পুলিশ প্রথমে রবার বুলেট এবং পরে গুলি ছোড়ে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়।
যশোর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, "নিষেধ করা সত্ত্বেও মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা মিছিল বের করে।
"মিছিলকারীরা প্রথমে পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছুড়লে পুলিশ লাঠিচার্জ ও গুলি ছোড়ে", বলেন তিনি।
কোতোয়ালি থানার ওসি এমদাদুল হক গুলি ছোড়ার কথা সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করলেও পুলিশের গুলিতেই হোসাইন মারা গেছেন কি না, তা নিশ্চিত করেননি।
তবে বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলাম যশোর শাখার নেতৃবৃন্দ হোসাইনের মৃত্যুর জন্য পুলিশকে দায়ী করেছে। তারা এ ঘটনার তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
যশোর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) কামরুল হাসান দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৭৭ রাউন্ড রবার বুলেট ছোড়ে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শহরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে এসপি জানান।
হেফাজতে ইসলাম'র যশোর শাখার নেতা ও রেল স্টেশন মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক হারুন-অর-রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, "কুরআন সংরক্ষণ ও হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করলে পুলিশ বিনা উস্কানিতে গুলি ও লাঠিচার্জ করে।"
হোসাইন পুলিশের গুলিতেই নিহত হন বলে দাবি করেন তিনি।
নিহত হোসাইনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য যশোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সদর থানার ওসি জানান, এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





