‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার মহান ব্রত নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান মহাজোট সরকার। বিপুল ভোটে এই বিজয়ের চালিকা শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয় তরুণ প্রজন্মকে। বলা হয়- যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পথকে প্রশস্ত করতে নবীনরা এই জোটকে ভোট দিয়েছে। আর সেই তরুণদের প্রথম সারির হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে সরকার সমর্থক ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ।
এদিকে দুই বছর তিন মাস পার করেছে মহাজোট সরকার। অথচ এই দীর্ঘ সময়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কোনো কাজ করতে ছাত্রলীগ কোনো কাজ করতে পেরেছে কি না তা প্রশ্নসাপেক্ষ। এই সময়ে তারা ব্যস্ত ছিল সন্ত্রাসী চাঁদাবাজি আর টেন্ডারবাজিতে। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, এই ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সংখ্যা ৫শ’ ছাড়িয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি লক্ষ্যণীয় বিষয় ছিল তারা অন্য দলের সাথে যত না মারামারি করেছে, তার চেয়ে বেশি করেছে নিজেদের মধ্যে।
এবার আসি আসল কথায়। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পরপর তড়িঘড়ি করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ওয়েবসাইট খোলা হয়। কিন্তু ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অগ্রসেনানীদের (ছাত্রলীগ) কোনো ওয়েবসাইট নেই। ফলে অনেকে দেশের প্রাচীন এই ছাত্রসংগঠনের কার্যক্রম সম্পর্কে কিছু জানতে পারছে না।
অন্যদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্রলীগের কয়েক জন কেন্দ্রীয় নেতার নিজস্ব ওয়েবসাইট আছে। যেমন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আবু আব্বাস ভূঁইয়ার দুটি ওয়েবসাইট রয়েছে।
ব্যক্তিগতভাবে ছাত্রলীগ নেতাদের ওয়েবসাইট থাকলেও ছাত্রলীগের ওয়েবসাইট কেন করা হচ্ছে না সে বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেন নি এর কেন্দ্রীয় নেতারা। অনেকে বলছেন পুরো ছাত্রলীগের সমš^য়হীনতার কারণে এটা হচ্ছে। আবার কেউ কেউ বলছেন এই সংগঠনের যে একটি ওয়েবসাইট দরকার তা নিয়ে কেউই মাথা গামাচ্ছেন না। এই যদি হয় অবস্থা তাহলে ওয়েবসাইট করা কিভাবে সম্ভব হবে?
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে আবু আব্বাস ভূঁইয়া ক্ষোভ প্রকাশ করেন, “ছাত্রলীগেরই কোনো স্থিতিশীল অবস্থা নেই, কিসের আবার ওয়েবসাইট।” তিনি বলেন, “আমাদের দুই বছরের কেন্দ্রীয় কমিটি ষষ্ঠ বছরে পা দিয়েছে। এই সময়ে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক হয়েছে মাত্র ৫-৬ বার। সুতরাং এই সংগঠনের কোনো সিদ্ধান্ত কমিটির নেতাদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে হয় না। তাহলে কিভাবে আমরা একটি ওয়েবসাইট করবো।”
আবু আব্বাস বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এই দেশের লক্ষ লক্ষ ছাত্রের প্রতিনিধিত্ব করে ছাত্রলীগ। ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনের পরিচয়-কার্যাবলি ইত্যাদি সবার সামনে তুলে ধরার জন্য একটি ওয়েবসাইট অত্যাবশ্যক। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমরা তা করতে সক্ষম হয়নি।”
এদিকে ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে খোলা হয় ছাত্রদলের ওয়েবসাইট।
কথিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রত্যাশীদের বিপরীতমুখী এই সংগঠনটি তাদের ওয়েবসাইট খুলে ফেললেও প্রত্যাশীরা তা করতে পারেনি। এই সরকারের মেয়াদ আরো দুই বছর ৯ মাস রয়েছে। দেখি ছাত্রলীগ ডিজিটাল বাংলাদেশ করার জন্য কিছু করতে পারে কি না? খুলতে পারে কি না তাদের একটি ওয়েব সাইট? নাকি সমন্বয়হীনতার মধ্য দিয়ে চলে যায় পরবর্তী সময়গুলোও!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




