স্বামী হাসান সাইদ সুমনের হাতে নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রুমানা মঞ্জুর। এ ঘটনায় ম্যাডাম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ নিজেদের সুবিধাজনক অবস্থানে দৃঢ় রয়েছেন। এর বিপক্ষে কোনো ধরণের কথা বলছেন না তারা। ম্যাডাম নির্যাতিত হওয়ার পর বিভিন্ন পক্ষের নির্লিপ্ততার কয়েকটি দিক তুলে ধরা আজকে আমার এ লেখার উদ্দেশ্য। সেই সঙ্গে কিছু প্রশ্নও রাখবো।
ঢাবি শিক্ষিকা তার বর্বর স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন গত ৫ জুন। এ ঘটনা ম্যাডামের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মঞ্জুর হোসেন বাদী হয়ে পরদিন ৬ জুন ধানমণ্ডি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। নির্মম নির্যাতনের পর ম্যাডাম ল্যাবএইড হাসপাতালের ৬৬১নং কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়লেও ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক তাকে দেখতে যান সাতদিন পর। অর্থাৎ গত রোববার। আবার রোববার বিকেলে সাংবাদিকরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেনের কাছে ম্যাডামের শারিরিক অবস্থার কথা জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ববান এসব শিক্ষকরা জাতীয় বিভিন্ন ইস্যুতে গলাবাজি করেন অথচ সহকর্মী নির্যাতনের বিষয়ে এতো উদাসীন থাকলেন কেন?
অন্যদিকে মামলা হওয়ার আটদিন পার করলেও পুলিশ পাষণ্ড স্বামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কারণ জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমণ্ডি থানার এস আই মকবুল হোসেন বলেন, আসামী পলাতক রয়েছে। তদন্ত করা হচ্ছে আর গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। একজন হাসান সাইদ কি হয়ে গেল যে এধরনের শারীরিক নির্যাতন করেও তাকে আটদিনে গ্রেফতার করতে পারে না পুলিশ? সেকি পুরো প্রশাসন যন্ত্র থেকে শক্তিশালী? নাকি কোনো ধরণের প্রতিবাদ না করায় তাকে না ধরার বিষয়ে নির্লিপ্ত রয়েছে পুলিশ?
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা এরকম নিষ্ঠুর পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হলেও ম্যাডামের বাবা এ ঘটনা বাহিরে আসতে দেননি। কারণ এর মাধ্যমে সাবেক সেনা কর্মকর্তা হিসেবে তার আত্মঅহমিকার বিকৃতি ঘটবে। আবার মেয়ের জামাইয়ের পরিবার তাদের ঘনিষ্ঠ বলে দেশবাসীর কাছে বেয়াই পক্ষের অসম্মান করতে চাননি তিনি।এ কারণে তিনি পরিবারের বাহিরে এ ঘটনা প্রকাশ করননি।ফলে সাংবাদিকরা গত রোববার ল্যাবএইড হাসপাতালে গেলেও তিনি তাদের সাথে কথা বলতে রাজি হননি।অবশ্য সোমবার সাংবাদিকদের সাথে ম্যাডাম নিজেই কথা বলেছেন। কথা বলেছেন ম্যাডামের বাবা মঞ্জুর হোসেনও। শেষ পর্যন্ত তিনি কথা বললেন, তাহলে এতো সময় ক্ষেপণ করলেন কেন? এখন তার আত্মঅহমিকা গেল কোথায়?
আর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মধ্যে এতো অধিক সংখ্যক নারী নেত্রী। তারা বিভিন্ন সময় গলাবাজি করে থাকেন। স্বামী কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নির্যাতনের ঘটনায় তারা নিশ্চুপ কেন?
শেষে আরেকটি কথা বলবো।বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা জাতীয় বিভিন্ন ইস্যুতে গলাবাজি করে। অথচ ম্যাডাম নির্যাতিত হওয়ার ঘটনায় তারা এতো নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করছে কেন? বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক নির্যাতিত হয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে ছাত্রদের প্রতিবাদের ভাষা এখন স্তব্ধ কেন? অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য তাদের দায়িত্ববোধ কি এখন আর জাগ্রত হয় না?
পরিশেষে ম্যাডামের সুস্থ্যতা ও দীর্ঘায়ু কামনা আর পাষণ্ড সাইদের বিচার দাবি করে লেখা শেষ করছি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




