somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোঃ খুরশীদ আলম
যারা ইমান আনে এবং সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত রয়েছে নহর সমূহ ( আল কুরআন)“সত্য ও সুন্দরকে ভালবাসি, অন্যায়- অবহেলা দেখলে খারাপ লাগে, তাই ক্ষদ্র এ প্রয়াস “

যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশকের গুরুত্ব ও ফযিলত

০৯ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশকের গুরুত্ব ও ফযিলত



আর মাত্র কয়েকদিন পরেই মুসলমানদের বৃহত্তম ও পবিত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠান কুরবানির ঈদ বা ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবারের ঈদুল আযহা পৃথিবীতে একটি ভিন্ন অবয়ব নিয়ে আসছে। মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন পবিত্র ঈদুল আযহাকে উছিলা করে পুরো বিশ্বজগত থেকে করেনা ভাইরাস বা কভিড 19 নামক এই মহামারিকে চিরতরে নির্মূল করে দেন। সেই সাথে সাথে পথহারা সকল মানুষকে সঠিক পথে ফিরে এসে নিজেদেরকে পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত করে চিরস্থায়ী আখেরাতের পাথেয় সন্ধানে লেগে থাকার তাওফিক দেন।

এবারের ঈদ ভিন্ন আঙ্গিকে হবে-বলার অপেক্ষা রাখে না। হাটের সবচেয়ে বড় পশুটি ক্রয় করার যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা (তবে সবাইযে লোক দেখানোর জন্য বড় পশু ক্রয় করেন তা নয়) আমাদের মধ্যে বিদ্যমান ছিল তা এবার দেখা যাবে না, সেটা বলাই যায়। মানুষের আয় কমে গেছে-খরচ কমেনি। এমনিতেই মধ্যবিত্ত সামাজের আয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ব্যায় করা কোন কালেই সম্ভব হয়নি সেখানে চলমান পরিস্থিতি যোগ করেছে নতুন মাত্রা। তাই ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা হয়তো চেষ্টা করবে অল্প কিছু অর্থ দিয়ে হলেও কুরবানি করার ওয়াজিব আবশ্যিকতাটুকু সারতে এবং সেটাই করা উচিত। কুরবানির আদর্শ আর মহত্ব বলতে প্রকৃতপক্ষে যা বুঝানো হয় সেটা ধারণ ও লালন করে তদানুযায়ী আমল করাটাই কাম্য। পশু কুরবানি বা পশুর গলায় ছুরি চালানোর মধ্যদিয়ে আমরা আমাদের নফসের রোগগুলোর উপর যেন ছুরি চালাতে না ভুলে যাই। রাগ, অহংকার, ঘৃণা, হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ, পরশ্রীকাতরতা, গিবত-শেকায়েত, ছোগলখুরী, মাল-ইজ্জত-সম্মানের মহব্বত, বড়ত্ব, আমিত্ব ইত্যাদি অন্তরের মারাত্বক ব্যধিগুলো হতে আমরা যেন মুক্ত থাকি কুরবানির মধ্যদিয়ে, সেই তালিম-তরবিয়াত গ্রহণ করার কোন বিকল্প নাই।

মুমিন বান্দামাত্রই ইবাদত বন্দেগির জন্য সুযোগের সন্ধানে থাকে। ইবাদত বন্দেগির ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সুযোগও সে হাত ছাড়া করতে ইচ্ছুক থাকে না। যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশকের গুরুত্ব ও ফযিলত সম্পর্কে সাহাবি হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) ও হযরত জাবের (রা.) এর বর্ণনা রয়েছে যেখানে ইবাদত বন্দেগির জন্য জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনকে অন্যান্য দিনের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন- রাসূল (স.) ইরশাদ করেন- “ ইবাদত বন্দেগির জন্য যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন অপেক্ষা আল্লাহর নিকট প্রিয়তর দিন আর নাই। সাহবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, এ দিনগুলোতে ইবাদত করা কি জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ্ অপেক্ষাও অধিক প্রিয়? তিনি বললেন, জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ্ অপেক্ষাও অধিক প্রিয়, তবে যদি কেউ আপন জান-মাল নিয়ে জিহাদের উদ্দেশ্যে বের হয় এবং সবটুকু আল্লাহর রাস্তার বিসর্জন দেয়।”
যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখের গুরুত্ব ও ফজিলত প্রসঙ্গে মহানবীর (স.) এর হাদিস আছে। বলা হয়েছে “ আরাফার দিনের (9ই যিলহজ্জ) রোযা দুই বৎসরের রোযা রাখার সমতুল্য আর আশুরা (১০ই মুহররম) এর রোযা এক বৎসর রোযা রাখার সততুল্য।”
প্রথম ১০ দিন সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে ইঙ্গিত রয়েছে এভাবে- “আমি মুসা (আ.) এর সাথে ওয়াদা করেছি ত্রিশ রাত্রির এবং তা পূর্ণ করেছি আরও দশ দ্বারা।” (আরাফ : ১৪১)
মুফাসসিরে কেরাম সেই দশ দিনকে যিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিন বলেই অভিহিত করেছেন।
যিলহজ্জ মাসের আট তারিখের ফযিলত সম্পর্কে বলা হয়েছে হুযুর (স.) ইরশাদ করেন- “আট ই যিলহজ্জে যে রোযা রাখলো, আল্লাহ তাকে হযরত আইয়ুব (আ.) এর কঠিন রোগ-পরীক্ষায় ছবর করার সমতুল্য সওয়াব দান করবেন। আর যে ব্যক্তি আরাফার দিনে (৯ই যিলহজ্জ) রোযা রাখলো, আল্লাহ তাকে হযরত ঈসা (আ.) এর সওয়াবের ন্যায় সওয়াব দান করবেন।”

আরাফার দিন অর্থাৎ ৯ যিলহজ্জের ফজিলত ও গুরুত্ব বলে শেষ করা যাবে না। এই দিন সম্পর্কে বলা হয়েছে, রাসুল (স.) থেকে বর্ণিত যে, যখন আরাফার দিন উপস্থিত হয়, তখন আল্লাহ তায়ালা তার রহমত বিস্তৃত করে দেন। এই দিনে যে পরিমাণ লোকদেরকে দোযখ থেকে মুক্তি দেওয়া হয়, অন্য কোন দিন তা হয় না। যে ব্যক্তি আরাফার এই দিনে রোযা রাখলো, তার গত বৎসর ও আগামী বৎসরের গুনাহ মাফ হয়ে গেল। (অর্থাৎ ছগীরা গুনাহ্ ; কবিরা গুনাহ মাফির জন্য তওবা করতে হবে)

[মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করুন আর আমল করার সামর্থ্য দান করুন- আমিন।]

[ ইমাম গাজ্জালি (র.) এর মুকাশাফাতুল কুলুব এর “যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশকের গুরুত্ব ও ফযিলত” অবলম্বনে]
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৩৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×