গরম পড়ছে এবার।আর নতুন বউ হিসেবে আমার দায়িত্তটাও অন্যান্যবারের চাইতে বেশি-আলাদা।শাড়ী পরেতো দৌড়-ঝাঁপ করতে পারিনা।তাই দুপুরের খাবার পরিবেশন,মেহমান আপ্যায়ণ;ইত্তকার কাজগুলি এগোবে নীলরংগা সেলোয়ার-কামিজটার সাথে।মাটির নীল গহণাটা ও দারুন মিলবে।
রাত।ঈদের রাত।এমনিতে জমকালো সাজটা একদম পছন্দ করিনা।তাই দেয়া হয়ে উঠেনা।এবার একটু ভিন্নতা চাই।সোনালী টিস্যু শাড়ী,মেলানো জুয়েলারী,সাজ-সজ্জা এবং কি চুল বাধাটা নিয়েও রয়েছে বিশেষ পরিকল্পনা!তারপর?“চলনা ঘুরে আসি অজানাতে যেখানে.....হা হা হা”।
কিছুদিন হলো ভালোই লাগছেনা।শরীরটার মধ্যে কেমন জানি অস্থীরতা,মাথাটাও ঘোরাচ্ছে থেকে-থেকে।আলসেমী করে করে দু-চার দিন গড়িয়ে তবেই চিকিৎসকের শরণাপ্নন হওয়া।পরীক্ষ-নীরিক্ষা।ফলাফল।
বমির পর বমি। মাথা তুলে বসার চিন্তাটা যেন সবপ্ন গতকিছুদিন।ক্ষিধেতে মনে হচ্ছে মারা পড়ছি,সামনে হাজারো খাবার;মুখে তুলতে পারছিনা।রাত-রাত জেগে থাকি,ঘুম হয়না;পাশে ক্লান্ত জীবন সঙ্গীর ঘুম কে নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে চুপচাপ শুয়ে থাকা!
রোজার দিন।বুড়ো শাবশুড়ী মা-শবশুর বাড়ী-পরিবার কে কিছু স্পেশাল আইটেম বানিয়ে খাওয়ানোর আমার পরিকল্পনা তো পুরোপুরি ভেস্তে গ্যাছে। চুলোর পাশে দাঁড়াতে পারি বড়জোর মিনিট পাঁচ!গ্যাস এর গন্ধ সহ্য হয়না যে।
এহেন অবস্থায় আমার ঈদ সংক্রান্ত সু-বিশাল পরিকল্পনা যে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছেনা ব্যপারটা তো ফকফকা পরিস্কার!অন্য যেকোন সময় হলে এ নিয়ে বিরাট আর চুড়ান্ত মন খারাপ অবস্থানে থাকতাম আমি। এবার থাকছিনা!কেনইবা থাকব!!যদিও সত্যি যে ভীষন কষ্টের একেকটা দিন।কিন্তু এবারের ঈদ তো অন্য সব-বারের থেকে আলাদা-ভরপুর।
ঈদ ২০১০।জীবনসঙ্গীর সাথে আমার প্রথম ঈদ।শবশুর বাড়ী-একটি নতুন পরিবারের সাথে আমার প্রথম ঈদ।আমার অনাগত সন্তানের সাথে আমার প্রথম ঈদ।আহ্ আমার সন্তান।আমার মহানন্দ।ভাবতেই প্রতিকূলতার শ্যাওলা সরিয়ে উকিঁ দেয় আনন্দের টলটলে সবচ্ছতা।
এই মহানন্দ যেন থাকে অবিকল।যেন থাকে দাগহীন।সব্বাই,আমার চেনা-অচেনা সব মানুষ।
কখনো যদি মেলে সময়,টুকরো-টুকরো দোয়া রাখতে ভুলবেন না যেন!
এক মা এর চাওয়া
ন
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১০:১২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




