আজকে বলে আজকে নয়,খুব ছাত্র অবস্থাতেই ব্যক্তি সবাধীনতা,মুল্যবোধ;নিজসব পরিচয় এসব তাকে ভাবাতো-তাগীদ দিতো বলে,তার পেশাজীবনের শুরু বন্ধুদের চুটিয়ে আড্ডা দেয়াকে সযতনে পাশ কাটিয়ে বেশ সকালেই। তাই তার পেশাগত জীবনের বয়স ০৯-১০ বছর বললে,তাকে এবং তার পেশাজীবনের বয়সের হিসেব কে মেলাতে গিয়ে অনেকেরই চক্ষু-চড়ক গাছ!
সে যাই হোক।তার পেশা,পেশা’র বিশালত্তব,বাংলাদেশে পেশাটির নতুনতব;এর ব্যপারে লোকেদের তথ্যবিভ্রাট আর পেশা ও লিঙ্গের অনাহুত যোগফলের কারণে তাকে বরাবরই মুখোমুখি হতে হয়েছে নানারকম বৈ্রীতার। অতসব আজ থাক।যেই কথাটি, কখনোবা খুব ভদ্র-ভাষায় বিনয়ের সুরে কিংবা খুব রুঢ়-ভাষায় রুক্ষতার সুরে শুনতে শুনতে তার প্রায় কান পাকা হবার জোগাড় তা হলো “নারী জাতই খারাপ” হোক সে নারী তার কাজের ক্ষেত্রে সফল কিংবা অ-সফল।পেশাজীবনের এতসব টানাপোড়নে পড়ে তার অনেক যোগ্যতা সম্পন্ন,সৃজনশীল সহযোদ্ধা যেখানে কাজ কে অনিচ্ছাকৃ্ত ইস্তফা দিয়েছে সেখানে, সে কখনোই নিজেকে নড়বড়ে হতে দেয়নি,ভাংতে দেয়নি;থামতে দেয়নি। এতো গেলো কাজের ক্ষেত্র।
সংসারে আসি। যদিও কোন বাল্যবধু নয় সে। বিবাহিত জীবন-ধারণের মতো যথেষট শারীরিক ও মানষিক বয়স হয়েছে তার। কিন্তু তার সংসারের বয়স খুব বেশি দিনের নয়।একটি সবুজ-সবল গাছ কে মাটি উপড়ে আবার নতুন মাটিতে পোতা হলে যেমনটি হয় ঠিক তেমনটিই হচ্ছে একটি নববিবাহিত নারীর জীবন। তারপর এক সময় সব ঠিকঠাক হয়ে যায়।পেছনের জীবন কে পুরোপুরি পেছনে ফেলে নতুন মাটিতে নবজন্ম নারী কে মেনে নিতে হয়,নারী মেনে নেয়।কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে,সম্মিলিত চেষটায় যেই কাজটি খুব সহজে আকার ধারণ করে একক চেষটায় তা অনেকবেশি সময় নিয়ে নেয়। কখনোবা আর আকারই ধারণ করতে পারেনা। ঠিক যেমনটি এখানটায়-----তার পারিবারিক সংস্কৃতি,শিক্ষা,উদারতা আর আন্তরিকতার বিপরীতে যখন,নতুন পরিবারে ১ম/২য় দিনেই ফ্রীজ-রান্নাঘর ভরপুর খাবার থাকা সত্তেও কোন নারীর কল্যাণে টেবিলে উঠে আসে বাসী খাবার/হাত ফসকে ভেঙ্গে যাওয়া বাটির বদলে যায়গা করে ৩-৪ দিনের মুখ গোমড়া রুদ্ধশবাস পরিবেশ/অন্তঃসত্তা অবস্থায় নিজে উঠে গিয়ে রান্না করতে না পারায় ব্যথায় অস্থীর খালিপেট নিয়ে বসে থেকে খোটা শোনা কিংবা অসুস্থ শরীরে কিছুক্ষন শুয়ে থাকাটা গুরুতর অপরাধ গণ্য হয়। তখন তার খারাপ লাগে।সত্যি কথা বলতে গেলে বেশ খারাপ লাগে।মানবী সে,কোন মহামানবী তো নয়।
বাবার বাড়ী। খুব কাছের সেই মানুষগুলিকেও কিছুটা বলে হালকা হওয়া যায়না।তাতে যে তার সবামী কে ছোট করা হয়।আবার অতীষট-অসহায় হয়ে মাঝে-মাঝে সবামীকে কিছুটা বলে ফেললেও পরক্ষনে তার বিবেক ও আরোহীত শিক্ষা তাকে ক্ষমা করেনা।শুরু হয় আরেক যন্ত্রণার।
যাক এসব, ভীষণরকম মানষিক যন্ত্রণা কখন এই নারী কে দগ্ধ করে জানেন?যখন এই নৈ্মত্তিক খ্যাচর- খ্যাচরে ত্যক্ত হয়ে ,পরিবারের ভেতর থেকেই ওর কোন শুভাকাঙ্খী বলে উঠে “শালার নারী জাতই খারাপ” যদিও কথাটি তার জন্যে,তাকে ঘীরে,তাকে রক্ষায় উচ্চারিত তারপরও সেটি তার বড্ড-বেশি গায়ে লাগে।প্রশ্ন জাগে মনে,কেন এক বা দু’য়ের অপরাধে,ব্যক্তি কোন্দলে;পুরো জাতির কলুষিত হওয়া/অপমানিত হওয়া।তার সহ্য হয়না!
নারী।আমার এই গল্পের বন্ধুটি নারী।আমি নিজেও নারী।নারীদের প্রতিই তাই আজকের এই অনুরোধ বা সামান্য বাতুলতা। হে নারী------অনাহুত হীণমন্যতা আর সীমাবদ্ধতা কে ছুড়ে ফেলে দেখনা ভালো-বোধ হয় কিনা।জীবনটাকে একবার হিন্দী সিরিয়ালের বেড়াজাল থেকে বের করে এনে দেখইনা তারও কি অদ্ভুত সুন্দর,নিজসব রুপ আছে।নিজ-জাতীকে মাড়িয়ে ব্যক্তিসত্তা কে উচুঁ না করে বরং ব্যক্তিসত্তার ঔজ্জল্য দিয়ে নিজ-জাতীকে উজ্জলতা দেয়ার চেষটা করে দেখইনা একবার।
আমি নিরাশাবাদী নই।আশা হারানো আমার পথচলায় আরোহিত শিক্ষা নয়।জানি তুমি-তোমরা-আমরা পারব একদিন।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:১১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




