পড়ন্ত দুপুর
বিছানায় হেলানো শরীর
বঙ্কিমের রাধারাণী বইটি নিয়ে
নাড়াচাড়া করছিলাম
স্মৃতির এলোমেলো ফ্রেমে বাধা
নানা রঙ্গের দিনগুলি
আমার ভাবনার অথই সাগরে ভাসছিলো
চোখ বন্ধ করতেই মনে হলো
স্নানরত রাজকন্যা
পা পিছলে পড়ে গিয়েছিল দিঘীর জলে
কেউ পায়নি
অজ্ঞান তাকে বুকে করে তুলেছিলাম
আসলে সেটা কোন দীঘি ছিলনা
আর সেও ছিল না কোন রাজ্য শাসকের কন্যা
শীতলক্ষ্যার গহীন জলের
শীতল স্রোতে ভেসে এসেছে
সেই তন্দ্রা মেশানো চন্দ্রাবতী।
ব্রাক্ষণ পাড়া আর ইমাম বাড়ির মাঝামাঝি
যে সরু রাস্তাটি বয়ে গেছে
ঠিক সেই রাস্তার উপর তুলেছিলাম তাকে
উপস্থিত দু'পারার বহু লোক,
নিঃষ্পলক নেত্রে তাকিয়ে ছিল অনেকেই
কত লোক এলোগেলো, অবশেষে.......!
যার যার মতো সবাই মিলিয়ে গেল
শুধু দ্বায়বদ্ধ ছিলাম আমি
তাই যেতে পারলাম না।
শুধুই ভাবলাম
প্রত্যুষে যেমনি গুচ্ছ গুচ্ছ
তাজা জবা, জুঁই, শিউলী আর বেলী
ঠোঁটে বুলানো; কোমল ঠোঁটের মমতা নিয়ে
উষ্ণ আদর মাখা চোখের জলে কেঁদে কেঁদে
ভেসে চলে শীতলক্ষ্যার স্রোতে।
তেমনি আমার_
কল্পনার রং আর মনের মাধুরী দিয়ে আঁকা
প্রাণহীন দেহটি ভেসে যাবে
এই ধরিত্রীর বুক দিয়ে বয়ে যাওয়া
স্রোতস্বিনীর প্রবাহে।
ধর্মের কঠিন বেড়াজালে
কিছু কু-সংস্কারে আবদ্ধ এই সমাজ
আবদ্ধ এই সমাজের মানুষগুলো.......!
আর তাইতো স্ব-সাহসে এগিয়ে আসেনি কেউই!
স্পর্শ করেনি নিঃস্প্রাণ কোমল দেহটি;
কেউ দাহ করেনি ব্রাক্ষণ পাড়ার স্মশানে
কেউ তার সমাধি গড়েনি ইমাম বাড়ির কবর গাহে।
কলা গাছের তৈরি
আমার সখের ভেলা খানি...
তাকে চড়িয়ে দিলাম সেথায়,
গোধূলির শেষ লগ্ন!
অস্তগামী... বিদায়ী শেষ সূর্যটুকু -
ডুবু ডুবু করছে........
বিদায়ী ভাস্করের রক্তিম টিপ পড়িয়ে দিলাম।
আমার স্নানরত অজ্ঞান রাজকন্যার কপোলে;
চারিদিক আযানের মধুর ধ্বনি....
খুঁটি থেকে ভেলার রশি কখন যে খুলে গেছে!
ঠিক বুঝে উঠতে পারিনি!!!!
ভেসে যাচ্ছে ভেলা, হারিয়ে যাচ্ছে রাজকন্যা........!
শুধু দাঁগ কাটছে আমার হৃদয়ের অন্তরালে।
আজও সে অজ্ঞান!!!!
আর তাইতো...... বিবিক্ষার সে........ই
মাতাল তৃষ্ণার পতন হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ ভোর ৪:১৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




