somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবশেষে The Blue Heaven অর্থাৎ সেন্ট- মার্টিন ভ্রমন । :D:D

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অনেক অনেক দিন পর লিখতে বসলাম । আসলে এখন আর সামু ভাল লাগে না । আমি সামুতে কোন পরিচিত মুখ না । তাও অনেক দিনই তো হল সামুর সাথে আছি । ওই টান থেকেই হয়ত ফিরে আসি ।

যাই হোক আসল কথায় আসি । কয়েক দিন আগে ঘুরে এলাম স্বপ্নের দ্বীপ সেন্ট- মার্টিন। এখানে যাওয়ার প্ল্যান অনেক আগে কিন্তু কেন জানি যাওয়া হচ্ছিল না ।কিন্তু এবার যেতেই হত । কারন দেশে আর বেশি দিন নেই আমি । পড়ালেখার জন্য দেশের বাইরে চলে যাব ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে । এই বার না যাওয়া হলে আর যাওয়াই হত না ।

প্ল্যান অনুযায়ী টেকনাফের বাসের টিকেট কেটে ফেললাম (ঢাকা-টেকনাফ নন এসি ৯০০ টাকা।আগেই ডিসাইড করা ছিল কক্স বাজার যাব না । ডিরেক্ট ঢাকা-সেন্ট- মার্টিন- ঢাকা । বাস ছাড়ল রাত ৮ টায় । টেকনাফ (কেয়ারি সিনবাদ ঘাট) পৌছালাম পরের দিন সকাল সাড়ে ৮ টায় । তো আমরা গিয়েছি ৪ জন । আমি আর আমার ৩ বেষ্ট ফ্রেন্ড ।

যাওয়ার পথে :




তারপর কেয়ারি ঘাটে নেমে নাস্তা করলাম , ফ্রেশ হলাম , টিকেট কিনলাম । টিকেটের দাম খুব ১টা বেশি না । যাওয়া- আসা জন প্রতি ৫৫০ টাকা । এর পর অপেক্ষা- Exciment , কখন শিপে উঠবো , কখন সেন্ট মার্টিন পৌছাবো । এই ফাকে অই জায়গাটির বর্ণনা নেই । কেয়ারি সিনবাদ ছাড়ে নাফ নদী থেকে । যা বাংলাদেশ ও মায়ানমারকে আলাদা করেছে । ওই পাশে মায়ানমারের পাহাড়ি সৌন্দর্য , পাহাড়ের মধ্যে মেঘ খেলা । আর এক পাশে আমাদের দেশের সৌন্দর্য । মাঝখানে নাফ নদীতে কেয়ারি চলছে । শুধু ১টা কথাই বলব , Out of the World .





অবশেষে পৌছালাম সেন্ট- মার্টিন :(( (খুশির কান্না)



নেমেই হোটেল খোঁজা শুরু । আমাদের চাহিদা ১টাই বিচের সামনে হতে হবে । ভিতরের দিকের হোটেল গুলা অনেক কম দামে পাওয়া যায় । ১টা হোটেলে উঠলাম । ঠিক বিচের সামনেই । ডাবল বেড ৭০০ টাকা । এই হোটেল নেয়ার কারন ১টাই । এইটার সামনে ১টা খোলা ঘরের মত আছে । এখানে শুয়ে বসে সারা দিন - সারা রাত সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে ।









প্রথমে গিয়ে অবাক হয়েছি, মানুষ সাধারনত ৩ ঘণ্টার জন্য সেন্ট- মার্টিন যায় । সকালে শিপে উঠে ১২ টায় পৌছায় । আবার ৩ টায় ওই শিপে আবার ফেরত আসে X(( । আর আমরা ওখানে ছিলাম ২ রাত তিন দিন । তাও মনে হচ্ছিল এখানে আরো ১ সপ্তাহ থাকা উচিত আমাদের । জায়গাটা আমার এত পছন্দ হয়েছে । এখানকার মানুষ জন অনেক বেশি ভাল । আমরা ছিলাম ২-৩ দিন । কিন্তু আসার দিন মনে হয়েছে আমরা ওখানকার ই কেউ । হোটেল , বাজারের সবাইকে বিদায় জানাতে জানাতে অবস্থা খারাপ ;)

প্রথম দিন গিয়ে সমুদ্রে লাফালাফি । তারপর ঘাটে গেলাম এমনি । ওখানে সন্ধ্যার সময় এমন সুন্দর দৃশ্য আমি আমার জীবনেও দেখিনি । শান্ত সমুদ্র , সব কিছু নীল হয়ে আছে । ভাষায় বোঝানোর মত না ।





এবার ছিল রাতের সারপ্রাইজ । রাত ১ টার দিকে শুরু হল ঝড় । সবাই নেমে পড়লাম সমুদ্রে । বাতাস আমাদের উড়ায়ে নিয়ে যাচ্ছিল । ওই রাতের experience মনে থাকবে অনেক দিন ।

পরের দিন সকালে উঠেই যাব ছেড়া দ্বীপ । তো স্পীড বোট ভাড়া করলাম । যাওয়া - আসা ১২০০ টাকা । ওই জায়গাটা ও বেশ :P


















আমরা ছেড়া দ্বীপে গিয়েছিলাম কিছু সময়ের জন্য । ওখানে মাত্র ১টি পরিবার থাকে । ওরা এক রাত ওদের ছোট কুড়ে ঘরে থেকে যেতে বলল । ওদের এখানে রাতে থাকলে , থাকার টাকা দিতে হয় না । শুধু খাবারের টাকা লাগে । তাও নিজেরা মাছ ধরলে খরচ কমে যায় । আমরা এই ছোট দ্বীপে রাতে থাকার ও মাছ ধরার লোভ সামলাতে পারলাম না । থেকেই গেলাম । ওরা বলল কেউ কেউ ওদের ঘরে রাতে থাকতে চায় না । ভয় পায় সবাই । খুব কম মানুষই ছেড়া দ্বীপে রাতে ছিল । আমরা সেই কয়েক জন ভাগ্যবানদের এক জন । ওই রাতের এক্সপেরিএন্স আমি বলে বোঝাতেও পারবো না , শেষ ও করতে পারব না । বিদ্যুৎ নেই ছবিও তুলতে পারিনি । রাতে জোয়ারের সময় পানি বেড়ে চারিদিকের সব জায়গা পানিতে তলিয়ে যায় । মাঝখানে ১টি ছোট ঘরে আমরা। আসল দ্বীপ বলতে জা বোঝায় । শুধু এই টুকুই বলব , আপনি যদি সমুদ্রকে চিনতে ও জানতে চান , আপনাকে এক রাত ছেড়া দ্বীপে থাকতেই হবে । এ ছাড়া ও ওদের জীবন যাপন সম্পর্কে ১টা ধারনা হয়েছে আমাদের ।

সকাল হল । আজকে চলে যাব । মন খারাপ । কিন্তু সকাল থেকেই অনেক বৃষ্টি । অনেক সুন্দর লাগছিল । কিন্তু হঠাত শুনলাম আজকে বৃষ্টির জন্য কেয়ারি আসবে না । মাথায় হাত । টাকা পয়সা শেষ আরো এক দিন থাকব কিভাবে । এই সব ভুলে ঠিক করলাম পুরো
সেন্ট- মার্টিন হেঁটে শেষ করব । অবশ্য পুরোটা শেষ করতে পারিনি । তবে অনেক খানিই দেখেছি ।

হুমায়ূন আহমেদ এর সেই স্বপ্নের বাড়ি ' সমুদ্র বিলাস "





হোটেলে ফিরলাম দুপুর ১টায় । তখনো বৃষ্টি পড়ছে । এসে শুনলাম কেয়ারি এসেছে । এর পর হোটেল ছেড়ে ভেজা জামা কাপড় পরেই দৌড় :P



এর পর আর কি । শিপ ছাড়ল , টেকনাফ পৌছালাম । ঢাকার বাসে উঠলাম । /:) /:) /:)
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×