somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমাপ্তি

২৬ শে মে, ২০২০ সকাল ১১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১...
"মায়াগো, একটা কিসসা কই। বড়ই আশ্চর্য কিসসা। তোমার মনডা ভালা হয়ে যাবে।"
"আপনি চুপ করুন। আমি কোন কিসসা কাহিনী শুনতে চাচ্ছি না।"
হাসান খান থামলেন না। কথা চালিয়ে গেলেন।
"অনেক আগের ঘটনা, আমি বিবাহ করেছি মাত্র। দ্বিতীয় বিবাহ! পুরুষ মানুষের বিছানা খালি রাখতে নাই, আল্লাহ বেজার হন!এইজন্যই চার বিবাহ করার বিধান। পরথমপক্ষের জন ইন্তেকাল করেছে তাও একমাস আগে। ঐপক্ষের একজন পুত্র আছে। দ্বিতীয়পক্ষের ইস্তিরি পরথম পক্ষের পুলাপান দেখতে পারে না, এইজন্য পুত্রকে তার নানির বাড়ি পাঠাইয়া দিছি।
কিসসা এই পুত্রকে নিয়েই।"
হা হা হা....
মাহবুব চৌধুরী মন খুলেই হাসলেন। যদিও সানিয়ার এই বিষয়ে কোন আগ্রহ নেই, তিনি ঘটনা বলতেই থাকলেন।

"বিবাহের রাতে বাসরঘরে গিয়া দেখি, নয়া বৌ নাই। ঘরের বাইরে আসলাম। দেখি বৌ সারা বাড়ি পাক পাড়ে। জিজ্ঞেস করলাম, নাজমা কারে খুজ?
কোন উত্তর নাই, সে সারা বাড়ি কি জানি খুজে? আবার জিজ্ঞাস করলাম, উত্তর নাই। এই ধরনের বেটি মানুষের জন্যই মাইরের বিধান! যেহেতু নয়া বৌ, কিছু কইলাম না।
রাগ কইরা কইলাম, নাজমা, এক্ষণ ঘরে আস।
কোন লাভ হইল না। নাজমা বাড়ির উঠানে খাড়াইয়া কইল, আমি এইখানে গাছ হইলাম। আমার পুলা কই? আমার পুলারে না আইন্না দেওয়া পর্যন্ত আমি এইভাবে গাছ হইয়া থাকুম।
নাজমা দুইহাত উপরে তুলে রাখল, যেন গাছের দুইটা ডাল।

কই রাতে একটু আনন্দ ফুর্তি করবো! সে উঠানে গাছ হইয়া আছে! আমি ওরে কষে চড় দিয়া কইলাম, ঘরে আয় মাগি!
নাজমার বিকার নাই। একটু লড়েও না। হাতে কাঁচা কইঞ্চা নিলাম, দুই এক ঘা দিলেই সুড়সুড়ি ঘরে যাইব। দেখি আম্মায় দরজায় খাড়াইয়া রইছে। মায়ের সামনে নয়া বৌরে পিডাই কেমনে?
আমার আম্মারে দেইখা সায়মা কথা কইল, আম্মা আমার পুলারে আইন্না দেন। আমার পুলায় সারাদিন না খাওয়া। রাইতে একলা থাহে, ওর ডর লাগে। পুলা আইন্না দেন, আম্মা। আমার পুলা মাইনশের বাড়িত থাকবো কেন?আপনেরে মানেন আর নাই মানেন আমি এই পুলার মা।

সেই রাইতেই লোক পাডাইলাম আমার পুলারে আনার জন্য। হের নানা বাড়ি মেলা দূর। যাইতে আইতে রাইত বিয়ান হইয়া গেল। নাজমার বিকার নাই, সে দুই হাত তুইলা গাছ হইয়া রইল। আর মাও ঘরে গেল না, দরজায় খাড়াইয়া রইল।আম্মা এমন আগ্রহ নিয়া কেবল গাজীর পালা, রাধাকৃষ্ণের পালা দেহে।
আম্মা না থাকলে, দিতাম দু'ঘা। ওর গাছ হওয়া বাইর হইত।

বিয়ানে যহন পুলা আইসা দেউরির কাছে খাড়াইছে। নাজমা দৌড়াইয়া গেল৷ পুলার গালে কপালে চুমা দিয়া, চুলে পিডে হায় বুলাইয়া কইল, বাজান, আর তুমার ডর নাই। তুমি আমার লগে ঘুমাইবা।
পুলা নতুন মারে জড়াইয়া ধইরা কইল, আম্মা, খিদা লাগছে।

তহন পুলার বয়স আছিল চাইর বৎসর, এখন পুলার বয়স হইছে।ঐযে তহন নাজমা আমার পুলারে আঁচলের তলে ঢুকাইল, আর বাইর করল না। আহারে! মা-ছেলের কি ভালোবাসা। তুমি যদি দেখতা!মা পুলা দুইজন দুইজনরে নিয়া মাইতা থাকতো, এহনো থাহে!
কার সাধ্যি কয় যে এরা সৎমা-পুলা।

২...
সানিয়া বেশ বিরক্ত। ও নাফিকে বারবার কল দিচ্ছেতো দিচ্ছেই। রিং হয় নাফি কল ধরে না। ওর পরনে গায়ে হলুদের শাড়ি, ও পালিয়ে এসেছে। ও কেবল নাফিকেই চায়। আজকে ওদের বিয়ে করার কথা। ও ঠিক সময়েই বাড়ি থেকে পালিয়ে কাজি অফিসে গিয়েছে, তাও প্রায় তিন ঘন্টা আগে। নাফির কোন খবর নাই! হলটা কি ওর?
নাফি কখনো এমন করে না, বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিক্ষা থাকলেও ওদের ঘন্টার পর ঘন্টা কথা হয়।
ওরা দুজনেই মেডিকেলে পড়ে, পড়াশোনার চাপ অনেক বেশি তবুও ভালোবাসাবাসি থেমে থাকে নি!তবে কি নাফি বিয়ে করতে চাচ্ছে না?
সেদিন পালিয়ে বিয়ে করার প্ল্যান করার পর থেকে আর কথা হচ্ছে না। নাফি কল ধরছে না। কেন ধরছে না? কেন এমন করছে?

গৌড়দার বাজারে বটগাছটার নিচে সানিয়া বসে এগুলাই ভাবছিল। কোন সমাধান পাচ্ছে না। ও নাফিদের বাসাও চেনে না। আবার যোগ হয়েছে এই বুড়ো লোকটার কথার অত্যাচার!

ভর দুপুর। একটা শতবর্ষী বটগাছ। গাছে ঝাকে ঝাকে চড়ুই, কাক, টিয়া কিচকিচ করছে। গাছ থেকে নিচে এসেছে দলে দলে বটের ঝুড়ি, গাছটি বাজারের মধ্যে তাই হয়তো ঝুড়ি স্বাচ্ছন্দ্যে বিকশিত হতে পারেননি। তাই বলে বটের সৌন্দর্যের কমতি নেই। এই সৌন্দর্যের সাথে যোগ হয়েছে হলুদ শাড়ি পরা তরুণী, মাথায় গোলাপের টিকলি, গলায় গোলাপের মালা, হাতে বাহুতে গোলাপের গয়না। গ্রামের লোক এই সৌন্দর্যের সাথে অপরিচিত। তারা আড়চোখে তাকাচ্ছে। মেয়েটি অত ফরশা না, তবে একটা আকর্ষণীয় ভাব আছে। মেয়েটির খালি পায়ে আলতা, চোখে পানি টলমল করছে। হলুদ শাড়ি, গোলাপের লাল আর বটের সবুজ মিলে অপূর্ব পরিবেশ!আচ্ছা, এই ছবি কোন শিল্পী আঁকতে পারবে?

মেয়েটির চোখে পানি টলমল করছে, ও বারবার মোবাইল দেখছে। বোঝাই যাচ্ছে, কারও জন্য অপেক্ষা করছে।সাথে কেউ নেই, মেয়েটি কি বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে এসেছে? বাজারের সবাই জিজ্ঞাসু চোখে তাকিয়ে আছে। মেয়েটির সাথে কেউ কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না।

মেয়েদের অনেকগুলো চোখ থাকে, এরা সব দেখতে পায়। সানিয়াও লোকগুলোর চাহনি বুঝতে পারলো। তারচেয়ে বড় কথা এতক্ষণে হয়তো সবাই জেনে গিয়েছে, সানিয়া পালিয়েছে। দাদা, বড় ভাই খোজাখুজি শুরু করবে। ভাইয়ার যোগাযোগ এত ভালো, ওকে এক মুহুর্তে খুজে বের করবে, জোর করে বিয়ে দিয়ে দিবে।

সানিয়া নাফিদের বাড়ি চিনে না, কেবল জানে শম্ভুগঞ্জ পার হয়ে ময়মনসিংহ ব্রিজের কাছাকাছি যে ময়লার ভাগাড় আছে সেদিকে যেতে হয়। ওর আর কোথাও যাবার নেই!
ও একটা সিএনজি নিয়ে বললো,"আমাকে শম্ভুগঞ্জ পার হয়ে ময়লার ভাগাড়ের কাছে নামিয়ে দিন।"
সানিয়া উঁকি দিয়ে দেখল, বুড়ো লোকটা বাজারে মসজিদের কাছে দাঁড়িয়ে আছে।
ও আবার নাফিকে কল দিল!

৩...
ময়লার ভাগাড়ের পাশে বাম দিকে যে রাস্তাটা চলে গিয়েছে সেখানে মানুষের বিরাট জটলা। সিএনজিওয়ালা একটানা খিস্তি করে যাচ্ছে, একজন রূপবতী মেয়ে কাঁদছে। নিশ্চয়ই দেখার মত দৃশ্য!
সবাই চোখ বড় বড় করে ঘটনাটা গিলছে। ময়লার দূর্গন্ধ যাদের নিত্যসঙ্গী, তাদের জীবনে এমন আনন্দের ঘটনা কমই ঘটে।

সানিয়া মিনমিন করে বললো,"আমার খেয়াল নেই যে আমার কাছে টাকা নেই।আপনি আমার সাথে আসুন, আমি টাকা দিচ্ছি।"
সিএনজিওয়ালা আরও রেগে গেল, চিবিয়ে বললো,"অনেকক্ষণ ধরেই দেখছি বাজারে বসে আছেন। বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে এসেছেন, আপনার নাগর আসে নাই। টাকা কই পাইবেন? এমন মাইয়ার জায়গা হয় নটি বাড়িতে।"
সানিয়া মাথা আরও নিচু করে ফেললো।

মাহবুব চৌধুরী দ্রুত সিএনজি থেকে সানিয়াকে লজ্জা থেকে বাচালেন। ভাড়া দিয়ে দিতেই সানিয়া কাঁচা পথ দিয়ে হাটা শুরু করল। ও নাফিদের বাসা চিনে না, আপাতত এখান থেকে পালাতে পারলেই হল। একদল ছেলে ওর পিছু নিল। ও দু'একবার তাকিয়ে দেখল, বুড়ো লোকটাও পিছুপিছু আসছে। আশ্চর্য!এখন আর লোকটাকে দেখে বিরক্ত লাগছে না। সাহস পাওয়া যাচ্ছে৷

এখানে একটাই পথ। তাই সানিয়াকে অত ভাবতে হয়নি। অনেকক্ষণ হাটার পর রাস্তার দুপাশে এলোমেলো কয়েকটা বাড়ি পরলো। একটু এগিয়েই একসাথে অনেকগুলো ঘর।নাফি বলেছিল ওদের চৌধুরী বাড়ি অনেক বড়।এরচেয়েও কি বড়? সানিয়া কি আরও সামনে এগিয়ে যাবে? ও সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।

মাহবুব চৌধুরী এগিয়ে এলেন। বললেন,"মায়া, এইডাই নাফিদের বাড়ি। তুমি ভেতরে যাও।"

৪...
চৌধুরী বাড়ির আগের জৌলুশ আর নেই। তবে আট ভাইয়ের বৃত্তাকারে সাজানো বাড়ি বেশ দৃষ্টি নন্দন।সকালে দাঁত মাজতে দরজার চৌকাঠে বসলেই সবার মুখ, কর্ম ব্যস্ততা দেখা যায়।
এদের ভেতরের বৈরী ভাব ঘরবাড়িতে প্রকাশ পায়নি। শহুরে আধুনিক মানুষগুলো যেমন সমস্যা হলেই আলাদা স্থানে চলে যায়, এরা এখনো তা শিখতে পারেনি। আরেকটা জিনিস এরা শিখতে পারেনি সেটা হল, পড়াশোনা। এরা কৃষিকাজে পারদর্শী। অবশ্য হবারই কথা, এদের সবারই বেশ জমি আছে। এরা টাকা দিয়ে বিদ্যা কেনার চেয়ে জমি কেনায় অতি আগ্রহী!
কেউ কেউ কিছুটা শিখলেও ভাষায় আচার-আচরণে প্রকাশ পায় না। কেবল ব্যতিক্রম চৌধুরীর ছোট ছেলে মাহবুব চৌধুরী, ইনি ছেলেকে পড়িয়েছেন।নাফি মেডিকেলে পড়ে।

বাড়ির বিশাল উঠোনে বধু বেশে সানিয়াকে দেখে বাড়ির বৌ সব কাজ ফেলে ওকে ঘিরে ধরলো। সবাই এক এক করে নানা প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে।সানিয়া কি বলবে, সত্যিই তো ও কে?
ও নড়তেও পারছিল না, যেন পা মাটিতে শেকড় ছড়িয়ে দিয়েছে।মাহবুব চৌধুরী সবাইকে ধমক দিলেন।
মাহবুব চৌধুরী সানিয়াকে ঘরে নিয়ে গেলেন, বললেন,"ডানদিকের ঘরটায় নাফি আছে।"

ঘরটায় গাঢ় অন্ধকার, কিছুই দেখা যাচ্ছে না। তবে নাফির অভিমানী গলা শোনা যাচ্ছে।
"সানিয়া, তোমাকে আগেই বললাম, আম্মার চায়ে দুধ চিনি কম, আম্মার ডায়াবেটিস। আম্মা ডিম ভাজিতে পেয়াজ মরিচ খান না। খালি ডিম ভেজে দাও, আম্মা এইভাবেই রুটি খান।
আর তাড়াতাড়ি কর, ক্লাসে যাবা না নাকি?"
নাফি একা একাই বিরবির করছে।

মাহবুব চৌধুরী বললেন,"মায়া, সেদিন রাতে বাড়ি আয়াই তুমরার কতা কইছে। অর মা একটু রাগ করছে, নাফি আগে কেন কইল না? একটু পরেই মা পুলা বিরাট খুশি। আমরা পরদিন তোমাদের বাড়ি যাইয়াম।সকালে দেহি অর মা আর নাই! নাফি পাগলের মত অইয়া গেল,কাউরে চিনবার পারে না! হারাদিন তুমি আর ওর মারে নিয়া বিরবির করে।"
তিনি ঘরের লাইট জ্বালালেন।
সানিয়া মাহবুব চৌধুরীর দিকে তাকালেন।
"মায়া, এই ঘটনাও সাত আট দিন আগের।নাফি কিছু খায় না, ঘরের বাইরে যায় না। আমি দু'দিন তুলে খাইয়ে দিছি। ওর বন্ধুদের কাছে তোমার ঠিকানা নিয়ে তোমাদের বাড়ি যাচ্ছিলাম। পথেই তোমার সাথে......"
চৌধুরী কথা শেষ না করেই বাইরে চলে গেলেন।

নাফি খাটের পায়ায় হেলান দিয়ে আছে। মুখ অপ্রকৃতস্থতার ছাপ, চোখের নিচে কালি,লাল চোখ, চুল এলোমেলো, লুঙ্গি ঠিক নেই, ঈষৎ প্রস্রাবের গন্ধ আসছে, দাঁড়ি-গোফ বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। মাত্র এক সপ্তাহে একটা মানুষ এত বদলাতে পারে!
নাফি চোখ তুলে দেখল, চিনতে পারলো না। চোখ নামিয়ে আবার বিরবির শুরু করলো,"সানিয়া, আজকে সন্ধ্যায় দেখা হবে না। আমি একটু বাড়ি যাব। আম্মার অষুধ শেষ। কাল বাড়ি থেকে ক্লাসে আসবো। তখন কথা হবে।
বিশ্বাস কর, আম্মাকে এবার তোমার কথা বলার চেষ্টা করবো। কসম....."

সানিয়া নাফির গায়ের সাথে গা মিশিয়ে হেলান দিয়ে বসলো। নাফির হাত ধরলো। এবার নাফি ওর দিকে তাকালো, ধারালো দৃষ্টি!
"সানিয়া, তুমি এসেছ!
জানো, ছোটবেলায় একবার মেজরের বাসায় দুইটা লিচু চুরি করেছিলাম। মেজর আমাকে দুনালা বন্দুক নিয়ে তাড়া করলেন।আমি লিচু ফেলে দৌড় দিলাম। দৌড়াচ্ছিতো দৌড়াচ্ছি!
একসময় পথ ফুরিয়ে গেল। মেজর পেছনেই আসছেন। আমার যাবার পথ নেই। সামনেই পাগলটার ঘর, ওর দুইটা চোখ উল্টানো, সাদা।সাথে থাকে দুইটা কুচকুচে কালো কুকুর, দুইটারই চামড়া বিচ্ছিরিভাবে পোড়া, জিহবা ঝুলে থাকে, আরও আছে চোখ কানা একটা বিড়াল। পাগলটা নাকি ছোট বাচ্চাদের রান্না করে খায়!
শব্দ পেয়েই পাগলটা কুকুর,বিড়াল নিয়ে বেড়িয়ে এল। আমার যাবার পথ নেই, সামনে পাগল পেছনে মেজর।আমাকে কে বাঁচাবে?
তারপর কি হয়েছে, আমার মনে নেই।
তবে আমি ঘটনা ভুলতে পারি না, প্রতিরাতে এই স্বপ্ন জেগে উঠি,ঘুমাতে পারি না। তখন নানি বাড়ি থাকি। একদিন আম্মা এলেন। আমি আম্মার সাথে ঘুমাই, স্বপ্ন দেখে জেগে যাই। জেগে দেখি আম্মাও জেগে বসে আছেন। কখনো দেখিনি আম্মা ঘুমাচ্ছেন। আম্মা আমার পিঠে হাত বুলিয়ে দেন,গল্প বলেন আমি আবার ঘুমিয়ে পরি।"
সানিয়া ওর হাত আরও শক্ত করে ধরে।

"তুমি এসেছ, ভালো করেছ।আমরা তোমাদের ওখান যেতাম। এখন যেতে হল না।
জানো, আমি স্বপ্নটা আবার দেখছি। আমার ঘুম আসে না। আমি কেন স্বপ্নটা দেখি, কেন ঘুমাতে পারিনা? কেন দেখি, কেন ঘুমাতে পারি না?"
নাফি জিজ্ঞাসু চোখে সানিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
তারপর নিজেই বললো,"আমার আম্মা আর নেই!সারারাত আমি, আব্বা, আম্মা তোমাকে নিয়ে কথা বললাম।সকালে আমরা রেডি তোমাদের ওখানে যাব, দেখি আম্মা আর ঘুম থেকে জাগেন না!আম্মা আমাকে ছেড়ে চলে গেলেন। এখন স্বপ্ন দেখে জেগেই আর কাউকে দেখি না তো।"
নাফি শব্দ করে কেঁদে ফেলল।
কান্না আর সময়ের অনেক ক্ষমতা, সব দুঃখ দূর করে দেয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০২০ সকাল ১১:০৩
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×