somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিমালয়ের দেশে (পর্ব-২৭)

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কাঠমুন্ডুর Makhantole: যেন ঢাকার গুলিস্তান
৬ জুন চিতোয়ান থেকে পাহাড়িপথে বাস জার্নি শেষে কাঠমুন্ডু যখন পৌছলাম তখন দুপুর গড়িয়ে প্রায় বিকেল। উঠলাম মাদবের ঠিক করা সেই থামেল ইকু রিসোর্ট নামক হোটেলেই। কাকতালীয়ভাবে হোটেলের সেই (২০৪ নম্বর) রুমটাই আমাদেরকে দেয়া হল, গত ২ জুন পোখারা যাওয়ার আগে আমরা যে রুমটাতে ছিলাম। হোটেলে পৌছে ফ্রেশ হয়েই লাঞ্চের জন্য ছুটলাম সেই বিসমিল্লাহ্ হোটেলে। খাওয়া-দাওয়া সেরে বিকেল বেলা দুজনে ঘুরতে বের হলাম। ঘুরতে ঘুরতে আমরা শহরের এক জায়গায় একটা বড় মন্দিরের নিকট পৌছলাম। বিভিন্ন দোকানের সাইনবোর্ডে জায়গাটার নাম নিশ্চিত হলাম Makhantole। মাখানটোল ঠিক যেন আমাদের ঢাকার গুলিস্তান।

ফুটপাত জুড়ে বাহারী সব জিনিসের দোকান। রেডিমেড জামা-কাপড়, থান কাপড়, গৃহস্থালী জিনিস পত্র থেকে শুরু করে পিচ্চিদের খেলনা পর্যন্ত।

তবে আমাদের গুলিস্তানের মত ভিক্ষুক এবং ক্যানভাসারের উপদ্রব নেই। ভিক্ষুকের কথা যখন এল। কিছু কথা না বললেই নয়। শুধু গুলিস্তানের কথা বলছি কেন। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির সারা গা জুড়েই তো ভিক্ষুক আর ক্যানভাসারে সয়লাব। ঢাকায় থাকি তো প্রায় দেড় যুগ হয়ে গেল। মানুষের গড় আয়ুর তুলনায় সময়টা একেবারে কম নয়। চোখের সামনে কত কিছু বদলে যেতে দেখলাম। কত বিল-ঝিল, নালা-ডুবা ফুড়ে রাস্তা-ঘাট, হাই রাইজ বিল্ডিং দাঁড়িয়ে গেল। ঢাকার যে এলাকায় থাকি, বলতে গেলে এই সেদিনও এখানে ঝিল ছিল। এখানে একটা জায়গার নাম এখনও ঝিলপাড়। দুর্গন্ধে এই এলাকায় লোকজন ঢুকতে চাইত না। সে এলাকায় এখন ফ্ল্যাট কিনতে যান। নির্মানাধীন হলে পাঁচ, সাড়ে পাঁচ হাজার আর নির্মিত হলে ছয়/সাড়ে ছয় কিংবা সাত হাজারের নিচে স্কয়ার ফিট পাবেন না। ভবিষ্যতে তা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা আল্লাহই মালুম। গ্যাস নাই, কারেন্ট নাই কিন্তু ফ্ল্যাটের দামের উর্ধ্বগতি তো থেমে নেই। প্রবীন লোকেরা বলে এই সেদিনও নাকি কমলাপুর এতটা জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল যে, দিনে দুপুরে শিয়াল ডাকত। সেই এলাকা উঁচু উঁচু নয়নাভিরাম দালান-কোটায় ভরে গেল। কিন্তু ঢাকা শহরের ভিক্ষুক কমল না। মানুষের সাথে পাল্লা দিয়ে ভিক্ষুকও বাড়তে শুরু করল। সংখ্যায় বাড়ার সাথে সাথে পাল্টাল ভিক্ষার স্ট্যাটেজিও। আগে দেখতাম সাধারণত ভিক্ষুকরা ফার্মগেট, গুলিস্তান, বায়তুল মোকাররমের মত জনাকীর্ণ জায়গায় রাস্তার পাশে বা মোড়ে বসে বসে ভিক্ষা করত। তারপর কিছুদিন পর দেখা গেল মোবাইল ফোনের মত ভিক্ষুকরাও মোবাইল ভিক্ষুক হয়ে গেল। এক স্থানে বসে না থেকে এরা ট্রাফিক মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিতে লাগল। ট্রাফিক সিগন্যালে যখনই লালবাতি জ্বলে উঠে ঝাঁকে ঝাঁকে ভিক্ষুক সিগন্যালে আটকে পড়া গাড়ি, রিক্সা, ট্যাক্সির যাত্রীদের কাছে গিয়ে ভিক্ষা প্রার্থনা করে। জ্যাম যত দীর্ঘ হয় ভিক্ষুকদের তত পোয়া বারো। জ্যামে পড়ে যাত্রীরা দোয়া করে `ইয়া গাফুরুর রাহীম! আল্লাহ জ্যাম দূর করে দাও', আর অন্যদিকে ভিক্ষুকরা দোয়া করতে থাকে `ইয়া রাহমানুর রাহীম! মা`বুদ জ্যামটা আরেকটু দীর্ঘ করে দাও, এখনও অনেকগুলো গাড়িতে হাত বাড়ানো বাকি'। এখন আল্লাহ্ তায়ালা কোন্ দিকে যাবেন? গত কয়েক বছর যাবত ভিক্ষুকরা আরেকটি নতুন স্ট্যাটেজি নিয়েছে। সেটা হল, আপনি আপনার গন্তব্যে পৌছে রিক্সা কিংবা ট্যাক্সি থেকে নেমে ভাড়া পরিশোধের জন্য মানি ব্যাগ বের করতে না করতেই দেখবেন আপনাকে ঘিরে ধরেছে একাধিক নারী পুরুষ। তারপর হঠাৎ আবিষ্কার করবেন আপনার দিকে বাড়ানো কিছু হাত। এর চেয়ে সফল কৌশল হয়ত ভিক্ষা-বৃত্তির ইতিহাসে আর নেই। কারণ, আপনি যখন রিক্সা কিংবা ট্যাক্সির ভাড়া পরিশোধ করবেন তখন স্বাভাবিক ভাবেই পকেট থেকে টাকা গুনে বের করবেন না। বের করে গুনবেন। টাকা গুনতে গুনতে তাদের আবেদন-নিবেদন চলতে থাকবে। এতণে আপনার মনটাও খানিকটা বিগলিত হবে। আর হাতে যেহেতু টাকা তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও আপনার মন হয়ত বলবে দিয়ে দিইনা দুটি টাকা। ব্যস্! ভিক্ষুকের অপারেশন সফল। সে রাস্তার কিনারে যতই ছিন্ন বসন আর ভাঙ্গা থালা নিয়ে বসে থাকুক। টাকার লেনদেনের সময় উপস্থিত না হলে আপনি রিক্সা বা টেক্সি থেকে নেমে হেঁটে তার কাছে গিয়ে হয়ত সেই টাকা দুইটা দিতেন না। এখানে সাইকোলজিক্যাল একটা দিক আছে। যেটা ভিক্ষুকরা হয়ত গবেষণা করে বের করেছে। ইদানিং দেখছি, গায়ে-গতরে বেশ সম বলে মনে হয় এমন কিছু মহিলা এবং পুরুষও এই ব্যবসায় (?) নেমেছে। যাদের বয়স এখনও পৌঢ়ত্বের সীমানা পার হয়নি। বাসা বাড়িতে কাজের লোক পাওয়া যায়না। কিন্তু রাস্তায় সম ভিক্ষুকের অভাব নেই। শুনা যায়, এদের অনেকের নাকি জমি-জমা, বাসা-বাড়ি এমনকি কারো কারো নাকি হ্যান্ডসাম ব্যাংক ব্যালেন্সও রযেছে। পুজিঁহীন নিরাপদ ব্যবসা, একশত পার্সেন্ট ঝুঁকিমুক্ত।
গত আগস্টে একদিন দৈনিক মানবজমিনে দেখলাম ভিক্ষুকদের উপর একটি প্রতিবেদন। প্রতিবেদনের শিরোনাম `ভিক্ষা বাণিজ্যে রমজানে আয় ৫৪০ কোটি টাকা'। রিপোর্টার সালমান ফরিদ লিখেছেন, ``কাজ কিছুই নয়। হাতপাতা। শর্ত- সারাদিন থাকতে হবে এখানে-সেখানে। এজন্য মূলধনও লাগবে। সেটি হলো নিজের দেহের বিকৃত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। আর তাতেই সম্ভব অর্থ উপার্জন। তা-ও দৈনিক গড়ে ১২০০ টাকা। রাজধানীর ফার্মগেটের ষাটোর্ধ্ব আলেয়া বেগমের ভাষায়, `কাম তো বাবা কিচ্ছু করবার পারি না। কি করুম? এইডাই ওহন উপায়। তার ‘এইডাই’ হলো ভিক্ষাবৃত্তি। ঢাকাতে তার মতো অসংখ্য ভিক্ষুক এখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন সর্বত্র। তবে রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে তাদের উপস্থিতি বেড়েছে অন্য সময়ের তুলনায় অন্তত তিন গুণ। রোজায় মানুষ দান-খয়রাত বেশি করেন বলে রাজধানীতে ভিক্ষুকের সংখ্যা বেড়ে যায়। দেশের দরিদ্রতম অঞ্চলগুলো থেকে তারা দলে দলে ঢাকা আসতে থাকেন। এবারও হয়েছে তাই। (দ্র: দৈনিক মানবজমিন:০২.০৬.২০১২)
গত ২ অক্টোবর দৈনিক সমকালের শেষ পাতায় একটি ব্যতিক্রমী হেডলাইনে দৃষ্টি আটকে গেল।'গিভ মি ওয়ান পাউন্ড প্লিজ'!
সমকালের প্রতিনিধি মুস্তাফিজ শফি, সিলেট থেকে ফিরে প্রতিবেদনটি লিখেছেন। প্রতিবেদকের ভাষায়,
'গিভ মি ওয়ান পাউন্ড, প্লিজ'থ ফিরে তাকাতেই দেখি হাত বাড়িয়ে আছেন এক মহিলা ভিক্ষুক। বিস্ময় কাটতেই কয়েক সেকেন্ড চলে গেল। এবার তার মুখ থেকে বেরুলো,'আই অ্যাম হাংরি! গিভ মি প্লিজ'। প্রবাসী, বিশেষ করে লন্ডনি আঁচ করতে পারলেই তারা ইংরেজিতে ভিক্ষা চান। খোঁজ নিয়ে জানা গেল,প্রবাসী কিছু তরুণ-তরুণীই তাদের ইংরেজিতে ভিক্ষা চাওয়া শিখিয়েছেন।
জিন্দাবাজারের পরিচিত ভিক্ষুক নুরজাহান বেগম প্রতিদিন কত টাকা আয় হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তার সহজ উত্তর,'ওয়ান ফিফটি অর টু হান্ড্রেড'। কেউ ভিক্ষা দেওয়ার পর ইংরেজিতে 'সি ইউ এগেইন' বা 'থ্যাঙ্ক ইউ' বলতেও ভুল করেন না তিনি। নুরজাহান নিজেও কয়েকজনকে ইংরেজি শিখিয়েছেন। শিউলির মা, ছায়ারুন বিবি, কালিয়ার মা, সখীর মা, আম্বিয়া বেগম, খালেদা বানু এ রকম শতাধিক আছেন যারা ইংরেজিতে ভিক্ষা করেন। আগ্রহীরা সমকালের প্রতিবেদনটিতে ঢুঁ মারতে পারেন।
Click This Link
ভিক্ষুকের দিন পাল্টানোর ব্যাপারে হানিফ সংকেতের একটা নাট্যাংশের কথা মনে পড়ে। মোবাইল ফোনের দ্রুত প্রসারের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে তিনি দেখিয়েছিলেন যে, এক সময় হয়ত ভিক্ষুকের হাতেও মোবাইল চলে আসবে। মোবাইল ফোনে ভিুক গৃহকর্তাকে বলবে:
: স্যার! এইবেলা আমি আইতে পারব না। আমার জন্য যাকাতের টাকাটা রাইখ্যা দিয়েন কিন্তু। আমি পরে আইসা নিয়া যামু।'
সেদিন হয়ত এই চিত্র নাট্য দেখে সবাই হেসেছিল। অথচ হানিফ সংকেতের সেই কল্পনা আজ বাস্তব। খোঁজ করলে পাওয়া যাবে অনেক ভিক্ষুকেরই ঝোলায় কিংবা কোমড়ে গুজা মোবাইল ফোন। দিনে দিনে আরো কত কি দেখতে হবে আল্ল্হাই জানেন। এমনকি এটাও অস্বাভাবিক নয় য়ে, এক সময় হয়ত ট্রাফিক পুলিশের মত হাত উচিয়ে প্রাইভেট কার, টেক্সি, রিক্সা থামাবে ভিক্ষুক। তারপর বলবে স্যার! আমাদের কিছু দিয়া যান!!
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৪১
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×