somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাবধান বালিকারা! ভুলেও মোবাইল লোলদের মিষ্টি ফাঁদে পাড়া দিও না, শেষমেশ নচেৎ প্রাণটাই বেঘোরে হারাবে।

২২ শে জুলাই, ২০০৯ সকাল ৮:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিয়েতে রাজি না হওয়ার জের;
হাসপাতালে ঢুকে প্রমেকিাকে হত্য।

সমকাল প্রতিবেদকঃ
উজ্জ্বলের সঙ্গে প্রেমেরই সম্পর্ক ছিল। হয়তো ঘর বাঁধার স্বপ্নও ছিল সালমার। শেষ পর্যন্ত অন্যত্র বিয়ে ঠিক করলেন বাবা-মা। এ বিয়ে মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো পথই খোলা ছিল না ডা. সালমা পারভীন মনির। প্রেমিক উজ্জ্বলও প্রেমে বেপরোয়া। হিন্দি ছবির দুরন্ত নায়কের মতো। পাগলের মতো যাকে ভালোবেসেছিলেন তাকে চিরদিনের মতো হারানোর বেদনা অবশেষে ক্রোধে পরিণত হলো। মাথায় খুন চাপল। অবশেষে গতকাল মঙ্গলবার হাসপাতালে কর্মরত প্রেমিকাকে একের পর এক ছুরিকাঘাতে হত্যা করলেন তিনি। উজ্জ্বল তার জবানবন্দিতে বলেছেন, মনিকে ভালোবাসার প্রমাণ দিতে তর্জনী কেটে রক্তও দিয়েছে সে। ঘাতককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে রাজধানীর দক্ষিণ মুগদার রওশন আরা হসপিটালে।
হাসপাতালের সেবিকা রেশমা আক্তার জানান, ২০০৭ সালে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করে সালমা পারভীন ৪/৫ মাস আগে এই হাসপাতালের গাইনি ডাক্তার হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন।
এক্সরে টেক-নিশিয়ান সুমন চন্দ্র দাস জানান, রুটিনমাফিক গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ডা. সালমা এসে দোতলায়
ডিউটি ডাক্তারের রুমে গিয়ে বসেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এক যুবক তার রুমে যান। দু'জনে কিছুক্ষণ কথাবার্তার পর ডা. সালমা রোগী দেখতে বের হন। এ সময় ওই যুবকও তার সঙ্গে ছিলেন। ওয়ার্ডে গিয়ে রোগী দেখার পর তারা ফের ডিউটি ডাক্তারের রুমে ঢোকেন। এ সময় সেবিকা রেশমা আক্তার দেখতে পান ডা. সালমা চেয়ারে ও ওই যুবক বিছানায় বসে গল্প করছেন। বেলা পৌনে ১টার দিকে হঠাৎ রুমের মধ্যে ধস্তাধস্তির শব্দ পেয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন রেশমা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি দেখতে পান রুমের দরজা ঠেলে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় 'বাঁচাও বাঁচাও' চিৎকার করে দৌড়ে বের হচ্ছেন সালমা। কিছুক্ষণের মধ্যেই সালমা মেঝেতে পড়ে যান।
উজ্জ্বল তখনও রুমে। হাসপাতালের লোকজন বাইরে থেকে রুমটি আটকে দেয়। রক্তাক্ত সালমাকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান, সালমা বেঁচে নেই। স্টিলের ধারালো ছুরি দিয়ে ঘাতক তার পেটে ও বুকে উপর্যুপরি আঘাত করেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ১৪২ দক্ষিণ মুগদার পঞ্চম তলা ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় রওশন আরা হসপিটাল। সিঁড়ি ভেঙে দোতলায় উঠতেই চোখ আটকে যায় মেঝেতে। রক্ত মেঝে থেকে গড়িয়েছে সিঁড়ি পর্যন্ত। ছোপ ছোপ রক্তের দাগ দেয়াল ও দরজার সামনে রাখা চেয়ারে। হিসাবরক্ষক দীপক জানান, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. রওশন আরা ৫ বছর আগে নিজ নামে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করেন।
হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে নিহত সালমার পরিবারের সদস্যরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান। নিহত সালমার মামা শামীম সমকালকে বলেন, এক যুবক মাঝেমধ্যেই তার ভাগি্নর মোবাইলে ফোন করত। কথা বলতে বলতে দু'জনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে ওই যুবক বিয়ের প্রস্তাব দিলে সালমা তা প্রত্যাখ্যান করে। এরপর থেকেই সে সালমাকে বিরক্ত করতে থাকে।
নিহত সালমার বাবা আবদুস সামাদ কর অঞ্চল-৪-এর পরিদর্শক। ৭৭৯, দক্ষিণ মাণ্ডায় ভাড়া বাসায় তাদের বসবাস। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সালমা সবার ছোট। বড় বোন শাহানা পারভীন মওলানা ভাসানী হাসপাতালের চিকিৎসক। ভাই সেলিম রেজা চাকরিজীবী। গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের গোপালপুরে।
ঘাতক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বলের বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলার গৌরীপুর গ্রামে। তার বাবা সুরাত আলী মুদি দোকানদার। পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের গণিত বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র উজ্জ্বল সবুজবাগ থানা হেফাজতে সাংবাদিকদের জানান, সিলেট ওসমানী মেডিকেলের ছাত্রী থাকাবস্থায় ২০০৬ সালের মে মাসে মোবাইলে সালমার সঙ্গে তার প্রথম কথা হয়। বেশ কিছুদিন আলাপচারিতার পর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। সম্প্রতি সালমা উজ্জ্বলকে জানান, তার অন্যত্র বিয়ে ঠিক হচ্ছে। তাকে ভুলে যেতে হবে। এরপরই উজ্জ্বল আত্মহত্যা করবেন বলে সালমাকে হুমকি দেন। সালমা তা আমলে নেননি। ছয় দিন আগে উজ্জ্বল বাড়ি থেকে একটি ধারালো ছুরি সঙ্গে নিয়ে ঢাকায় এসে পান্থপথে চাচাতো ভাইয়ের বাসায় ওঠেন। সালমার সঙ্গে তিনি দেখা করার সময় চান। সালমা তাকে সময় দিচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার তাকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা করতে বলেন সালমা।
উজ্জ্বল বলেন, 'সালমাকে হত্যা করা আমার উদ্দেশ্য ছিল না। সালমার সামনে আমি আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলাম কিন্তু কথাবার্তার এক পর্যায়ে মাথায় খুন চড়ে যায়।'
এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার খন্দকার মহিউদ্দিন সমকালকে জানান, ঘাতকের বক্তব্য শুনে বোঝা যায়, শুরুতে তার প্রতি সালমার দুর্বলতা ছিল। পরে বাস্তবতার সঙ্গে মেলাতে না পেরে সালমার ঘোর কেটে যায়। ফলে ক্ষিপ্ত হয়ে উজ্জ্বল তাকে হত্যা করতে পারে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

বিস্তারিত প্রতিবেদনঃসমকাল
১৭টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×