সাংসদ শাহজাহান চৌধুরীর ব্ক্তব্য কতটুকু যুক্তিযুক্ত: তার এলাকার কোন ব্লগার থাকলে বলুন[/sb
ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, আমি ১৯৯১-৯৬ ও ২০০১-২০০৭ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম-১৪ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের এমপি ছিলাম। এমপি থাকা অবস্থায় আমি মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা সরকারি, আধা-সরকারি অথবা স্বায়ত্তশাসিত কোন প্রতিষ্ঠানের কোন পদে অধিষ্ঠিত ছিলাম না। কোন সম্পদ বিতরণ কিংবা বিতরণেও আমার ভূমিকা ছিল না। আমি কোন বিষয়েই দুর্নীতি করিনি। আমরা ৫ ভাই এক বোন। ৩ ভাই দীর্ঘদিন থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে আমেরিকায় বসবাস করেন। আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপিসহ অন্যান্য মতাদর্শের দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে আমার অবস্থান বিপরীতমুখী হলেও তারা কোনদিন আমাকে দুর্নীতিবাজ বলেননি। কারণ তারা ভালো করেই জানেন শাহজাহান চৌধুরী দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন না। আমি ২০০১ সালের নির্বাচনে চারদলীয় জোট থেকে মনোনয়ন পাই। পার্শ্ববর্তী আসনের চারদলীয় জোটের মনোনয়নপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমদও আমার আসনের মনোনয়ন দাবি করে ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরে যায়। নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয় এবং বিশাল মন্ত্রিসভায়ও তার স্থান না পেয়ে বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে তিনি (কর্নেল অলি) আমার প্রতি প্রতিশোধপরায়ন হয়ে ওঠে। দীর্ঘদিনেও আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দাঁড় করাতে না পেরে চারদলীয় জোট ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার পর পর সাবেক এ আর্মি অফিসার (কর্নেল অলি) কেয়ারটেকার সরকারের আমলে আমাকে শায়েস্তা করার হুংকার দিয়ে আসছে। এমনকি তিনি আমাকে জেলের ভাত খাওয়াবে বলে আমার নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক প্রচারও করেছেন। বর্তমানে সেনাপ্রধানসহ আর্মিতে চাকরিরত অনেক জেনারেলই তার (কর্নেল অলির) অধীনে চাকরি করেছে এবং তাকে স্যার বলেই সম্বোধন করেন। তাদের মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে এলাকায় প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন। রাজনীতিতে বিরোধী পক্ষ থাকে এবং আমারও আছে। কিন্তু তারাও কোনদিন আমাকে দুর্নীতিবাজ বলেননি। আমি শুধুমাত্র কর্নেল অলির সাথে নির্বাচন করে বিজয়ী হওয়ার কারণেই আমার এ পরিণতি বলে আমি মনে করি। তিনি উপস্থিত বিচারককে উদ্দেশ করে বলেন, আমি একজন মুসলমান হিসেবে আমার ভালমন্দ দেখার দায়িত্ব আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের। আমি আল্লাহ ছাড়া দ্বিতীয় কারো কাছে মাথা নত করবো না এবং অন্য কাউকে ভয় পাই না। আমার সব কিছুই আল্লাহ তায়ালা দেখবেন।
তিনি আরো বলেন, এই দুনিয়ার বিচারই শেষ নয়। মানুষ সবাই মরণশীল। আজকে দুর্নীতি দমন কমিশন ও টাস্কফোর্সের যেসব অফিসাররা মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে আমার মতো নিরীহ মানুষকে জেলে বন্দি করার ব্যবস্থা করেছে তাদের বিচারও আল্লাহ একদিন অবশ্যই করবেন। মাননীয় বিচারক আপনি এবং বিজ্ঞ আদালতের প্রতি সব শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, একজন বিচারকের চেয়ার অনেক সম্মানিত। বিচারকের চেয়ারে বসে আপনারও উচিত হয়নি প্রভাবিত হয়ে আমাকে মিথ্যা সাজানো মামলায় অভিযুক্ত করে সাজা দেয়া। আপনি পর্দার অন্তরালের শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করে আমাকে সাক্ষী প্রমাণে নির্দোষ পেয়েও এবং আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা না পাওয়া সত্ত্বেও আপনার ইচ্ছার বিরুদ্ধে পূর্ব পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত মোতাবেক যে সাজা দিয়ে গেলেন আমি সবার সামনে বলছি বিচারক হিসেবে আপনি সৎসাহস নিয়ে নিরপেক্ষভাবে বিচার করেননি। নিরপেক্ষভাবে বিচার করলে আমি অবশ্যই খালাস পেতাম। আমাকে আজ অন্যায়ভাবে যে সাজা দিলেন, ভবিষ্যতে আল্লাহর ইচ্ছায় আপনার উপর দিয়ে অথবা আপনার পরিবার পরিজনের উপর এ ঝড় দেখা দিতে পারে। আমি আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কর্নেল অলির গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার মাত্র। আল্লাহ একদিন তাদের বিচার করবেন। তবে আমি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাই আল্লাহ যেন তাদের হেদায়েত করেন। তিনি বিচারকের উদ্দেশে আরো বলেন, যারা শত শত কোটি টাকার দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেছে সেই সকল দুর্নীতিবাজদের তালিকাভুক্ত না করে এবং আইনের আওতায় না এনে আমার মত শতভাগ সৎ ও রাজনৈতিক নেতাদের মিথ্যা সাজানো মামলায় জেলে আটক করে রাখায় বিচারকগণ দেশের মানুষের নিকট প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন। সরকার ও প্রশাসন ব্যবস্থার প্রতি জনগণ আস্থা হারিয়ে ফেলেছে আজ। রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনকারীরা ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অঢেল বিত্তবৈভব অর্জনকারীরা আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে দুর্নীতি করার সাহস পাবে এটা দেশের জন্য অশনি সংকেত। তিনি তার ব্যক্তিগত বিষয়ে বলতে গিয়ে বলেন, আমি একজন সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে জীবনে লাখ লাখ মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি জীবনে এর চেয়ে বড় পাওনা আর কিছুই হতে পারে না। মিথ্যা দুর্নীতির মামলায় সাজা দিয়ে জেলখানায় আটকে রাখা যায় কিন্তু সাধারণ মানুষের অন্তরের ভালোবাসা থেকে দূরে রাখা যায় না। প্রকৃত সত্য একদিন প্রমাণিত হবেই। দুর্নীতিবাজ কর্নেল অলির বিচারও হয়তো আল্লাহ পাক এ পৃথিবীতে দেখাবেন। শাহজাহান চৌধুরী আদালতকে বলেন, আমার তিন ভাই আমেরিকায় থাকলেও ঢাকা, চট্টগ্রামসহ কোন মেট্রোপলিটন এলাকায় আমার কোনো জায়গা নেই। এপার্টমেন্ট ও বড় কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও নেই। সন্তানদের লেখাপড়ার স্বার্থে আমার স্ত্রী চট্টগ্রাম শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। কোন সম্পদও নেই।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৩:১২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




