somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেবদ্রোহ (উপন্যাস: পর্ব- সতের)

২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৪:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এগারো

অন্তিম শরতে উত্তরের বাতাস হিমালয়ের জঙ্ঘা ছিঁড়ে শীত নিয়ে আসে পাতালে, অপরাহ্ণে যখন পাতলা শুভ্র কুয়াশা পড়ে তখন দূরের অরণ্যকে মনে হয় পরিচ্ছদ পরিহিত, আর সন্ধ্যা থেকে আদুরে শিশির পড়ে পাতালের বসাতিগুলোয়। শরতের প্রথম ভাগের অধিক গরমের পর এই সময়ে দিনের বেলায় গরম কমতে শুরু করে আর রাত্রে শরীর পেতে শুরু করে শীতের স্বাচ্ছন্দ্য, কাজকর্মে স্বস্তি বোধ করে মানুষ, যেন শরতের অপেক্ষাতেই ছিল তারা। কৈলাসনগরের মানুষের কাছে অন্তিম শরত আসে উৎসব আর আনন্দ-স্ফুর্তি নিয়ে; এই সময়ে ধরিত্রী জননী হিসেবে পূজিত মাতৃকা মূর্তির শারদীয় বোধনের মধ্য দিয়ে উৎসবের শুরু হয় আর নানা উৎসব চলে বসন্ত পর্যন্ত। যদিও বৎসরের অন্যান্য সময়েও কিছু পূজা-পার্বণ হয়ে থাকে, তবু অন্তিম শরত থেকে বসন্তকালকেই প্রকৃত উৎসবের কাল হিসেবে ধরা হয় পাতালে। এসময়ে যেমনি তীব্র গরম থাকে না, তেমনি ঝড়-বৃষ্টিও তেমন হয় না, তাই মানুষ এই সময়টায় উৎসব দারুণভাবে উপভোগ করতে পারে; পিঠা-পায়েসসহ নানা রকম খাদ্যের আয়োজন হয় বাটীতে বাটীতে, লোকে আত্মীয়-স্বজনের বাটীতে বেড়াতে যায়, তরুণ-তরুণীরা এই সময়ে বিবাহ করতে পছন্দ করে; ফলে প্রায় নিত্যদিনই কোথাও না কোথাও বিবাহ কিংবা অন্য কোনো উৎসবের বাদ্য শোনা যায়।

কিছুদিন আগেই মহা সমারোহে সম্পন্ন হয়েছে ধরিত্রী মাতৃকার পূজা, নগরের বিভিন্ন স্থানে সার্বজনীন এবং পারিবারিকভাবেও পূজা হয়েছে। সার্বজনীনভাবে পূজা করেছে সাধারণত নগরের শ্রমিক, কারিগর প্রভৃতি দরিদ্র শ্রেণির লোক; আর পারিবারিকভাবে পূজা করেছে সাধারণত নগরের শাসক, নানা ধরনের বণিক প্রভৃতি ধনী শ্রেণি। ধরিত্রী মাতৃকার কাছে মানুষ প্রার্থণা করেছে- যেন নারীরা যথা সময়ে গর্ভধারণ করে বংশবৃদ্ধি করতে পারে, সময় মতো বৃষ্টি হয়, ভূমিতে পর্যাপ্ত ফসল ফলে, দূর্যোগ থেকে রক্ষা পায়, পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা খেয়ে-পরে যেন সারা বৎসর সুখে-শান্তিতে থাকতে পারে। কুথানের বণিক সখা ইল্বল তার গৃহের ধরিত্রী মাতৃকার পূজায় নিমন্ত্রণ করেছিলেন কুথান আর কল্পককে, চামড়ায় লিখিত নিমন্ত্রণপত্র নিয়ে ইল্বল নিজে এসেছিলেন অতিথিশালায়। আর্যরা নিমন্ত্রণ করে মৌখিকভাবে, কিন্তু অনার্য পণিজাতি মৌখিকভাবে ছাড়াও অতিথিদের নিমন্ত্রণ করে চামড়ায় লিখিত নিমন্ত্রণপত্রের মাধ্যমে। কুথান কল্পককে সঙ্গে নিয়ে সখার নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন। খুব আড়ম্বরপূর্ণভাবে পূজার আয়োজন করেছিলেন ইল্বল; নানা প্রকার খাদ্যদ্রব্য ধরিত্রী মাতৃকার উদ্দেশে উৎসর্গ করা হয়েছিল, ধরিত্রী মাতৃকাকে সন্তুষ্ট করতে মহিষ বলি দেওয়া হয়েছিল আর পরে সেই মহিষের মাংস রন্ধন করে আহার করা হয়েছিল, খুব সুস্বাদু মাংস। ঢাক-ঢোল বাজিয়ে সন্ধে থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নৃত্য-গীত করা হয়েছিল, বস্তুত সারা নগরের অধিকাংশ লোকই সেদিন মদ্যপান করে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে ধরিত্রী মাতৃকার সম্মুখে নৃত্য-গীত করেছিল। অনার্যদের মতো কুথানও মদ্য পান করে নৃত্য-গীত করে উৎসব উপভোগ করেছেন, আর কল্পক উৎসবে উপস্থিত থেকে মদ্যপান করলেও নৃত্য-গীতে অংশ নেননি, বরং কুথানের কানে ফিসফিস করে বলেছেন, ‘পাপ, পাপ, মহাপাপ! ওরা বর্বর, বিষ্ণুর আরাধনা না করে, অগ্নি আর ইন্দ্রকে উৎসর্গ করে যজ্ঞ না করে পাপে ডুবে আছে!’

শরৎ পেরিয়ে এখন হেমন্ত, এরই মধ্যে কুথান আর কল্পকের এক মাস অতিবাহিত হয়েছে কৈলাসনগরে। কৈলাসনগর খুব ভালো লেগেছে কল্পকের, এখানকার পরিকল্পিত নগরায়ণ, পথ-ঘাট, হাট, আরামদায়ক গৃহ ও শয্যা, খাদ্যদ্রব্য এবং আনুষঙ্গিক সবকিছু দেখে তিনি যেমনি মুগ্ধ হয়েছেন, তেমনি ঈর্ষাবোধও করেছেন। তারা যে অতিথিশালায় উঠেছেন, সেটি দ্বিতল ভবন, দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে উঠেছেন তারা, কক্ষে দুজনের জন্য আরামদায়ক দুটি শয্যা পাতা। বাটীর ভেতরের ছোট্ট আঙিনায় স্নানের জন্য কুয়ো আছে, পায়খানা আছে। মূল্য দিয়ে তিনবেলা সুস্বাদু আহার করা যায়। অতিথিশালার চমৎকার ব্যবস্থাপনা দেখে খুব খুশি কল্পক।

ইল্বল আর অনল ছাড়াও কুথান তার আরো কয়েকজন সখার গৃহে বেড়াতে নিয়ে গেছেন কল্পককে; কোনোটা একতলা, কোনোটা দুইতলা গৃহ ছিল। কল্পক মনোযোগ দিয়ে গৃহ নির্মাণের শৈলি দেখেছেন আর মুগ্ধ হয়েছেন। তার সবচেয়ে ভালো লেগেছে ইল্বলের দুইতলা গৃহটি। ইল্বল ধনী বণিক, স্বর্ণ ও রৌপ্য’র গহনার কারখানা ও বিপণী আছে তার। তিনি পশ্চিমের বিভিন্ন নগর থেকে স্বর্ণ, রৌপ্য এবং বৈদূর্যমণিসহ কয়েক প্রকার রত্ন সংগ্রহ করে এনে নিজের কারখানার কারিগরদেরকে দিয়ে গহনা তৈরি করান। তার কারখানায় ছয়জন কারিগর কাজ করেন। তার বিপণীর গহনার সুনাম দূর-দূরান্তের অন্যান্য নগরেও পৌঁছে গেছে, সেইসব নগরের বণিকেরা তার বিপণী থেকে গহনা ক্রয় করে নিয়ে যায় ক্রেতাদের নিকট বিক্রয়ের জন্য। আবার তিনি যখন স্বর্ণ, রৌপ্য এবং রত্ন সংগ্রহ করতে পশ্চিমের নগরগুলোতে যান; তখন পশ্চিমের বণিকদের নিকট বিক্রয়ের জন্য নানা প্রকার গহনা সঙ্গে নিয়ে যান।

ইল্বলের দুইতলা গৃহের কক্ষগুলো কাঠের তৈরি দৃষ্টিনন্দন পালঙ্ক, কেদারা, জলচৌকি ইত্যাদি দিয়ে সুসজ্জিত। দুটি কক্ষে কাঠের আধারের তাকগুলো সজ্জিত পিতল ও পোড়ামাটির সুন্দর সুন্দর মূর্তি, চিত্র খচিত স্বর্ণের পাত্র এবং শঙ্খ নামক এক প্রকার সামুদ্রিক প্রাণির শ্বেত বর্ণের খোলস দিয়ে; যা দেখে কল্পক ভীষণ মুগ্ধ হয়েছেন। পরে তিনি নগরের হাটে দেখেছেন পিতল ও পোড়ামাটির মূর্তির বেশকিছু বিপণী; সেখানে শিব এবং অনার্যদের আরাধ্য অন্যান্য নারী ও পুরুষের মূর্তি থেকে শুরু করে নৃত্যশিল্পী এবং নট-নটীদের মূর্তিও পাওয়া যায়। কুথান একটা পিতলের নারী নৃত্যশিল্পীর মূর্তি কিনে তাকে উপহার দিয়েছেন। শঙ্খের বিপণীও দেখেছেন বেশ কয়েকটি; ছোট-মাঝারি-বড় নানা প্রকার শঙ্খে ভরা বিপণীর আধারের তাক। এই শঙ্খের মুখে ফুঁ দিলে বিস্ময়কর এক প্রকার শব্দ বের হয়, অনার্যরা তাদের পূজা-পার্বণের সময় শঙ্খে ফুঁ দিয়ে শব্দ করে। ইল্বলের গৃহে ধরিত্রী মাতৃকার পূজায় নারীদের শঙ্খ বাজাতে দেখেছেন কল্পক। বিবাহিত নারীরা হাতে শাঁখা নামক যে অলঙ্কার পরিধান করে তা এই শঙ্খ কেটে তৈরি করা হয়। ইল্বলের গৃহের আধারে ভারতবর্ষের বাইরের মূর্তিও দেখেছেন, যা ইল্বল সংগ্রহ করেছেন পশ্চিমে বাণিজ্যে গিয়ে। চিত্রখচিত স্বর্ণের যে পাত্রটি দেখেছেন, সেটিও পশ্চিম থেকে সংগ্রহ করা, ভারী আশ্চর্য আর সুক্ষ্ণ হাতে খচিত চিত্র- একজন মানুষ একটি সিংহ ধরে আছে, আরেকজন সিংহের বুকে তরবারি ঢুকিয়ে দিয়েছে, দুজনের দু-পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে আরো দুজন।

পাতালে পা রাখার পর থেকে কল্পক বিভিন্ন অনার্যগোষ্ঠীর জীবনাচার, জীবিকার উৎস, সংস্কৃতি ও ধর্ম সম্পর্কে কিছু কিছু জেনেছেন এবং এখনো জানার চেষ্টা করছেন। তিনি দেখেছেন যে বেশিরভাগ অনার্য গোষ্ঠীর প্রধান আরাধ্য পুরুষ শিব, বসন্তকালে নাকি এরা বেশ আড়ম্বরপূর্ণভাবে শিবের পূজা করে থাকে। শিব ছাড়াও সপ্ত-মাতৃকার পূজা করে। এছাড়াও অনার্যরা বিভিন্ন প্রকার বৃক্ষ এবং পশু-পাখির মূর্তি গড়ে পূজা করে। একদিন পল্লীর এক বসতিতে কুথানের একজন সখার মাতাকে স্নানের পর আঙিনার এককোনে ছোট ঢিবির ওপর রোপন করা একটি ছোট্ট বৃক্ষের মাথায় জল ছিটাতে দেখে থমকে দাঁড়ান কল্পক, তারপর তিনি সেই নারীকে বৃক্ষটির গোড়ায় জল ঢেলে লেপন করার পর প্রণাম করতে দেখেন। পরে তিনি কুথানকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারেন যে ওই বৃক্ষটির নাম তুলসী, অনার্যরা পবিত্রজ্ঞান করে তুলসীবৃক্ষকে পূজা করে। তাছাড়া বৃক্ষটির নাকি অনেক ঔষধি গুণও আছে; তুলসীপাতা চিবিয়ে খেলে কিংবা বেটে রস পান করলে পেটের অসুখ, অম্বলের দোষ, কোষ্ঠকাঠিন্য, সর্দি-কাশি নিরাময় হয়; অনার্য বৈদ্যগণ বিভিন্ন রোগের ঔষধ তৈরিতে তুলসীপাতা ব্যবহার করেন। তিনি কৌতুহলবশত কয়েকটি তুলসীপাতা চিবিয়ে খেয়েছেন, খেতে মন্দ নয়, একটু ঝাঁঝালো, গন্ধটাও বেশ।
কল্পক তখন কুথানের কাছ থেকে আরো জানতে পারেন যে কেবল তুলসীবৃক্ষই নয়; বট, অশ্বত্থ, বেল, নিম, হিজল ইত্যাদি বৃক্ষকেও অনার্যরা পূজা করে। তিনি বিভিন্ন পল্লী এবং নগরে দেখেছেন- যে বৃক্ষকে অনার্যরা পূজা করে সেই বৃক্ষের কাণ্ড বিভিন্ন রঙের সুতা দিয়ে জড়িয়ে দেয় আর সিঁদূর মাখায়। বিভিন্ন পূজা-পার্বণে অনার্যরা বেলপাতা, তুলসীপাতা এবং দূর্বাঘাস পূজ্য’র অর্ঘ্য হিসেবে দিয়ে থাকে। তিনি আরো জেনেছেন যে- বৃক্ষ ছাড়াও কোনো কোনো অনার্য গোষ্ঠী ষাঁড়, হস্তী, মহিষ ইত্যাদি পশুকে পূজা করে; এমনকি সর্পকেও পূজা করে! আর তার দেখে ঘেন্না লেগেছে পল্লী ও নগরের বিভিন্ন জায়গায় পাথর দিয়ে তৈরি তেল-সিঁদূর মাখানো শিশ্ন দেখে, এই শিশ্ন এরা পূজা করে! শুনে গা গুলিয়ে উঠেছে তার, বমি পেয়েছে!

দেবপতি ইন্দ্র কল্পককে পাতালে পাঠিয়েছেন দুটি উদ্দেশ্য সাধনের জন্য; প্রথমত, পাতালের অনার্যদের হাঁড়ির সংবাদ সংগ্রহ করা, তারা কতটা সংগঠিত, শারীরিক এবং মানসিকভাবে কতটা শক্তিশালী, যুদ্ধবিদ্যায় কতটা দক্ষ, আর্যরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধে পারবে কি না ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করা; দ্বিতীয়ত, যেহেতু পাতালের অনার্যরা গৃহনির্মাণ বিদ্যায় আর্যদের চেয়ে অধিক দক্ষ, তাই লোভ-লালসা দেখিয়ে একজন অনার্য গৃহনির্মাণ কারিগরকে স্বর্গে নিয়ে যাওয়া, যাতে স্বর্গে মানসম্পন্ন গৃহ নির্মাণ করা যায়। কিন্তু কৈলাসনগরের গৃহ নির্মাণ কৌশল পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অবলোকন করে কল্পক এই বুঝেছেন যে- এমন গৃহ স্বর্গে নির্মাণ করা আদতেও সম্ভব নয়। এমন দৃষ্টিনন্দন গৃহ তৈরি করতে বিপুল মসৃণ মৃত্তিকা প্রয়োজন, যে মৃত্তিকা মন্থন করে ইট তৈরি করে রোদে শুকিয়ে পোড়াতে হয়, তারপর সেই ইট গাঁথতে চুন-সুরকির প্রয়োজন হয়। ইট বানিয়ে পোড়ানো থেকে শুরু করে গৃহ নির্মাণের প্রত্যেকটি স্তুরে রয়েছে অনেক দক্ষ শ্রমিকের হাতের ছোঁয়া। গৃহ নকশা করার জন্যও দক্ষ নকশাকার রয়েছে। এই নগরে বেশ কয়েকজন সনামধন্য নকশাকার আছেন, যারা গৃহ নির্মাণের নকশা করেন আর তার অধীনস্থ কারিগরদেরকে নির্দেশনা দিয়ে গৃহ নির্মাণ করান। গৃহনির্মাণ বিদ্যায় দক্ষ অধিকাংশ নকশাকার এবং কারিগরগণ বানর গোষ্ঠীর লোক। এমন গৃহ নির্মাণ করা বৃহৎ এক কর্মযজ্ঞের ব্যাপার, যা স্বর্গে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। স্বর্গে ভালো গৃহ নির্মাণ করতে হলে সুতল-বিতলের পর্বতে বাস করা বানরগোষ্ঠীর মধ্য থেকে দক্ষ কারিগর নিতে হবে, যারা পাথর-কাদা ও বাঁশ-কাঠ দিয়ে সুদৃশ্য গৃহ নির্মাণ করতে পারে। ফিরবার পথে সুতল আর বিতলের অনার্যদের মধ্য থেকে তেমন একজন দক্ষ কারিগরকে নানা প্রকার লোভ-লালসা দেখিয়ে স্বর্গে নিয়ে যেতে চান কল্পক। কেননা তিনি জানেন যে এই কাজটি করতে পারলে স্বর্গে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে, অন্য দেবতাগণ তাকে আরো অধিক মান্য করবেন, আর ভবিষ্যতে তার নারদ হবার পথটি আরো মসৃণ হবে। তার জীবনের একমাত্র ধ্যানজ্ঞান, আ তা হলো- নারদের আসনে অধিষ্ঠিত হওয়া, সেই লক্ষেই তিনি কাজ করছেন, চোখের পাতা বন্ধ করে ভবিষ্যতের দিকে তাকালেই দেখতে পান- তিনি নারদের আসনে অধিষ্ঠিত, এই দৃশ্যটি কল্পনা করে তিনি দারুণ সুখ অনুভব করেন, আনন্দে তার অন্তর নেচে ওঠে!

কৈলাসনগরে আজ ঐতিহ্যবাহী যাঁড়ের লড়াই হবে, লোকজন আনন্দ চিত্তে আছে, বিশেষত তরুণ-তরুণী এবং কিশোর-কিশোরীরা। নানা বয়সের লোক ছুটে চলেছে নগরের উত্তর দিকের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে, যেখানে প্রতি বৎসর অনুষ্ঠিত হয় ষাঁড়ের লড়াই। কেবল কৈলাসনগর নয়, নগরের বাইরের বিভিন্ন পল্লী এবং অন্যান্য ছোট নগর থেকেও অনেকে তাদের ষাঁড় নিয়ে আসে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। ষাঁড়ের লড়াইয়ের প্রাঙ্গণকে ঘিরে রীতিমতো মেলা বসে যায়, ক্ষুদ্র বণিকেরা নানা রকম পণ্যের পসার সাজিয়ে বসে।

কুথান আর কল্পকও আজ এই উৎসবের রঙে হৃদয় রাঙাতে নগরের সড়ক ধরে হাঁটতে থাকেন ষাঁড়ের লড়াইয়ের মাঠের উদ্দেশ্যে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কেউ গরুর গাড়িতে চেপে, কেউ গাধার পিঠে চড়ে, কেউবা তাদের মতো পায়ে হেঁটে চলেছে। কুথান পূর্বে ষাঁড়ের লড়াই দেখলেও কল্পক কখনো দেখেননি, তাই কুথানের চেয়ে কল্পকের আগ্রহ এবং কৌতুহল অনেক বেশি। যে-সব লোকজন ভালো পোশাক পরে ষাঁড়ের লড়াই দেখতে ছুটছে, তাদেরকেও খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন কল্পক। ষাঁড়ের লড়াই আর্যদের মধ্যে প্রচলিত নয়, এটা অনার্য সংস্কৃতি। আর্যদের মধ্যে হয় অশ্বদৌড়, তীর নিক্ষেপ আর মল্লযুদ্ধের প্রতিযোগিতা। তীর নিক্ষেপ আর মল্লযুদ্ধের প্রতিযোগিতা অনার্যদের মধ্যেও হয়, তবে অনার্যদের মধ্যে অশ্বদৌড় হয় না। অনার্যরা অশ্বচালনায় দক্ষ নয়, ভালো জাতের অশ্বও তাদের নেই। এই কৈলাসনগরে এখন পর্যন্ত হাতে গোনা দু-তিনটে অশ্ব তিনি দেখেছেন। এই রকমই কোনো কোনো অনার্য বসতিতে কদাচিৎ দু-চারটি অশ্ব দেখা যায়, তবে তার জাত উন্নত নয়, খর্বাকৃতির।

আর্যদের অশ্বদৌড়, তীর নিক্ষেপ আর মল্লযুদ্ধের প্রতিযোগিতা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আর্য বসতিতে হয়ে থাকে। দূর দূরান্ত থেকে অনেক অশ্বারোহী আর্য তাদের প্রিয় অশ্ব নিয়ে উপস্থিত হয় অশ্বদৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবার জন্য। তেমনিভাবে আর্য গোত্রগুলোর বিখ্যাত সব তীরন্দাজ আর মল্লযোদ্ধারা উপস্তিত হয় তীর নিক্ষেপ এবং মল্লযুদ্ধ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। ব্রহ্মাবর্তে এই তিনটে প্রতিযোগিতাই খুব উৎসবমুখর হয়, প্রচুর লোক সমাগম হয়, স্বর্গ থেকে দেবগণ আসেন আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে। বিজয়ী অশ্বারোহী, তীরন্দাজ, আর মল্লযোদ্ধা পুরস্কৃত গ্রহণ করেন মনুর হাত থেকে। মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকে এই তিনটি প্রতিযোগিতার জন্য।

‘কুথান…..।’ মাংসের বিপণীর সামনে দাঁড়ানো অনল ডাকেন।
‘আরে সখা! তুমি এখানে!’ অনলের দিকে এগিয়ে যান কুথান, কল্পকও তাকে অনুসরণ করেন।
‘মাংস ক্রয় করতে এলাম। তোমরা চললে কোথায়, ষাঁড়ের লড়াই দেখতে?’
‘হ্যাঁ! তুমি যাবে না?’
‘না, গৃহে আত্মীয় এসেছেন।’ তারপর কল্পকের দিকে তাকিয়ে অনল আবার বলেন, ‘কেমন আছেন আপনি? কেমন লাগছে আমাদের এই নগর?’

কল্পক মৃদু হেসে উত্তর দেন, ‘মঙ্গলময় আছি। দারুণ লাগছে আপনাদের এই নগর!’
অনল মৃদু হাসেন, ‘বিবাহ করে আমার মতো থেকে যাবেন নাকি এখানে? পাত্রী দেখব?’
কল্পক শুষ্ক হাসি দিয়ে বলেন, ‘না, না, ও-সবের কোনো প্রয়োজন নেই।’

কুথানের দিকে তাকিয়ে অনল বলেন, ‘সন্ধেবেলা উনাকে নিয়ে আমার গৃহে এসো, অষ্টপদ খেলব।’
‘বেশ, চেষ্টা করব যদি ষাঁড়ের লড়াই দেখে তাড়াতারি ফিরতে পারি।’ বলেন কুথান।
‘চেষ্টা নয়, অবশ্যই এসো।’
‘আচ্ছা, আগে ষাঁড়ের লড়াই দেখে ফিরি। আসি তাহলে সখা।’
‘এসো।’

কুথান আর কল্পক আবার হাঁটতে শুরু করেন।

কিছু পথ অতিক্রম করে কল্পক নিচু স্বরে কুথানকে বলেন, ‘আপনার এই দানব সখা আর্য রক্তের গৌরব ভুলে নিজে পাপে ডুবেছেন, আবার আমাকেও পাপে ডোবার কুপরামর্শ দিচ্ছেন!’

এই কথার উত্তরে কল্পককে কিছু বলা অনর্থক জেনে কুথান কিছু না বলে কেবল ওর দিকে তাকিয়ে শুষ্ক হাসি দেন।

অনল ব্রহ্মাবর্তের পার্শ্ববর্তী অঞ্চল শ্রীতলের বাসিন্দা ছিলেন, তাদের গোত্রপতির সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত হয়েছিলেন তিনি, কোনো এক ঘটনায় মেরে গোত্রপতির পুত্রের হাত ভেঙে দিয়ে আত্মীয়-পরিজন আর গোত্রের মায়া ত্যাগ করে পালিয়েছেন শ্রীতল থেকে, তারপর পাতালের নানা বসতি ঘুরে ঘুরে নানা কাজ করতে করতে শেষে এই কৈলাসনগরে এসে থিতু হয়েছেন। অনল যখন এই নগরে প্রথম আসেন তখন এক তাম্র কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন, তাম্র দিয়ে নানা প্রকার বাসন তৈরি করতেন। খুব পরিশ্রমী আর বুদ্ধিদীপ্ত ব্যবসায়িক চিন্তার কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই কারখানার পণি কর্তার আস্থাভাজন হন এবং কর্তা তার ওপর কারখানার প্রধানের দায়িত্বভার অর্পণ করেন। দূর-দূরান্তের ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে কারখানার কর্তা নিজের এক কন্যার বিবাহ দেন অনলের সঙ্গে, এখন শ্বশুরের বাণিজ্য তাকেই দেখতে হয়। শ্বশুরের গৃহের নিকটেই একতলা গৃহ নির্মাণ করেছেন তিনি, স্ত্রী এবং দুই সন্তান নিয়ে বেশ সুখে আছেন।

এবারের আগে কুথান দু-বার এসেছেন কৈলাসনগরে, ছিলেন অনলের গৃহে। অনলের সঙ্গে তার প্রথম পরিচয় হয় বিতস্তা নদীর পারের এক নগরে, অনল বাণিজ্যের কাজে গিয়েছিলেন আর তিনি করছিলেন পরিভ্রমণ। দুজনের পরিচয় ক্রমশ বন্ধুত্বে রূপ নেয় আর সে-বারই অনলের বাণিজ্য তরণীতে আরোহণ করে কৈলাসনগরে আসেন কুথান।

এবারও তিনি কল্পককে নিয়ে বেশ কয়েকবার অনলের বাড়িতে গেছেন, অনল এবং তার স্ত্রী জরা তাদের খুব দারুণ আপ্যায়ন করেছেন, অনেক কিছু রান্না করে আহার করিয়েছেন। সন্ধ্যায় সকলে মিলে অষ্টপদ খেলেছেন, কুথান এবং জরা একদিকে আর অন্যদিকে অনল ও কল্পক, প্রত্যেকবার কুথান এবং জরা জয় লাভ করেছেন। জরা কুথানকে দাদা বলে সম্বোধন করেন, আর কুথান প্রথম দিকে দিদি বলে ডাকতেন জরাকে। তারপর জরা একদিন কুথানকে বলেন, ‘দাদা, আমি তোমার ছোট ভগিনীর মতো, আমায় নাম ধরে ডাকবে।’
কুথানও সানন্দে রাজি হয়ে যান, আপনি’র ব্যবধান ঘুচিয়ে ‘তুই’ সম্বোধন করেন। অনল আর জরার ছেলে-মেয়ে দুটিও কুথান মামাশ্রী বলতে পাগল!

জরা কুথানের গল্পের খুব ভক্ত, তাদের গৃহে গেলেই অষ্টপদ খেলার পর অনেক রাত্রি অব্দি গল্পের বৈঠক হয়। জরার আন্তরিক ব্যবহার ও দারুণ আপ্যায়নের পরও তাকে পছন্দ করতে পারেননি কল্পক, হয়ত জরাও তা আঁচ করতে পারেন, কিন্তু কখনোই কাউকে তা বুঝতে দেন না। প্রথমদিন তাদের গৃহ থেকে ফেরার পথে কুথান বলেন, ‘দেখলেন তো কল্পক, পণিকন্যা জরার কী অমায়িক ব্যবহার? ও এমন আদর-যত্ন করল যেন আমরা তার মাতার পেটের ভ্রাতা!’

কল্পক বলেন, ‘যতই আদর-আপ্যায়ন করুক, একজন আর্য পুরুষ অনার্য কন্যাকে দাসী হিসেবে গৃহে স্থান দিতে পারে, তাকে ক্ষণিকের জন্য শয্যাসঙ্গিনী করতে পারে, কিন্তু স্ত্রীর মর্যাদা কখনোই দিতে পারে না! আপনার সখা অনার্য কন্যাকে বিবাহ করে অন্যায় করেছেন!’
কুথান রেগে গিয়ে বলেন, ‘কল্পক, নেহাত সখা বেণ আমার হাতে আপনার দায়িত্ব সমর্পণ করেছে, নইলে এমন কদর্য কথা বলার অপরাধে এই মুহূর্তে আমি আপনার সঙ্গ ত্যাগ করতাম!’

এরপর কল্পককে নিয়ে আর অনলের গৃহে যেতে চাননি কুথান, কিন্তু অনলের বারংবার অনুরোধে গিয়েছেন যাতে অনল আর জরা কোনো কিছু আঁচ করে কষ্ট না পান।

পথেই কুথান আর কল্পকের সামনে পড়ে কৃষ্ণবর্ণের বিরাট আকৃতির একটি প্রতিযোগী ষাঁড়, দুলকি চালে হেঁটে চলেছে, মাথায় বাঁকানো বড় শিং, কপালে রক্তিমবর্ণে স্বস্তিকা চিহ্ন অঙ্কন করা, গলায় শ্বেত পদ্মফুলের মালা পরানো, গলায় বাঁধা রজ্জুর দু-দিকের লম্বা দুটো অংশ ধরে দু-পাশে দু-জন যুবক হাঁটছে আর তাদের সঙ্গে পরিচ্ছন্ন পরিচ্ছদ পরে হাঁটছে আরো কয়েকজন যুবক ও কিশোর। ষাঁড়ের দুই শিং আর চার পায়ে লাল কাপড় বাঁধা, বিশাল শরীরেও এক টুকরো লাল কাপড়ের বেষ্টন। যে দু-জন যুবক দড়ি ধরে ষাঁড়টিকে নিয়ে যাচ্ছে তাদের পরনে সাদা ধুতি আর গায়ে সাদা নিবি; মাথায় এবং দুই হাতের কব্জিতে সাদা কাপড় বাঁধা, হাতে সরু পাকা বাঁশের লাঠি।

কুথান যুবকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের ষাঁড়টি দারুণ তাগড়া, লড়াইয়ে অংশ নেবে নিশ্চয়ই?’

ষাঁড়ের রজ্জু ধরে রাখা বামপাশের যুবক বলে, ‘হ্যাঁ। আশির্বাদ করবেন, যেন কালু জিততে পারে।’
‘ষাঁড়টির নাম বুঝি কালু?’
‘হ্যাঁ। আপনারা কোথা থেকে এসেছেন?’
‘ব্রহ্মাবর্ত থেকে।’

‘ওরে বাপরে, সে তো অনেক দূর! অত দূর থেকে এসেছেন ষাঁড়ের লড়াই দেখতে?’
‘এসেছি পরিভ্রমণে, ষাঁড়ের লড়াই দেখার সৌভাগ্য হয়ে গেল।’

‘আপনাদের মতো অনেক আর্যই আসে ষাঁড়ের লড়াই দেখতে। তবে তাদের নিবাস অত দূরে নয়।’

হাঁটতে হাঁটতে ষাঁড় এবং ষাঁড়ের লড়াই সম্পর্কে অনভিজ্ঞ কল্পক নানা ধরনের প্রশ্ন করেন কুথানকে আর কুথান সে-সব প্রশ্নের উত্তর দিতে থাকেন।



(চলবে......)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৪:২৩
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×