somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গোধূলিবাড়ি (উপন্যাস: পর্ব- ছয়)

০৫ ই আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার শ্বশুর গোপাল দত্ত ছিলেন সৎসঙ্গের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের শিষ্য। একবার তিনি একজন ঋত্ত্বিককে বাসায় নিয়ে এসেছিলেন আমাদেরকে দীক্ষা দেবার জন্য। অনুকূলের শিষ্যদের মধ্যে ঋত্ত্বিক এমন একটি পদ, যে পদের অধিকারীরা প্রয়াত অনুকূলের পক্ষে মানুষকে দীক্ষা দেন। ঋত্ত্বিক ভদ্রলোকের বয়স ষাটের ওপরে। দীর্ঘদেহী, স্ফীত উদর, প্রায় ফর্সা গায়ের রঙ, মাথার মাঝখানে টাক, চুল ছোট করে ছাঁটা। ভীষণ বাঁকপটু। তার নামটি আজ আর মনে নেই। শ্বশুরের মুখে ঋত্ত্বিক নিয়ে আসার উদ্দেশ্য জেনে আমি পড়লাম মহা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। সন্ধ্যাবেলা আমাকে, তপতীকে, আমাদের বড়ো ছেলে অমিয় আর মেয়ে বিতস্তাকে সামনে বসিয়ে অনুকূল ঠাকুর সম্পর্কে বিশদ বয়ান দিতে শুরু করলেন ঋত্ত্বিক ভদ্রলোক। চারজনকেই তিনি দীক্ষা দিতে চান, ছোটছেলে অমিতের বয়স তখন বছর তিনেক, আরেকটু বড় হলে তালিকায় ওর নামও ঢুকে যেত নিশ্চিত!

যে-কোনো মানুষের কথাই আমি আগ্রহ নিয়ে শুনি, কোনো আদর্শ বা দর্শন গ্রহণ করা বা না করা আমার ইচ্ছার ব্যাপার, কিন্তু শুনতে তো দোষ নেই, শুনলে নিজের অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়। এক পর্যায়ে ঋত্ত্বিক বললেন, ‘যিনি রাম, যিনি কৃষ্ণ, যিনি বুদ্ধ, যিনি চৈতন্য, যিনি রামকৃষ্ণ পমরহংসদেব, তিনিই পুরুষোত্তম ভগবান শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র! মানুষকে আলোর পথ দেখাতে, মানুষকে মুক্তি দিতে, তিনি বারবার নানা রূপে ধরাধামে অবতীর্ণ হন, সতীসাধ্বী রমণীর গর্ভে জন্ম নেন।’

ঋত্ত্বিকের কথা শুনে আমি মনে মনে হাসলাম। পৃথিবীতে যুগে যুগে বহু মানুষ নিজেকে ঈশ্বরের অবতার কিংবা ঈশ্বরের প্রেরিত পুরুষ দাবী করে নিজের সম্পর্কে মিথ্যে অলৌকিক আখ্যান শুনিয়ে নির্বোধ কিংবা অন্ধ বিশ্বাসী মানুষকে তার শিষ্য বানিয়েছে। মানুষের মধ্যে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছে। অনেকে ব্যর্থ হয়েছে, খুব বেশি প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি, কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। আবার অনেকে এতটাই প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে যে, মৃত্যুর বহু শতাব্দী পরও বিপুল সংখ্যক মানুষের হৃদয় জুড়ে আছে। মানুষ বিনা প্রশ্নে, কী অবলীলায় এইসব প্রতারক গুরুদের আনুগত্য স্বীকার করে তাদের ভৃত্য বনে যায়, দেখে ভারী অবাক লাগে আমার! মাতৃগর্ভে কোটি কোটি ভ্রূণকে পিছনে ফেলে যে জীবনের জন্ম, সে জীবন মহামূল্যবান, অন্ধ বিশ্বাসে প্রতারকের আনুগত্য স্বীকার করে সেই জীবনের অপচয় হতে দেখলে বড়ো আফসোস হয়। আবার এমনও হয়েছে যে, কেউ নিজেকে ঈশ্বরের অবতার বা ঈশ্বরের প্রেরিত পুরুষ দাবী না করলেও পরবর্তীকালে তার শিষ্য বা স্তুতিকারীরা তাকে অবতার বা প্রেরিত পুরুষের স্থানে বসিয়েছে। শিব, রাম, কৃষ্ণ কি কখনো নিজেকে ঈশ্বরের অবতার বলে দাবী করেছিল? নাকি তাদের কিছু অনন্য কীর্তির কারণে পরবর্তীকালের পুরাণকার-স্তুতিকারীরা তাদেরকে ঈশ্বরের অবতার বানিয়েছে? হতে পারে এসব পুরাণকার-স্তুতিকারীদের কাজ।

তপতীর দিকে তাকিয়ে দেখলাম সে ভক্তি গদ গদ হয়ে তাকিয়ে আছে ঋত্ত্বিকের পানে! সদ্য কৈশোরে পা রাখা অমিয় আর বালিকা বিতস্তাও তন্ময় হয়ে শুনছে ঋত্ত্বিকের কথা। আমি ওদেরকে যত বিজ্ঞানমুখী করতে চাইতাম, যুক্তিবাদী হিসেবে গড়ে তুলতে চাইতাম, তপতী তত ওদেরকে অন্ধবিশ্বাসের সুড়ঙ্গের পথ দেখাত, ওদের কচি মনে লেপে দিত কুসংস্কারের প্রলেপ। তার ওপর আবার ওই নতুন উপদ্রবের আগমন!

ঋত্ত্বিক বললেন, ‘ভগবান শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের দীক্ষা কেন নিবেন? নিবেন এই জন্য যে মানুষের ভেতর পশুভাব বিরাজ করে। ঠাকুরের দীক্ষা নিলে, ঠাকুরের আরাধনা করলে, মানুষের ভেতরের এই পশুভাব দূর হয়ে যায়। অদীক্ষিত মানুষ পশুর সমান।’

‘অদীক্ষিত মানুষ পশুর সমান’ বলায় মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল আমার। পৃথিবীতে যারা অহিন্দু এবং হিন্দুদের মধ্যেও কোটি কোটি মানুষ আছে যারা দীক্ষা গ্রহণ করেনি, তারা সবাই পশুর সমান? গৌত্তম বুদ্ধ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, লালন ফকির, রামমোহন রায়, রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ, নজরুল, সক্রেটিস, হোমার, শেক্সপিয়ার, আইনস্টাইন, জগদীশ চন্দ্র বসু, কার্ল মার্ক্সসহ যে-সব মনীষী মানব সভ্যতাকে এগিয়ে দিয়েছেন কিন্তু দীক্ষা নেননি, তারা সবাই পশুর সমান!

ঋত্ত্বিক তপতীর উদ্দেশে বললেন, ‘মা, আপনার ঠাকুর ঘরে দেখলাম শিব-পার্বতী, লক্ষ্মী-নারায়ণের ছবি আর লোকনাথের মূর্তি রেখেছেন অনেক যত্ন করে। দেখেই বোঝা যায় নিত্যদিন সেবাও করেন। শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র পূর্বজন্মে যখন ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব রূপে আবির্ভুত হয়েছিলেন, তখন বাউলতত্ত্ব সম্পর্কে কী বলেছিলেন জানেন? বলেছিলেন- “বাড়িতে ঢোকার পায়খানার পথ!” মা, আপনি যাদেরকে ঠাকুরঘরে বসিয়ে পূজা করছেন, একথা তাদের বেলায়ও সত্য। এরা তো কেউ ঈশ্বর নন! ঈশ্বর হলেন পুরুষোত্তম শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র। আপনি যদি সোজা পথে বাড়িতে ঢুকতে পারেন, তাহলে পায়খানার পথ দিয়ে ঢুকবেন কেন? আপনি দীক্ষা নিয়ে আপনার ঠাকুর ঘরে শুধু পুরুষোত্তম শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের ছবি রাখুন, তার চরণেই ফুলটি দিন, তাহলে আর কাউকে ভজন করার প্রয়োজন হবে না। আপনি সোজা পথেই বাড়িতে ঢুকতে পারবেন মা, আপনাকে পায়খানার পথ মাড়াতে হবে না।’

এভাবেই যুগে যুগে শিষ্য বা স্তুতিকারীদের উদ্যোগে কোনো কোনো দেবতা বা গুরুর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে, আবার শিষ্য বা স্তুতিকারীদের উদ্যমের অভাবেই কোনো কোনো দেবতা বা গুরুর জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে!

পরদিনই দীক্ষার আয়োজন করতে বললে আমি ঋত্ত্বিককে বললাম, ‘দেখুন, আমি এখনো দীক্ষা গ্রহণের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত নই। যদি কখনো মানসিকভাবে প্রস্তুত হই তখন গ্রহণ করবো।’

তিনি বললেন, ‘বাবা, শুভ কাজে দেরি করতে হয় না। পুরুষোত্তম শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের চরণে একবার নিজেকে সমর্পণ করে দেখুন, আপনার আত্মায় প্রশান্তি আসবে। ঠাকুর-ই আপনার দায়িত্ব নিয়ে নেবেন।’

এরপর ঋত্ত্বিক আমাকে দীক্ষা নেবার সুফলতা এবং না নেবার কুফলতা সম্পর্কে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলেন। দীক্ষা নিলে সংসারে শান্তি আসে, সুসন্তান লাভ হয়, ঈশ্বরের আশির্বাদে অর্থনৈতিক উন্নতি হয়, দীক্ষাহীন কোনো মানুষের মৃত্যু হলে সেই মানুষ স্বর্গে যেতে পারে না, দীক্ষাহীন মানুষের হাতের খাবার খাওয়া ধার্মিক ব্যক্তির পক্ষে অখাদ্য খাওয়ার সমান ইত্যাদি নানা ধরনের কথা বলে আমার চিত্ত দূর্বল করার চেষ্টা করলেন। যতই তাকে বলি যে আমি দীক্ষা নেবার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত নই, মানসিকভাবে প্রস্তুত হলে আমি নিজেই তাকে বলব। কিন্তু তিনি আমার কথা উপেক্ষা করে নাছোড়বান্দার মতো নানাভাবে আমাকে বোঝানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখলেন। আমার শ্বশুর আর তপতীও আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন। তপতী ঋত্ত্বিকের সামনে শান্ত থাকলেও তার চেহারা দেখেই বুঝলাম যে, সে আমার ওপর ভীষণ রেগে গেছে। আমাকে ভেবে দেখার জন্য রাত্রিটা সময় দিলেন ঋত্ত্বিক। সারাটা রাত তপতী আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করল এবং বোঝাতে ব্যর্থ হয়ে তুমুল ঝগড়া করল, দেয়ালে মাথা ঠুকল, কাঁদলও। আমি বাধা না দিলে মাথা ফাটিয়ে ফেলত কিনা কে জানে! সকালেও আমাকে আরেক দফা বোঝানোর চেষ্টা করলেন ঋত্ত্বিক এবং আমার শ্বশুর। আমি তাদেরকে বললাম, ‘দেখুন, নিজের ভেতর থেকে সাড়া না এলে জোর করে ধর্মকর্ম হয় না। তাছাড়া যার শিষ্যত্ব বরণ করব, তার সম্পর্কে ভালো করে জানাও দরকার। আমাকে কিছুদিন সময় দিন, আমি অনুকূল চন্দ্রের জীবন, কর্ম, দর্শন সম্পর্কে জানি, তারপর দীক্ষা নেব।’

শেষ পর্যন্ত আমার কঠোর মনোভাব দেখে তারা রণে ভঙ্গ দিলেন। ঋত্ত্বিক আমার ওপর প্রচণ্ড বিরক্ত হলেও খুব শান্ত ব্যবহার করলেন। তিনি অনুকূলের লেখা এবং অনুকূল সম্পর্কে লেখা কয়েকটি বই উপহার দিলেন আমাকে। সেদিনই দুই সন্তানসহ তপতীকে দীক্ষা দিতে চাইলে আমি ঋত্ত্বিককে বললাম, ‘সন্তানরা এখনো ছোট, ধর্মকর্মের মতো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবার মতো বয়স ওদের এখনো হয়নি। সাবালক হবার পর ওরা যদি দীক্ষা নিতে চায় নেবে, এখনই ওদের ওপর ধর্মের ভার চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়।’

আগের রাতে ঋত্ত্বিকের সামনে শান্ত থাকলেও তপতী এবার আমার ওপর খেঁকিয়ে উঠল, ‘তুমি দীক্ষা নিলে নাও, না নিলে না নাও। ছেলে-মেয়েকে দীক্ষা নিতে হবে। কোনোদিন তোমাকে ঠাকুর-দেবতার নাম মুখে আনতে দেখি না। ছেলে-মেয়েদের আমি তেমন কু-শিক্ষা দেব না।’

ঋত্ত্বিক আমার উদ্দেশে বললেন, ‘বাবা, দীক্ষা নেবার উত্তম বয়স এদের। এই বয়সে ওরা নিজেদেরকে পুরুষোত্তম শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের চরণে সঁপে দিলে, ঠাকুর ওদের গড়ে তুলবেন, নিরাপদে রাখবেন, ওদের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল করবেন।’

মনে মনে বললাম- আজ আমি মরে গেলে, কাল থেকেই আমার সন্তানদের দু-মুঠো ভাতের জন্য লড়াই করতে হবে। তখন না আপনার অনুকূল ওদের গড়ে তুলবেন, না আপনি একবার এসে খোঁজ নেবেন যে ওরা খেয়েছে কি না!

শত নিষেধ করলেও ছেলে-মেয়ের দীক্ষা আটকাতে পারব না, উল্টো সংসারে অশান্তি বাড়বে, তাই চুপ হয়ে গেলাম। সেদিন-ই সন্ধ্যায় তপতী, অমিয় আর বিতস্তা ঋত্ত্বিকের কাছ থেকে দীক্ষা গ্রহণ করল। পরদিন ঋত্ত্বিক আর আমার শ্বশুর ফিরে গেলেন আর যাবার আগে ঋত্ত্বিক জানিয়ে গেলেন যে আষাঢ় মাসে তিনি আবার আসবেন আমাকে দীক্ষা দিতে।

একদিন বিতস্তাকে বললাম, ‘ঋত্ত্বিক দীক্ষা দেবার সময় তোর কানে কানে কী বলেছে রে মা?’
বিতস্তা বিজ্ঞের মতো বলল, ‘দীক্ষামন্ত্র কাউকে বলতে হয় না। বললে পাপ হয়। মা বলতে নিষেধ করেছে।’
‘আরে বোকা, বাবাকে বললে কিছু হয় না।’
‘মা যদি বকে?’
‘আমি কী তোর মাকে বলব নাকি? বলে ফেল।’

বিতস্তা আমার আরো কাছে এসে নিচু স্বরে বলল, ‘দুই কানে তিনবার করে বলেছে- রাধের সোয়ামী, রাধের সোয়ামী, রাধের সোয়ামী।’

ঋত্ত্বিকের কথা মতো তপতী ওর ছোট্ট ঠাকুরঘর থেকে অন্যসব ঠাকুর-দেবতাকে নামিয়ে পাশের একটি টুলে রেখেছিল। শুধু অনুকূল ঠাকুরের ছবি রেখেছিল ঠাকুরঘরে। তবে ঋত্ত্বিকের কথা মতো অন্য ঠাকুর-দেবতাকে পূজা করা ত্যাগ করেনি। বাসায় সে বিভিন্নরকম পূজা-পার্বণের আয়োজন করত। দূর্গাপূজা, কালীপূজায় মন্দিরে যেত পূজা দিতে।

প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় অনুকূলের ছবির সামনে বসে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে প্রার্থনা করত তপতী। সকালে প্রার্থনার সময় তিনজনই ইষ্টভৃতির নামে পয়সা জমাতো একটা মাটির ব্যাংকে। ছয়মাস পর পর সেই অর্থ পাঠিয়ে দিত ঋত্ত্বিকের কাছে, ঋত্ত্বিক নাকি আবার তা পাঠিয়ে দিতেন পাবনার হেমায়েতপুরে অনুকূল ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত সৎসঙ্গ আশ্রমে। বাংলাদেশে অনুকূলের সকল শিষ্যরাই এভাবে টাকা পাঠায় হেমায়েতপুরের সৎসঙ্গ আশ্রমে, আর ভারতের শিষ্যরা পাঠায় দেওঘরের সৎসঙ্গ আশ্রমে। শিষ্যদের পাঠানো টাকায় নিজের জীবন বেশ আয়েশে-বিলাসে কাটিয়েছেন অনুকূল, আবার উত্তরপ্রজন্মকে যাতে কোনো কাজ করে খেতে না হয়, তার জন্যও বেশ সুব্যবস্থা করে গেছেন!

আমি কখনোই দীক্ষা গ্রহণ করব না, কিন্তু অনুকূল সম্পর্কে জানতে তো দোষ নেই। তাই আমি মাঝে মাঝেই ঋত্ত্বিকের দেওয়া বইগুলো উল্টে-পাল্টে দেখতাম। ওই বইগুলো পড়েই জানতে পারি- অনুকূল ভয়ংকর রকমের পুরুষতান্ত্রিক এবং পশ্চাৎপদ চিন্তার একজন মানুষ, বিজ্ঞান সম্পর্কে অজ্ঞ হলেও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভুলে ভরা মনগড়া বয়ান শোনাতেন শিষ্যদের! অথচ তিনি কিনা নিজেকে এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা ‘ঈশ্বর’ বলে দাবী করেন! পুণ্যপুঁথি নামক গ্রন্থে তিনি বলেন- ‘আমি নিত্য সাক্ষীস্বরূপ, আমি কৃষ্ণ, আমি চৈতন্য, আমি রামকৃষ্ণ, আমিই সব আমিই সব।’

যিনি নিজেকে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা দাবী করেন, বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সবকিছুই তার নখদর্পণে থাকার কথা। অথচ মণিলাল চক্রবর্তীর ‘স্মৃতির মালা’ গ্রন্থ থেকে জানতে পারি যে তিনি চাঁদ ও সূর্য সম্পর্কে বলেন- ‘আমার মনে হয় চাঁদে গাছ-টাছ আছে। গাছগুলি চিকন। এখানকার মতো মোটা নয়। অনেকটা সুপারি গাছের মতো। সূর্যের মধ্যে অনেক বড় বড় গহ্বর। অনেক বড় গহ্বর। সেখানে এখানকার মতো মানুষ-টানুষ বাস করবার পারে। গাছপালা আছে।……সূর্যে আগুন আছে। তবে অত আগুন নেই। মনে হয় বাসযোগ্য। আর বাসযোগ্য বলেই তা সহনীয়।’

কী ভয়ংকর জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক স্বঘোষিত এই ঈশ্বর! এই প্রতারক লোকটি নিজেকে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা দাবী করেন আর তার সমকালীন লক্ষ লক্ষ মানুষ তা বিশ্বাস করেছে, আজও করে! এরকম আরো অনেক অবৈজ্ঞানিক কথাবার্তা তিনি বলেছেন। এছাড়াও সাংঘাতিক রকমের পুরুষতান্ত্রিক এবং বর্ণবাদী তিনি। তার রচিত গ্রন্থ ‘অনুশ্রুতি’ ১ম খণ্ডের ‘নারী ও পুরুষ’ অধ্যায়ের ১৪ নম্বর ছড়ায় তিনি বলেন-

নারী যখন পুরুষ ছাঁচে
গ’ড়ে তোলে তার প্রকৃতি
নারীত্বে তার প্রেত্নীভাবের
ঘ’টেই থাকে কুবিকৃতি।

১৬ নম্বর ছড়ায় বলেন-
কুমারী একটু বড় হ’লেই
পুরুষ ছুঁতে নেই,
যথাসম্ভব এর পালনই
উন্নয়নের খেই।

১৭ নম্বর ছড়ায় বলেন-
বাপ-ভাই ছাড়া কারু কাছে
নিতে নাইকো কিছু,
নিলেই জেনো হয় মেয়েদের
মনটা আনেক নিচু।

২৮ নম্বর ছড়ায় বলেন-
ছেলে-মেয়ে একযোগেতে
করলে পড়াশুনা,
পড়ার সাথে বাড়ে প্রায়ই
কামের উপাসনা।

৫৮ নম্বর ছড়ায় বলেন-
মেয়ের চাকরি মহাপাপ
বিপর্য্যস্ত শ্বশুর-বাপ।

৫৯ নম্বর ছড়ায় বলেন-
অসতীত্বের কুয়াসী স্তর
মেয়ের চাকরি করা,
ধী-টি জানিস আবছা হ’য়ে
লোভেই পড়ে ধরা।

৬০ নম্বর ছড়ায় বলেন-
যে মেয়েরা চাকরি করে
জনন-জাতি তারাই হরে।

একই বইয়ের বিবাহ অধ্যায়ের ২ নম্বর ছড়ায় বলেন-
বিয়ে ব্যাপারে সবার আগে
বর্ণের হিসেব করিস
তার সাথেতেই বংশটিকে
বেশ খতিয়ে দেখিস।

বিবাহ অধ্যায়ে পুরুষের বহুবিবাহের পক্ষে তিনি ১৭ নম্বর ছড়ায় বলেন-
এককে নিয়েই ডুবে থাকা
এইতো নারীর ধাঁচ
বহুস্ত্রীতে সম মমতা
মুখ্য পুরুষ ছাঁচ।

এরকম আরও অনেক অবৈজ্ঞানিক, পুরুষতান্ত্রিক, বর্ণবাদী এবং পশ্চাৎপদ কথা বলে গেছেন স্বঘোষিত ঈশ্বর অনুকূল। হিন্দুধর্ম কোনো একজন মানুষের সৃষ্টি নয়, প্রাচীনকালে বহুবছর ধরে সমাজের লোকাচার-লোকসংস্কৃতি থেকে ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে। সময়ের সাথে সাথে নতুন নতুন বিধিবিধান যেমনি তৈরি হয়েছে, তেমনি পুরাতন কিছু বিধিবিধান লুপ্তও হয়েছে। এভাবেই টিকে আছে হিন্দুধর্ম। সমস্যা হলো- এই ধর্মটি কোনো একজনের তৈরি নয় বলে বিভিন্ন কালে যে সে নিজেকে ঈশ্বরের অবতার বা ঈশ্বরের প্রেরিতপুরুষ বলে দাবী করেছে এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এদের অনেকে সমাজের কিছু মানুষের মধ্যে প্রতিষ্ঠাও পেয়ে গেছে। ফলে হিন্দুধর্মের মধ্যে তৈরি হয়েছে অনেক উপধর্ম।

অনুকূলের মতো একজন কূপমণ্ডুক মানুষ বিপুল সংখ্যাক অনুসারী তৈরি করেছেন এবং সৎসঙ্গের মতো একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। ধর্মকে হাতিয়ার করে বাঙালিদের মধ্যে এত বড় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যতটা সহজ, জ্ঞান-বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ততটাই কঠিন। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর অনেক বাধা অতিক্রম করে বেশকিছু স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, রবীন্দ্রনাথ অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে বিশ্বভারতী দাঁড় করেছিলেন। কিন্তু পরে এগুলোর দায়িত্ব রাষ্ট্র নিজের হাতে তুলে নিয়েছে। সম্পূর্ণ বেসরকারিভাবে, সাধারণ মানুষের টাকায় জ্ঞান-বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা এবং দীর্ঘমেয়াদে তা পরিচালনা করা এই বঙ্গ জনপদে দুঃসাধ্য কাজ। এ জাতি ধর্মের জন্য টাকা খরচ করতে রাজি, জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির জন্য নয়।

আষাঢ় মাস জীবনে অনেক এলেও সেই ঋত্ত্বিক আর কোনোদিন বাসায় আসেননি, কেননা তপতী আর আমার শ্বশুরের মাধ্যমে তিনি জেনে গিয়েছিলেন যে- আমি কখনোই দীক্ষা নেব না।

দীক্ষা না নিলেও পূজা-পার্বণের দিন এলেই আমাকে ধর্মাচারে ফেরাতে তপতীর জোরাজুরি বেড়ে যেত। বলত, ‘গাদা গাদা বই পড়ে কী শিক্ষাই পেয়েছ যে কোনোদিন ঠাকুর-দেবতার নাম মুখে নিতে দেখি না!’
আমি বলতাম, ‘আমার ঈশ্বর জল, বাতাস, সূর্য। আমার ঈশ্বর প্রকৃতি, যা আমাকে বাঁচিয়ে রাখে।’
‘বাঁচানোর মালিক ভগবান। জল, বাতাস, সূর্য সব ভগবানেরই সৃষ্টি। সবকিছুতেই ভগবান আছেন। অল্প বিদ্যাধারীরা তা মানতে চায় না।’
‘তোমার সাথে আলাপ হয়েছে ভগবানের? হলে আমার সঙ্গেও আলাপ করিয়ে দিও। তাহলে আমিও মানব।’
‘ভগবানকে নিয়ে একদম ঠাট্টা করবে না বলে দিচ্ছি।’
‘ঠাট্টা করলাম কোথায়, তুমি এমনভাবে বলছ যেন তোমার সঙ্গে কিছুক্ষণ আগেই ভগবানের কথা হয়েছে!’

‘ভগবানে বিশ্বাস নেই, পরকালের ভয় নেই, এমন পাষণ্ড মানুষের সঙ্গে বাবা আমার বিয়ে দিয়েছেন। সব স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে মন্দিরে গিয়ে পূজা দেয়। আমার কি ইচ্ছে করে না আর পাঁচজন মেয়েমানুষের মতো স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে মন্দিরে পূজা দিতে? আমার জোরাজুরিতে যদিওবা কোনোদিন মন্দিরে যাও, আমার পাশে থেকে পূজা দাও না, দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকো। কেন যে যেতে রাজি হও, তা আমি বুঝি!’
‘কেন যেতে রাজি হই?’
‘সেজেগুঁজে আসা সুন্দরী মেয়েদের দেখতে।’
‘তুমি যদি বোঝ-ই যে আমি সুন্দরী মেয়েদের দেখতে মন্দিরে যাই, তাহলে আমি যেতে না চাইলেও কেন জোরাজুরি করো?’
‘তোমার কোনো দোষ নেই, পোড়া কপাল আমার! স্বামীর কাছে আমার ইচ্ছের কোনো মূল্য নেই!’

‘আমারও তো ইচ্ছে থাকতে পারে যে, আমার স্ত্রী একটু উন্নত চিন্তা করুক, বই পড়ুক, গান শুনুক। হাজার হাজার বছরের মনীষীদের চিন্তার রস আস্বাদন করুক। তার সঙ্গে জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। কিন্তু আমার সেই ইচ্ছে কি পূরণ হয়? হয় না। এসবের জন্য আমি তোমাকে পরামর্শ দিয়েছি, কিন্তু তোমার আগ্রহ নেই দেখে কখনো তোমার ওপর জোর খাটাইনি। এই যে তুমি বাহুতে কালো সুতো দিয়ে একটা তাবিজ পরো, এটা তো আমার পছন্দ নাও হতে পারে, কিন্তু আমি কি কখনো তাবিজ খুলে ফেলার জন্য তোমাকে জোর করেছি? করিনি। তাহলে তুমি আমাকে ধর্মীয় আচার পালনের জন্য জোর করো কেন?’

এভাবে বারবার বোঝানোর পরও আমার প্রতি ওর কটাক্ষবাণ কখনোই বন্ধ হয়নি, বরং বয়স যত বেড়েছে, ও তত বেশি ধার্মিক আর খিটখিটে স্বভাবের হয়েছে, আমাকেও ধার্মিক বানাতে চেয়েছে। আমাকে ধার্মিক বানাতে অদ্ভুত রকমের চেষ্টাও করত। আমি দুই বার আমার বালিশের কাভারের ভেতরে সিঁদূরমাখা বেলপাতা পেয়েছি। নানারকম তুকতাকে বিশ্বাস করত সে।

একবার রিক্সায় জ্যামে পড়েছিলাম আমি আর তপতী, হঠাৎ আমার চোখ আটকে যায় দেয়ালে সাঁটানো একটা কবিরাজি বিজ্ঞাপনের পোস্টারে। অবাধ্য স্ত্রীকে বশ করা হয়, ব্যর্থ প্রেমে সফলতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়, বাড়ি বন্ধ দেওয়া হয় ইত্যাদি ধরনের লেখা ছিল সেই পোস্টারে। আমি পড়ছিলাম আর মনে মনে হাসছিলাম। তপতী যে আমার পোস্টারের দিকে তাকানো লক্ষ্য করেছে তা আমি তখন বুঝতে পারিনি। বুঝতে পারি কোনো একটি বিষয় নিয়ে একদিন তপতীর সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হলে। তর্কের এক পর্যায়ে সে বলে বসল, ‘তোমার ওপর থেকে আমার বিশ্বাস উঠে যাচ্ছে, তুমি আমাকে কবিরাজ দিয়ে বশ করতে চাও, যাদুটোনা করতে চাও।’

আমি অবাক হয়ে যাই ওর কথা শুনে, ‘এসব তুমি কী বলছ!’
‘ঠিকই বলছি, আমি তোমার মতলব বুঝিনে মনে করো! সেদিন রিক্সায় আসার সময় তুমি কবিরাজি পোস্টারের দিকে তাকিয়ে থাকোনি?’
‘তাকিয়েছি। তাকিয়েছি বলেই কি তোমাকে বশ করতে আমি কবিরাজের কাছে ছুটবো?’

‘পুরুষ মানুষে বিশ্বাস নেই, পুরুষ মানুষ নিজের স্বার্থের জন্য সব করতে পারে! তুমি আমাকে বশ করে দাসী বানিয়ে রাখতে চাও, যাতে তুমি যা খুশি তা করলেও আমি নিষেধ করতে না পারি!’

আমি হতভম্ব হয়ে বসে থাকি ওর কথা শুনে, পৃথিবীতে এত বিষয় থাকতে মানুষ এসব নিয়েও ভাবতে পারে! এইসব ভেবেও জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করতে পারে! হায়রে বৈচিত্র্যময় পৃথিবী, হায়রে মানুষের বিচিত্র মন!

আমি আর তপতী দিনের পর দিন একই ছাদের নিচে থাকতাম, এক টেবিলে বসে খেতাম, একই বিছানায় ঘুমাতাম, সপ্তাহে দু-তিনদিন সঙ্গমে লিপ্ত হতাম। কিন্তু মানসিকভাবে আমি অবস্থান করতাম দূরের সেই বিচ্ছিন্ন দ্বীপে, বিষন্নতায় ডুবে সেই বিচ্ছিন্ন দ্বীপে আমি একা একা পায়চারি করতাম! এমনই বিষন্নতার কুয়াশামাখা এক বিকেলে হঠাৎ জাহানারার সঙ্গে আমার দেখা!



(চলবে..........)

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১:৫৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামপন্থী রাজনীতির বয়ান এবং জামাতের গাজওয়াতুল হিন্দ-এর প্রস্তুতি

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২০


গোরা উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ নিজে ব্রাহ্ম হয়েও, ব্রাহ্ম সমাজের আদর্শের বিপরীতে "গোরা" নামে একটি চরিত্র তৈরি করেন। গোরা খুব কট্টরপন্থী হিন্দু যুবক। হিন্দু পরিচয়ে বড় হলেও, আসলে সে আইরিশ পিতা-মাতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি নেই, তাই শূন্য লাগে

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪৬

তোমার চলে যাওয়ার পর
ঘরে আর আলো জ্বালাই না,
অন্ধকারে নিজের মতো করে
সবকিছু চিনে নেই।

জানো, আজ সকালে চা বানাতে গিয়ে দেখলাম
চিনি শেষ,
ভাবলাম ঠিক আছে,
মিষ্টি না থাকলেও চা হয়।

রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ
তোমার মতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫ আগস্টের পর তো কিছুই বদলায়নি

লিখেছেন মুনতাসির, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৯

অনেকেই বলেন, ৫ আগস্টের পর তো কিছুই বদলায়নি। এই কথাটার সূত্র ধরেই এগোনো যায়। ৫ আগস্টের পর আমাদের কোন কোন পরিবর্তন এসেছে, সেটাই আগে দেখা দরকার। হিসাব করে দেখলাম, বলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে উড়ে গেল মাদ্রাসার দেয়াল, বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৯



ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছেন।

বিস্ফোরণে মাদ্রাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। ঘটনাস্থলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তেল আর জল কখনো এক হয় না......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩৫



জুলাই ছিলো সাধারণ মানুষের আন্দোলন, কোন লিডার আমারে ডাইকা ২৪'এর আন্দোলনে নেয় নাই। কোন নেতার ডাকে আমি রাস্তায় যাই নাই। অথচ আন্দোলনের পর শুনি আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড নাকি মাহফুজ। জুলাই বিপ্লবের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×